আমি নিজেকে নিজের মতো থাকতে দেই
আমি নিজেকে নিজের মতো বাঁচতে দেই,
হয়তো মাঝে মাঝে খুব বেশী অবুঝ হয়ে যাই
হয়তো মাঝে মাঝে খুব বেশী পাল্টে যাই।
আমার একটা মন আছে,
হৃদয়ে একটা ঘর আছে,
মনের কিছু ব্যথা আছে,
জমানো কিছু কষ্ট আছে,
সবাইতো তো সবটা দেখতে চায় না,
এড়িয়ে যেতে চায়,
সবাইতো ক্ষতটা বুঝতে চায় না,
অবুঝ সাজতে চায়।
আমি জমে থাকা কষ্টগুলোকে হালকা করতে চাই
আমি হৃদয়ের যন্ত্রণাগুলোকে হ্রাস করতে চাই,
হৃদয়কে নোনা জলের কান্নায় সপে দিতে চাই
ঝর্ণার সফেদ জলে হৃদয়কে নির্মল করতে চাই।
বন্ধুরা, কিছু কথা ইতিমধ্যে আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছি গতকালের পোষ্টের মাধ্যমে, নিজের একটা ভিন্ন বৈশিষ্ট উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আমি পড়েছি আপনাদের সকলের মন্তব্যগুলো, আমার ভিন্ন পরিচয় দেখে আপনাদের অনুভূতিগুলো। সত্যি বলতে আমি মোটেও অবাক হইনি, আমি মোটেও বিব্রতবোধ করিনি। কারন আমি আমার বৈশিষ্ট্য নিয়ে বেঁচে থাকতে পছন্দ করি, আমি আমার ভিতরের কামনাগুলোকে প্রধান্য দেয়ার চেষ্টা করি। হ্যা, এই ক্ষেত্রে আপনাদের ভিন্ন অনুভূতি থাকতে পারে, আপনাদের ভালো লাগা কিংবা মন্দ লাগার বিষয়টি থাকতে পারে, সেটা একান্তই আপনাদের নিজস্ব বিষয়।
কিছু অনুভূতির বিষয়ে কিছু কথা বলতে চাচ্ছি আজকের লেখায়। অনেকেই দেখলাম বেশ অবাক হয়েছেন অঝোরে কান্নার বিষয়টি দেখে, অনেকেই বলেছেন ছেলেদের নাকি কান্না মানায় না। আমি বিষয়টি কখনো এভাবে চিন্তা করি নাই, কারন আমি চিন্তা করেছি হৃদয়ের কথা, আমি অনুভব করেছি হৃদয়ের ব্যথা। যন্ত্রণাগুলো হৃদয় চিনে, ছেলে কিংবা মেয়ে সেটা দেখে না। যন্ত্রণাগুলো হৃদয়ে আঘাত করে, ছেলে মেয়ে বাছাই করে না। আসলে বাস্তবতা একটা ভিন্ন বিষয়, বাস্তবতা একটা নির্মম বিষয়, যেখানে শুধু অনুভূতিগুলোর ভিন্ন রং আলোকিত হয়, যেখানে শুধু যন্ত্রণার রং রংধনু সাজায়।
আচ্ছা আপনি বলেন তো, যখন খুব বেশী হৃদয়ে যন্ত্রণার উদ্রেগ হয় তখন আপনি কি করেন? তখন কি করলে আপনার যন্ত্রণাগুলো হালকা হয়? এখানে আপনি কিন্তু আমার মতো ভিন্ন কিছু নাও করতে পারেন, এখানে আপনি কিন্তু আমার পথে নাও হাঁটতে পারেন। কারণ আপনি সেই কাজটি তখন করতে বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, যে কাজটি আপনার হৃদয়ের যন্ত্রণাগুলোকে হালকা করবে, যে কাজটি আপনার অনুভূতিগুলোকে সতেজতায় পরিবর্তন করবে। বিষয়টি এখানেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, প্রতিটি মানুষের একটা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটা থাকাটাই আবশ্যক। যার কারনে প্রতিটি মানুষ ভিন্ন ভিন্নভাবে সেই বৈশিষ্ট্যগুলোকে আকঁড়ে ধরে বেঁচে থাকতে চায় এবং চেষ্টা করে।
আমি যন্ত্রণাগুলোকে হালকা করতে চাই, আমি যন্ত্রণার অনুভুতিগুলোকে সতেজ করতে চাই, আর এই চাওয়া থেকেই আমি ঝর্ণার অনুভূতি নিজের মাঝে ফুটিতে তোলার চেষ্টা করি, আর এই চাওয়া থেকেই আমি বৃষ্টির সজীবতা হৃদয়ে প্রস্ফুটিত করার চেষ্টা করি। ঝর্ণার সফেদ জলের মতো নিজের হৃদয়টাকে ভেজাতে চেষ্টা করি, জলের স্বচ্ছতায় হৃদয়ের কালিমাগুলোকে ধুয়ে ফেলতে চেষ্টা করি। অবিশ্রান্ত বৃষ্টির মাঝে হৃদয়ের নোনা জলগুলোকে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করি, শীতলতার প্রভাবে নিজের হৃদয়কে সজীবতায় ঢেকে দেয়ার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে দ্রুত হৃদয়ের সজীবতা ফিরে আসে, মাঝে মাঝে যন্ত্রণার ক্ষতগুলো দ্রুত পরাজয় স্বীকার করে কিন্তু মাঝে মাঝে আবার বিদ্রোহ করে।
