১৬তম পর্বঃ মেঘ বালিকা
13-06-23
৩০ জ্যৈষ্ঠ ,১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন 🌼🦋 । যাক, ইতোমধ্যে আপনাদের সাথে কয়েকটি গল্পের পর্ব শেয়ার করেছিলাম। আশা করছি আপনারা সবগুলো গল্পের পর্বগুলো উপভোগ করেছেন। দেখতে দেখতে মেঘ বালিকা গল্পের ১৬ তম পর্বে চলে এলাম। আশা করি আজকের পর্বটিও উপভোগ করবেন।
১৫ তম পর্বের পর থেকে
ডাক্তাররা চেক আপ করে বললো রিধির জন্ডিস হয়েছে! রিধির মা শুনেই বেহুশ! পাশের বাড়ির লিপা নামের এক মেয়ের জন্ডিস হয়েছিল। অনেক ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়েছিল। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। লিপা মেয়েটা মারাই যায় অবেশেষে। রিধির মা সেটা ভেবেই কান্না করছে। রিধির পাশে তার মা বসে আছে। কোনো কথা বলছে না। মুখে ঘুমটা দিয়ে রিধির মা কান্না করছে। এরই মাঝে চয়ন মামা এসে হাজির!
"আফা, ডাক্তার কি বললো? "
" ডাক্তার বলেছে রিধির নাকি জন্ডিস হয়েছে! "
" কই দেখি টেস্টগুলো? "
" রিধির বাবা টেস্টের রিপোর্ট আনতে গেছে। শুধু আমাকে ফোন দিয়ে বললো রিধির জন্ডিস হয়েছে। "
" জন্ডিস হয়েছে তো নরমাল! তুমি এতো মন খারাপ করছো কেন? রিধিকে বাড়িতে নিয়ে বেশি বেশি শরবত খাওয়াবে, তাহলেই ঠিক হয়ে যাবে। "
" শরবত খাওয়ালে ঠিক হয়ে যাবে কে বললো! "
" এটা তো রোগ নয় আফা! রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায় তখনই এমন হয়! "
" আমি শুনেছি জন্ডিস হলে মানুষ মারা যায়, ঔষধে কাজ করে না!
" আফা, এ যুগে এসেও যদি তুমি এমন কথা বলো তাহলে কেমন হবে? তোমার কাজ হলো রিধিকে ডাবের শরবত, বেলের শরবত এসব বেশি খাওয়াতে হবে। রিধির সামনে এসব কথা বললে এমনিতেই মন খারাপ করবে! "
" হুম। হসপিটালে থাকলে ভালো হবে নাকি বাড়িতে চলে যাবো! "
" বাড়িতে চলে যাও। গিয়ে বিশ্রামে রাখবে রিধিকে। সামনে পরীক্ষা এখন অসুস্থ হয়ে পরেছে। তাড়াতাড়ি সুস্থ্য করে তুলো রিধিকে। "
রিধির মা কিছুটা শান্ত হলো চয়ন মামার কথা শুনে। প্রযুক্তির ধ্যান-ধারণা সম্পর্কে রিধির মায়ের আইডিয়া কম। রিধিরও কম। বাড়িতে একটা মাত্র বাটন ফোন। সেটা দিয়েই সবার খোজঁ খবর নেয়।
রিধিকে বাড়িতে নিয়ে চলে আসে। মাটিতে খালি পায়ে হাটঁতে বলে ডাক্তার! আর প্রচুর পানি পান করতে হবে। এ কয়দিন কোনো পরিশ্রম করা যাবে না!
মিন্টু স্যারের প্রাইভেটে বিদায় অনুষ্ঠান। রিধি অসুস্থ থাকায় আর যাওয়া হয়নি। তবে মিন্টু স্যার ফোন দিয়ে ঠিকই বলেছিল অসুস্থ শরীর নিয়ে না আসার জন্য। মিন্টু স্যার রিধির জন্য একটা গিফট রেখেছিল। টুম্পাকে বলে দিয়েছিল সেটা দেয়ার জন্য। টুম্পা বিদায় অনুষ্ঠান শেষে সেটা নিয়ে সোজা চলে আসে রিধিদের বাড়িতে!
