ফেরার পালা
একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন, যখন আপনি কোন জায়গাতে দীর্ঘ সময় থাকবেন, তখন সেই জায়গার প্রতি আলাদা একটা দুর্বলতা তৈরি হবে। এটা আসলে অনেকটা স্বাভাবিক একটা বিষয়, যেহেতু দীর্ঘ দুই সপ্তাহের অধিক সময় গ্রামে ছিলাম, তাই মুহূর্তেই সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে আলাদা ভাব জমে গিয়েছিল। এটা আমি বেশ ভালোভাবে বুঝতে পারছিলাম, সেদিন যখন শহরের বাসায় ফেরত চলে আসছিলাম ঠিক তখন।
দেখতে দেখতে টানা দুই সপ্তাহের অধিক সময় যে কোন দিক দিয়ে কেটে গিয়েছিল, তা যেন বুঝে উঠতেই পারিনি। বেশ নিরিবিলিভাবে সময় গুলো কাটিয়েছিলাম, আত্মীয়-স্বজন ও অন্য মানুষজনের সঙ্গে সখ্যতা বেশ ভালই গড়ে উঠেছিল। ফেরার সময় বেশ পিছুটান অনুভব করছিলাম।
শহরের যান্ত্রিক জীবনের সঙ্গে, গ্রামীণ জীবনের বিস্তর তফাৎ। গ্রামে গিয়ে মনে হয়েছিল যেন আমরা বহু আগের জীবনে চলে এসেছি। টানা দুই সপ্তাহ কোন যানবাহনের শব্দ পাইনি, অনেকটা গ্রামের ভিতরে বাড়ি, সবদিকে গাছপালা ও ফসলের জমি।
প্রতিনিয়ত বই পড়া এবং উন্মুক্তভাবে প্রকৃতির কাছাকাছি নিজেকে যেন একদম সঁপে দিয়েছিলাম। পরিবার নিয়েও কোনরকম দুশ্চিন্তা করতে হয়নি, বড্ড ফুরফুরে মেজাজে ছিলাম। ক্ষণিকের জন্য মনে হয়েছিল, আমি যেন সুখী মানুষের তালিকায় নিজের নামটি লিপিবদ্ধ করতে পেরেছিলাম।
আজ এই মধ্যরাতে এসে, শহুরে জীবনে যখন যান্ত্রিকতায় অস্থির সময় কাটাচ্ছিলাম, ঠিক তখনই গ্রামের কথাগুলো বড্ড মনে পড়ছিল। আমার সত্যিই শহুরে জীবন একদম ভালো লাগেনা। বড্ড হাঁপিয়ে উঠেছি এই জীবনে। এই কংক্রিটের জীবনে, সবাই এক ধরনের প্রশান্তির মুখোশ পরে থাকে, আসলে ভিতর থেকে তারা কেউ প্রশান্তিতে নেই। বলতে গেলে শহুরে জীবনটাকে আমার কাছে ছদ্মবেশী জীবন মনে হয়।
ইতি টানবো খুব শীঘ্রই এই শহুরে ছদ্মবেশী জীবনের। নিজেকে আবারো একদম স্থায়ীভাবে সঁপে দেবো প্রকৃতির মাঝে, ছোট্ট আবাসস্থলে। সেভাবেই পরিকল্পনা করছি প্রতিনিয়ত। বাকিটা নির্ভর করছে, পরিকল্পনা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারব, সেটার উপর।
এই বিষিয়ে ওঠা যান্ত্রিক জীবন, আমি আর কোন অবস্থাতেই চাই না। চারিপাশের অস্থিরতাপূর্ণ পরিবেশ পরিস্থিতির চাপে, আমি একদম পিষ্ট হয়ে গিয়েছি। এখন শুধু সুযোগ বুঝে ফেরার পালা। সেই সময় ও সুযোগ সন্নিকটে আসুক, তেমনটাই আশা করে, চাতক পাখির মত চেয়ে আছি।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া।আমরা মানুষ এবং বাঙ্গালি হিসাবে আমাদের প্রেম টা একটু বেশি হোক সেটা মানুষের প্রতি বা প্রকৃতি বা জায়গা।একটা জায়গায় কিছুদিন থাকলেই সেই জায়গার প্রতি মায়া বেড়ে যাবে এটা সাভাবিক একটা বিষয়।
আশা করি খুব দ্রুত আপনি আপনার গ্রামের পরিবেশে নিজেকে সপে দেবেন।দারুন একটি ব্লগ উপহার দিয়েছেন অনেক সুন্দর হয়েছে।
ধন্যবাদ ভাই যত্ন সহকারে লেখাটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
শহরের যান্ত্রিক জীবন ভালো লাগেনা। গ্রামীণ জীবন আমারও অনেক ভালো লাগে। যেহেতু অনেকদিন গ্রামে গিয়ে কাটিয়েছেন তাই মায়া তৈরি হয়েছে। আর কোথাও বেশিদিন থাকলে ফেরার সময় অনেক খারাপ লাগে। ভাইয়া আপনার অনুভূতির কথা তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
