৯ম পর্বঃ মেঘ বালিকা
19-02-23
০৭ ফাল্গুন ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন!🌼🦋 আমি ভালো খারাপ মিলিয়েই আছি! যাক, ইতোমধ্যে তিনটি গল্প একসাথে লিখছি। আশা করি সব গল্পগুলো আপনাদের কাছে ভালো লাগবে আশা করছি। আজকে গল্পের ৯ম পার্ট লিখলাম। আশা করি আজকের পর্বটিও উপভোগ করবেন।
৮ম পর্বের পর থেকে
কোনো শত্রুতা নেই। তবে কেন এমন করলো গৌতম দাদা আমি বুঝতে পারছি না!
-কারো ভালো কি কেউ দেখতে পারে। হয়তো এমনটাই করেছে। তোদের মিষ্টি তো শহরের সবাই পছন্দ করে! সেটা হয়তো পাশের দোকানদার গৌতম দাদার শরীরে লেগেছে!
-কি জানি! আমাকে মেয়ের মতো আদর করতো। উনি এমনটা করবে, আমি ভাবতে পারছি না!
-তাহলে কি হতে পারে! আচ্ছা, তোর বাবার সাথে শেষ কি কথা হয়েছিল?
-তেমন কোনো কথা হয়নি! হঠাৎ করেই রাতে পুলিশ ফোন দিয়ে বাবাকে ধরে নিয়ে যায়। আমি আর মা ভয়ে আর ঘুমাতে পারিনি। তুই তো জানিস আমি আর মা ছাড়া আমাদের কেউ নেই। আত্নীয়স্বজনরা থেকেও নেই! কখনো কাউকে পায়নি পাশে! মহেশ দা কে পাশে পেয়েছি তবে। আমাদের পরিবারের বিপদে পাশে পেয়েছি।
-মহেশ দা কে?
-তুই চিনবি না! আমাদের পাশের বাড়ির একজন ছেলে। অনার্সে পড়াশোনা করছে। আমাদের প্রতিবেশি হয়েও বিপদে মহেশ-দা কে পাশে পেয়েছি। এখনও বাবাকে পুলিশে ধরে নেয়ার কথা শুনেনি। শুনলে ঠিকই চলে আসতো।
-মহেশ দা এখন কোথায়?
-মনে হয় ভার্সিটিতে আছে। চলে আসে সপ্তাহে সপ্তাহে।
-ওহ আচ্ছা! মহেশ দা আবার তোকে পছন্দ করে না তো!
-আরে না! কি যে বলিস তুই এসব!
-এখন কি আর মানুষকে বিশ্বাস করা যায়! উপকার করার পিছনেও কিন্তু স্বার্থ থাকে।
-তবে মা-বাবা দুজনই মহেশ-দা কে খুব ভালোবাসে। বলতে গেলে পছদ করে। মা মাঝে মাঝে আমাকে বলে ছেলেটা অনেক ভালো। ঈশ্বর স্বয়ং আমাদের কাছে পাঠিয়েছে দেবদূত হিসেবে।
-ওহ আচ্ছা! আন্টি তাহলে অলরেডি চয়েস করে বসে আছে। তবে যায় বলিস না কেন! ব্যাপারটা কিন্তু একটু ভেবে দেখতে পারিস!
-কোন ব্যাপারটা?
-এই যে মহেশদা! তোর বর্ণনা শুনে বুঝা যাচ্ছে ছেলেটা ভালো অনেক।
-হুম ভালো তো অবশ্যই! মা-বাবা-র ইচ্ছের বিরুদ্ধে তো আর যাওয়া যাবে না!
-হুমম। এখন কি করবি তাহলে! আঙ্কেলকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল, যাবি না থানায় দেখতে ?
-হুমম! বিকালে যাবো! আসার সময় মাকে বলে এসেছি মহেশ-দাকে ফোন দিতে। মহেশ-দা এসব বুঝবে। আর হসপিটালেও যেতে হবে। গৌতম দা-র কেন এমন হলো তাই জানতে হবে।
-হুমম। মহেশদা আসলে কাজটা সহজ হবে। তুই এসব নিয়ে চিন্তা করিস না। আঙ্কেলের কিছু হবে না দেখিস।
-তাই যেন হয়!
