কন্টেস্টঃ- বৃষ্টির দিনে ঘটে যাওয়া আমার একটি স্মরণীয় ঘটনা ||steemCreated with Sketch.

in Steem For Traditionlast year

আসসালামু আলাইকুম

আশা করি সকলে ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও অনেক ভালো আছি। আমি আজকে স্টিম ফর ট্রাডিশন কমিউনিটির পক্ষ থেকে আয়োজিত বৃষ্টির দিনের ঘটে যাওয়া একটি স্মরণীয় ঘটনা আলোচনা করতে চলেছি। আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। এমন সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য আমি @selimreza1 ভাইয়াকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারা আমার এই প্রতিযোগিতায় আমন্ত্রিত:-@sabus @kemsa @mdshanto


কভার ফটো


ক্যানভা দ্বারা তৈরি


কমবেশি সকল বয়সের মানুষ বৃষ্টিতে ভিজতে অনেক ভালোবাসে। বৃষ্টি আসতে ধরলেই ছোট বাচ্চাদের সবথেকে বেশি আনন্দ করতে দেখতে পাওয়া যায়। বৃষ্টির অনুভূতি একেক জনের কাছে একেক রকম হয়ে থাকে। কেউ বা বৃষ্টির দিনে পুরনো কথা মনে করে খুশি হয় আবার কেউ পুরনো কথা মনে করে চোখের পানি ফেলে। তবে বেশির ভাগ বাড়িতেই বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি রান্না করা হয়ে থাকে। বৃষ্টির দিনে কেউ তেমন বাহিরে কাজের জন্য যেতে পারে না।পরিবারের সবাই বৃষ্টির দিন গুলোতে বাসায় অবস্থান করে। পরিবারের সবার সাথে কত রকমের যে কথা হয় তার কোনো হিসেব নেই। এইতো বেশ কয়েকদিন আগে বৃষ্টির দিনে বাসায় খিচুড়ি রান্না করে সবাই একসাথে বসে খাচ্ছিলাম আর তখন বাবা আমাকে জিজ্ঞেস করল প্রেম করিস না 😃? কি একটা লজ্জার বেপার একবার চিন্তা করে দেখেন।



বৃষ্টির দিন গুলোতে সবথেকে বেশি যে কাজ করি তা হলো লুডু খেলা। আমি আমার দুইজন বড় ভাই এবং চাচাতো ভাই মিলে লুডু খেলি। আগে অবশ্য ফোনের লুডু তেমন বেশি জনপ্রিয় ছিলো না তাই বাজার থেকে কিনে নিয়ে এসে খেলতাম। আমার বড় ভাই সবসময় একটা করে ঘর এগিয়ে দিতো এই নিয়ে অনেক ঝগড়া করেছি। কিন্তু এখন ফোনে লুডু খেলি তেমন আর ভেজাল হয় না। আকাশে ঘন কালো মেঘ দেখলেই অনেকের মনে অজান্তেই একটি গান চলে আসে আর তা হলো:- এই মেঘলা দিনে একলা ঘরে থাকে না তো মন......। বৃষ্টির দিনের সবথেকে জনপ্রিয় গান এটি।



বৃষ্টির দিনের অনেক স্মৃতি মনের মধ্যে জাগে। বৃষ্টির আগে আকাশে এমন রংধনু দেখতে পাওয়া যায়। এই রংধনু দেখে ভাবতাম সমুদ্র থেকে পানি তুলতেছে আর একটু পরেই প্রচুর বৃষ্টি হবে। আমরা সকলেই জানি রংধনুতে ৭ টি রং রয়েছে। আমি তাকিয়ে অনেকবার গণনা করার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। বৃষ্টিতে ভিজে আমি এবং আমার চাচাতো ভাই প্রায় সময় একটি বেলের গাছ থেকে গুলটি দিয়ে বেল পাড়তাম। আমি গুলটি ভালো চালাতে পারি তাই সবসময় আমি বেলের গাছে গুলটি মারতাম আর চাচাতো ভাই বেল কুড়িয়ে রাখতো।