শহরের যান্ত্রিকতার বেড়াজালে যখন আমরা আবদ্ধ হয়ে যাই তখন সত্যি অনেক খারাপ লাগে। বারবার ছুটে চলে যেতে ইচ্ছে করে গ্রামীন কোন পরিবেশে। ভাইয়া আপনি অনেকদিন গ্রামে কাটিয়েছেন আমরা সবাই জানি। গ্রামীন পরিবেশে সময় কাটাতে যেমন ভালো লাগে তেমনি মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়। ভাইয়া আপনি গ্রামে থাকার পরিকল্পনা করছেন জেনে ভালো লাগলো।
কিছু করার নেই আপু, আমি আসলে মানসিক প্রশান্তি চাই, যার জন্য এত কিছু করা।
একদম ঠিক বলেছেন ভাই, আমরা যদি দীর্ঘ সময় কোথাও থাকি,সেখানকার প্রতি মায়া জন্মে যায়। আর গ্রাম্য পরিবেশে সময় কাটাতে আসলেই খুব ভালো লাগে। আমার কাছে তো শহর যেমন ফেক মনে হয়, তেমনি শহরের মানুষগুলোকেও ফেক মনে হয়। দোয়া করি আপনারা যাতে খুব শীঘ্রই গ্রামে শিফট হতে পারেন। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এই যান্ত্রিক জীবনকে মুক্তি দিতে চাই এবং গ্রামে গিয়ে শিফট হওয়ার জন্য এত আয়োজন।
ঠিকই বলেছেন,দীর্ঘসময় কোথাও থাকলে সেটার মায়ায় পড়ে যাই। আর গ্রামের প্রকৃতি আমারও ভালো লাগে খুব। গ্রামের প্রকৃতি একদম নিরিবিলি,আমরা যখন বাসায় ছিলাম তখন শহরের দিন রাত একই লাগতো।সারাক্ষণ যানবাহনের শব্দ,আর রেলওয়ে স্টেশনের কাছাকাছি থাকায় প্রায়ই ট্রেনের শব্দ হতো।আর তখন একরকম যুদ্ধ করে জীবন কাটিয়েছিলাম যেন,একদম রোবোটিক ছিল সব।যাইহোক অবশেষে বাড়িতে এসেই শান্তি পেলাম। তবে গ্রামের যত ভিতরে বসবাস করা যাবে ততই যেন একটা শান্তির ছোঁয়া পাওয়া যাবে। যাইহোক, দোয়া রইলো যেন আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারেন।
চেষ্টা করছি আপু, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য, এখন বাকিটা নির্ভর করছে সবকিছু সময়ের উপর।
গ্রামীণ জীবনে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায় ভাইয়া, সেই প্রশান্তি কখনো শহুরে জীবনে পাওয়া যায় না। আর তাইতো আপনি অনেকটা সময় গ্রামের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে নিজেকে জড়িয়ে বড্ড মায়ায় পড়ে গেছেন। হয়তো এজন্যই শহরে চলে আসতে আপনার কষ্ট হয়েছে। গ্রামের নিরিবিলি ও প্রশান্তি আপনার মেজাজকে ফুরফুরে করবে এটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে আবার যান্ত্রিক শহরের অস্থিরতা আপনার মেজাজকে বিগ্রে দেবে এটাও স্বাভাবিক। তাই আপনার চিন্তাভাবনাকে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
দেখি ভাই, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, খুব শীঘ্রই গ্রামে একবারে শিফট হয়ে যাব।
ভাইয়া একটি কথা ঠিকই বলেছেন, শহরের মানুষ ছদ্মবেশী জীবন যাপন করে। তারা কিন্তুু আসলে সুখি না। তারপরও জোর করে হাঁসি দিয়ে নিজেকে সুখি প্রমান করতে চাই। যায়হোক আমরা সবাই দোয়া করি আপনি খুব তারাতরি আপনার চিন্তা গুলো বাস্তবায়ন করুন। প্রকৃতির মাঝে নিজে বিলিয় দেন। ধন্যবাদ।
দাদা, শহুরে জীবনটা আসলেই ছদ্দবেশী জীবন । আমিও যখন গ্রামে টানা ১০-১৫ দিন থেকে আসি, তখন ওই জায়গার প্রতি একটা মায়া পড়ে যায়, আর শহরে ফিরতে ইচ্ছা করে না। গ্রামীণ জীবন আসলে অনেকটাই উন্মুক্ত পাখির মত মনে হয়, যেটা শহুরে জীবনে সম্ভব নয়। যাইহোক, সুযোগ বুঝে আবার গ্রামে চলে যাবেন দাদা, তাহলে হয়তো আবার প্রশান্তি খুঁজে পাবেন।