২য় পর্ব || গ্রাম বাংলার সৌন্দর্য
30-01-2024
১৭ মাঘ , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
শুভ সকাল 🌼। আশা করছি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সকাল সকাল প্রকৃতির সজীবতা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আবারো চলে এলাম। আগের পর্বে গ্রামবাংলার চিরাচরিত রূপ কিছুটা হলেও উপভোগ করতে পেরেছিলেন। আশা করছি আজকেও উপভোগ করতে পারবেন।
১ম পর্বের পর
কলিমার বন্দের সরুপথ ধরে চলে গেলাম চরের দিকে। এলাকাটাকে চরও বলে আবার ঝাউগারাও বলে! তবে শীতকালে চরের দিকের সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। নদীর পাশেই সরিষার ক্ষেত! হলুদে চারিপাশ ভরপুর! কিন্তু প্রকৃতির এ বিষয়গুলো হয়তো কেউ উপভোগ করতে চাই না। সরিষার জমি পরে আছে কিন্তু কেউ নেই সেটা উপভোগ করার। নরসুন্দা নদীর পাড় ধরে হেটেঁ চললাম! সকাল সকাল মানুষের আনাগোনা কম। শীতের সকাল অনেকেই লেপ গায়ে দিয়ে বসে আছে। কিন্তু গ্রামের চিত্র পুরোপুরি উল্টো! সকালের শুরুটাই হয় কাজ দিয়ে। কাজ না করলে তাদের ভালোও লাগে না।
আমি যখন নদীর পাশ ধরে হাটঁছিলাম তখন দেখতে পেলাম একটি জমিতে ঘাসের চাষ হয়েছে। চরের দিকে বেশিরভাগ মানুষ কৃষির পাশাপাশি গরুপালন করে থাকে। তাদের আয়ের বৃহৎ একটি অংশ আসে গরু পালন থেকে। জমিতে ঘাসগুলো অনেক বড় হয়ে গিয়েছিল। আরেকটু বড় হলেই গরুকে খাওয়াবে। আবার ঘাস কিন্তু বাজারেও বিক্রি করে। বলতে গেলে একসাথে দুইটি কাজ হয়ে যায়। কুয়াশায় মোড়ানো সকালে ঘাসের উপর শিশিরবিন্দুর দেখা পেলাম। মজার ব্যাপার হলো আমি যখন ফটোগ্রাফি করছিলাম কিছু বাচ্চারা আমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে! হয়তো ভেবেছিল আমি অনেক বড় কেউ কি না, হাহা!
আসলে একা একা প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার মজাই অন্যরকম! যেহেতু নদীকে কেন্দ্র করে গ্রামটি। তাই নদীতেই অনেকেই অনেক কিছু চাষ করছে। শীতের সময় পানিও কমে যায়। বলতে গেলে বৈশাখে ধানের একটা ফলন আসে নদীতে ধান চাষ করার মাধ্যমে! ছোটবেলায় যখন এ চরে আসতাম তখন আলু সংগ্রহ করার জন্য আসা হতো! মিষ্টি আলু হতো অনেক! আর মিষ্টি পুড়িয়ে খাওয়ার মজাই অন্যরকম! স্কুল শেষ করে সোজা চলে যেতাম চরে। অনেক বাচ্চারাও আসতো আমাদের মতো। স্কুলের ব্যাগে মিষ্টি আলু সংগ্রহ করে সেগুলো নিয়ে আসতাম বাড়িতে। এখনও দেখলাম নদীর ভিতরে মিষ্টি আলুর চাষ করা হয়েছে। তবে সেগুলো এখনো ছোট সাইজের। কদিন পরেই এগুলো বড় হবে। আর তখন অনেক বাচ্চারা হয়তো আসবে মিষ্টি আলু সংগ্রহ করতে।
আরেকটি জিনিস দেখলাম, সেটা হচ্ছে অনেকেই মাচা করে লাউ ও শিমের চাষ করছে। এখন যেহেতু শীতকাল তাই এ সময় ফলনগুলো ভালো হয়। তবে লাউয়ের গাছগুলো বড় হচ্ছে। কিন্তু লাউ দেখতে পেলাম না। শিমের গাছে শিম হয়েছে! শিম কয়েকজাতের তার মধ্যে লাল রকমের শিমগুলো এখানে বেশি পাওয়া যায়। হাটঁতে হাটঁতে চলে আসছিলাম সুতারাটিয়া। এটিও একটি গ্রাম। নদীর এপার ঝাউগারা আর ওপারে সুতারাটিয়া। আর দুটি গ্রামকে একসাথে করেছে সুতারাটিয়া ব্রিজ। ব্রিজের পাশেই টং এর দোকানের দেখা পেলাম। সকাল সকাল এক কাপ রঙ চা খেয়ে নিলাম। মনকে সতেজ করে আবারো হাটঁতে লাগলাম। তারপর ব্রিজের নিচের দিকে দেখি কয়েকজন বাচ্চা কাজ করছে।
আমি আগ্রহ নিয়ে তাদের কাছে গেলাম। যেখানে তারা কাজ করছিল তার পাশেই ছিল ভূট্রার ক্ষেত! এখনও বড় হয়নি তেমন। মাঝারি সাইজের বলা যায় গাছগুলো।। দুই ছেলে বিন্দা দিয়ে জমি চাষ করছে! তাদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছিলাম, সেখানে তারা মরিচের চারা রোপণ করবে। আমি যখন ফটোগ্রাফি করছিলাম দুজনই বলছিল সামনে সরিষার ক্ষেত আছে ওখান ফটোগ্রাফি করতে পারেন। আমি তখন বললাম সেখানে গিয়েছি একবার। তাদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম তারা দুজনই চতুর্থ শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। শরীরে শীতের জামা নেই। সাধারণ গেঞ্জি পরেই জমিতে কাজ করছে! তাদেরকে বললাম তোমাদের মা বাবা কিছু বলে না! তাদের কথা হলো মা বাবাই তাদেরকে এখানে পাঠিয়েছে। তাদের বাবা নাকি পাঠিয়েছে জমিতে কাজ করতে।
