"শোভা রানীর গল্প" শেষ পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki "আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার। আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আশাকরি আমার আজকের ব্লগ টি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।আপনারা ইতিমধ্যেই শোভা রানীর গল্পের প্রথম অংশ টি পড়েছেন এবং সকলেই অনেক ভালো মতামত প্রদান করেছেন যা আমার কাছে খুবই ভালো লাগার মতো বিষয় ছিলো।
চলুন তাহলে শেষটুকু জেনে নেই।
শোভা রানী জেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করার পর তাকে এবার যেতে হবে বিভাগীয় পর্যায়ে।কিন্তু এই কথা শোনার পর শোভা রানীর পরিবার কোনোভাবেই মানতে পারছে না তার মেয়ে রাজশাহীর মতো শহরে গান গাইতে যাবে!শোভা রানীর বড় ভাই সাফ কথা জানিয়ে দিলো,যে শোভা রানী কে আর ঘরে রাখবে না।এবার তাকে বিয়ে দিয়ে দিতে হবে তাহলে আর এই দিন তাদের দেখতে হবে না।শোভা রানীর জীবনে নেমে এলো এক দুর্বিষহ পরিস্থিতি। শোভা রানী সবেমাত্র তৃতীয় শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণিতে উঠেছে কতইবা তার বয়স!যাইহোক আবারও শিক্ষকদের হস্তক্ষেপ করতে হবে ভেবে স্কুল কর্তৃপক্ষ শোভা রানীর বাড়িতে আসলেন এবং পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো দিক গুলো তুলে ধরলেন।অনেক বোঝানোর এক পর্যায়ে তার পরিবার সম্মতি জানালেন।
প্রতিযোগিতার দিন খুব ভোর ভোর শিক্ষকসহ শোভা রানীর বাবা-মা তার বড় ভাই সহ বেড়িয়ে পড়ে।রেলস্টেশনে পৌঁছানোর কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেন এসে পড়ে সবাই ট্রেনে উঠে পড়ে ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার পর বাকিরা লক্ষ্য করে যে শোভা রানী আর তার ভাই ট্রেনে নাই তখন তো সবার মাথা খারাপ হয়ে গেলো!কি আর করা পরের স্টেশন তার স্কুল শিক্ষক নেমে পড়ের তারপর সেখান থেকে বাসে উঠে শোভা রানীর কাছে ফেরত যায় এবং ওখানে গিয়ে দেখেন শোভা রানী আর তার ভাই সেই ভয় পেয়ে কান্নাকাটি করছে।শিক্ষক কে দেখে তারা অনেকটাই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।
শিক্ষকসহ শোভা রানী রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যায়।নির্দিষ্ট সময়ে তারা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে এবং আবারও শোভা রানী প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে।এবার শোভা রানীর পরিবার খুবই খুশি হন এবং তারা শিক্ষক কে কৃতজ্ঞতা বোধ প্রকাশ করেন।তারপর নির্দিষ্ট দিনে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয়ে যায় এবং জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে এবং দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে।তারপর তাকে বিটিভিতে গান গাওয়ার জন্য মনোনীত করা হয়।সেখান থেকে হঠাৎ একদিন রংপুর বেতারে তার গান গাওয়ার সুযোগ আসে তারপর শুরু হয় তার নিয়মিত বেতারে গান গাওয়া।আর এর মধ্য দিয়ে তার পরিবারে আর কোনো অভিযোগ রইলো না।এলাকায় যেকোনো অনুষ্ঠান হলেই শোভা রানীর গান শোনার জন্য সবাই অপেক্ষায় থাকে।এভাবেই শোভা রানীর ফ্যান ফলোয়ার বাড়তেই থাকে।
গ্রামের অশিক্ষিত পরিবার তাই তারা সবসময়ই চিন্তা করে মেয়ের বয়স হয়ে যাচ্ছে তাকে বিয়ে দিতে হবে। আর এই চিন্তা থেকেই একদিন শোভা রানীর ঠিকই বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলে।শোভা রানীর বিয়ে হয় অনেক স্বপ্ন নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে আসে ভেবেছিলো স্বামী সংসার এবং গান সে সুন্দরভাবে চালিয়ে যাবে।কিন্তু সেগুড়েবালি।তার স্বামী শ্বাশুড়ির এক কথা তার বাড়ির বউ কোনোভাবেই গান গাওয়া যাবে না।আর এই এক কথায় শোভা রানীর সকল স্বপ্ন আশা-ভরসার মৃত্যু ঘটে।গ্রামের অশিক্ষিত পরিবারের গৃহিণী তার পক্ষে স্বামী শ্বাশুড়ির কথা অমান্য করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।আর এভাবেই শোভা রানী পরিবেশের সাথে আস্তে আস্তে মানিয়ে নেয়,আর স্বামী সন্তান পরিবার নিয়ে মনোযোগের সহিত সংসার করতে থাকে।
পারিবারিক চাপে পড়ে শোভা রানীর মতো অনেক মেধাবীরা অকালেই ঝরে যায়।😥
শোভা রানীর গানের ভিডিও আমার কাছে ছিলো কিন্তু আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারছি না, তার কারন আমি চাই না আমার কারনে শোভা রানী কোনো বিপদে পরুক।যদি কখনো সুযোগ হয় তার পরিবারের মতামত নিয়ে গান শোনার তাহলে অবশ্যই সেই মুহূর্ত টা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
এই ছিলো শোভা রানীর জীবনের উত্থানপতনের গল্প।
সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় শেষ করছি।
🎅🏾🌠☃❄🎄 This post was manually selected to be voted on by "Seven Network" Community. (Steem Seven Manual Healing). Also, your post was promoted on 🧵"X"🧵 by the account josluds🎄☃❄🌠🌠.