বৃষ্টির দিনে কোনো ছাদের পানি পড়তে দেখলে আমি ঠিক চিত্রের মতো এইভাবে সেখানে গোসল করতাম। আমি আজকের বৃষ্টিতে একজন ছোট ভাইকে এইভাবে ভিজতে দেখে মনে পড়ে গেলো। ছাদের পানি পাইপ দিয়ে পড়ার কারনে একসাথে অনেক পানি পড়তো এর জন্য তাড়াতাড়ি গোসল করা হয়ে যেতো। আজকের বৃষ্টির দিনের ছবি তুলতে বাহির হয়ে বেলের গাছটি চোখে পড়লে আমার অনেক হাসি পায়৷ একবার ভাবলাম বৃষ্টি পড়তেছে বাসা থেকে কেউ বাহির হবে না তাই বেল পাড়া যাবে কিন্তু এখন আর সেই ইচ্চে হয় না।



শিলাবৃষ্টি হলে শিলা কুড়িয়ে রাখেনি এমন ছেলেমেয়ে হয়তো কম আছে। আমি ও আমার ছোট বোন কিছু দিন আগে এই শিলা গুলো কুড়িয়েছিলাম হাঁসের বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য। শিলা কুড়িয়ে জমিয়ে রাখাও একটি আনন্দ।



বৃষ্টি শুরু হলেই মাঠ থেকে গরু ছাগল নিয়ে আসার একটা ধুম পড়ে যায়। আমি নিজেই অনেক সময় মাঠ থেকে গিয়ে গরু নিয়ে আসতাম।গ্রামের মানুষ বলত বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ চমকাবে গরু অন্য দিকে মোড় নিবে তাই তাড়াতাড়ি নিয়ে আসতাম। বৃষ্টির দিনে অনেক জায়গায় পিচ্ছিল করে রাখতাম একজন ঠ্যালা দিলেই অনেক দূর চলে যাইতো। বৃষ্টির দিনে অনেক মজার কাহিনি আছে আমার কিন্তু একটা কাহিনি সবথেকে বেশি মনে পড়ে। আজকে সেই কাহিনিটি বিস্তারিত বলব।


বৃষ্টির দিনে আমার স্মরণীয় একটি ঘটনাঃ-


আগে আমাদের গ্রামে প্রায় পুকুরে কালো এক ধরনের মাগুর মাছ চাষ করা হতো। এই মাগুর মাছকে সাধারণত আমরা বিদেশি মাগুর বলেই থাকি। এই মাছ অনেক বড় হতো। একটি বিদেশি মাগুর ৬-৭ কেজি অল্প সময়ের মধ্যেই হয়ে যেতো। আমার বাসার পাশেই একটি পুকুর ছিলো যেখানে অনেক বড় বড় বিদেশি মাগুর মাছ ছিলো। বৃষ্টি হলেই আমি সেই পুকুরে মাছ ধরার প্লান করতাম।তখন আমি পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ছিলাম। সারাদিন বরশি দিয়ে মাছ ধরে বেড়াইতাম । বৃষ্টিতে সবদিক অন্ধকার হয়ে গেছে আর আমি আমার কাজে লেগে পড়েছি বরশিতে কেঁচো লাগিয়ে চুপ করে এক কর্ণারে মাছ ধরতেছি। একটু পরেই বিশাল বড় একটি মাগুর মাছ আমার বরশিতে ধরা পড়ে। আমি কোনো ভাবেই এই মাছটিকে আমার আওতায় আনতে পারছিলাম না। অনেক চেষ্টার পরে উপরে উঠিয়ে দেখি এই মাছের ওজন প্রায় ৭ কেজি। আমি অনেক কষ্টে বাসায় নিয়ে গিয়েছিলাম এই মাছ। এমন পুকুর থেকে মাছটি ধরেছিলাম এনারা অনেক খারাপ মানুষ ছিলো জানলে অনেক সমস্যা হতো। এই মাছের কথা আব্বা শুনার পরে কাঁচা বাঁশের বাতা দিয়ে যে মাইর দিয়েছে তা আমার গায়ে এখনো দাগ কেটে আছে। এই কথা এখন মনে পড়লেই হাসি পায় আবার অনেক কষ্টও লাগে। আমার জীবনে অনেক বড় একটি স্মৃতি। আসলে মাছ ধরার চেয়ে হয়ত এতো বড় আনন্দের কাজ আর হয় না।




