১৫তম পর্বঃ মেঘ বালিকা
19-04-23
০৬ বৈশাখ ,১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন 🌼🦋 । যাক, ইতোমধ্যে আপনাদের সাথে কয়েকটি গল্পের পর্ব শেয়ার করেছিলাম। আশা করছি আপনারা সবগুলো গল্পের পর্বগুলো উপভোগ করেছেন। যাক, মেঘ বালিকা গল্পের ১৫ তম পর্বে চলে এলাম। আশা করি আজকের পর্বটিও উপভোগ করবেন।
১৪ তম পর্বের পর
"কিরে! তিনদিন হয়ে গেল তোর কোনো খোজঁ খবর নেই! কই আছিস তুই! "
টুম্পা ফোন দিয়েছে। কথা বলার মতো শরীরে শক্তি নেই। ঠোঠ শুকিয়ে গেছে। কি এক অজানা ঝড় যেন রিধির উপর দিয়ে যাচ্ছে। রিধির মা-বাবা খুব চিন্তিত তাকে নিয়ে। হঠাৎ করে এতো জ্বর এখনও কমছেই না। ডাক্তার দেখিয়েছে, টেবলেট দিয়েছে। সেগুলো নিয়মিত খাচ্ছে কিন্তু রোগ সারছে না!
-আমি কয়েকদিন ধরে অসুস্থ! এজন্য তোর সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি!
-কি হয়েছে তোর?
-তিন-চারদিন ধরে জ্বর। কোনোভাবেই যেন কমছে না।
-ডাক্তার দেখাস নি!
-দেখিয়েছি। ঔষধও দিয়েছে। সেগুলো খাচ্ছি।
-আচ্ছা, রেগুলার খেয়ে যা। মিন্টু স্যার তোকে খুজঁছিল।
-কেন?
-প্রাইভেট এ যাসনি যে তাই।
-ওহ! কি বলেছিস পরে?
-বলেছি স্যারকে অসুস্থ হয়তো তুই! তাই হলো।
-ভালো করেছিস। অসুখ সেরে উঠলো যাবো প্রাইভেটে।
-আচ্ছা। রেস্ট নে তাহলে। আমি কাল আসবো নে।
-ঠিক আছে, আসিস।
ফোন রেখে দেয় টুম্পা। অসুস্থ হলে মনে হয় যেন চোখের সামনে সব অন্ধকার। কোনো কাজ করার শক্তি পাওয়া যায় না। ইচ্ছা শক্তি প্রবল হারে লোপ পায়। চাইলেই কোনো একটা কাজ করা যায় না। সুস্থ্যতা আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত। তবে অসুস্থ হলেও ধৈর্যহারা হওয়া যাবে না। রিধি জানে, একমাত্র সৃষ্টিকর্তা পারে সুস্থ্য করে দিতে।
সাতদিন পর! রিধির শরীর এখন অনেকটা ভালো হয়েছে। জ্বর কমেছে। তবে রাতের বেলা ঠিকই কাঁপুনি দিয়ে জ্বর উঠে যায়। বিকেল বেলা মিন্টু স্যারের ফোন!
-আসসালামুআলাইকুম স্যার!
-ওয়ালাইকুম আসসালাম। রিধি তুমি কেমন আছো এখন?
-জ্বি স্যার। এখন আগের থেকে ভালো।
-তাহলে ভালো। শরীর পুরোপুরিভাবে ভালো হলে পড়াশোনা শুরু করে দাও। পরীক্ষার আর বেশিদিন নেই।
-জ্বি স্যার।
-কাকি কোথায় রিধি?
-পাশেই আছে আম্মা।
-তোমার আম্মার কাছে দাও ফোনটা।
রিধি ফোনটা তার মায়ের কাছে দিয়ে দেয়। পাশেই বসা ছিল তার মা।
- আসসালামুআলাইকুম কাকি?
- ওয়ালাইকুল আসসালাম। কেমন আছো বাবা?
- জ্বি কাকি ভালো। আপনি ভালো আছেন?
- কিভাবে ভালো থাকি বলো। রিধির শরীর তো জ্বর কমছেই না। ডাক্তার দেখিয়েছে, ঔষধও দিয়েছে তারপর জ্বর থেকেই যাচ্ছে।
- কাকি, রিধিকে শহরের কোনো ভালো ডাক্তার দেখান। কোনো চেকআপ করার দরকার হলে করে দিবে।
- দেখি বাবা কি করা যায়। সামনে পরীক্ষা, আর এখন আমার মেয়েটার অসুখ!
