গল্প:- ভেলকি মজিদ (◠‿◕) এক ঠান্ডা মাথার চোর || (পর্ব ০১ - পরিচয় পর্ব)
ভেলকি মজিদ (◠‿◕) এক ঠান্ডা মাথার চোর (পর্ব ০১ - পরিচয় পর্ব) |
---|
গরিব কৃষক বাবার একমাত্র সন্তান মজিদ। লেখাপড়ায় ভীষণ ভালো সে, আর খুব কষ্ট করে ধার দেনা আর মাঠের ফসল বিক্রি করে কোন রকম মেট্রিক পাশ করিয়েছে বাবা কবির মিয়া। কবির মিয়া ভীষণ কষ্ট করে সংসার চালায় আর বেশ কিছু দেনা মাথার উপর রয়েছে। তবুও মনে শান্তি রয়েছে তার একমাত্র সন্তান মজিদকে নিয়ে। তার কথা চিন্তা করলেই বুকটা ভরে যায় তার, মজিদ যেমন লেখাপড়ায় খুব ভালো তেমনি তার সব কাজে দক্ষতা রয়েছে।
মজিদকে এতো দিন কোন কাজ করতে দেয়নি কবির মিয়া কিন্তু এখন সে আর ঘরে থাকতে চায়না পড়া লেখার পাশাপাশি মাঠে কাজ করতে চলে আসে মজিদ। একটা ব্যাপার খেয়াল করলো কবির তার ছেলে মাঠে আসার পর থেকে তার ফসলের ফলন বাড়তে থাকে কারন মজিদ বিভিন্ন কায়দা আবিষ্কার করেছে ফলনের জন্য। যেমন আগে কবির যেভাবে চাষ করতো সেভাবে না করে ভিন্নভাবে সবকিছু করার চেষ্টা করছে। আবার বীজ বপন করা এবং সেচ দেয়া সবকিছু ও ভিন্ন আঙ্গিকে করার চেষ্টা করছে। কবিরের আনন্দের সীমা নেই কারন আগের মতো এতো পরিশ্রম করতে হচ্ছে না মাঠে, নতুন নতুন বুদ্ধি বের করে মজিদ ফসল ফলিয়ে চলেছে। মাঠে কাজ শুরু করার পর প্রথম ফলন উঠিয়ে কবির আকাশ থেকে পরলো কারন ফলন গতবারের তুলনায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কবির আনন্দে মজিদকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললো বাপ আমার দীর্ঘজীবী হও, আমার মতো মূর্খের ঘরে এতো জ্ঞানী মানুষ পেলাম। কবির তার সন্তানের জন্য গর্বে চোখে পানি চলে এলো।
মজিদ জানে তার বাবা কতটা পরিশ্রম করে তাকে মানুষ করেছেন। মজিদ বাবাকে বললো বাবা ফসল বিক্রি করে তোমার ধারদেনা পরিশোধ করো, ইনশাআল্লাহ আমাদের আর কোন অভাব থাকবে না। কবির বললো হ্যা বাপ তাই করবো, রমিজ ব্যাপারি বেশ কয়েকদিন থেকে বেশ চাপ দিচ্ছে বিশ হাজার টাকার জন্য।
বিকেলে মধ্যে ফসল বিক্রি করে তারা প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা পেলো আর সন্ধ্যার পর টাকা নিয়ে রমিজ ব্যাপারির ডেরায় হাজির হলো দুই বাপ বেটা। দুজনের চোখে মুখে হাসি কারন তারা আজ ধার শোধ করে মুক্ত হবে কুখ্যাত এই রমিজের খপ্পর থেকে। ঘরে ঢুকতেই রমিজ বলে উঠলো- আসো কবির মিয়া, ভেতরে আসো। তা শুনলাম তোমার এবার ফলন নাকি বেশ ভালো হয়েছে। কবির বললো হ্যা এবার দুই বাপ বেটা মিলে চাষ করেছি আর ফসল বিক্রির টাকা দিয়ে আপনার ধার শোধ করতে এসেছি। রমিজ হেসে বললো তা এতো টাকা আছে তো তোমার কাছে ? কবির বললো হ্যা ফসল বিক্রি করে বিশ হাজার টাকা নিয়ে এসেছি। রমিজ বললো তোমার ধার তো পঞ্চাশ হাজার টাকা। কবির আকাশ থেকে পরলো। আর মজিদ কি বলবে বুঝতে পারছেনা, তবুও চুপচাপ সবকিছু বোঝার চেষ্টা করছে। রমিজ কাগজ দেখালো এই দেখো তোমার টিপসই আর এখানে পঞ্চাশ হাজার লিখা। মজিদ কাগজটা হাতে নিয়ে দেখলো সত্যিই পঞ্চাশ হাজার লিখে রেখেছে ঐ রমিজ ব্যাপারি।
