১ম পর্বঃ মুঠোফোনে প্রেম

16-11-2022

০২ অগ্রহায়ণ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় ভালো আছেন 🌼। আমি ভালো আছি। যাক, আজকে চলে এলাম আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করার জন্য। গল্পটি লেখা শুরু করেছি। কয়েকটি পার্টে আপনাদের সাথে গল্পটি শেয়ার করবো। আশা করছি ভালোই লাগবে আপনাদের!

love-1100255_1280.jpg

copyright free image from pixabay

ঘড়িতে তখন আটটা বেজে ত্রিশ মিনিট। কাথা গায়ে দিয়ে নীলা শুয়ে আছে। পাশের রুম থেকে নীলার মা ডাকছে। বেলা অনেক হয়েছে! এখন জমিদারের মেয়ের মতো ঘুমাচ্ছে। মায়ের চেচাঁমেচি শুনে নীলা এক লাফে ঘুম থেকে উঠে পড়ে। নীলার মা প্রতিদিন সকালে রুটি তৈরি করে। নীলা মাঝে মাঝে তার মাকে সাহায্য করে। বাসার সব কাজকর্ম নীলার মা করে থাকে। নীলা বড় হয়েছে কিন্তু এখনও নিজের ভালোটা যেন বুঝতেই পারে না! নীলা ফ্রেশ হয়ে চলে যায় তার মায়ের কাছে। রুটি বানানো শেষ! 'এতক্ষণে তোর খবর। ' 'সরি মা, আজ দেরি হয়ে গেছে। ' নীলার মা অবশ্য নীলাকে কিছু বলে না। কারণ একমাত্র আদরের মেয়ে নীলা! ছোট বেলা থেকেই অনেক আদর পেয়েছে মা বাবার। সাড়ে নয়টা থেকে নীলার কলেজ। এবার নতুন কলেজে নীলা ভর্তি হয়েছে। দশম শ্রেণী পাস করে এখন নতুন জীবন শুরু। দশম শ্রেণীতে নীলা ভালো রেজাল্ট করেছে! তার মা বাবার স্বপ্ন নীলা মেডিকেলে পড়বে! এজন্য নীলাকে সায়েন্স নিয়ে কলেজে ভর্তি করিয়েছে।

নীলার বাবা অবশ্য ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। নীলার মাকেই সব সামলাতে হয়! নীলা সকালের নাস্তা করে কলেজে যাবার জন্য রেডি হয়ে পড়ে। বাসা থেকে কলেজ কাছেই। আজকে নীলার প্রথম ক্লাস। একটু এক্সাইটেড নীলা! নবীনবরণ যেটাকে বলে। কলেজে যেতেই অনেক অপরিচিত মুখ! তবে চিনতে আর বেশিক্ষণ লাগেনি। পরিচয় হয় শ্রাবন্তী নামের এক মেয়ের সাথে। নীলার মতোই শ্রাবন্তী মেয়েটা কিছুটা চঞ্চল প্রকৃতির। দেখতেও সুন্দর। আরেক গ্রাম থেকে এসেছে এখানে। নীলা দেখতে সুন্দর আর চঞ্চল প্রকৃতির। নবীনবরণ দিনেই এক ছেলে নীলাকে চয়েস করে ফেলে! এ আর নতুন কিছু নয়! নীলা স্কুলে থাকা কালীন সময়েও বেশ কয়েকটি প্রেমের অফার পেয়েছে। কিন্তু নীল এসবে পাত্তা দেয়নি কখনো! ক্লাসে স্যারেরা চলে এসেছে। আজকে নীলাদের নবীণবরণ! প্রধানশিক্ষক প্রবেশ করতেই সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানায়। তারপর শুরু হয় অনুষ্ঠান। প্রথমেই পরিচিতি পর্ব। একে একে স্যার ও ম্যাডামরা পরিচয় দেয় তাদের। তারপর শুরু হয় নবীনদের পরিচিত পর্ব।

