ওয়েব সিরিজ রিভিউ: জাতিস্মর- The Mysterious Disappearance ( পর্ব ৩ )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে ওয়েব সিরিজ 'জাতিস্মর ' এর তৃতীয় পর্ব রিভিউ দেব। এই পর্বের নাম হলো "The Mysterious Disappearance". গত পর্বের লাস্ট মোটামুটি দেখেছিলাম যে অরণীর মায়ের হাত থেকে একটি সুতার গুটি নিচে পড়ে গিয়েছিলো এবং সেটি রূপকথা যখন তার হাতে তুলে দিয়েছিলো তখন ছোটবেলার সেই স্মৃতিবিজড়িত অনেক রহস্যময় কাহিনী সবার মনে সাড়া দিয়ে ওঠে। আজকে দেখবো তার পরের থেকে কি হয়।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
✠মূল কাহিনী:✠
ওখানে অরণীর মায়ের হাতে সেই সুতার গুটিটা দিয়ে গান গাইতে থাকে আপন মনে। আর তাদের বাড়ির যে কাজের লোক মানে গার্ডটা সে তাকে বারবার একই প্রশ্ন করে যাচ্ছে যে তুমি কে? কারণ তার মনে গভীর সন্দেহ আর রহস্যের বেড়াজাল বুনেছে। এদিকে অরনীর মাও চিন্তায় পড়ে যায় কারণ কিভাবে একইরকম হতে পারে। ঠিক একদিন পিকনিকের সময় যখন অরণীর মা এইভাবে লাল সোয়েটার বুনছিলো ঠিক তখনও তার বন্ধুর মেয়ে শৈশবে এইভাবে গান গেয়ে গেয়ে তার হাতে সুতার গুটি দিয়ে আসতো। এই নিয়ে বলতে গেলে একটা তোলপাড় শুরু হয়েছে সবার মনের ভিতরে। এরপর কিছু সময় পরে অরনী আর রূপকথা দুইজন জঙ্গলের ভিতরে সরু রাস্তা দিয়ে তাদের জায়গা, মাঠ, ফ্যাক্টরি এইসব কিছু দেখাতে থাকে কিন্তু রূপকথার সেদিকে কোনো মন ছিল না, বরং সে নিজের প্রতি একটা ভীষণ ডিসটার্ব ফিল করতে থাকে। তার সবসময় মনে হচ্ছে যেন তার সাথে এখানে কিছু একটা দুর্ঘটনা হতে যাচ্ছে, পুরানো স্মৃতি তার ব্রেনে মাঝে মাঝে ভীষণ প্রেসারের সৃষ্টি করতে থাকে।
এদিকে যাচ্ছিলো তাদের নারায়ণপুরের বর্ডারের কাছের ফ্যাক্টরিতে কিন্তু রূপকথা আর না গিয়ে মন্দিরের দিকে যেতে চায়, আর সে মূলত বেরই হয়েছিল ছবি তোলার জন্য। আর তার কুসুমপুরের মন্দিরের ছবি লাগবে, কিন্তু সেই মন্দিরে তো আবার যাওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এখন সেখানে যাওয়ার একমাত্র উপায় হলো লুকিয়ে যাওয়া। অরনী তার সাথে কিছুদূর গেলেও আর মন্দিরের পর্যন্ত যায়নি, তাকে ছবি তুলতে পাঠিয়ে দিয়ে তার অন্য কাজে চলে যায়। আর সব থেকে বড়ো কথা হলো ওই মন্দিরটিকে পুরোহিত মশাই পুজোর পরেই ঘেরা দিয়ে দিয়েছিলো লাল সুতো দিয়ে যাতে কেউ প্রবেশ না করতে পারে, নাহলে বিপদ আসবে সবার উপরে। এদিকে রূপকথা যে এই মন্দিরে ছবি তুলতে গিয়েছে সেটা আবার অরণীর বাড়ির লোকজন কেউ জানে না, কারণ বললে যেতে দেবে না আবার ভীষণ রাগ করবে এই বিষয় নিয়ে। যাইহোক, রূপকথা লুকিয়ে সেই মন্দিরে প্রবেশ করে এবং সেখানে আরো একটি গ্রামের ছেলে লুকিয়ে সেখানে জঙ্গলে কাঠ কাটতে আসে আর রূপকথাকে দেখে সেখান থেকে দ্রুত চলে যেতে বলে নাহলে বুনোদেবীর অভিশাপ লাগবে।
ছেলেটিও এই কথা বলে চলে যায় আর সেই সাথে রূপকথাও কিছুক্ষন ছবি তুলে বেরিয়ে আসে। এদিকে অরণী তার বাবার সাথে তাদের ফ্যাক্টরির কাজবাজ নিয়ে বোঝাপড়া করতে লাগে এবং এর মধ্যে রূপকথা চলে আসে। সেখানে সবাই কথা বলতে বলতে হঠাৎ করে কচুরি খেতে চায়, আর এইটা শুনে রূপকথা আবার থমকে দাঁড়ায়। তখন এই কচুরি খাওয়া নিয়েও তার আবার একটা কাহিনী আছে, কারণ রূপকথা কচুরি খেতে খুব ভালোবাসতো, তবে সেটি আবার তার রেণুকা পিসির হাতের বানানো কচুরি। এইটা শুনে অরণীর বাবা সহ সবাই অবাক হয়ে যায়, কারণ রেণুকার কথা তো রূপকথার জানার কথা না, তাহলে জানলো কি করে। এদিকে তাদের বাড়ির সেই গার্ড সনাতনও থমকে যায় কারণ এই রেণুকা আবার তার সম্পর্কে বোন হয়। গার্ড তো আরো ভয় পেয়ে যায়। এরপর গার্ড সনাতন অরণীর বাবা এবং মায়ের কাছে যায় আর বলে তাকে ছেড়ে দিতে মানে তাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিতে বলে, কারণ সে আর এখানে থাকতে চায় না। রূপকথার এইসব অদ্ভুত অদ্ভুত ব্যবহার তাকে বিচলিত করে তুলছে।
