২য় পর্বঃ মুঠোফোনে প্রেম

21-11-2022

০৭ অগ্রহায়ণ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন 🌼। আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আজ থেকে মাঠে গড়ালো ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ! পছন্দের টিমের খেলা সবাই উপভোগ করবেন এটাই আশা করছি। যায়হোক, আপনাদের সাথে ইতিমধ্যে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম। আজকে গল্পের দ্বিতীয় পার্টটি লিখলাম। আগের পর্বটি না পড়ে থাকলে লিংকে প্রবেশ করে পড়ে আসতে পারেন।

love-1100255_1280.jpg

copyright free image from pixabay

১ম পর্বের পর

নীলা শুভর কথা শুনে মিটিমিটি করে হাসতে থাকে! কথা শুনতে ভালোই লাগছে। শুভর অনেক পড়া এখনও বাকি! আজাদ স্যার অনেক পড়া দিয়েছে। কাল না পারলে খবর আছে! নীলার তো মনেই ছিল না। পরোক্ষণেই মনে হলো আজাদ স্যারের পড়া! রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে অনেকগুলো যৌগের নাম দিয়েছে। কাল করে যেতে না পারলে খবর আছে! নীলা রসায়নে একটু দূর্বল! শুভর কাছে সে তখন যৌগগুলো সম্পর্কে জানতে চায়। শুভ অবশ্য যৌগগুলো আগে পড়েনি। মোটামোটি ধারণা হয়েছে আজাদ স্যারের ক্লাস করে। তবে যেটুকু বুঝেছে সেটুকুই পারবে বুঝাতে। শুভ তখন কয়েকটি যৌগ সম্পর্কে নীলাকে বলে। যৌগগুলো কিভাবে তৈরি হলো, সেটাও বুঝতে পারে! কখন যে ঘড়ির কাটাতে সাতটা বেজে গেল খেয়ালই নেই! ঠিক তখন নীলার মা পাশের রুম থেকে নীলাকে ডাকছে। মায়ের ডাক শুনে শুভকে বিদায় জানিয়ে ফোন রেখে দেয়! চা বানিয়েছে নীলার মা! শীতের সময় চা খেলে ভালোই হয়! নীলা আর নীলার মা গল্প করতে করতে চা খেয়ে নেই।

নীলা চা খেয়ে পড়তে বসে। টেবিলের সামনে এক সেট বই সাজানো। রসায়ন নিয়েছে। আজাদ স্যারের বাড়ির কাজ করতে হবে। নীলা কয়েকটি যৌগ সম্পর্কে বুঝতে পেরেছে! বাকি কয়েকটা বুঝেনি। আগামীকাল শুভর কাছ থেকে বুঝে নিবে। সকালে নীলা কলেজে চলে যায়। ক্লাসের সামনে সিটে এসে বসে নীলা। ঘড়িতে তখন সাড়ে নয়টা বাজে! শুভ এখনও ক্লাসে আসেনি। মনে মনে তাকে খুঁজতে থাকে নীলা। আজাদ স্যার ক্লাসে আসতেছে। স্যারের পিছন পিছন শুভ! স্যারের পিছন পিছন আসলো যে শুভ! নীলা শুভকে মেসেজ দেয়। "তুমি এতো লেইট করে আসলে কেন? " শুভর ফোন পকেটে। স্যারের ক্লাসে কখনো বের করে না। সবসময় সাইলেন্ট মোডে রাখে ফোন। আজাদ স্যার ক্লাস শুরু করেছে। ক্লাসে নীলা আর শুভ বাদে কেউ বাড়ির কাজ করেনি! স্যার সবাইকে কানে ধরতে বলে। কিন্তু ক্লাসের চঞ্চল আরেকটি ছেলে। নাম তার রাকিব! দেখতে মোটাসোটা। কথায় রস নেই, তবে বেশি কথা যে বলে সবাই জানে! আজাদ স্যারকে রিকোয়েস্ট করে। আজকের মতো মাফ করে দেয় সবাইকে। আগামীকাল থেকে বাড়ির কাজ না আনলে সবাইকেই কানে ধরাবে স্যার।

