ক্রিয়েটিভ রাইটিং।। কাঁঠাল চুরি করে খাওয়ার গল্প।।

in আমার বাংলা ব্লগ20 days ago

হ্যালো বন্ধুরা
আসসালামু আলাইকুম/আদাব আমার বাংলা ব্লগ স্টিমেট কমিউনিটির বন্ধু গণ আপনারা সবাই কেমন আছেন? আমি @biplob89 বাংলাদেশ থেকে বলছি আজ (৩১/০৫/২০২৪) রোজ: শুক্রবার।

pexels-chandi-saha-706198694-18681260.jpg

ছবিটি এখান থেকে নেওয়া হয়েছে

💞 শুভ সকাল 💞

আসসালামু আলাইকুম আমার স্টীম বন্ধুগণ আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়া ও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকে সকাল থেকে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছি। আজ আমি @biplob89 প্রতিদিনের ন্যায় আজকে ও আপনাদের মাঝে আরো নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করতে যাচ্ছি ক্রিয়েটিভ রাইটিং।। কাঁঠাল চুরি করে খাওয়ার গল্প।। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের পোস্টটি শেয়ার করা যাক।

কাঁঠাল হচ্ছে আমাদের জাতীয় ফল। কাঁঠাল কাঁচা গুলো তরকারি হিসেবে খুবই ভালো। সেই সাথে এই কাঁঠাল যখন পেকে যায় তখন খেতে তো সেই স্বাদ লাগে। তবে কাঁঠালের সাথে পান্তা ভাতের যেন একটা জুটি রয়েছে। এটা আমি অনেকবার খেয়েছি। এখনো কাঁঠাল পাকার সময় হয়ে ওঠেনি। আবার কোন কোন গাছে পেকেও গেছে। তবে কাঁঠাল পেকে গেলে সেই কাঠাল দিয়ে পান্তা ভাত একদিন খাব অবশ্যই।। কারণ পাকা কাঁঠালের সার আর পান্তা ভাত দেখলেই যেন খিদে লেগে যায়। কারণ পান্তা ভাত আর পাকা কাঁঠাল খুবই লোভনীয় একটি খাবার।

যাইহোক এবার আমি মূল বিষয়ে আসি। আজ থেকে প্রায় ৫ বছর আগে তখন শৈশব ছিল খুবই আনন্দের। এমনিতেও বিকেল হলেই এখনো স্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে যাওয়া হয়।। তবে এখন সময় বুঝে যাওয়া হয়। কিন্তু আজ থেকে পাঁচ বছর পূর্বে বিকেল হলেই ফুটবল হাতে নিয়ে চলে যেতাম খেলার মাঠে। এমনকি বড় ভাইদের সাথে একটু ঘোরাঘুরিও করতাম। যদিও এখন অনেক ঘোরাঘুরি করে থাকে। তবে এই ঘোরাঘুরির পার্থক্যটা পরিবর্তন হয়েছে কারণ আগের তুলনায় এখন আমি একটু বেশি ঘুরাঘুরি করি কারণ ভ্রমন করতে আমার খুবই ভালো লাগে।

