ফিরে গেলাম চিরচেনা সেই চুয়েট-এ || 10% beneficiary for shy-fox
আচ্ছালামুয়ালাইকুম,
আশা করি আমার বাংলা ব্লগের সকলে পরিবারবর্গ নিয়ে সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছেন।
প্রতিনিয়ত আপনাদের সামনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ টিপস্ এন্ড ট্রিকস নিয়ে আসি। কিন্তু আজ কোন টিপস্ এন্ড ট্রিকস নয়। আজকে আপনাদের সামনে ভিন্ন কিছু নিয়ে হাজির হলাম।
অনেকদিন পর আমার সেই চিরচেনা চুয়েটে আসলাম। চুয়েট হচ্ছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় চারটি সরকারী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি অন্যতম স্বনামধন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(সংক্ষেপে চুয়েট) ক্যাম্পাসে আরো রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজ।
উইকিপিডিয়া অনুসারে ভৌগোলিক অবস্থানঃ পাহাড়তলী, রাউজান উপজেলা, চট্টগ্রাম, ৪৩৪৯, বাংলাদেশ। ২২.৪৫৯৮৭৬° উত্তর ৯১.৯৭১১৫৪° পূর্ব, W3W |
---|
অনেকেরই ইচ্ছা থাকে চুয়েটে আসার, ভ্রমণ করার।
একাডেমিক প্রেশার, পারিবারিক ব্যস্ততা, আব্বু-আম্মু, নিজের সবার অসুস্থতা এক দূর্বিষহ কষ্ট কিছুটা কাটিয়ে, ফিরে গেলাম সেই প্রাণপ্রিয় চুয়েটে। |
---|
তো এবার যখন চুয়েটে যাচ্ছি, চিন্তা করলাম আপনাদেরকে যা পারি চুয়েটের কিছু অংশ মোবাইলে ধারণ করে আপনাদের দেখাবো। চুয়েট ১৬৯ একরের মালিকানাধীন। চুয়েটে গেলাম ঘন্টা দু্একের জন্য। এত বড় এরিয়া ঘুরে দেখার সুযোগ ও কম ছিল। যতটুকু ঘুরতে পেরেছি, ততটুকু আপনাদের সামনে ছবিসহকারে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো।
প্রথমেই বলে রাখি, চুয়েটে এখন অনেক নতুন নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে, এবং পুরাতন ভবন থেকে শুরু করে চুয়েটের ফ্রন্ট গেইটের ও সংস্করণ হচ্ছে নতুন করে।
|
---|
চুয়েট প্রবেশপথ
যা থেকেই ১৬৯ একর চুয়েটের শুরু।
বর্তমানে চুয়েট প্রবেশপথ মেরামতরত অবস্থায় আছে। চুয়েট গেইট এর নতুন প্রস্তাবিত ডিজাইন হতে যাচ্ছে আরো আকর্ষণীয় এবং অনন্য। গত বছর থেকে খুব সম্ভবত নতুন করে সংস্কার এর কাজ শুরু হয়।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
ভাষা শহীদদের স্মরণে স্থাপিত হয় এই স্মৃতি স্তম্ভ।
প্রতি বছর শহীদ দিবসে ভাষা শহীদদের সম্মান জানাতে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয় এই শহীদ মিনারে। ভার্সিটি শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ, চুয়েট স্কুল এন্ড কলেজের সকল শিক্ষকমন্ডলী এবং ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে থাকে। তবে বর্তমানে চুয়েট স্কুল এন্ড কলেজের প্রাঙ্গণে নতুন একটি শহীদ মিনার নির্মান করা হয়েছে।
|
---|
ছোট একটি পুকুর
এই পুকুরটিতে সুন্দর সুন্দর শাপলা এবং পদ্ম ফুল ফুটে, বর্তমানে কোন ফুলের দেখা পেলাম না, এই পুকুরের পাশেই রয়েছে, চুয়েট মেডিকেল সেন্টার। এটি ২০শয্যাবিশিষ্ট, বর্তমানে নতুন করে সংস্কার করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক এ্যাম্বুলেন্সে ব্যবস্থাও রয়েছে।
দূর্ভাগ্যক্রমে মেডিকেল সেন্টার এর ছবি তোলতে পারিনি। এই ছোট পুকুরের পেছনে যে ভবন টি রয়েছে সেটি হল ছাত্রদের হল, এটি বঙ্গবন্ধু হল নামে পরিচিত।
