গল্প:- ভেলকি মজিদ (◠‿◕) এক ঠান্ডা মাথার চোর || শেষ পর্ব - চূড়ান্ত মার
শেষ পর্ব - চূড়ান্ত মার |
---|
রমিজ ব্যাপারি মজিদের ভেলকি বাজিতে কোনঠাসা হয়ে পরে। এদিকে মজিদ আগে থেকেই রমিজ লাঠিয়াল বাহিনীকে হাত করে রাখে। লাঠিয়াল সরদারের মা ভীষণ অসুস্থ থাকায় মজিদ গোপনে তাকে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে সুস্থ করে তোলে আর রমিজ অত্যাচারে সবাই অতিষ্ঠ ছিল। সবমিলিয়ে লাঠিয়াল বাহিনী মজিদের হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। মজিদ কিন্তু এসব ব্যাপারে কিছুই জানতো না। এদিকে রমিজ না পেরে বিকল্প ফন্দি আঁটে মজিদকে মেরে ফেলার। সে তার লাঠিয়াল বাহিনীকে নির্দেশ দেয় মাঝ নদীতে নিয়ে মজিদকে মেরে নদীতে ফেলে দিতে। লাঠিয়াল বাহিনী মজিদকে সব জানিয়ে দেয়। এদিকে মজিদ এবং লাঠিয়াল বাহিনী বিকল্প ফন্দি আঁটে। রমিজ মজিদকে মাঝ নদীতে মাছ ধরা দেখার আমন্ত্রণ জানায় মজিদ বলে আমিও কদিন ধরেই ভাবছিলাম আপনাকে কথাটা বলবো। রমিজ মনে মনে খুশি হয় আর বলতে থাকে তোমার আয়ু শেষ। মজিদ মনে মনে মুচকি হাসে।
সেদিন সকাল সকাল রমিজ, লাঠিয়াল বাহিনী আর কয়েকজন জেলে নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে বেরিয়ে পরে। মূলত পুরো নৌকায় রমিজ লাঠিয়াল বাহিনীকে জেলে সাজিয়ে নিয়েছে কিন্তু রমিজের দূরভাগ্য সবাই মজিদের দলে চলে এসেছে সরদারের নির্দেশে। নৌকা মাঝ নদীতে আসার পর রমিজ মজিদকে বলে শহরের বাবু মাফ করবেন আপনি আজ আর এখান থেকে ফিরতে পারবেন না। মজিদ একটু অভিনয়ের সুরে ভয় পাওয়ার মতো করে বলে, কেন রমিজ ভাই কি হয়েছে। রমিজ হেসে বলে আপনি আজ আমার খপ্পরে পরে গেছেন, আপনাকে মেরে নদীতে ফেলে দেয়া হবে। এবার মজিদ আরো ভয়ে ভয়ে বললো রমিজ ভাই আমি আপনার এতো উপকার করলাম আপনার ব্যাবসা বাড়াতে সহযোগিতা করলাম আর আপনি আমায় মেরে ফেলতে চাইছেন ? রমিজ বললো হ্যা আপনি আমার বেশ উপকার করেছেন কিন্তু এখন আমি আপনার কাছে অনেক টাকা ধার দেনা হয়ে গেছে যা শোধ করা সম্ভব না। তাই মরতে হবে আপনাকে।
মজিদ ভয়ে ভয়ে বললো দয়া করে আমাকে মারবেন না, আপনার কোন টাকা দিতে হবে না। রমিজ হেসে বললো আমি একবার যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি তা আর নড়চড় হয়না শহরের বাবু, আজ তোমায় মরতেই হবে। রমিজ তার লাঠিয়াল বাহিনীকে বললো এই ওরে ধর, মেরে নদীতে লাশ বানিয়ে ফেলে দে। না লাঠিয়াল বাহিনী এক চুলও নড়লো না। এবার মজিদ হেসে উঠলো অনেকটা ভিলেনের মতো সে হাসি। মজিদ বললো কেউ তোমার কথায় নড়বে না রমিজ ব্যাপারি কারন এরা এখন আমার লোক। এবার রমিজের কলিজায় আর পানি নেই আর গলা শুকিয়ে আসতে শুরু করলো।