আমি এখনো লুকিয়ে কান্না করি কারন কান্নার মাঝে হৃদয়ের সজীবতা অনুভব করি। আমি এখনো যন্ত্রণাগুলোর আঘাত সহ্য করি, কারন যন্ত্রণাগুলো আমাকে বেঁচে থাকার কঠিনতা অনুভব করার সুযোগ করে দেয়। আমি এখনো আনমনে হৃদয়ের ক্ষতগুলোর ভার বয়ে বেড়াই, অশান্ত হৃদয়ে হাঁটতে হাঁটতে দূর অজানায় ছুটে যাই। আমি এখনো একাকিত্বের মাঝে নিরবতা খুঁজে বেড়াই, নিজের কষ্টগুলোকে হালকা করার উত্তর খুঁজে বেড়াই। নিজের বিষয়টি একটু চিন্তা করুন, কিছু বিষয়কে শুধুমাত্র নিজের হিসেবে বিবেচনা করতে শিখুন, কিছু সময় শুধুমাত্র নিজের জন্য ব্যয় করুন, কিছু যন্ত্রণার ভার নিজে বহন করার মানসিকতা তৈরী করুন।
সত্যি বলুনতো, জীবনের সব সমস্যাগুলো কি সকলের সাথে শেয়ার করা যায়, জীবনের সব যন্ত্রণাগুলোর অনুভূতি কি সবাই বুঝতে চায়? আপনি কি জমে থাকা সব যন্ত্রণাগুলো সকরের সাথে শেয়ার করতে পারেন? কিছু যন্ত্রণা কিংবা কষ্ট কি ভিন্নভাবে নিজের কাছে থেকে যায় না?
Image Taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
আসলে মানসিক কষ্ট নিরসনের জন্য একেক জনের একেক পদ্ধতি আছে। আপনার বেলায় যে পদ্ধতিটি কাজ দেয় অন্য জনের ক্ষেত্রে সেটা নাও কাজ করতে পারে। আপনি কোমল হৃদয়ের মানুষ তাই হয়তো আপনার চোখ দিয়ে ঝর্ণাধারা বয়ে গিয়ে কষ্টগুলো ধুয়ে যায় কিন্তু আমার কাছে কান্না মানেই বুকের মধ্যে জমে থাকা কষ্ট। মনে হয় যেন গলার কাছে কিছু একটা দলা পাকিয়ে আছে। সেটা কখনোই অশ্রু হয়ে ঝরে পরে না। যাই হোক আপনার অনুভূতি প্রকাশের এই ধরনগুলো বরাবরই আকর্ষণ করে আমাকে। ধন্যবাদ
জ্বী এটা আপনি ঠিক বলেছেন ভাই, সহমত পোষণ করছি আপনার সাথে।
হাফিজ ভাই আপনার এই ধরনের লেখাগুলো সব সময় মনে দাগ কেটে যায়। বিশ্বাস করুন অসম্ভব ভাল লিখেন আপনি। আর ভালো লিখতে গেলে অবশ্যই তাকে ভালো মনের মানুষ হতে হয়। আমার মনে হয় আপনি সেই ভালো মনের মানুষদের একজন। একজন লেখক কি অনুভব করে তার কথাগুলো প্রকাশ করছে সেটা পাঠকের পুরোপুরি বোধোদয় হয়তো কখনোই হয় না। বড়জোর আন্দাজ করে কাছাকাছি যাওয়া যায়। কিন্তু কিছু কথা একান্তই নিজের। না সেটা প্রকাশ করা যায়, না সেটা মন থেকে মুছে ফেলা যায়। আর ভাই এই জগতে কারো সমস্যা কেউ কখনো পুরোপুরি বুঝতে পারেনা। কথায় যেমন আছে আদা খাবে যে ঝালে বুঝবে সে। কিছু যন্ত্রনা মাইক লাগিয়ে বলে বেড়ালেও কখনো মন থেকে মুছে ফেলা যায় না। যুগের পর যুগ আপনার ভেতরটাকে ক্ষতবিক্ষত করে রাখবে। আর জীবনের নিয়ম হয়তো এটাই। অনেক ভালোবাসা রইলো ভাই।
উদাহরণটা ভালো লেগেছে ভাই, সত্যি কিছু সমস্যা শুধুই একান্ত, কেউ সেটা কোনদিনও বুঝতে পারে না। ভাই প্রসংশাটা একটু বেশী হয়ে গেলো মনে হচ্ছে। অতো ভালো লিখিনা, তবে মন থেকে লেখার চেষ্টা করি।
কোনো একটা কথা অস্বীকার করার সাহস নেই।একজন আদর্শ মানের লেখক বোঝেন যে তার পাঠকদের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পাবে এমন লেখা কিভাবে লিখতে হয়।আপনার লেখা বরাবরই আমাদের সকলের কাছে উৎকৃষ্ট মানের।
সত্যি বলতে নিজেকে নিজের মতো করে চলতে না দিলে বা সমাজের চাপে নিজের ইচ্ছাগুলোকে মেলতে না দিলে সেই জীবন চালানোও যা না চালানোও তাই।
খুব ভালো লিখেছেন ভাই, শুভ কামনা জানাই 🥰