|
---|
চুয়েটের শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর
চুয়েটে এটিই সবচেয়ে আকর্ষনীয় ভবন হতে চলেছে। মেইন রোড থেকে যখন এটি দেখা যায়, তখন দেখতে এটাকে বেশ চমৎকার লাগে। এটি এখনো নির্মাণাধীন, তবে বর্তমানে প্রায়ই এর নির্মান কাজ শেষের দিকে। এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নতুন নতুন আইডিয়া, উদ্ভাবন বা গবেষণালব্ধ ফলাফল কে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসে রুপান্তর করা।
এই প্রথম আমি এটাকে দেখলাম খুব কাছ থেকে এবং এটার উপরের ফ্লোরগুলাও পরিদর্শন করার সুযোগ হয়েছে, যদিওবা এটা নির্মাণাধীন, তাও উপরে উঠার একটা ইচ্ছা জেগে উঠলো আমাদের। উপর থেকে আশপাশের এলাকা দেখতে কেমন, তার ছবি গুলো নিচে সংযোজন করে দিচ্ছি।
সামনের ভবন টি একাডেমিক ভবন-৪, এবং এই ছবিতে পেছনে রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেখা যাচ্ছে। এটি বাংলাদেশের একটি গ্যাসচালিত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটির লোকেশনঃ ২২°২৭′৩৫″ উত্তর ৯১°৫৮′৪৪″ পূর্ব W3W Code
|
---|
|
---|
|
---|
চুয়েটের হ্রদ
এই হ্রদে একটি নৌকা আছে, যেটি বর্তমানে উল্টানো অবস্থায় আছে, ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আপনারা খোঁজে বের করুন তো দেখি। ভার্সিটির স্টুডেন্টরা মাঝ মধ্যে ভেলা তৈরী করে কিংবা নৌকায় বসে মাছ ধরে।
চুয়েটের ওয়ান বাই ওয়ান রোড
ব্যস্তময় রোড, বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতির কারনে ব্যস্তময় রোড একদম ফাঁকা।
ক্যান্টিন ১ এবং ক্যান্টিন ২
এখানে ক্যান্টিন ১ এবং ক্যান্টিন ২ রয়েছে, চুয়েট স্কুল এন্ড কলেজে যখন ছিলাম তখন কত যে দুপুরের টিফিন এখানে এসে এসে দুপুরের টিফিন করতাম। ক্যান্টিনের পাশে বাস্কেটবল ফিল্ড রয়েছে, নিচের ছবিটি দেখলেই বুঝতে পারবেন।
বাস্কেটবল ফিল্ড
বাস্কেটবল ফিল্ডে খেলাধুলা তো হয়, র্যাগফেস্ট ও হতে দেখেছিলাম বেশ কয়েকবার।
স্বাধীনতা ভাস্কর্য
এটি ১৬ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সালে উদ্বোধন করা হয়। ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর সাধারণ জনগণের মূল আকর্ষণ এটি। রাতের বেলা বেশি আলোকসজ্জার মাধ্যমে আলোকিত করা হয়। দেখতে বেশ সুুন্দর লাগে।
এর চারপাশে চারটি রোড গিয়েছে। দুইটি রোড পরস্পর মেইন রোড, বাকী দুইটি রোডের মধ্যে একটি একাডেমিক রোড, এটি সম্পর্কে নিচের ছবি দেখতে পারেন,একাডেমিক রোডের বিপরীতে যাওয়ার যে রোড আছে, সেটি দিয়ে টি.এস.সি, শহীদ মোহাম্মদ শাহ হল, শহীদ তারেক হুদা হল রয়েছে, (প্রত্যেকটি ছাত্রদের হল)।
|
---|
একাডেমিক রোড
একাডেমিক রোডের এইদিকেই প্রায় সব একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ভিসি বিল্ডিং,সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, সব ডিপার্টমেন্ট বিল্ডিং, অডিটোরিয়াম,ওয়ার্কশপ ইত্যাদি অবস্থিত। এই দিকের পথে আমার যাওয়ায় সুযোগ হয় নি, যেহেতু আগেই বলেছি,আমি খুব কম সময়ের জন্য গিয়েছিলাম। আমি মূলত আমার চুয়েট স্কুল এন্ড কলেজে গিয়েছিলাম, পুরাতন স্মৃতিগুলোা উদ্ধার করতে।
সাঙ্গু বাস
