হঠাৎ ট্রিট পাওয়ার মুহূর্ত।
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।আজ তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে হঠাৎ করে ট্রিট পাওয়ার কিছু মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
অন্যের কাছ থেকে ট্রিট পেতে কার না ভালো লাগে বলেন!আবার তাও যদি হয় হঠাৎ করেই অনাকাঙ্খিতভাবে তাহলে তো আনন্দ টা আরও অনেক বেশি হয়।পিংকি আমার ননদের মেয়ে মানে আমার ভাগ্নী,ও প্রতিবার ঈদের ছুটিতে বাবার বাড়ি ঘুরতে আসে আর তখন কয়দিন আমার বাসায় থাকে সেই সময় টা আমরা সবাই খুব ভালোভাবে উপভোগ করি। ও যেমন আমার বাসায় থাকতে পছন্দ করে ঠিক তেমনি ও আসলে আমাদেরও খুব ভালো লাগে।
এবার পিংকি আসার পর থেকেই বলছিলো ওর পুরোনো বন্ধু বান্ধবীদের সাথে দেখা করবে ওর কথামতো আশেপাশের সব বন্ধু বান্ধবীদের সাথে দেখা করলাম।তারপর ও বললো মামী বগুড়ায় আমার এক বান্ধবী থাকে চলেন না একটু বগুড়ায় গিয়ে ওর সাথে দেখা করে আসি।বগুড়ায় আমি প্রায় আসাযাওয়া করতাম তাই বগুড়া আসাটা আমার কাছে খুব একটা কষ্টদায়ক মনে হয় না আর তাই ওর কথামতো রাজি হয়ে গেলাম।ঈদের আগের দিনের কথা ছিলো সাধারণত ঈদের আগে রাস্তাঘাট পুরো জ্যাম থাকে আর দূর্ঘটনা গুলোও বেশি ঘটে।
দুপুরবেলা খাবার খেয়ে আমরা তিনটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে বাসে উঠলাম বগুড়ার উদ্দেশ্যে।গোবিন্দগঞ্জ পার হয়ে মোকামতলা এসে দেখি রডের ট্রাক উল্টে গেছে আর তাই রাস্তায় জ্যাম লেগে গেছে গাড়ি কোনোভাবেই নড়াচড়া করছে না।গরমের মধ্যে বসে থাকতে থাকতে অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো।জানালা দিয়ে হঠাৎ করে বাহিরে তাকাতেই দেখি ট্রাফিক ইন্সপেক্টর অসীম চাকী ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে আছে। অসীম দা সম্পর্কে আমার দাদা হয়।অসীম দা কে দেখে আমি ওনার ফোনে কল করলাম,দাদা সাথে সাথে কল রিসিভ করলো তখন বললাম আমরা এখানে বাসের মধ্যে বসে আছি তখন উনি জিজ্ঞেস করলো কোন বাসে! নাম বললাম দাদা সাথে সাথে আমাদের সাথে দেখা করতে আসলেন এবং খুব জোর করেই আমাদের বাস থেকে নামতে বাধ্য করলেন।
মোকামতলা বাসস্ট্যান্ডের সাথেই একটা রেস্টুরেন্ট ছিলো আমাদেরকে ওখানে নিয়ে গেলো এবং বললো তোমরা কে কি খাবা অর্ডার করো আমি একটু নিচে থেকে দূর্ঘটনার স্থল পরিদর্শন করে আসি বলে উনি চলে গেলেন।আমরা তো সবেমাত্র দুপুরের খাবার খেয়ে বের হয়েছি তাই খাবারের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই।শুধু বাচ্চাদের জন্য একটা চিকেন শর্মা কোল্ড কফি, আর আমাদের জন্য কফি অর্ডার করলাম।খাবার আমাদেরকে পরিবেশন করা হলো তার কিছুক্ষণের মধ্যেই অসীম দাও উপরে আসলেন এবং বসলেন।
অসীম দা কে কফি অফার করলাম কিন্তু উনি খেতে চাইলো না তাই আমি আর পিংকি দুজনে কফি খেলাম আর বাচ্চারা ওদের খাবার খেলো।অসীম দা বললো তোমরা আর কিছুক্ষণ এখানে বসো অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই রাস্তা থেকে গাড়ি ছাড়বে তখন আমি তোমাদের ভালো গাড়িতে তুলে দিবো।কি আর কথা ওনার কথামতো আমরাও বসে থাকলাম অবশ্য খারাপ হয়নি গরমের মধ্যে বসে থাকার চলে রেস্টুরেন্টে এসিতে বসে বেশ ভালোই লাগছিলো।