রাকিব চাপার কারণে স্যারেরা তাকে ভালো করেই চিনে। পড়ালেখায় তেমন ভালো না হলেও কথায় পটু! রাকিব ক্লাসের শুরুর দিনই নীলাকে পছন্দ করে ফেলে। ক্লাসের কয়েকজনকে বলে দিয়েছিল যে নীলাকে তার ভালো লাগে। এদিকে রাকিব আবার শুভর সাথে তেমন একটা কথা হয়না। মাঝে মাঝে হাই, হেলো,কেমন যাচ্ছে দিনকাল? এসব ছাড়া তেমন কথা হয়না। রাকিব শহরের লোকাল বয়! ক্লাসের ছেলেরাও তেমন কিছু বলতে চায়না ওর ব্যাপারে। শুভ আরেক গ্রাম থেকে আসে। গ্রামের ছেলে শহরের রীতিনীতি এর দিকে অভ্যস্ত নয়। আজাদ স্যারের ক্লাস শেষে নীলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে! ঠিক তখন রাকিব সেখানে যায়। সাথে ছিল অন্তর। রাকিবের বন্ধু। রাকিব নীলাকে গিয়ে তার ভালো লাগার কথা বলে ফেলে! নীলা একদম হতবাক হয়ে যায়! নীলা জানে ছেলেদের কিভাবে কনভেন্স করতে হয়! রাকিবকে সে ভাই বানিয়ে ফেলে! তার তো ভাই নেই, সো রাকিব আজ থেকে তার ভাই। রাকিব আর কিছু বলার সুযোগ হয়নি। সেখানে থেকে চলে আসে!

নীলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে শুভকে মেসেজ দেয়! "বারান্দায় আসো! " শুভর ফোন সাইলেন্ট। কিছুক্ষণ পর ফোনটি হাতে নিতেই দেখে নীলার মেসেজ! শুভ বারান্দায় যায়! বারান্দায় গিয়ে দেখে নীলা দাঁড়িয়ে আছে। নীলা কারণ ছাড়াই হাসছে! শুভ কিছুটা অবাক হয়। নীলা তখন বলে বিষয়টা! রাকিব তাকে প্রপোজ করতে এসেছিল, এখন তাকেই উল্টো ভাই বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। নীলার সাথে এমন আরও কয়েকবার হয়েছে। স্কুল লাইফে এক ছেলে তো নীলার জন্য ব্লেড দিয়ে হাত পর্যন্ত কাটতে চেয়েছিল! এই ব্যাপারগুলো নীলার কাছে ফানি ছাড়া আর কিছুই না। এগুলো সব আবেগের দুহাই! শুভ কিছুটা খুশি হয়। কারণ সে তাকে ভালোবাসে। কিন্তু বলতে পারে না। আর নীলার কাছে গেলেই শরীর কাঁপতে শুরু করে দেয় শুভর! রাতে অনেক কিছুই বলেছিল নীলাকে। নীলা তখন বলে, "এতো রোমান্টিকতা কোথা থেকে আসে?" শুভ কিছুটা লজ্জা পায়! নীলা হাসছে। তবে নীলার কাছে ভালোই লেগেছিল কথাগুলো শুনে। নীলা তখন শুভকে বলেই ফেলে, "ভালোবাসো কাউকে?" শুভ হা করে তাকিয়ে আছে নীলার দিকে!

শুভ তখন বলেই দেয়! ভালোবাসি একজনকে তবে সে জানে না! জানেনা কেন? আমি বললে তো জানবে! এদিকে আরেক ক্লাসের সময় হয়ে গেছে। ফাতেমা ম্যাডামের ক্লাস হবে এখন। ক্লাসে চলে যায় দুজন। শুভ তার সিটে গিয়ে বসে পরে। নীলা তার সামনে বসেছে। পিছন থেকেই নীলাকে সে দেখছে লুকিয়ে লুকিয়ে। নীলার গালে একটা ছোট করে তিল। খুব মায়াবতী লাগে এজন্য। হাসলে যেন ফুটন্ত গোলাপের মতো সুন্দর লাগে। এদিকে ফাতেমা ম্যাডাম ক্লাস শুরু করে দেয়। ম্যামের ক্লাস করতে নীলার ভালোই লাগে। কবিতার পার্টগুলো খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দেয়। একবার বুঝতে পারলে পরেরবার না পড়লেও চলে। ক্লাস শেষে কলেজ ছুটি দিয়ে দেয়। নীলা বাসায় চলে যায়! নীলার বাসা যেতে দেরি লাগেনা বেশি। শুভর বাসা যেতে খানিকটা সময় প্রয়োজন হয়! বাস দিয়ে প্রতিদিন যাওয়া আসা করতে হয় শুভর। সন্ধ্যা বেলায় নীলার মেসেজ! "তুমি লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে দেখছিলে কেন? "

চলবে....