মেয়েদের পাশ থেকে শুরু হয় পরিচিতি পর্ব। শ্রাবন্তী প্রথমে তার পরিচয় দেয়। তারপর একে একে সব মেয়ে পরিচয় দেয়ার পর নীলা তার পরিচয় পর্ব দেয়। ইতিমধ্যে নীলাকে অনেক ছেলেই চিনে ফেলেছে। নীলা বোরকা পরে এসেছে। মাথায় হিজাব করা। খয়েরী রঙের হিজাব। ছেলেদের দৃষ্টি নীলার দেখি বেশি! তারপর ছেলেদের পরিচয় পর্ব শুরু। একে একে সবাই পরিচয় পর্ব দেয়। ঠিক তখন একটি ছেলে একটু স্মার্ট মনে হয়। শার্ট ইংক করা। দেখে ভদ্র মনে হয়েছে। ছেলেটির নাম শুভ! আরেকগ্রাম থেকে এখানে পড়তে এসেছে। কথাশুনেই বুঝতে পারে নীলা ছেলেটি ভদ্র। প্রথমদিন তেমনভাবে আর কথা হয়নি কারো সাথে নীলার। পরেরদিন আবার ক্লাস। সকাল নয়টা থেকে ক্লাস শুরু। ক্লাসে শ্রাবন্তী এসে বসে রয়েছে। নীলার জন্য তার জায়গাটা রেখে দিয়েছে পাশের বেঞ্চেই। একে একে সবাই ক্লাসে আসতে থাকে। তারপর শুভও ক্লাসে প্রবেশ করে। নীলার পিছনের বেঞ্চে বসেছে। শুভ মেয়েদের সাথে তেমন কথা বলে না। লাজুক ছেলে।

ক্লাসে সবার আগে শুভ পড়ার উত্তর দিয়ে। কয়েকদিনেই স্যারদের পছন্দের ছাত্র হয়ে যায় শুভ! শুভ পড়াশোনাও সিরিয়াস। যেহেতু সায়েন্স সাবজেক্ট নিয়েছে। তো প্রচুর পড়তে হবে। একদিন ক্লাসে আজাদ স্যার রসায়নের রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে পড়া দিয়েছিল। কিন্তু কেউ সেই পড়াটা দিতে পারেনি। এজন্য ক্লাসের সবাইকে নানাম কথা শোনায়। এরপর দিন শুভ ক্লাসে আসতে নীলা শুভর কাছে যায়! নীলা একটু চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে। এজন্য সে স্বেচ্ছায় গিয়ে শুভর সাথে কথা বলে। নীলা রাসায়নিক বিক্রিয়ার একটি বিক্রিয়া বুঝতে ছিল না। শুভর কাছে যায় বুঝার জন্য। শুভ কিছু না বলেই নীলাকে বিক্রিয়াটি সুন্দর করে বুঝিয়ে দেয়! তারপর থেকে নীলার শুভর সাথে ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়। তারপর নীলার কিছু বুঝতে সমস্যা হলে শুভর কাছে এসে সেই টপিক বুঝে নেয়!

