প্রাচীনকালে গ্রাম অঞ্চলের মসল্লা বাঁটার প্রধান বাহন হলো- ঐতিহ্যবাহী শিল-পাটা।
শনিবার,
তারিখ - ১৫ ই এপ্রিল ২০২৩ইং
আসসালামু আলাইকুম,
প্রিয় ভাই ও বোনেরা, সকলে কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে আপনারা সবাই ভালোই আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার রহমতে ভালোই আছি। স্টিম ফর ট্রাডিশন কমিউনিটি আজ ঐতিহ্যবাহী শিল পাটা নিয়ে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করি সকলের ভালো লাগবে।
![]() |
---|
প্রাচীনকালে মসলা গুড়ো করার একমাএ মাধ্যম ছিল এই পাথরের তৈরি হস্ত চালিত শিলপাটা।শিলপাটা বলতে সাধারণত পাথরের তৈরি দুইটি খন্ডকে বোঝায়।শিল হচ্ছে দীঘল পাথর খন্ড যেটিকে দু'হাতে ধরে মসলা পিষা হয়।তবে সেসময় শুধু দীঘল নয় লম্বা গোলাকারসহ বিভিন্ন আকৃতির শিল পাওয়া যেত।পাটার উপর মসলা রেখে শিলের সাহায্য দুহাত দিয়ে মসলা গুড়ো করা হয়। গ্রামীন ভাষায় অনেকে এই পাথরের তৈরি শীলকে নোড়া বলে থাকে।
আগেকার দিনে শিলপাটা ছাড়া রমণীদের রান্নার কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যেতে।সেসময় বিভিন্ন ধরনের মসলা যেমন আদা, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ ইত্যাদি সব ধরনের মসলা গুড়ো করা হতো।শুধু মসলায় নয় বিভিন্ন প্রকার ভর্তা করা হতো এই পাথরের তৈরি শীলপাটার সাহায্য। আর এই শীলপাটায় করা ভর্তা খেতে অনেক সুস্বাদু ছিল। আগের কার দিনে বিয়ে শাদি সহ সব ধরনের অনুষ্ঠানে রান্নার মসলা মহিলারা শীলপাটাতেই বাটাবাটি করতো।এছাড়া বিয়ের গায়ে হলুদের কাঁচা হলুদ ও বাটা হতো এই শীলপাটার সাহায্য। প্রাচীনকালে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই শিলপাটা দেখা যেত।কারনএই শিলপাটা ছাড়া রান্নার কাজ সম্পূর্ণ হতো না। শিলপাটা রান্নাঘরের এক কোনে প্রথমে পাটা ও তার উপরে শিল দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। রান্নার কাজ শুরু করার আগে শিলপাটায় সব ধরনের মসলা গুড়ো করে তারপর রান্নার কাজ শুরু করতে হয়।
![]() | ![]() |
---|
প্রাচীন কালে প্রতিটি বাড়িতে শীলপাটার ব্যবহার হলেও বর্তমান যুগে এখন আর এই শীলপাটার দেখাই মিলে না।আধুনিক প্রযুক্তির উন্নতিতে এখন বিভিন্ন ধরনের মসলা গুড়ো করার ইলেকট্রিক যন্ত্র বের হয়েছে। যেগুলোর সাহায্য খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক গুলো মসলা নিমিষেই গুড়ো করছে।এতে একদিকে যেমন সময় সঞ্চয় হচ্ছে অন্যদিকে তেমনি শারীরিক পরিশ্রম ও কম হচ্ছে।
শিল পাটা একটি হস্ত শিল্প। প্রাচীনকালে শিলপাটা দার করানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের কারিগরিরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে পাটা দার করিয়ে বেড়াত।তারা পাটা দার করিয়ে যে অর্থ উপাজন করতো তাই দিয়ে তারা সংসার চালাত। কিন্তু এখন আধুনিক যুগে শিলপাটার ব্যবহার কমায় এখন এসব পাটায় দার করানোর কারিগরিরা মানবেতর জীবন যাপন করছে।
![]() | ![]() |
---|
পরিশেষে বলা যায় যে, শিল পাটা আমাদের আগেরকার যুগের নিত্য প্রয়োজনীয় সঙ্গী ছিল। মসল্লা বাঁটা থেকে শুরু করে তরকারি জাতীয় বিভিন্ন ধরনের পণ্য সামগ্রী মিহি করার কাজে ব্যবহার করা হতো। এর প্রচলন গ্রামে অঞ্চলে বেশি ছিল। সময় ও কালের বিবর্তনে আজ শিল পাটা বিলুপ্তর পথে।