কিন্তু তবুও আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে হয় এবং তা মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হয়।
আসলে ভাই আমাদের যখন কষ্ট হয় বুকের ভেতর যন্ত্রণা হয় তখন হয়তো আমরা একেকজন একেক পদ্ধতি অবলম্বন করে সেগুলো দূর করার চেষ্টা করি। তবে ভাই আমার যখন এরকম কিছু হয় তখন আমার চোখ থেকে অঝোর ধারায় পানি পড়তে থাকে। তখনই কিন্তু আমার এই বুকে যন্ত্রনা গুলো শেষ হয়। আর আপনি ঠিকই বলেছেন ভাই সব কষ্ট সবার কাছে বলা যায় না। কিছু যন্ত্রণা নিজের কাছে একান্তভাবেই রেখে দিতে হয়। অনেক ভালো লাগছে আপনার লেখা পড়ে আপনি আসলে সবসময় খুব ভালো লেখেন
ধন্যবাদ ভাই আপনার অনুভূতি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
নিজের যন্ত্রণা সমস্যাগুলো কখনোই কারো সাথে শেয়ার করা যায় না।আর শেয়ার করলেও বেশিরভাগ সময় সে গুরুত্বটা বুঝে না।
কিছু মানুষ সেটা নিয়ে তামাশা করে আর কিছু মানুষ উল্টো খোচা দিয়ে আঘাত করে।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
ভাইয়া আমি আপনার সাথে সহমত পোষণ করছি। আসলেই এমন কিছু যন্ত্রনা আছে যা কারো সাথে শেয়ার করা যায় না। কাউকে বোঝানো যায় না কেউ বোঝার চেষ্টাও করে না।খুবই চমৎকার বাস্তবমুখী অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন। যা আমার মনে দাগ কেটে গেল। ভাল থাকবেন শুভকামনা নিরন্তর। ♥♥
ধন্যবাদ আপু, আসলে যন্ত্রণায় আঘাত পাওয়া একজনই কেবল এই রকম আরেকজন মানুষের কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে।
ঠিক বলেছেন ভাই, আমরা যতই বলি অন্যের কষ্ট অনুধাবন করতে পারি, এটা সত্য নয়।
ঠিক তাই ভাইয়া♥♥
আসলে ভাই আজকে আপনার পোষ্টটি পড়ে সত্যি আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। প্রতিটা কথায় অনেক মূল্যবান আর গভীরতা নিয়ে আপনি কথাগুলো বলেছেন। একটি কথা ও আমাদের জীবনের বাইরে নয়। সত্যিই আজকে আপনার এই পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে আমরা প্রতিটা মানুষই নানা রকম কষ্ট যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে জীবন পার করি। আর আমরা এই কষ্টের মধ্যে নিজেকে সহ্য করে তৈরি করতে হয়। আসলে আমার যখন খুব কষ্ট হয় তখন আমি নদীর পাড়ে গিয়ে নদীর সৌন্দর্য দৃশ্য উপভোগ করি হয়তো, এই নদীর স্রোতের দৃশ্যগুলো দেখতে দেখতে আমার কষ্ট কিছুটা দূর হয়ে যায়। তারপরে বৃষ্টির দিনের এই বৃষ্টির পানি গুলো আমার কষ্টটা একটু হালকা করে। আসলে কষ্টের মধ্যে যদি আমি ডুবে থাকি তাহলে জীবনটা আরো কষ্ট হয়।তাই ও জোরে কান্নার মাধ্যমে আমি আমার কষ্টকে দূর করি। আসোলে ভাই আজকে আপনার পোস্টে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে এই গুরুত্বপূর্ণ অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
জীবন সত্যি খুব সহজ না আবার সত্যি খুবই কঠিন না, তবে বাস্তবতা আমাদের অনেক কিছুই শিক্ষা দেয়, যন্ত্রণাগুলো আমাদের আরো বেশী কঠিন হতে শেখায়।
ভাই আপনি যথার্থই বলেছেন যন্ত্রণাগুলো কখনো ছেলেমেয়ে বাছাই করে না সব সময় যন্ত্রণাগুলো আমাদের হৃদয় বোঝে। আর হৃদয়ের ক্ষত কত বড় যন্ত্রণা দেয় এটা যে পেয়েছে সেই একমাত্র বোঝে। যন্ত্রণা গুলোকে হালকা করার জন্য বৃষ্টি এবং ঝরনার যে বর্ণনা দিয়েছেন সেটা খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ আপনাকে।