এবার মজিদ বলা শুরু করলো রমিজ ব্যাপারি আমি মজিদ আর কেউ না । এবার রমিজ ভয়ে ভয়ে বললো কোন মজিদ ? সে বললো কবির মিয়ার ছেলে মজিদ, আর তুমি যে কবির মিয়াকে ধারের টাকার ফাঁদে ফেলে মেরে ফেলেছিলে। আমাদের সব লুটে নিয়েছিলে মনে আছে রমিজ ব্যাপারি? আমি সেই মজিদ যে মরে গিয়েও মরিনি কিন্তু তোমার মরনের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছি। লাঠিয়াল সরদার বলে উঠলো মজিদ তুমি ফিরে এসেছো বাবা আমরাও লজ্জিত তোমার বাবার মৃত্যুর জন্য। এই পাপিষ্ট রমিজ বাধ্য করেছিল আমাদের এই খারাপ কাজ করতে বাধ্য করেছিল। আমরা অনুতপ্ত মজিদ, তবে আজ তোমার সাথে আমরা আছি এই রমিজের অত্যাচারের আজ অবসান হবে। এই বলে লাঠিয়াল সরদার এক বাড়িতে রমিজের মাথা ফাটিয়ে ফেলে, রক্ত গড়িয়ে পড়ছে মাথা দিয়ে সাথে অন্যান্য লাঠিয়াল তাদের আক্ষেপ মিটিয়ে রমিজের উপর হামলা করে। রমিজ নৌকার মধ্যে প্রান হারায়। এরপর তারা তাকে খরস্রোতা মাঝ নদীতে ফেলে দেয়। আর লাঠিয়াল বাহিনী মজিদের কাছে ক্ষমা চায়।
রমিজ সবাইকে ক্ষমা করে দেয় এবং আড়তে ফিরে সবাইকে রুস্তমের দূর্ঘটনার কথা জানায়। বলা হয় সে নদীতে একটা দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। তবে একমাত্র লাঠিয়াল বাহিনী ছাড়া আর কেউ মজিদের আসল পরিচয় জানলো না। কারন সে সবার কাছে মৃত, আর এই মৃত থেকেই সে সমাজের দুষ্ট লোক দমনে তার ভেলকি চালিয়ে যাবে। তবে তার মনে একটাই শান্তি কারন আজ তার বাবার খুনিকে তার উচিত শিক্ষা দিতে পেরেছে। মজিদ লাঠিয়াল বাহিনীর কাছে বিদায় নিয়ে সামনের দিকে পা বাড়ালো নতুন কোন শহরে আর কোন অত্যাচারিকে তার ভেলকি দেখানোর জন্য।।।।।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1584093327376650242?t=-XDVGfRPpNjUYVZS58ebvg&s=19
গল্পের নামকরণের সার্থকতা আছে বলতে হয়। ভেলকি মজিদ আসলেই ভেলকি দেখিয়ে তার বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিয়ে ফেললো। আসলে আমাদের সমাজটাই এরকম হয়েছে, কারো উপকার করলেই সেখান থেকে প্রতিঘাত পেতে হয়। আবার এখানে লাঠিয়াল সরদার তার উপকারের বেশ ভালোই প্রতিদান দিল। গল্পের শেষটা খুব ভালো লাগলো ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে।
যদিও আগের পর্বগুলো পড়া হয়নি তবে আজকের পর্ব পড়ে যেটা বুঝতে পারলাম মজিদের জীবনে অনেক দুঃখ দুর্দশার মধ্যে কেটেছিল সে সাথে রমিজ মিয়া তার বাবাকে মেরে ফেলে এবং সে তার বাবার মৃত্যুর শাস্তি নিতেই মজিদ সেজে রমিজ মিয়াকে শায়েস্তা করতে আসে। আসলে কথায় আছে পাপ বাপকেও ছাড়ে না। অন্যায় অত্যাচার করলে তার সাজা তাকে পেতেই হবে, আমি মনে করি সে দিক থেকে রমিজ মিয়া তার উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে। গল্পটির শেষ পর্ব পড়ে ভালই লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ভেলকি মজিদ এর গল্পটি আমি প্রথম থেকেই পরেছি। এই গল্পটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। মজিদ তার বাবার খুনিকে শাস্তি দিতে পেরেছে যেনে ভীষণ খুশি হলাম। আসলে এসমস্ত খারাপ মানুষের শাস্তির খবর শুনলে ভালো লাগে। এমন সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ লিমন।
ভেলকি মজিদ গল্পটি একমাত্র তুমিই শুরু থেকেই শেষ পর্যন্ত পড়েছো, আমি জানি।
আসলে খারাপ লোকের পরিণতি সবসময়ই খারাপ হয়।