মজিদ বুঝতে পারলো বাবার মূর্খ্যতার সুযোগ নিয়ে এই খেলা খেলেছে। মজিদ রাগে কাগজটি ছিঁড়ে ফেললো আর বললো আপনি এতবড় বাটপারি আমাদের সাথে করলেন কেন? রমিজ হেসে বললো শোন বাবা এরকম কাগজ আরো তিনটার মধ্যে তোমার বাপের টিপসই আছে, তাই একটা ছিঁড়লে কিছু যায় আসেনা আমার। আর তোমাদের বাড়ির দলিল জমা দিয়ে টাকা নিয়েছে তোমার বাপ। তাই তাড়াতাড়ি টাকা ছাড়ো পঞ্চাশ হাজার, নাইলে দুদিনের মধ্যে তোমাদের বাড়ি দখল নেবো। কবিরের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো, বললো রমিজ ভাই আপনে এতোবড় অন্যায় আমার সাথে কেমনে করলেন। আমার কাছে এতো টাকা নাই, ফেসলের ত্রিশ হাজার টাকা আছে নিয়ে আমার দলিল ফেরত দেন। রমিজ ক্ষেপে গিয়ে বললো তোমার ছেলে তোমার টিপসই দেয়া কাগজ ছিঁড়ছে। ভাবছিলাম আরো কিছুদিন সময় দিব কিন্তু মজিদের আচরণ আমার খারাপ লাগছে। দুদিনের মধ্যে টাকা দিবা নইলে বাড়ি দখলে যাবো তৈরি থাকিও। মজিদ বলে উঠলো আপনার এই অন্যায় মানিনা টাকা বিশ হাজার দিছি দলিল ফেরত দেন। রমিজ তার লোক দিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিল।
এদিকে বাপবেটা দুজনেই চিন্তায় পরে গেলো কারন তারা বুঝতে পারছে রমিজের মতলব তাদের বাড়ি দখলে নেয়া। ভাবতে ভাবতেই দুদিন কেটে গেছে। রমিজ লোকজন আর লাঠিসোটা নিয়ে মজিদের বাড়িতে সকালেই এসে হাজির। মজিদ তাদের প্রতিহত করার জন্য নিজের হাতে লাঠি তুলে নেয় কিন্তু এতো গুলো মানুষের সাথে পেরে ওঠেনা। আর তাকে সমানে রমিজের লোকজন মারতে থাকে। তাকে যখন কবির বাঁচাতে গেল তখন রমিজের লোক তার মাথায় লাঠি দিয়ে জোরে আঘাত করলো। সাথে সাথে কবির মাটিতে লুটিয়ে পরে মারা গেলো।
কবির আক্রোশে ফুঁসছে আর তার বাবাকে জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করলো কারন বাপ ছাড়া আর কেউ নেই দুনিয়ায় তার। এদিকে রমিজের লোক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। সেদিকে নজর নেই তার কারন বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে। রমিজের লোকজন তাড়াতাড়ি জায়গা ছেড়ে কেটে পরলো।
আশেপাশে এতো গুলো মানুষ মজিদের আর্তনাদ শুনছে কিন্তু কেউ কোন কথা বললো না রমিজের লোকজনের ভয়ে। মজিদের বাড়ি পুড়ে ছাই হলো আর মাত্র দুজন লোকের সাহায্য নিয়ে তার বাবাকে কবর দিল। মাটি দেয়ার সময় বাবার কবর ছুঁয়ে প্রতিঙ্গা করলো সে আজ থেকে এই রমিজ ব্যাপারি থেকে শুরু করে যারা অন্যায় করছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেবে আর আজ থেকে সে ভেলকি মজিদ। যে ভেলকি বাজি করে ঠান্ডা মাথায় এই কুখ্যাত লোকগুলোর সবকিছু লুটপাট করবে।
সবার প্রথমে সে পরিকল্পনা করলো নিজেকে সবার কাছে মৃত প্রমান করতে হবে। কারন সব হারিয়ে তো এখন মৃত প্রায় মানুষ। তাই সে তার পরিকল্পনা মাফিক সবার সামনেই খরস্রোতা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়লো। সবাই ধরে নিল সব হারিয়ে পাগল হয়ে আত্মহত্যা করেছে মজিদ।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Hello friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1573944761568104448?t=FvKfonnuCv2Gc9yoBh2S0w&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
বাস্তবতা সম্পুর্ন একটি গল্প তুলে ধরেছেন। রমিজের মতো লোক জন এখনো আছে এদের কারনে সমাজে টুকটাক ঝামেলা লেগেই থাকে। অপেক্ষায় রইলাম দেখি পরের পর্বে ভেলকি মজিদ কি করে। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।
লিমন ভেলকি মজিদ দ্বিতীয় পর্ব আজ প্রকাশিত হবে। রমিজের মতো অসংখ্য লোক সমাজে রয়েছে যাদের কারনে সাধারণ মানুষ খুব কষ্টে থাকে। এদের প্রতিহত করতে কিছু ভেলকি মজিদ দরকার।