শুভর নীলাকে ভালো লেগে যায়। কিন্তু সে বলতে পারে না যে নীলাকে তার ভালো লাগে। একদিন সন্ধ্যায় শুভ টেবিলে বসে পড়ছে। পাশে তার বাটন ফোন। সিম্পনি মডেলের। হঠাৎই টুং করে একটা মেসেজ! হাই! নাম্বারটা শুভর কাছে অচেনা মনে হলো। শুভ প্রথমে রিপ্লাই দিতে চায়নি। পরে অবশ্য রিপ্লাই দেয়। কে আপনি? আমি নীলা,চিনতে পেরেছো! এবার ঠিকই চিনতে পারে শুভ। কিন্তু শুভ অবাক হয়! তার নাম্নার পেল কোথায় নীলা? নীলা তখন বলে এক ফ্রেন্ডের কাছ থেকে নিয়েছি! শুভ তখন কথা বলতে শুরু করে। জানালার পাশ দিয়ে চাদঁ দেখা যাচ্ছে। আর সেই চাদেঁর মাঝখানে নীলার মুখটা দেখা যাচ্ছে। শুভ শুনেছে, প্রিয় মানুষের কথা স্মরণ করে চাদেঁর দিকে তাকালে নাকি তার মুখ দেখা যায়! নীলার মুখটাও সে চাদেঁর মাঝে দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু নীলা কিছুটা অবাক হয়! কারণ যে ছেলেটা ক্লাসে সবসময় চুপচাপ বসে থাকে সে ছেলেটা এতো রোমান্টিক হয় কেমন করে!

চলবে.....



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

আপনার মুঠোফোনের গল্প পড়তে ভালোই লেগেছে। সত্যি বলতে যারা এমন চুপচাপ সভাবের থাকে, তারাই বেশি রোমান্টিক হয়।শুভ আর নীলার সম্পর্ক ভালোর দিকে যাবে মনে হচ্ছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।

 2 years ago 

জি আপু। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য 🌼

 2 years ago 

ভালো লিখেছেন।গল্পেট বেশির ভাগই চরিএের নামই সব সময়ই নিলা হয় কেন😂।আর নীলা নামের মেয়েগুলো অনেক সুন্দর হয়।যাই হোক পরবর্তী পর্বে শুভ আর নীলার কি হলো তাই জানতে পারবো হয়ত।ধন্যবাদ

 2 years ago 

হাহাহা! নীলা না হলে গল্প জমে না। ধন্যবাদ আপু

 2 years ago 

বাহ ভাইয়া খুব চমৎকার করে গল্পটা শুরু করেছেন। খুব ইন্টারেস্টিং হবে পর্বগুলো বোঝা যাচ্ছে। ধীরে ধীরে নীলা শুভর মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসায় রূপ নেবে হয়তো। কিন্তু শুভ যে লাজুক প্রকৃতির সে কি নীলাকে ভালোবাসার কথা জানাতে পারবে। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়। খুব ভালো লেগেছে গল্পটি। ধন্যবাদ আপনাকে।।

 2 years ago 

আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু 🌼। ধন্যবাদ আপু

 2 years ago 

গল্পটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। নীলা শুভ নাম দুটি সুন্দর হয়েছে। গল্পটা পড়ে মনে হচ্ছে খুব রোমান্টিক গল্প। বাকি পর্বের আশায় রইলাম ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য 🌼

 2 years ago 

আপনার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো আমার কাছে। নীলা এবং শুভ তাদের নাম যেমন সুন্দর তাদের গল্পটিও তেমন সুন্দর। শেষের দিকে তাদের গল্পটি খুবই ভালোর দিকে যাবে শুরু থেকে পড়ে আমার যা মনে হল। আপনার পরের পর্বটি দেখার ওদির আগ্রহে বসে থাকবো।

 2 years ago 

জি ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। খুব শীঘ্রই পরের পর্ব আসতেছে!

 2 years ago 

নীলা আর শুভর প্রেম এ ভাবেই চলতে থাকুক। অনেক প্রেম এভাবেই শুরু হয়েছে। আমার অনেক বন্ধু বান্ধবীও কলেজে উঠে প্রেমে পড়েছে, এখন তারা হ্যাপি ম্যারেড কাপল।অনেকের বেবীও হয়ে গেছে। খুব ভালো এগোচ্ছে গল্প টা। আশা করব যেনো হ্যাপি এন্ডিং হয়।

 2 years ago 

জি দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ 🦋🌼। পরের পর্ব খুব শীঘ্রই আসবে

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68183.21
ETH 3545.21
USDT 1.00
SBD 2.82