আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ অভ্যাস ]

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি এবং ভালো থাকার চেষ্টা করছি। যদিও সত্যটা বার বার উপস্থাপন করা যায় না, কারন তাতে এক ধরনের দুর্বলতা প্রকাশ পায়। বিশেষ করে অসুস্থতার বিষয়টি। তবে হ্যা, ভালো থাকার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে নিজেকে সুস্থ ভাবতে হবে এবং নিজের মানসিকতাকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করতে হবে, এর কোন বিকল্প নেই। না বিকল্প একদমই নেই সেটা বলা বোধহয় ঠিক হবে না, একটা বিকল্পের কথা আমি বলতে পারি। বিকল্প বলতে ঠিক বিকল্প না বরং একটা নিয়মের কথা। যা আগের দিনের মানুষগুলো বিশ্বাস করতো এবং মানার চেষ্টা করতো।

দেখুন একটা কথা আমি বহুবার বলেছি এবং হয়তো সামনে আরো বলার চেষ্টা করবো। আমরা যারা নিজেদের শিক্ষিত বলে দাবী করে থাকি এবং আধুনিকতার পারফিউম শরীরে মেখে একটু অন্য রকম ভাব নেয়ার চেষ্টা করি, তারা নানাভাবে আগের দিনের সেই মুরুব্বীদের কথা অগ্রাহ্য এবং অমান্য করার চেষ্টা করি। কুসংস্কার, অজ্ঞতার দিক্ষা এই রকম নানা ধরনের শব্দ দ্বারা তাদের অপমান কিংবা আঘাত করার চেষ্টা করি। আমি নিজেও এর স্বাক্ষী, অনেক দেখেছি। শিক্ষিত হওয়ার দোহাই দিয়ে আগের নিয়ম-নীতিগুলোকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হতো। কিন্তু দিন শেষে তাদের কথাগুলোই দলিল হয়ে প্রকাশিত হতো।

morning-4573991_1280.jpg

আমি আজকে সেই রকম একটা নিয়মের কথা বলবো, যা তাদের শত আয়ু দেয়ার ক্ষেত্রে দারুণ কার্যকর ভূমিকা পালন করেছিলো। আমরা হয়তো সেই নিয়মগুলো হতে এখন অনেক বেশী দূরে সরে গিয়েছি এবং আধুনিক স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে নিজেদের স্মার্ট বানানোর চেষ্টা করছি কিন্তু আদতে সেটা কোনদিনও হওয়ার না এবং হবেও না। দেখুন আগের দিনের মানুষগুলো যা বিশ্বাস করতো, তা শতভাগ পালন করতো। কিন্তু আমরা বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষিত যারা, তারা কি সবটা মানছি যা শিখছি? সমস্যাটা আমাদের এখানেই আমরা যা শিখি বা যা বিশ্বাস করি তার কোনটাই মানি না। একটা উদাহরণ দিচ্ছি, রাতের অন্ধকারে কিংবা লাইন নিভিয়ে মোবাইল কিংবা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করার চোখের জন্য ক্ষতিকর, এটা আমরা সবাই জানি এবং পড়েছিও কিন্তু সত্যি বলুন তো, আমরা কয়জন এটা মানছি?

আপনি চাইলে এই রকম হাজারটা উদাহরণ হয়তো আমি দিতে পারবো কিন্তু তাতে কি? আমাদের মাঝে কি কোন পরিবর্তন আসবে? আমরা কি সেটা মানবো বা মানার চেষ্টা করবো? উত্তরটা একদমই সোজা আর সেটা হলো মোটেও না। কারন আমরা তাৎক্ষনিক আনন্দ বা সুবিধা চাই, পরে কি হবে সেটা নিয়ে চিন্তা করা বা ভাবার সময় নেই। এই নীতিতে আমরা চলছি এবং সর্বক্ষেত্রে আমরা এই নীতিটা অনুসরণ করছি, যার কারণে আমাদের আজকের এই অবস্থা।