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ টি নিজস্ব বাস রয়েছে, এক-একটির এক এক নাম। যেমনঃ ময়না, পদ্মা, যমুনা, সাঙ্গু,ইছামতী ইত্যাদি। এই বাসটির নাম ছিল সাঙ্গু, যা আপনারা নিচের ছবিতে স্পষ্ট দেখতে পাবেন
|
---|
|
---|
চুয়েট ক্যাফেটেরিয়া
এটি নবনির্মিত ক্যাফেটেরিয়া। সম্ভবত এটি এখনো উদ্বোধন হয় নি। তবে এটি বেশ চমৎকার হয়েছে। সত্যি বলতে, বর্তমানে চুয়েট অনেক সুন্দর সুন্দর ভবন নির্মাণ করেছে।
|
---|
চুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদ
কেন্দ্রীয় মসজিদটি এখন দোতলা করা হয়েছে, আমরা যখন ছিলাম তখস এটি একতলা বিশিষ্ট ছিল। চুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার পাশেই চুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদটি।
সত্যি বলতে, এত বড় এরিয়া আমি পুরোটাই ঘুরতে পারি নি, যা ঘুরেছিলাম, তা এই পোস্টের মধ্যে কাভার করা ও সম্ভব হচ্ছে না। আগামী পর্বে ইনশাআল্লাহ বাকীটুকু কাভার করে দিবো।
✰আগামী পর্বে থাকছে✰
- শেখ রাসেল হল ছাত্রদের
- বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেসিয়াম
- সেন্ট্রাল ফিল্ড
- ছাত্রীদের হল
- চুয়েট স্কুল এন্ড কলেজ
- চুয়েট স্কুল এন্ড কলেজ সংলগ্ন পুকুর
- স্টুডিও এপার্টমেন্ট নির্মাণ
- বট বৃক্ষ
- বাস পার্কিং এরিয়া
- ক্যাম্পাসের পার্ক
- আবাসিক এলাকা
- ওয়ান বা ওয়ান রোড
- পানির ট্যাংক
- অফিসিয়াল যানবাহন পার্কিং
আমি মোঃ আশরাফুল গণি, পেশায় আমি একজন ছাত্র। ফ্রন্ট এন্ড ওয়েব ডেভেলপিং, ওয়েব ডিজাইনিং সিএমএস এক্সপার্ট, ইমেইল টেম্পলেট ডিজাইনিং, মেইলচিম্প এক্সপার্ট, হালকা - পাতলা গ্রাফিক্স ডিজাইন এ দক্ষতা আছে। শখঃ টেক রিলেটেড যেকোন কিছু করতেই ভালো লাগে। বর্তমানে ব্লগিং শিখছি, নতুন কিছু শিখতেই সবসময় ভালো লাগে। |
সর্বোপরি খুব সুন্দর ভাবে আপনি উপস্থাপন করেছেন কিন্তু এরকম ফটোগ্রাফি পোস্ট করার ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রত্যেকটা ছবির নিচে লোকেশন ব্যবহার করা অত্যাবশ্যক। অনুগ্রহপূর্বক পরবর্তীতে এরকম পোস্ট করলে অবশ্যই সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখবেন, ধন্যবাদ।
সিয়াম ভাইয়া, ধন্যবাদ আমার ভুল টি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। ইনশাআল্লাহ আগামী থেকে আপনি যেভাবে বলেছেন ঐভাবে করবো।
চুয়েট সাথে আপনার স্মৃতিবিজড়িত অনেকগুলো বছর কেটে গেছে। অনেক দিন পর আবার ভালোবাসার টানে ফিরে গেলেন চুয়েটে। সেখানে গিয়ে আমাদের সাথে অনেকগুলো নান্দনিক ফটোগ্রাফি শেয়ার করলেন, সেইসাথে চুয়েট প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। তবে আপনার ফটোগ্রাফি গুলোর প্রশংসা না করে পারছি না জাস্ট অসাধারণ। সত্যি খুবই ভালো লেগেছে অনেকগুলো বিষয় আমরা জানতে পারলাম। আর আমাদের সাথে এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ রবিউল ভাইয়া, ভাইয়া চেষ্টা করেছি বেষ্ট টা দেয়ার, তাও সব ফটোগ্রাফ এই একটি পোস্টে আনতে পারিনি। আগামী পর্বে ইনশাআল্লাহ বাকীগুলো শেয়ার করার চেষ্টা করবো। আপনার মন্তব্যে নিজেকে স্বার্থক মনে হচ্ছে। আসলে মন্তব্য খারাপ হোক বা ভালো হোক, সেটা কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরী করে দেয়। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।🤍💙