আমি আর বেশি কথা জিজ্ঞেস করলাম না। সেখানে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ তাদের কাজ দেখলাম। আসলে তাদের কাজ দেখে মনে হয়নি যে তারা কাজ পারে না। আমার মনে হয় বাচ্চাদের ছোটবেলা থেকেই কাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলা উচিত! বড় হয়ে একটু হলেও বুঝতে পারবে পরিশ্রম কি জিনিস! একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন, গ্রামের ছেলেরাই কিন্তু পরিশ্রমী হয় বেশি। আর তারা শত প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে জীবনে সাফল্য নিয়ে আসে।।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | w3w |
চলবে,,,,,
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
কুয়াশা মাখা শীতের গ্রামের দৃশ্য গুলো আপনি ফুটিয়ে তুলেছেন এই ফটোগ্রাফি মাধ্যমে।সত্যি আপনার প্রতিটা ফটোগ্রাফি দেখে খুবি ভালো লেগেছে আমার। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই! অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে 😍
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ।
সর্বত্রই সৌন্দর্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
তবে এর আসল সৌন্দর্যটা উপভোগ করা যায় একমাত্র গ্রামগঞ্জে গেলেই।
আজকে আপনি বেশ সুন্দর কিছু আলোকচিত্র তুলে ধরেছেন।
আসলে এরকম সবুজ প্রান্তর দেখলে মনটা এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।
জি ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন। এরকম ফটোগ্রাফি দেখলে মনটাই ভরে যায়
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গ্রামীন পরিবেশ সবসময় সুন্দর হয় । যেটা প্রতিনিয়ত উপভোগ করা হয়ে থাকে। তার পাশাপাশি সেই সৌন্দর্যের ফটোগ্রাফি যেটা আপনাদের সাথে শেয়ার করে থাকি ।আপনি আজকে গ্রাম বাংলার সৌন্দর্যের কিছু দৃশ্য ফটোগ্রাফি করে আমাদের সাথে শেয়ার করলেন দেখে ভালো লাগলো । বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম সৌন্দর্য দেখতে ভালই লাগে।
আসলেই ভাই বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের ফটোগ্রাফি দেখতেও ভালো লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে
গ্রাম বাংলা প্রাকৃতিক অপূর্ব সৌন্দর্য সত্যি বেশ দারুণ । গ্রাম বাংলা নান্দনিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হৃদয় ছুঁয়ে দেয়। বিভিন্ন শাকসবজির ফসলের ক্ষেত দেখে খুব ভালো লাগলো। নিশ্চয়ই ফসলের প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য বেশ সুন্দর ভাবে উপভোগ করেছেন। কুয়াশা ভেজা সকালের প্রাকৃতিক দৃশ্য গুলো সত্যি বেশ অসাধারণ। এত দুর্দান্ত ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই চমৎকার একটি মন্তব্যকরে পাশে থাকার জন্য ☘️
গ্রাম বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলোর মাঝে দেখতে পেলাম।আপনি চমৎকার বর্ননা ও তুলে ধরেছেন। গ্রামটি নদীকেন্দ্রিক।তাই নদীর পাশে অনেক কিছুর চাষ করা হয়।বাচ্চারা মাঠে এসে কাজ করছে।এটা সুন্দর বলেছেন বাচ্চাদের ছোট সময় হতে কাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলা ভালো। পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করলে কাজও শেখা হয়ে যায়। এজন্য ই হয়তো গ্রামের ছেলেরা এতো কর্মঠ।বেশ ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। ধন্যবাদ ভাইয়া খুব সুন্দর ভাবে গ্রাম বাংলার সৌন্দর্য নিজের অনুভূতি দিয়ে প্রকাশ করার জন্য।
এটা একদম আপু বাচ্চাদের ছোট থেকেই কাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলা উচিত
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা তো আমরা প্রত্যেকে জানি। তবে চর এলাকায় এই সৌন্দর্য কেন জানি না, আরো অনেক বেশি । শীতকালে এইসব জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তো মনোমুগ্ধকর হবেই। তাছাড়া আপনি যে এত সুন্দর একটা জায়গায় গিয়ে সকালবেলা একটা ধোঁয়া ওঠা গরম চা খেয়েছেন এবং সুন্দর প্রকৃত উপভোগ করেছেন , সেটা জেনে ভালো লাগলো। সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক বেশি মুগ্ধ হয়ে গেলাম ভাই, বিশেষ করে ঘাস গাছের ফটোগ্রাফি গুলো অনেক বেশি ভালো লেগেছে ।
চরের এদিকটায় অনেক সুন্দর বলতেই হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা 🍁