গল্প অবুঝ পাখির ভালোবাসা / দ্বিতীয় পর্ব ‌

in আমার বাংলা ব্লগlast year

বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম

আসসালামু আলাইকুম

শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।

প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে অবুঝ পাখির ভালোবাসা গল্পটির
আজকের পর্ব বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।

heart-1776746_1280.jpg

আসুন শুরু করি


গত পর্বে আমি গল্পের প্রথম পর্ব উপস্থাপন করেছি। আজ দ্বিতীয় পর্ব উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। নীলকান্তের বোন মারা যাওয়ার পর এখন ময়না পাখি দুইটির সাথে তার প্রতিটি মুহূর্ত অতিবাহিত হয়। নদীর পাড়ে নির্জন পরিবেশে কখনো খেয়ে কখনো না খেয়ে তাদের জীবন অতিবাহিত হচ্ছে। নীলকান্ত ধীরে ধীরে যতো বড় হচ্ছে ততো ময়না পাখির প্রতি তার ভালোবাসা বৃদ্ধি পাচ্ছে । নীলকান্ত যেখানে যায় ময়না পাখিগুলো তার সাথে উড়ে উড়ে সেখানে চলে যায়। নীলকান্ত ময়না পাখির জন্য নদীর পাড়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘাস ফড়িং সহ বিভিন্ন পোকামাকড় ধরে আনতে। নীলকান্ত প্রায় সময় ময়না পাখি দুইটি ছেড়ে দিতো। পাখি দুইটি নীলকান্তকে ছেড়ে কোথায় যেতো না। সারাক্ষণ তার মাথার উপরে উড়াউড়ি করতো।

নীলকান্তের মা ময়না পাখি দুইটি প্রতি খুব খেয়াল রাখতো। খোলা আকাশের তলে মা ছেলের প্রতিটি মুহূর্তো কখনো হাসি আনন্দে কখনো বা, দুঃখে কষ্টে অতিবাহিত হচ্ছে। নীলকান্ত এখন অনেক বড় হয়ে গেলো। জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজের সন্ধানে এখন নীলকান্ত শহরে পাড়ি জমাবে। এই গ্রামে যে নীলকান্তের জন্য কোন কাজ নেই। তার মা থেকে বিদায় নিয়ে ময়না পাখি দুটি রেখে নীলকান্ত একদিন কাজের সন্ধানে শহরে চলে আসলো। গ্রাম থেকে শহরের আসার মুহূর্ত গুলো নীলকান্তের জন্য খুবই কষ্টের ছিলো। তার মাকে একা রেখে শহরে আসতে কোন ভাবে মন চাইছিলো না ।

কিন্তু জীবিকা নির্ভর জন্য তাকে শহরে আসতেই হবে। গ্রামে যে কোনো কাজ নেই। নীলকান্ত শহরে এসে অনেক খোঁজা খুঁজির পরে একটি কাজের সন্ধান পেলো। নীলকান্ত এখন একটি শপিং সেন্টারে কাজ করে। নীলকান্ত শহরে থাকলেও শহরের পরিবেশ তার ভালো লাগে না। অচেনা শহরে কারো সাথে তার এখনো ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে নাই গ্রামের কাটানো শৈশবের মুহূর্ত তার মনে পড়ে সে বারবার গ্রামে ফিরে যেতে চায়। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে কোন ভাবেই গ্রামে যাওয়া হয় না। তার প্রিয় ময়না পাখির জন্যও তার মন কাঁদে। ময়না পাখির সাথে যে তার সময় কাটাতে মন খুবই ব্যাকুল।

কয়েক মাস পর একদিন সেই গ্রামে ফিরে আসলো। গ্রামে গিয়ে তার মা এবং ময়না পাখি গুলোকে দেখে সেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলো। অনেকদিন পর মায়ের সাথে দেখা হয়ে নিজের অনুভূতি গুলো মাকে জড়িয়ে ধরে প্রকাশ করলো। ছেলে গ্রামে ফিরে এসেছে দেখে মাও আনন্দে চোখ অশ্রুতে ভিজে গেছে। নীলকান্তকে দেখে ময়না পাখি গুলো ডাকাডাকি আরম্ভ করলো। তার মাথা এবং কাঁধের উপর বসলো এবং এদিক ওদিকে উড়াউড়ি করতে লাগলো। ময়না পাখির সাথে আগের মতোই নীলকান্ত খুব চমৎকার মুহূর্ত অতিবাহিত করছে ।

ময়না পাখি গুলোকে দেখে তার বোনের কথা মনে পড়লো । বোন যদি থাকতো তাহলে তারা দুজন মিলে ময়না পাখি গুলোর সাথে সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করতে পারতো। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস আজ এই পৃথিবীতে বেঁচে নেই। একদিকে ময়না পাখি গুলোর সাথে মুহূর্ত কাটানোর অনুভূতি আনন্দ আরেক দিকে বোন হারানো বেদনা তার হৃদয়ে দুই ধারায় ঝর্না প্রবাহিত হচ্ছে - - - - ---চলবে‌।

পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি গল্পটির আগামী পর্ব উপস্থাপন করবো , ইনশাআল্লাহ।

  • অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।

সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।

আমার পরিচিতি

G0mIPwfurEJVlbirXIKFAUZVIuK.jpg

আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

♥️ আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ 🖤

Sort:  
 last year 

অবুঝ পাখির ভালোবাসা গল্পটির প্রথম পর্ব আমার পড়া হয়েছিল। আজকে এই গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব পড়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে। নীলকান্ত যেহেতু এখন বড় হয়েছে, তাই এখন তাকে জীবিকা নির্বাহ হতো অবশ্যই করতে হবে ঢাকায় গিয়ে। ঢাকায় যাওয়ার কারণে সে তার মা এবং সেই ময়না পাখি দুটিকে অনেক বেশি মিস করতো বুঝতেই পারছি। অনেকদিন পর গ্রামে আসার কারণে তাদেরকে দেখে অন্যরকম অনুভূতি প্রকাশ করেছিল। পাখিগুলোকে দেখে তার বোনের কথা তো মনে পড়ারই কথা। তার বোন বেঁচে থাকলে অনেক ভালো মুহূর্ত কাটাতে পারতো দুইজনে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছি।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

আপন কাউকে হারালে অনেক কষ্টের মাঝে দিন যায়। যার কারণে নীলকান্তের বোন মারা যাওয়ার পর পাখিদের সাথে সময় অতিবাহিত করছে। ধন্যবাদ তোমাকে চমৎকার একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

নীলকান্ত তার বোনকে অনেক বেশি ভালোবাসতো তা বুঝতেই পারছি। আসলে আমাদের কাছের মানুষগুলো যদি আমাদেরকে ছেড়ে চলে যায়, তাহলে সেই দুঃখ এবং বেদনা কখনোই ভুলে থাকা সম্ভব না। সেই মানুষগুলোর স্মৃতি আজীবন আমাদের মাঝে থেকে যায় এবং মানুষগুলোর কথা সব সময় মনে পড়ে। নীলকান্তের ঢাকায় গিয়ে রোজগারের কথা শুনে যদিও ভালো লেগেছে , তবে সে তার মা এবং ময়না পাখি দুটিকে ছেড়ে যাওয়ার কারণে তার কাছে খুব খারাপ লেগেছিল। কিন্তু সে আবার এসেছে এবং সবার সাথে ভালোভাবে থাকছে এটা যেন ভালো লাগলো। যদিও বোনের অভাবটা রয়ে গিয়েছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56697.29
ETH 2390.51
USDT 1.00
SBD 2.29