"পুকুরে মাছ ছাড়ার উদ্দেশ্যে মাছ কেনার কিছু সুন্দর মুহূর্ত"
নমস্কার
পুকুরে মাছ ছাড়ার উদ্দেশ্যে মাছ কেনার কিছু সুন্দর মুহূর্ত:
বন্ধুরা, আমাদের বাড়িতে বর্তমানে ছোট্ট একটি পুকুর রয়েছে।যদিও গ্রামের বাড়িতে পূর্বে আমাদের তিনখানা নিজস্ব পুকুর ছিল, সেটাও আবার ইয়া বড় বড়।বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষ করা হতো সেখানে, এখন যেহেতু আমরা কয়েক বছর হয়েছে জায়গা পরিবর্তন করেছি শহরমুখী এলাকায়।সেহেতু ছোট্ট একটি পুকুর খনন করেছি আর তাতেই মাছ ছাড়ার উদ্দেশ্যে মূলত মাছ কিনতে যাওয়ার প্রস্তুতি।
আসলে যেহেতু পুকুরটি ছোট্ট তাই এতে আগে বিভিন্ন ধরনের মাছ কিনে ছেড়ে দিয়ে দেখা রয়েছে কোন মাছ ভালো জন্মে।যেমন ধরুন--রুই,কাতলা, জাপানি পুঁটি,তেলাপিয়া, বাটা,নাইলোটিকা,দেশি পুঁটি মাছ ইত্যাদি।তো আমাদের পুকুরটি ছোট হওয়াতে রুই,বাটা,জাপানি পুঁটি,কাতলা মাছ ছাড়লে বড় হয় না তাই এইসমস্ত মাছগুলি ছাড়ার পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হয়েছে।যদিও আমরা পুকুর থেকে মাছ ধরে কম-ই খাই,বাজার থেকে কিনেই প্রচুর পরিমাণ খাওয়া পড়ে।কারন আমরা মাছ খেতে খুবই পছন্দ করি।যাইহোক তো প্রত্যেক বছর পুকুরে মাছ ছাড়া হয়ে থাকে তাই আমরা এই বছর শুধুমাত্র তেলাপিয়া কিংবা নাইলোটিকা ছাড়ার পরিকল্পনা নিলাম।সেই উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে 2 টি বালতি নিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি পুকুরে চলে গেলাম।
পুকুর থেকে কেনার উদ্দেশ্য কিছুটা কম দামে পাওয়া যায়।আমরা যেদিন মাছ কিনতে গেলাম সেইদিন সহ তিনদিন প্রচন্ড গরম পড়েছে।তাছাড়া আমরা যেহেতু বড় জাতের নাইলোটিকা মাছ ছাড়বো তাই পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলাম।অন্যদিকে মাছ ধরা লোকেরা পুকুরে জাল দিয়ে ঘিরে মাছ ধরলো এবং খারুইতে রাখলো।প্রথমবারের মাছ তো ঠিকই ছিল,বেশ ভালোভাবেই তারা সংরক্ষণ করে সাড়ে 4 কিলো দিলো।কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য ছিল 5 কিলো মাছ কেনার তাই আমরা আবারো কিছুটা সময় অপেক্ষা করলাম, তখনই বাঁধলো মুশকিল।
এই মাছগুলো যেহেতু বড় সাইজের তাই আবার বাজারে খাওয়ার মাছ হিসেবেও বিক্রি করে থাকে এই লোকেরা।এইবার একজন পুকুরে নেমে জল কম হওয়ায় হাত চেপে চেপে মাছ ধরে দিলো।আর সেই মাছ উপরে একটি ঝুড়িতে রোদে কিছুটা ফেলে রাখলো।তো আবারো আমরা নগদ টাকা দিয়ে কিছু মাছ কিনে নিলাম অর্থাৎ সাড়ে 6 কিলো।হাত দিয়ে ধরার জন্য পরের মাছগুলো কিছুটা আঘাত পেল ফলে মাছের গায়ের নাল কেটে গিয়েছে।(একটি মাছ ছাড়ার ক্ষেত্রে তখনই সুন্দর থাকে যখন তার গায়ে বেশি নালাযুক্ত থাকে।)যাইহোক আমাদের আরো দুই কিলো মাছ মেপে দেওয়া হলো ,আমরা সেগুলো বালতি করে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করলাম।