যাইহোক, মুল কথায় ফিরে আসছি। যে নিয়মের কথা বলতে চেয়েছিলাম, সেটা হলো প্রতিদিন তিনটি নিয়ম পালন করার অভ্যেস গড়তে হবে যদি সেটা পারেন তাহলে আপনার আয়ু হবে শত বছরের নিঃসন্দেহে। সেগুলো হলো, প্রতিদিন ভোর সকালে ঘুম হতে উঠতে হবে, তারপর এক গ্লাস পানি পান করতে হবে, তারপর প্রকৃতি সান্নিধ্যে গিয়ে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে হবে। খুব বেশি কঠিন কিছু না, কিন্তু আপনি রিচার্স করে দেখুন কিংবা অনলাইনে সার্চ করে দেখুন, আধুনিক বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞরা কি বলেন এই কাজগুলোর ব্যাপারে? সত্যি বলছি আপনি অবাক হয়ে যাবেন এই সম্পর্কে আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষ্য শুনে।

meadow-8001786_1280.jpg

আজকের আধুনিক বিজ্ঞান শত দলিল দিয়ে এই কাজগুলো করার ব্যাপারে যুক্তি দিবে এবং আপনাকে বার বার উৎসাহ দিবে। অথচ সেই মানুষগুলো মোটেও শিক্ষিত ছিলো না, বিজ্ঞানের ধারে কাছেও ছিলো না কিন্তু তারা এই কাজগুলো নিয়মিত করতো এবং তা অভ্যেসে পরিনত করতে পেরেছিলেন। ফলাফল তারা ঠিকই শতআয়ু নিয়ে বেঁচে ছিলেন এবং সুস্থ্যতা নিয়েই দুনিয়া ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আর আমরা এখন সর্বোচ্চ ৬০ বছর এর চিন্তা করি, এর মাঝেই নিজেকে সুখি ও সমৃদ্ধির শিখরে পৌঁছানোর আপ্রাণ চেষ্টা করি। এই হলো আমাদের স্মার্টনেস এবং শিক্ষিত হওয়ার নমুনা। আসলে আমি আগেই বলেছি আমরা তাৎক্ষনিক সুবিধা বা আনন্দ পেতে বেশি ভালোবাসি।

দেখুন, আমরা রাত এগারোটা পর্যন্ত কম্পিউটার কিংবা টিভি নিয়ে বসে থাকি তারপর আবার ঘুমাতে যাওয়ার পর লাইন অফ করে বারোটা একটা পর্যন্ত মোবাইল টিপি, ভোর সকালে উঠার প্রশ্নই উঠে না। এই হলো আমাদের প্রকৃত অবস্থা, আরো একটা বিষয় দেখুন আধুনিক বিজ্ঞান বলছে রাতে কম খাবার খেতে এবং খুব বেশি ভারি খাবার না খেতে, কিন্তু আমরা সারাদিন নানা কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকি, খুব একটা খাবার গ্রহণ করি না কিন্তু রাতের বেলায় যত পারি ভারি খাবার গিলতেই থাকি, হা হা হা। আর বেশি কিছু বলবো না, অন্য দিন এই প্রসঙ্গে আরো কিছু কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করে আজ শেষ করছি।

Image taken from Pixabay 1 and 2

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

সেগুলো হলো, প্রতিদিন ভোর সকালে ঘুম হতে উঠতে হবে, তারপর এক গ্লাস পানি পান করতে হবে, তারপর প্রকৃতি সান্নিধ্যে গিয়ে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে হবে।

একেবারে যথার্থ বলেছেন ভাই। এই নিয়ম তিনটি যে মেনে চলবে, নিঃসন্দেহে তার শরীর খুব ভালো থাকবে। আর শরীর ভালো থাকলে মন ভালো থাকবে। তাছাড়া রাতের খাবার ৮ টার আগে খেতে পারলে খুব ভালো হয়। কোরিয়ানরা সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে ডিনার করে ফেলে। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে পুরোপুরি উল্টো। মানুষ আসলে অভ্যাসের দাস। সুতরাং চাইলে যেকোনো অভ্যাস পরিবর্তন করা যায়। যাইহোক আগের দিনের মানুষেরা যা যা বলেছে, তার প্রতিটি কথা একেবারে সত্যি। আমরা তাদের কথাগুলো মেনে চললে নিজেদেরই লাভ হবে। যাইহোক দারুণ লিখেছেন ভাই। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমার সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65128.68
ETH 3442.23
USDT 1.00
SBD 2.52