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
শোভা রানীর গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম। প্রথম পর্ব পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো এখন পরবর্তী পড়ে একটু খারাপ লাগলো। একটা লোকের প্রতিভা থাকা সত্বেও ফ্যামিলি এবং তার বিয়ে হওয়ার পর সংসারের কারণে তার প্রতিভাটি নষ্ট হয়ে গেল।শোভা রানী স্কুল ভিত্তিক থেকে রাজশাহী বিভাগ থেকে ফাস্ট হয়ে ঢাকা এসে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলো গানের মধ্যে। যদি বিয়ের পর তাকে যদি একটু সাপোর্ট করা হতো তাহলে সে অনেক বড় কিছু হতে পারতো। এরকম অনেক শোভা রানী আছে যাদের প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও প্রদীপটা নিভে যায়। যাই হোক পোস্টটি শেয়ার করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন যদি শোভা রানী পারিবারিকভাবে সাপোর্ট পেতো তাহলে অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে যেতো।ধন্যবাদ ভাইয়া।
সত্যি বৌদি শোভারাণীর গান শুনে খুব ভাল লাগছিল।খুব সুন্দর কন্ঠ শোভারানীর। আপনার পাশের ফ্ল্যাট থাকার সুবাদে সেদিন গান শুনতে পেয়েছিলাম।এমন মানুষ রা কেন যে নিজের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায় না।অনেক ধন্যবাদ বৌদি এমন অকালে ঝরে যাওয়া মানুষের জীবনের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাবি শোভা রানীর কন্ঠ খুবই সুন্দর।আমার বাসায় সেদিন বেশ কয়েকটি গান গেয়েছিলো।শুধু সুযোগের অভাবে এরকম প্রতিভাবান মানুষ গুলো হারিয়ে যায়।ধন্যবাদ ভাবি।
আপনার গল্পের প্রথম পর্ব আমি পড়েছিলাম।শোভা রানীর গল্প পড়ে লাস্ট পর্যন্ত খারাপ লাগলো। যাকে স্কুলের শিক্ষক বুঝিয়ে শুনিয়ে প্রতিযোগিতায় রাজশাহী বিভাগে অংশগ্রহণ করালো। এবং শেখানো সেই প্রথম স্থান অধিকার করে পরে ঢাকায় বড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করল। আসলে এত কিছু পাওয়ার পর যখন তার বিয়ে হয়ে গেল তখন শশুর শাশুড়ি স্বামীর সবাই যখন তাকে আর গান গাইতে দিল না তখন তার প্রতিভা থেমে গেল। যার গান শোনার জন্য যে কোন অনুষ্ঠানে মানুষ আগ্রহ করতো সেই সংসারের জন্য সবকিছু ছেড়ে দিতে হলো। সুন্দর করে গল্পটি শেয়ার করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।
শুধুমাত্র সংসার এবং পরিবারের জন্য শোভা রানী তার যতো স্বপ্ন ছিলো সবকিছু ত্যাগ করে।আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু গল্পটি মন দিয়ে পড়ার জন্য।
শোভারানী গল্পটার প্রথম পর্ব যখন পড়েছিলাম তখন আমার কাছে সত্যি খুব ভালো লেগেছিল। তার পরিবার কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেনে নিয়েছিল তার গানের বিষয়টা। কিন্তু বিয়ের বয়স হওয়ার পর তার পরিবার তাকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল। তবে শোভারানী ভেবেছিল স্বামীর বাড়িতে এসে গান চালিয়ে যাবে কিন্তু সেই ভাগ্য আর হলো না। তিনি আর পারেনি স্বামী শাশুড়ির কথা অমান্য করতে। অনেক সুন্দর করে আপনি পুরো পোস্টটা লিখেছেন। সম্পূর্ণটা সুন্দর করে লিখেছেন দেখে ভালো লেগেছে।
শোভা রানীর বাবার বাড়ির পরিবার একটা সময় গিয়ে ঠিকই মেনে নিয়েছিলো তাই সে বেশ এগিয়ে গেছিলো।কিন্তু বিয়ের পর স্বামী শ্বাশুড়ির চাপে তার সবকিছুই ছাড়তে হয়।ধন্যবাদ আপু।