আমার লেখা পোস্ট পড়ার জন্য সকলকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। সকলে সুস্থ ও ভালো থাকবেন।
মোবাইল | Tecno 9t spark |
---|---|
ক্যামেরা | ৩৮ মেগাপিক্সেল |
পোস্টের ধরণ | ঐতিহ্যবাহী শিল পাটা |
লোকেশন | চিরিরবন্দর গুড়িয়া পাড়া |
![]() |
---|
ধন্যবাদ,
@siza
শিল পাটা আমাদের জরুরি একটি প্রয়োজনীয় জিনিস। আর এই শিল পাটার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মসলা বাটা হয় আর এই গুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করতে হবে। আপনি দারুণ ভাবে ফটোগ্রাফি করেছেন এবং সুন্দর লিখেছেন। ধন্যবাদ আপি
আজ থেকে প্রায় ১০-১২ বছর আগে প্রত্যেকটি বাড়িতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি জিনিস ছিল এই শিল পাটা। কিন্তু কালের বিবর্তনে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মাঝ থেকে। হারিয়ে যাবে না কেন উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন কোন রকমের পরিশ্রম ছাড়া ব্যালেন্ডার মেশিন মিল ইত্যাদি ভাবে যেকোনো প্রকারের মসলা পেঁয়াজ রসুন নিমিষেই মিহি হয়ে যায়। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
শিল-পাটা নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন।এই শিল-পাটা আমাদের গ্রাম অঞ্চলের ঐতিহ্য। এই শিল-পাটা আমরা দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি।সুন্দর একটা পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ।
ঐতিহ্যবাহী এই শীল পাটা আমি চিনি।এই শীল পাটায় আগে আমরা মেহেদী বাডতাম। মহিলারা মসলা বাডতো। এখন এই সব কেউ ব্যবহার করে না।দিন দিন সব পরিবর্তন হয়েছে। আপনি অনেক সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
গ্রাম অঞ্চলের ঐতিহ্য হচ্ছে শিল পাটা। শিল পাটা দিয়ে অনেক কিছু বাটা হয়। বিশেষ করে শিল পাটায় মসলাগুঁড়া করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে শিল পাটার ব্যবহার হয়ে আসতেছে।বর্তমানে শিল পাটার ব্যবহার অনেক কম।আপনি ঐতিহ্যবাহী শিলপাটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছেন আপু। এবং খুব লিখেছেন আপু।শিলপাটা নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ
ধন্যবাদ ভাইয়া এতো সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
শিল পাটা হচ্ছে আমাদের গ্রামের ঐতিহ্য, যুগ যুগ ধরে মানুষ মশলা বাটার জন্য এই শীলপাটা ব্যবহার করে আসছে। শীল পাটাদিয়ে মসলা বেটে রান্না করলে তরকারি অনেক সুস্বাদু হয়। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন বিলুপ্তপ্রায়। নানা রকম ইলেকট্রনিক্স ব্লেন্ডার নামার কারণে এসব শীল পাটা হারিয়ে যাচ্ছে। অনেক সুন্দর পোস্ট করেছেন আপু অসংখ্য ধন্যবাদ।
ঐতিহ্যবাহী শিল পাটা নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। শিল পাটা আমাদের গ্রামে অঞ্চলে এর প্রচলন বেশি ছিল। এই শিল পাটায় করে মসল্লা জাতীয় পণ্য মিহি করার কাছে ব্যবহার করা হতো। ছবি গুলো অসাধারণ হয়েছে। ধন্যবাদ
এই শিল্পাটা সাধারণত গ্রামীণ অঞ্চলের সব থেকে বেশি ব্যবহার করা হয়।বিভিন্ন রকম মসলা বাটার কাজে এটি ব্যবহার করা হয়। এতে মেহেদী ও বাঁটা হয় ছোটবেলায় অনেক মেহেদী বেটেছি।খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন আপনি, খুব সুন্দর লিখেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।