দেখতে মিন্টু স্যারের প্রাইভেটে এসে হাজির হলো! সবাই দাড়িঁয়ে আছে বাহিরে! স্যার কয়েকটা ব্যাচ শেষ করে রিধিদের পড়ানো শুরু করে। কিছুক্ষণ পরে একটা ব্যাচের ছুটি! বেশ কদিন পর মিন্টু স্যারের প্রাইভেটে এসেছে রিধি! এর কারণটা আগে থেকেই জানে মিন্টু স্যার!
রিধিকে দেখেই স্যার জিজ্ঞেস করে,
-কেমন আছো রিধি?
-জি স্যার, ভালো! আপনি?
-হুম ভালো! পড়াশোনা সব ঠিকঠাক চলছে তো নাকি!
-জি স্যার চলছে!
-টুম্পার কি হয়েছে? মন মরা হয়ে বসে আছো কেন?
-স্যার, ওর মনটা আজ ভালো নেই। আসতে চাইনি প্রাইভেটে আমি নিয়ে এসেছি। ওর বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে মিথ্যে অভিযোগে!
-কেন? কি করেছিল টুম্পার বাবা?
-মিষ্টিতে ভেজাল মিশ্রিত পেয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট এসে! এরই মধ্যে অভিযোগ আসে টুম্পাদের মিষ্টি খেয়ে গৌতম দাদা নামের একজন হাসপাতালে ভর্তি!
-কি বলো এসব! আমার পছন্দের মিষ্টি হলো টুম্পাদের দোকানের। এমনতো কখনো পায়নি কিছু!
-জি স্যার সবাই সেটাই জেনে আসছে।
-আচ্ছা, টুম্পা তুমি মন খারাপ করো না! সত্যের সব সময় জয় হয়, এটা মনে রাখবে।
টুম্পা কোনো কথা বলছে না! মন ভালো নেই। শুধু তার বাবার কথাই মনে পরছে । আনমনে একপাশে বসে আছে টুম্পা। স্যার এদিকে পড়াচ্ছে। টুম্পা আনমনে ভাবছে, স্যার সেটা ভালো করেই দেখতে পেয়েছিল। কিন্তু কিছু বলে নি! এমন অবস্থায় কিছু বলাও ঠিক হবে না! টুম্পার মন খারাপ দেখে রিধিরও ভালো লাগছে না! টুম্পা সকাল থেকে কিছু খেয়েও আসেনি হয়তো!
স্যারের প্রাইভেট শেষে টুম্পাকে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসে রিধি! গতকাল রাত থেকে কিছু না খাওয়া এমন অবস্থা হয়েছে। টুম্পার মায়ের শরীরটাও ভালো নেই! ঠিক কিছুক্ষণ পর মহেশদা এর ফোন!
-মাসিমা, কাকাকে নাকি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে?
-হুমম রে! (এই বলে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দেয় টুম্পার মা)
-আপনি চিন্তা করবেন না। আমি ব্যবস্থা করছি।
-হুমম!
-কি জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ কিছু বলেছে কি মাসিমা?
-মিষ্টিতে নাকি ভেজাল পেয়েছে। তুই তো জানিস তোর কাকা এমন কাজ কি করতে পারে! পাশের দোকানের গৌতম দা নাকি তোর কাকার দোকানের মিষ্টি খেয়ে হসপিটালে ভর্তি!
-তাহলে নিশ্চয়ই গৌতম দা-র ষড়ঢ়ন্ত্র এটা! আগের বারও আপনাদের সাথে মিথ্যে বলে সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছিল। এবার তা হতে দেয়া যাবে না। আমি এসে সব ব্যবস্থা করছি মাসিমা!
-তুই ছাড়া কে আছে আর! তুই আয় তাড়াতাড়ি।
-আপনি টেনশন করবে। টুম্পাকেও বলবেন টেনশন না করতে। এই বলে ফোন কেটে দেয় মহেশদা!