অসীম দা নিচে গিয়ে আমাদের কল করলো তারপর আমরা নেমে গেলাম গিয়ে দেখি উনি ঢাকার একটা এসি বাস দাঁড় করিয়ে রেখেছেন বগুড়ার সিটগুলো খালি থাকে তাই সেই সিটে আমাদের বসিয়ে দিলেন। উনি যেহেতু ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তাই যেকোনো বাসই হোক না কেনো ওনার যাত্রী নিতে বাধ্য তাই আমাদেরও খুবই সন্মানের সহিত বসতে দিলেন এবং এক টাকাও ভাড়া নেওয়া হলো না।আমি অনেক বার দিতে চাইলাম কিন্তু তারা কোনোভাবেই নিতে রাজি নয় এই ব্যাপার টা একটু লজ্জাজনক লাগছিলো আমার কাছে।যাইহোক ভালোভাবেই খুবই আরামের সহিত আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। তারপর দাদাকে পৌঁছানোর সংবাদ জানালাম।
হঠাৎ করে এরকম আতিথেয়তা পেলে কার না ভালো লাগে বলেন? এরকম ট্রিট যেনো মাঝে মাঝেই পাওয়া যায় এই প্রত্যাশা করে আজ এখানেই শেষ করছি।😅সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা।
ধন্যবাদ।


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
হঠাৎ করেই তাহলে ট্রিট পেলেন। আসলে এরকম হঠাৎ ট্রিট পেলে ভালোই লাগে। খুব সুন্দর ভাবে সময় গুলো উপভোগ করেছেন। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে বের হওয়ার কারণে হালকা খাবার গুলোই খেয়েছেন। মুহূর্তগুলো দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু দুপুরের খাবার খেয়ে বর হওয়ার জন্য বেশিকিছু খেতে পারিনি।ধন্যবাদ আপু।
এভাবে হঠাৎ আনন্দ দৈনন্দিন জীবনে খুশির ঝলক এনে দেয়। খুব ভালো লাগলো আপনার আজকের ব্লগটি পড়ে। এভাবেই আনন্দে থাকুন। জীবন রঙিন হয়ে উঠবে৷
ঠিক তাই দিদি হঠাৎ খুশি গুলো মানুষের জীবনকে অনেক বেশি আনন্দ দেয়।ধন্যবাদ দিদি।
অন্যের কাছ থেকে ট্রিট পেতে সবারি ভালো লাগে আপু। তবে আমাকে কেউ ট্রিট দেয় না আপু। আজ আপনার ট্রিট পাওয়ার অনুভূতিটা দেখে খুব আফসোস হচ্ছে হিহিহি। তবে আমি মনে করি হঠাৎ এমন ট্রিট পেলে মনের মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ কাজ করে। রাস্তায় বের হলে এই রকম দূরঘটানা দেখলে আমার খুব ভয় লাগে। যাইহোক গরমে রাস্তায় বসে থাকার চেষে রেস্টুডেন্টে ভালোই ছিলেন। অনেক ভালো থাকবেন আপু।
রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনা দেখলে সত্যিই অনেক খারাপ লাগে আপু। আপনি আমাদের এলাকায় চলে আসুন আপনাকে ট্রিট আমিই দিবো।😅 ধন্যবাদ আপু।
অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। বেশ ভালো লাগলো আপনাদের এই অসাধারণ মুহূর্তটা আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন দেখে। মাঝেমধ্যে এমন সুযোগ পেলে মিস করতে নাই।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
হঠাৎ করে এরকম অতিথি আপ্যায়ন পেতে সত্যিই খুব ভালো লাগে দিদি। সব থেকে ভালো লাগলো এটা জেনে যে আপনারা পুলিশ দাদার থেকে ট্রিট পেয়েছেন। হা হা হা... 🤭 খাওয়া-দাওয়া তো করেছেন মোটামুটি এটা তো ঠিক আছে, কিন্তু যাওয়ার সময় একটা এসি বাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছে, এটা তো সত্যিই খুব আনন্দের ছিল। সব মিলিয়ে বলতে হয় যে দিনটা আপনাদের বেশ ভালোই গেছে।