" কিরে রিধি! এখন কেমন আছিস তুই? "
" এইতো। মিন্টু স্যার কি বললো বিদায় অনুষ্ঠানে? "
" এসব কথা পরে। এখন বল, ডাক্তার কি বলেছে তোকে! "
" ডাক্তার কিছু ঔষধ দিয়েছে। আর শরবত খেতে বলেছে বেশি। "
" বুঝেছি। তাই কর তাহলে। আমি শুনেছি জন্ডিস হলে মানুষ কবিরাজি চিকিৎসা নিয়ে থাকে। সে চিকিৎসা নিয়ে নাকি অনেকেই ভালো হয়ে যায় দ্রুত! আমাদের বাড়ির পাশের একজনের হয়েছিল, তারপর কবিরাজি চিকিৎসা নিয়ে সে তো সাতদিনের মধ্যেই সুস্থ্য! "
" কি বলিস! জন্ডিসের চিকিৎসা কবিরাজির মাধ্যমেও ভালো হয়! ডাক্তার যে আমাকে কতগুলো ঔষধ দিল! "
" হুমম, ভালো হয়। না হলে আমি কি তোকে বলতাম। এখন তো ডাক্তারের ঔষধই দিয়েছে সেগুলো খেয়ে দেখ আপাতত! যদি দেখিস অবস্থা ভালো না হয়, তাহলে কবিরাজি চিকিৎসা নিতে পারিস! "
" ঠিক আছে। এখন বল তাহলে মিন্টু স্যার কি বললো তোদের? "
" কি আর বলবে! বলেছে পরীক্ষার হলে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। পরীক্ষার কাগজপত্র সব আগেই ঘুছিয়ে রাখতে হবে। এসবই বললো। আর তোর কথা তো বললো। ও! ভুলেই তো গেছি! এই নে ধর, তোর গিফট! "
" গিফট কে দিল? "
" মিন্টু স্যার দিয়েছে। আমাদেরও দিয়েছে। তোরটা স্পেশাল হবে হয়তো খুলে দেখ! "
" তোদের কি দিয়েছে বল আগে! "
" স্কেল, কলম, আরেকটা ফাইল! "
" ওহ আচ্ছা। "
মিন্টু স্যারের গিফট খুলতেই রিধি অবাক হয়ে যায়। টুম্পাদের যা দিয়েছে তার থেকে অনেক সুন্দর গিফট দিয়েছে। কলম, স্কেল, ফাইল ছাড়াও কিছু সেন্ট্রারফ্রুট, একটা রঙিন কলম। কলমটা প্যাকেটে মোড়ানো! রিধি গিফট পেয়ে ভীষণ খুশি!
" তোকে স্যার সেন্ট্রারফ্রুট ও দিল! আমাদের কিছুই দেয়নি! "
" হাহা! যা দিয়েছে সেটা নিয়ে ভালো থাক! শোন, কলেজে এডমিট কার্ড আনতে কবে যাবি তুই? "
" দুদিন পর গিয়ে নিয়ে আসবো। "
" আমারটা নিয়ে আসতে পারবি? "
" আমি তো নিয়ে আসতে পারবো। তবে স্যার যদি না দেয় তখন! "
" ওহ! আচ্ছা দেখি আমি যেতে পারি। "
" আচ্ছা। আমাকে বলিস তাহলে। আমি আজ যায় রে। ঠিকমতো ঔষধ খেতে থাক। ভালো না হলে কবিরাজ দেখাইস পরে। "
" ঠিক আছে! "
টুম্পা বিদায় নিয়ে চলে গেল। মিন্টু স্যার টুম্পাদের অনেক কথায় বলেছে। প্রাইভেটের বিদায় অনুষ্ঠানে থাকতে পারেনি রিধি। এজন্য একটু মন খারাপ। অসুস্থ শরীর নিয়ে যাওয়াও সম্ভব ছিল না। রিধি মনে মনে ভাবছে পরীক্ষার রেজাল্ট ভালো হলে একেবারে স্যারের বাসায় মিষ্টি নিয়ে যাবে!
চলবে....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.