কিছুটা শক্তি পেয়েছে টুম্পার মা! রিধি পুরো ঘটনাটা এবার বুঝতে পারে। তাহলে গৌতম দা-ই সব কারসাজি। আগেরবার সম্পত্তি হাসিলের জন্য বর্থ্য হয়েছিল। এবার মিথ্যে মামলা দিয়ে টুম্পার বাবাকে থানায় পাঠিয়েছে। এ সুযোগে যদি দখল করতে পারে! কিন্তু তা কি আর পারবে। মহেশদা আছে তাদের পাশে। রিধি টুম্পার মাকে টেনশন করতে না বলে। রিধি তারপর বাড়িতে চলে আসে। কিন্তু টুম্পাদের নিয়ে কাহিনীটা রিধিকে অনেকটা ভাবিয়েছে। এমন মানুষও আছে তাহলে। সম্পত্তি হাসিলের জন্য মিথ্যে মামলা!
চলবে.....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
টুম্পার বাবার এই বিষয়টি শুনে সত্যি ভীষণ খারাপ লেগেছে আমার কাছে। মিথ্যা ষড়যন্ত্রের টুম্পার বাবাকে পুলিশের কাছে পাঠিয়েছে। টুম্পার বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছে তাই টুম্পার মন খারাপ হওয়ারই কথা। আশা করছি মহেশদা এসে সবকিছু ঠিক করে দেবে তাদের পরিবারের সমস্যা গুলো। এবং টুম্পার বাবাকে মুক্তি করে আনবে। এই গল্পটির পর্বগুলো যত পড়ছি ততই ভালো লাগছে আমার কাছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
জি ভাইয়া! সামনের পর্ব শীঘ্রই পাবলিশ করা হবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া 🌼🦋
টুম্পার বাবাকে পুলিশে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষরটা আসলে অনেক খারাপ লাগল। গৌতম দাদা টুম্পাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। আসলে যেহেতু টুম্পার বাবার কোন দোষ নেই তাহলে সে ভালো ভাবে ছাড়া পাবে।সব চেয়ে বড় কথা সত্যের জয় চিরদিনই হয়।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর লিখেছেন।
জি আপু! আপনি একদম ঠিক বলেছেন। সত্যের জয় একসময় ঠিকই হয়! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু
মেঘ বালিকা এই গল্পটি কিন্তু আমি যত পড়ছি ততই ভালো লাগছে আসলে। আপনার এই গল্পটির প্রত্যেকটি পর্ব আমার পড়া হয়ে গিয়েছে। এখন তো অপেক্ষায় আছি বাকি পর্বগুলো পড়ার কখন শেষ হবে ভেবে পাচ্ছি না। আসলে টুম্পার বাবাকে এভাবে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছে এই বিষয়টার কারণে খুবই খারাপ লেগেছে। টুম্পার পরিবারের পাশে মহেশ দা আছে এটা জেনে ভালো লাগলো। গৌতম দাদা টুম্পাদের বিরুদ্ধে এভাবে ষড়যন্ত্র কিভাবে করল। যাই হোক অপেক্ষায় থাকলাম তাহলে পরবর্তী পর্বের জন্য।
জি আপু! শুরু থেকে আপনি আমার গল্পটি পড়ে আসছেন, এটাই আমার কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি 🌼🦋। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি গল্প লিখে শেয়ার করেছেন। টুম্পার বাবাকে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে গিয়েছিল সত্যি এই বিষয়ে আমার কাছে অনেক খারাপ লেগেছে। গৌতম দাদা টুম্পাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে ধরিয়ে দিয়েছিল। টুম্পার পরিবারের পাশে মহেশ দা আছে এটা জেনে আমার খুবই ভালো লাগলো। কারণ বিপদে-আপদে মানুষের পাশে মানুষ থাকা এটাই মানুষের পরিচয়। দারুন লিখেছেন ভাই গল্পটি বিশেষ করে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
জি ভাই! আপনি ঠিক বলেছেন। বিপদে মানুষের পাশে থাকা এটাই সবচেয়ে বড় বিষয় 🌼🦋