তো একদম বিকেলের সময় আমরা সাথে ছিলাম ৪ জন। আর এই দলে সবচেয়ে ছোট ছিলাম আমি। তাছাড়া আমার সাথে আরও যে তিনজন বড়রা ছিল এরা সবাই আমার থেকে তিন চার বছরের বড়। তবে আমাদের গ্রামে একটি বড় বাগান রয়েছে। এটাকে সাইজি-মিয়ার বাগান বলা হয়‌ । এই বাগানে এমন কোন ফলের গাছ নেই যে নাই। শুধু যে ফল তা নয়, প্রত্যেকটা গাছ এই বাগানে রয়েছে। আমাদের আশেপাশে গ্রামের তুলনায় আমাদের গ্রামে এই বাগানটি খুবই পরিচিত। আগে আমরা সবাই ওই বাগান দিয়েই স্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে যেতাম। কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন সেখানে অনেক বন সৃষ্টি হয়েছে যে কারণে সেদিকে মানুষ তেমন আর পথ চলাচল করে না। কারণ ওই বাগানের পাশে যে এখন পাকা রাস্তা হয়ে গেছে তাই মানুষ ওই বাগান দিয়ে তেমন একটা চলাচল করে না বললেই চলে। আগে আমরা স্কুলেও যেতাম এই বাগান দিয়ে কিন্তু এখন আর সেটা হয় না। তবে বিকেলে খেলতে যাব তাই আমরা চারজন ওই বাগান দিয়ে যাচ্ছিলাম। সময়টা ছিল কাঁঠালের। আসলে কোন গাছে যদি কাঁঠাল পাক এ তাহলে অনেক দূর থেকেই তা বোঝা যায় এবং কাঁঠালের বাসনা নাকে আসে। এবার আমরা চারজন ওই বাগান দিয়ে যাচ্ছিলাম ওই বাগানে অনেক কাঁঠাল গাছ ছিল। এমন সময় দেখি পাকা কাঁঠালের বাসনা আমাদের নাকে আসে। এরপরে আমরা যে চারজন ছিলাম তার মধ্যে হাসিব নামের একজন ভাই সে বলল কাঁঠাল এ বাগানেই পেকেছে তাই কাঁঠাল খেতে হবে। এবার সে বলল ভালো করে প্রতিটা গাছ ঘুরে দেখ কোন গাছ থেকে বেশি এই সুবাস আসছে। তাই আমরা চারজন চার ভাগে ভাগ হয়ে গেলাম। এরপরে আমরা যে পাশে দিয়ে যাচ্ছিলাম ঠিক সেই পাশেই বাম হাতে একটি বড় কাঁঠাল গাছ ছিল ওই গাছেই পেকেছিল কাঁঠাল। এমনিতে মানুষ ছোটবেলা হতে গাছে উঠতে পারি। কিন্তু আমার বাসা থেকে জানতে পারলে মারধর করে বটে। কারণ আমার কোন গাছে উঠতে দেয় না। আর শৈশবের সময় মানে বুঝতেই পারছেন মানে না কোন কথা মানে না কারো কিছু। তাই প্রথমে আসিভ ভাইয়া গাছে উঠলো। গাছটি যদিও বড় ছিল কিন্তু কাঁঠাল পেকে ছিল একদম গাছের খুব নিচে। আর কাঁঠাল গাছটি একটু মোটাসোটা হাওয়ায় ওই হাসিব ভাইয়া প্রথমে ওঠে কাঁঠাল গাছেই ভেঙে খেতে শুরু করলো।

ফার্স্ট টাইমে হাসিব ভাই কাঁঠাল খেয়ে দেখলো কাঠালের ষাঁর গুলো অনেক বড় এবং অনেক মিষ্টি। তবে এই বাগানের যে মালিক তিনি কিছুই বলতেন না কারণ বাগানে এত পরিমান গাছ ছিল যে অনেকেই গিয়ে সেখানে ফল খেয়ে আসতো এবং বাসায় নিয়ে আসতো তাতে সে কিছুই বলত না। তবে বলুক আর না বলুক কাঁঠাল তো পেকেছে এ কাঁঠাল কি আর রেখে দিলে হয়। এমন প্রশ্ন আমাদের মাঝে উঠেছিল। আর শৈশব মানে বুঝতে পারছেন খাওয়া জিনিস হলে তো আগেভাগে খাওয়ার চিন্তাভাবনা থাকে। তাই হাসিব ভাইয়া সেই কাঁঠালটি পেড়ে নিয়ে নিচে আসলো। কাঁঠালটি ছিল খুবই বড়। আর আমরা ছিলাম চারজন। কাঁঠালটা খুব ভালোভাবে আমরা খুব মজার সাথে খেয়ে নিলাম। এদিকে আমাদের মধ্যে একটা ভয় ছিল যে গাছের মালিক চলে আসে কিনা। কিন্তু আমরা যখনই কাঁঠালগুলো প্রায় খাওয়া শেষের দিকে হয়ে গিয়েছিল ঠিক তার কিছুক্ষণ আগে গাছের মালিক চলে আসলো। সত্যি ই কাছের মালিক তিনি খুবই নম্র ভদ্র একজন মানুষ তিনি আমাদের আর কোন বকাঝকা করলেন না। তিনি শুধু বলল কাঁঠাল কি পেকেছিল। আমরা বলছিলাম যে জি পেকেছিল এই গাছটিতে। এরপরে আমরা তাকেও দু-একটি সার কাঁঠাল দিলাম তিনি ও খেয়ে খুব খুশি হলেন। আমরা খাচ্ছি যদিও গরমে বেশি কাঁঠাল খাওয়া ভালো নয় তাই আমরা যতটুকু পেরেছিলাম চারজন মিলে ততটুকুই খেয়েছিলাম। কি আর বলবো কাঁঠালটা যে এত স্বাদ ছিল তা বলার বাইরে। কাঁঠালটা একদম আত্তা তৃপ্তি করে আমরা খেয়ে নিলাম। এমনকি আজও যখন ওই কাঁঠাল খাওয়ার কথা মনে পড়ে মনে হয় যদি ওই সময়টা আজকে পেতাম তাহলে হয়তো আরো ভালো লাগতো। তবে শৈশবে ঘটে যাওয়া অনেক স্মৃতি যা কখনো ভোলা যায় না। তবে আমার এই বাড়তি জীবনে সেই ছোটবেলার দিনগুলো আমি অনেক মিস করি। ছোটবেলায় আমি অনেকটাই একটু অন্য টাইপের ছিলাম। সেটা খেলাধুলা হোক চুরি করা হোক হাসি তামাশা হোক যাই হোক না কেন কিন্তু এখন বন্ধুদের সাথে তেমন দেখা হয় না এবং বড় ভাইদের সাথে তেমন আড্ডা হয় না বা ঘুরে বেড়ানো হয় না যে কারণে চুরি করে খাওয়ার মজাটা হারিয়ে গেছে। তাছাড়া সব ঠিকঠাক রয়েছে। তবে কোন জিনিস এমনি খাওয়া আর চুরি করে খাওয়া তার মধ্যে মজার একটা বিষয় থাকে কারণ চুরি করে খাওয়ার জিনিসটার মজাই আলাদা যা বলতে গেলে জাস্ট অসাধারণ লাগে। আর চুরি করার সময় ফিলিংসটা তো সেই অন্যরকম থাকে যা বলে বোঝানো যায় না। তবে যত যাই বলুক নন্দ ঘোষ, চুরি করে খাবো এটাই আমাদের দোষ। হা হা হা ।