ডিভাইস সংক্রান্ত তথ্যবলিঃ
ডিভাইসরেডমি নোট ১০প্রো
ফটোগ্রাফার@mainuna
লোকেশনHWM8+J35 চৌপথী বাজার


Sort:  
 last year 

আপনার বাবা তো দেখছি অনেক ফ্রি মাইন্ডের লোক।আমরা বৃষ্টির পানিতে পিছলা পিছলি করতাম। রংধনুর রং গুলো আমিও খুঁজতাম।বৃষ্টির দিনে সবারই জীবনে অনেক স্মৃতি থাকে। আপনার স্মৃতিটি সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন। প্রতিযোগিতার জন্য শুভকামনা জানাচ্ছি। ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

হ্যাঁ আপু।

 last year 

বাহ্ চমৎকার উপস্থাপন করেছেন ভাই। জি ভাই ঠিক বলেছেন, বৃষ্টির সময় গ্রামের লোকজন তাদের গরু বাছুর বাড়িতে নিয়ে আসে মাঠ থেকে। মাছ ধরার অভিজ্ঞতা আছে তাহলে আপনার। আমিও বরশি দিয়ে মাছ ধরতে পারি। ছাদের বা টিনের পানি পড়তে দেখলে আমিও এভাবে গোসল করতাম। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট। ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে ভাই। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। প্রতিযোগিতায় জন্য শুভ কামনা রইলো।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

প্রথমে আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাই। অসাধারণ একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। বৃষ্টির দিনের এই জনপ্রিয় গানটি আমারও অনেক ভালো লাগে। ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে। যাক ,মাইর তো খাইলেন ! কিন্তু মাছ খাইছেন কিনা সেটা তো বললেন না 🫣??
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

মাছ সম্ভাব্য আমার খাওয়া হয়নি।

 last year 

বৃষ্টিতে ভিজতে কাকে না ভালো লাগে।সেই ছোটবেলা থেকেই বৃষ্টিতে ভিজি আমিতবে বর্তমানে আর তেমন সেইভাবে ভেজা হয় না ছোট ভাইয়েরা যখন মাঝেমাঝে টেনে নিয়ে যায় তখন ভিজি। শিলা বৃষ্টি হলে আমিও শিলা কুড়িয়ে রাখি।ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিলেন আপনি আমার এখনো মনে আছে ২০১৩ সালে বর্ষার সময় একবার শিলাবৃষ্টি হয়েছিল। তখন আমরা আমাদের স্কুলের মাঠ থেকে অনেক শিলা কড়িয়েছিলাম।যাইহোক দারুন উপস্থাপন করেছেন আপনি শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year (edited)

Feedback / Observation

বৃষ্টির ঘটে যাওয়া স্মরণীয় ঘটনা নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বৃষ্টিতে ভিজতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। বৃষ্টি আসলেই আগে আম গাছের নিচে যাই বাতাসে কখন আম পড়বে। 🙂বৃষ্টিতে ভিজে আমরা আগে ফুটবল খেলতাম।

ভুল বানানঃ নাই। 🙂
অনুপস্থিত শব্দ(Missing Word): 🙂
ভাষার গরমিলঃ নাই। 🙂
Regards
@md-sajalislam (Moderator)
Steem For Tradition

 last year (edited)

ধন্যবাদ ভাই।