বাড়ি ফিরে মাছগুলোকে বড় গামলার জলে ঢাললাম।তারপর ভালো সচল মাছগুলো পুকুরে ছেড়ে দিলাম।আমরা মোট 41 টি মাছ পুকুরে ছাড়লাম তখন দেখলাম কিছু মাছের গায়ে নাল বেশ কেটে গিয়েছে তারপরও জ্যান্ত থাকায় ছেড়ে দিলাম।এবারে পুকুরে কুড়ো দেওয়া হলো, দিনের বেলা তো ঠিকই ছিল।আর কয়েকটা সবথেকে বড় মাছ খাওয়ার জন্য রেখে দিলাম।তারপর মাছ কেটে ধোয়ার সময় লক্ষ্য করলাম মাছের কানে বেশ রক্ত জমে রয়েছে।বিকেলে দেখলাম মাছ কয়েকটা মারা গিয়ে ভেসে উঠেছে পুকুরে।অর্থাৎ পরে যে দুই কিলো মাছ উনারা হাত দিয়ে চেপে ধরে দিয়েছেন সেগুলোই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
শেষমেষ পুকুরে মোট 9 টি বড় মাছ মারা গিয়েছে।নতুন জায়গায় আসলে মাছ এমনিই মারা যায় কিন্তু বড় সাইজের মাছ মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।তাই বুঝলাম আমাদের একটু ভুল হয়েছে পরের বার আরো দুইকিলো মাছ নিয়ে আর লোকগুলোও ইচ্ছা করেই ঠকিয়ে দিয়েছে মাছগুলোকে হাত দিয়ে চেপে ধরে আঘাত দিয়ে।কারণ আমি আগের একটি পোষ্টে আপনাদের শেয়ার করেছিলাম,,এখানের প্রায় অধিকাংশ নন বাঙালি নিম্ন সম্প্রদায়ের মানুষ অর্থাৎ আদিবাসী তারা খুবই বাঙাল বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করে।যাইহোক এটাই ছিল মাছ কেনা ও আমাদের পুকুরে মাছ ছাড়ার অনুভূতি।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | redmi note 10 pro max |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
টুইটার লিংক
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Thanks.
বেশ দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু। পুকুরে মাছ ছাড়ার উদ্দেশ্যে মাছ কেনার মুহূর্তটি খুব দারুণ ছিল আপু । পুকুরে মাছ ছাড়ার বিষয়ে তেমন অভিজ্ঞতা নাই তবে আপনার পোস্টটি পড়ে বেশ দারুণ একটি অভিজ্ঞতা হলো। জাল দিয়ে মাছ ধরার ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ আপু চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ আপনাকেও ।
পুকুরে এভাবে মাছ দেওয়া বা ছাড়ার তেমন কোন অভিজ্ঞতা আমার নেই। তবে আপনি তো দেখছি এ বিষয়ে অনেক কিছুই জানেন। তবে আমি একবার পুকুরে মাছ দিতে দেখেছিলাম তবে সেগুলো ছোট ছোট পোনা। আপনারা তো দেখছি বড় বড় মাছ দিয়েছেন। তবে মাছ দেওয়ার পর নয়টি বড় মাছ মারা গিয়েছে জেনে খারাপ লাগলো। আমার কাছে মনে হয় ওনারা মাছ দেবার সময় মাছগুলো হয়তো খুবই জোরে ধরেছিল আর একটু কেটে গিয়েছিল তাই মারা গিয়েছে। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপু ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আপু,বড় মাছ ছেড়েছি যাতে তাড়াতাড়ি খাওয়াও যায়।ধন্যবাদ আপনাকে।
মাছ বিষয়ক সুন্দর একটি পোস্ট আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এই সুন্দর পোস্ট করার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু জানতে পারলাম। খুব সুন্দর বর্ণনার সাথে আপনি উপস্থাপন করেছেন। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।