টেবিল ১টেবিল ২
পোস্ট তৈরি@biplob89
ডিভাইসOPPO A15

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি

@biplob89

আশা করি পোস্টটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। সকলের মতামত অবশ্যই নিচে কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাবেন। সকলের জন্য আমার পক্ষ থেকে রইলো প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।

💝 আল্লাহ হাফেজ 💝

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

!upvote 15


💯⚜2️⃣0️⃣2️⃣4️⃣ Participate in the "Seven Network" Community2️⃣0️⃣2️⃣4️⃣ ⚜💯.
This post was manually selected to be voted on by "Seven Network Project". (Manual Curation of Steem Seven). Also your post was promoted on 🧵"X"🧵 by the account josluds

the post has been upvoted successfully! Remaining bandwidth: 155%

Your post has been rewarded by the Seven Team.

Support partner witnesses

@seven.wit
@cotina
@xpilar.witness

We are the hope!

 20 days ago 

সবকিছুর একটা বয়স থাকে। আর সেই বয়সে মানে না কোন কিছু। একটা সময় আমারও বয়স ছিল। যে সময়ে এ ধরনের কাজ করতে একটু দ্বিধাবোধ করতাম না। সত্যি বলতে এই দুষ্টুমি গুলোই ছিল আমার নিত্যদিনের কাজ। কাঁঠাল চুরি করে খাওয়ার গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। পড়তে গিয়ে মনে হয়ে গিয়েছিল আমারও সেই শৈশবের দিন গুলোর কথা। কাঁঠাল খাওয়ার পরে মালিক না এসে যদি আগেই আসতো তাহলে আর কি মালিক কেউ খেতে দিতে আমরা হলে এটাই করতাম😃😃।

 20 days ago 

ভাইয়া মালিক যখন এসেছিল তখন ও ছিল তাই আমরা ও খেতে দিয়েছিলাম। ধন্যবাদ।

আসলে সব কিছুরই একটি সময় থাকে আপনি কাঁঠাল চুরি করে খাওয়ার গল্প শেয়ার করেছেন শৈশবকালে এমন ছোটখাটো বিষয়ে আমরা অনেক এক্সপার্ট ছিলাম মোটামুটি। তখন আমরা আম কাঁঠাল এগুলো বেশি চুরি করে খেতাম। অনেক ভালো লাগলো শৈশবের স্মৃতি মনে পড়ে গেল আপনার পোস্টটি পড়ে ধন্যবাদ ভাই।

 20 days ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করার জন্য।

 20 days ago 

বেশ দারুন একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইজান। আপনার সুন্দর এই গল্প পড়ে বেশ ভালো লাগলো আমার। এক কথায় অসাধারণ হয়েছে আপনার গল্পটা। আসলে আমাদের সকলের কম বেশি এমন ঘটনা রয়েছে। তবে এভাবে প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে অন্যের জানানোর সুযোগ দেওয়া যায়।

 20 days ago 

গঠনমূলক মন্তব্য শেয়ার করে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 65100.88
ETH 3526.71
USDT 1.00
SBD 2.36