- চিন্তা করবেন না কাকি। ইনশাআল্লাহ, রিধি সুস্থ্য হয়ে যাবে।
- হুমম বাবা। সুস্থ্য হলে তোমার কাছে পাঠাবো।
- জ্বি, ঠিক আছে। রাখছি কাকি। আসসালামু আলাইকুম।
- ওয়ালাইকুম আসসালাম।
সালাম দিয়েই ফোন কেটে দেয় মিন্টু স্যার। মিন্টু স্যারের প্রিয় একজন ছাত্রী রিধি। প্রাইভেটে সবসময় ভালো করে। মেধার দিক দিয়েও সবার থেকে এগিয়ে। এজন্য মিন্টু স্যার আলাদা চোখে দেখে রিধিকে। মিন্টু স্যারের বিশ্বাস এইস এস সি তে এ+ পাবে রিধি । কিন্তু রিধির শরীর যেন ঠিকই হচ্ছে না।
ঐ দিন সন্ধ্যা বেলায় চয়ন মামার ফোন। মামার একমাত্র আদরের ভাগ্নী রিধি। তাকে নিয়ে কতো স্বপ্ন। মামা ভাগ্নে মিলে গ্রামে একটা ক্লিনিক দিবে। গ্রামের মানুষদের ফ্রি-তে চিকিৎসা করাবে। টাকার অভাবে গ্রামের অনেক মানুষই চিকিৎসা করাতে পারে না। তাই মামা ভাগ্নে মিলে গ্রামে একটা ক্লিনিক দেয়ার স্বপ্ন।
-আপা, রিধির শরীর কেমন এখন?
-আগের থেকে ভালো।
-তোমরা এখনও বাড়িতে বসে আছো কেন? শহরে এসে ডাক্তার দেখাও। এতোদিন ধরে অসুস্থ!
-এ কথা রিধিকে বল! কতোবার বলেছি ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা! কে শুনে কার কথা। এমনিতেই নাকি ভালো হয়ে যাবে!
-অসুখ শরীর নিয়ে কেউ গাফিলতি করে! সামনে আবার ফাইনাল পরীক্ষা।
-সেটা বলেছি আমি রিধিকে, ও এসব শুনে না। এখন একটু ভালো যে আর যেতেই চাইছে না ডাক্তারের কাছে।
-ঠিক আছে। রিধির শরীরের যত্ন নাও। রাখছি আপা।
-হুমম।
আজকের দিনটাই যেন রিধির অন্যরকম গেল! পরপর তিনজন ফোন দিয়ে খোঁজখবর নিয়েছে। হঠাৎ করে হারিয়ে গেলে অথবা অসুস্থ হয়ে গেলে আমাদের আপনগুলো ঠিকই অনুভব করে শূন্যতা। সেটা কারোর অনুপস্থির জন্য হতে পারে। অসুস্থতার কারণে রিধির অনেকদিন ধরে কোথাও যেতে পারছে না। এজন্য সবাই রিধির শূন্যতাও অনুভব করছে।
দশদিন পরের কথা! তখনও রিধি পুরোপুরিভাবে সুস্থ্য হয়নি। অসুস্থ শরীর নিয়ে রিধি প্রাইভেটে যায়। প্রাইভেটে গিয়ে যেন সব নতুন নতুন দেখতে পায়। এ দশদিনে কতো কি পড়িয়েছে! রিধিকে দেখে স্যার অবশ্য খুশি হয়। এতোদিন পর এসেছে। টুম্পাও এসেছে। মিন্টু স্যার জানে, অনেক পড়াই রিধির কাছে নতুন মনে হবে। তাই টুম্পাকে বলেছিল নোট করে রাখতে যাতে রিধিকে দিতে পারে।
টুম্পা অবশ্য সব নোট দিয়েছিল রিধিকে। পরীক্ষার আগের মুহূর্তে যতটুকু পড়া যায়। পরীক্ষার আর একমাস বাকি। রিধির এখনও কোনো কিছুই শেষ হয়নি। পুরোপুরি সুস্থ্যও যে হয়নি তখনও। পরীক্ষার পনেরোদিন আগে আবারও অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে রিধি। তার মা জোর করে নিয়ে যায় শহরের হাসপাতালে। ডাক্তার অনেকগুলো চেকআপ দিয়েছে। টেস্টগুলোর পরে বলা যাবে রিধির কি হয়েছে! রিধির মা খুব কান্না করছে। এতো অসুস্থ রিধি কখনো হয়নি। শরীর যেন আরও হলুদ হয়ে যাচ্ছে।
চলবে,,,,
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
রিধির এরকম অসুস্থতার কথা শুনে খুবই খারাপ লেগেছে। আসলে যেহেতু রিধি কয়েকদিন ধরে কারো সাথে কথা বলছে না এবং কোথাও যাচ্ছে না তাই সবাই তার শূন্যতা উপভোগ করে তাকে ফোন দিয়েছে। পরীক্ষার ১৫ দিন আগে আবারো রিধি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারপরে তার মা তাকে শহরের হাসপাতালে নিয়ে যায়। যেহেতু রিধি এরকম অসুস্থ আগে কখনো হয়নি তাই তার মা ভীষণ কান্নাকাটি করেছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বে কি হবে তা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
জি ভাইয়া। গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। খুব শীঘ্রই পরের পর্ব আসছে।