ভাইয়া ,সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বাহ আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। পুকুরে মাছ ছাড়ার উদ্দেশ্যে মাছ কেনার কিছু সুন্দর মুহূর্ত। আপনাদের পুকুরটি ছোট হলেও পুকুরে অনেক ধরনের মাছ রয়েছে দেখে বেশ ভালো লাগলো। আমাদেরও অনেক বড় একটি পুকুর রয়েছে সেখান থেকে আমিও বেশ কয়েকটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করছিলাম। আসলে আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লাগে রুই মাছ খেতে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া, আপনি হয়তো বা ভালোভাবে খেয়াল করেননি পোস্টটি।আসলে অনেক ধরনের মাছ ছাড়ার পরও সেগুলো না হওয়াই শুধুমাত্র তেলাপিয়া জাতীয় মাছ ছাড়া হয়েছে, ধন্যবাদ।
আসলে আপু পুকুর থেকে মাছ ক্রয় করলে সত্যিই দাম কিছুটা কম পাওয়া যায়। তবে পুকুরে ছাড়ার উদ্দেশ্যে গরমের দিনে মাছ ক্রয় করা ঠিক নয়। আর যেহেতু বড় সাইজের নাইলনটিকা তেলাপিয়া মাছ পুকুরে দিয়েছেন, তাই এই মাছগুলো খুব দ্রুত নতুন নতুন বাচ্চা দিয়ে পুকুর পরিপূর্ণ করে দিবে। যাহোক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলেই ভাইয়া, গরমের দিনে মাছ কেনা ঠিক না,সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
নিজেদের পুকুরে মাছ ছাড়ার উদ্দেশ্যে মাছ কিনেছেন। মাছগুলো বেশ বড় ছিল। পুকুরে মাছ ছাড়ার বিষয়ে তেমন কোন আইডিয়া নেই আমার। তবে আপনি বললেন লোকগুলো হাত দিয়ে চেপে মাছগুলো দেওয়ার কারণে অনেকগুলো বড় মাছ মারা গিয়েছে। এই ব্যাপারটা জেনে আসলেই খুব খারাপ লাগলো। অনুভূতিগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দিদি।
হ্যাঁ আপু,বড় সাইজের মাছ ছেড়েছি।যাতে তাড়াতাড়ি তুলে খাওয়া সম্ভব হয়, ধন্যবাদ আপনাকে।
বোন, পুকুর যদি ছোটও হয় সেখানে তেলাপিয়া মাছ চাষ করা কিন্তু বেশ লাভজনক। কারণ পুকুর ছোট হলেও তেলাপিয়া মাছ বা নাইলোটিকা মাছ এর ফলন অনেক বেশি হয়। তবে এটা ঠিক যে, মাছের গায়ের নাল বেশি কেটে গেলে মাছ বাঁচানো বেশ অসম্ভব হয়ে যায়, এজন্যই পুকুরের নয়টি মাছ মারা গেছিল আর কি। যাইহোক, যে মাছ পুকুরে ছাড়তে হয়, সেগুলোকে অতি যত্ন সহকারে আনতে হয়। তাহলে আর সমস্যা হয়না ।
দাদা,এটা আমরা খাওয়ার জন্যই মূলত ছাড়ার পরিকল্পনা।কিন্তু আনার জন্য সমস্যা হয়নি,উনাদের মাছ অতিরিক্ত চেপে ধরার ফলে সমস্যা হয়েছে।গাঁয়ের নাল কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুলকিগুলিতে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল বলেই মাছ মারা গিয়েছে।
আচ্ছা, এইবার বুঝতে পেরেছি বোন আসল ব্যাপারটা।
😊😊.
নাইলোটিকা মাছ দেখছি তেলাপিয়া মাছের মতো! আমাদের দিকে তেলাপিয়া মাছ বলে মেবও এগুলাকে। আসলে মাছ ছাড়ার সময় সতর্কতার সাথে ছাড়তে হয়। নয়তো অনেক মাছ মারা যায়। আর পুকুরের মাছের স্বাদ অন্যরকম। খেতেও বেশ মজা হয়।
ভাইয়া, তেলাপিয়া মাছ ছোট সাইজের হয়ে থাকে কিন্তু নাইলোটিকা মাছ বড় সাইজের হয়ে থাকে।আর ছাড়ার জন্য অসুবিধা হয় নি আপনি পোস্টটিতে খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন।ধন্যবাদ