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

ভাইয়া খুব সুন্দর একটা জায়গায় গিয়ে থেমে গেলেন এটা কি ঠিক হলো। আপনার এই গল্পের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিলাম হঠাৎ করে শেষ হয়ে গেল😪। আমার কাছে আবার গল্প উপন্যাস পড়তে খুব ভালো লাগে। একবার মজা পেলে পড়া শেষ না করে ওঠিনা। নীলা আর শুভর মুঠোফোনের প্রেম কাহিনি খুবই রোমান্টিক ছিল। বাকি গল্পের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

হাহাহা আপু!! এটাই গল্পের নিয়ম, শেষে গিয়ে ইমোশন লাগিয়ে শেষ 😁। পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই আসবে। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

প্রথম পর্ব পড়েছিলাম আজ দ্বিতীয় পর্ব পড়লাম।বেশ ভালোই লিখছেন।আহা রাকিব কে যে নীলা ভাই বানিয়ে ফেললো ব্যাপারটা বেশ মজার ছিলো।শুভ পিছন থেকে নীলাকে দেখেছিলো,নীলা সেটা কি করে জানলো।যাক তাহলে পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ

 2 years ago 

হুমম আপু। রাকিবকে নীলা ভাই বানিয়েই ছাড়লো 😁 । পরের পর্ব খুব শীঘ্রই আসবে।

 2 years ago 

শেষ লাইনটা পড়ে পরের পর্ব পড়ার আগ্রহটা আরো বেড়ে গেল। কোথায় শেষ করলেন ভাইয়া? তাছাড়া নীলার বুদ্ধি ভালো রাকিবকে ভাই বানিয়ে নিয়েছে। যাতে পরবর্তীতে আর বিরক্ত না করে। রাকিব কি এটা মেনে নিবে। নিলাও মনে হয় মনে মনে শুভকে পছন্দ করে ফেলছে। যাই হোক ভাইয়া গল্পটা পড়তে খুবই ভালো লাগছে। বেশ রোমান্টিক গল্প লিখছেন। পরবর্তী পর্বে অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

রাকিব এখন নীলার ভাই 😁 । মেনে তো নিতেই হবে । ধন্যবাদ আপু 🌼

 2 years ago 

অসাধারণ একটি গল্প ছিল ভাইয়া ।আমার কাছে এমন গল্প গুলো পড়তে বেশ ভালো লাগে। আর সেগুলো যদি হয় রোমান্টিক তাহলে তো কথাই নেই। সুন্দর একটি মুহূর্ত গিয়ে গল্পটা শেষ করে দিলেন। তৃতীয় পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া। খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন পরে পর্ব। কি হল জানার বেশ ইচ্ছে।

 2 years ago 

আপনার ভালো লাগে জেনে খুশি হলাম আপু! পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই আসবে। ধন্যবাদ আপনাকে 🌼🦋

 2 years ago 

বেশ দারুন তো। নীলার হাব ভাবে তো বলে সেও শুভ কে পছন্দ করে। যদিও জানিনা গল্পের শেষ কোন দিকে গড়াবে। প্রথম পর্বটা পড়া হয়নি। রাতে বাসায় যেয়ে পড়ে নিবো৷ ভালো লিখেছেন ভাই। একদম যেনো কল্পনা করছিলাম ঘটনাটা।

 2 years ago 

হুমম ভাই 🌼🌼। ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য।

 2 years ago 

ধুর ভাইয়া এমন জায়গায় কেউ থামে? ভালই তো লাগছিল নীলা আর শুভর মুঠোফোনের প্রেম। মাঝখান দিয়ে আপনি আবার কিছুদিন অপেক্ষা করাবেন। নেক্সট পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

জি আপু 😁। পরের পর্ব খুব শীঘ্রই আসবে। ধন্যবাদ আপনাকে

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 68152.98
ETH 3536.22
USDT 1.00
SBD 2.86