আর তার মনে সবসময় একটা ধারণা যে তার উপরে বুনোদেবীর অভিশাপ আছে। কিন্তু সনাতনকে তারা ছাড়তে চায় না, কারণ তার উপরে তারা অনেক বিশ্বাস করে। আর তারা দুইদিনের জন্য এখানে এসেছে তাই যখন কলকাতা ফিরে যাবে তখন এইসব সম্পত্তির দেখাশোনা তাকেই করতে হবে। আর এদিকে অরণীর মা গুরুমা অর্থাৎ কোনো জোতিষ শাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান রাখে তাকে ডেকেছে। এরপর রাতের দিকে অরণী রূপকথার রুমে গিয়ে তাকে ডাকতে থাকে কিন্তু তাকে পায় না, সারা জায়গায় খোঁজার পরে গেস্ট রুমের কাছে গিয়ে আপন মনে বাচ্চাদের মতো গুন্ গুন্ করতে লাগে আর আচরণও শিশুদের মতো।
✠ব্যক্তিগত মতামত:✠
এই পর্বে রূপকথার বাচ্চাসুলভ আচরণ দেখে সবার মনে খুব ভয়ের আর সন্দেহের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে। সে কিভাবে সবকিছু জানতে পারছে আগে থেকে, কারণ তার সাথে এই বাড়িতে কারো কোনো বিষয়ে কোনো আলোচনা করছে না, তাহলে পুরানো সব কথা কিভাবে সে বলছে। সনাতন মানে তাদের বাড়ির সেই গার্ড এর বোন রেণুকা যখন এখানে থাকতো বিয়ের আগে তখন এই রূপকথা ছোটবেলায় তার হাতের কচুরি খেতে খুবই ভালোবাসতো। আর এই কথাটা একমাত্র সেই ছোট মেয়েটার জানার কথা, কিন্তু এই রূপকথা কিভাবে জানলো, কারণ সবাই জানে যে সেই ছোট মেয়েটা মারা গেছে অনেক বছর আগে। এই রেণুকার কথা তোলায় সবাই বেশি ভয় পেয়ে যায়। এরপর রূপকথা রাতের দিকে গেস্ট রুমে একা একা গুন্ গুন্ করছিলো আর তার সেই খেলার গুড়িয়া খুঁজছিলো, আর সেটি কোথায় রাখা ছিল সেটাও সে জানে। একটা বড়ো কলসির ভিতরে লুকিয়ে রাখা ছিল। আর সেটি সে নিজে নিজে খুঁজে বের করে। এর পরে তো অরণীর বাবার কপাল দিয়ে ঘাম ঝরতে শুরু করে এইসব দেখে, একপ্রকার আতঙ্কের মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে মনের ভিতরে। আর সে এটাও বলেছে যে সে যখন তার এই গুড়িয়া নিতে আসছিলো তখন তাকে কেউ খুন করেছিল আর কে করেছে সেটাও জানে। অরনী জিজ্ঞাসা করতেই রূপকথা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
✠ব্যক্তিগত রেটিং:✠
৭.৯/১০
✠ট্রেইলার লিঙ্ক:✠
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দাদা জাতিস্মর ওয়েব সিরিজ টির রিভিউর পোস্ট বেশ ভালোই উপভোগ করে পড়লাম। আর এই পর্বটির নাম ছিল The Mysterious Disappearance. এই ওয়েব সিরিজটির প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্ব আমার পড়া হয়েছিল। তৃতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম, আর আজকের এই পর্বটা পেয়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে পড়তে। মন্দিরটিতে ডোকা নিষিদ্ধ হলেও রূপকথা চুরি করে ঢুকে ফটোগ্রাফি করে নিয়েছিল। আর রূপকথার বাচ্চাদের মত এরকম আচরণের কথা শুনে সবাই একেবারে আতঙ্কে পড়ে গিয়েছিল। আর সবাই অনেক অবাক হয়ে পড়েছিল তখনই, যখন রূপকথা বলে সে তার রেনুকা পিসির হাতের কচুরি খেতে খুবই পছন্দ করতো। আর সে যখন বলে গুড়িয়া নেওয়ার সময় তাকে কেউ খুন করেছিল তখন অরুণ জিজ্ঞেস করার সাথে সাথে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। দেখা যাক এই পরবর্তী পর্বে কি হয়? অপেক্ষায় থাকলাম এই ওয়েব সিরিজের পরবর্তী পর্ব দেখার জন্য।
দাদা আপনি প্রত্যেক সপ্তাহে আমাদের মাঝে ওয়েব সিরিজ শেয়ার করে থাকেন, আর সেগুলোও পড়তে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। জাতিস্মর ওয়েব সিরিজটির তৃতীয় নাম্বার পর্ব আজকে বেশ উপভোগ করে পড়েছি। এই সিরিজের প্রথম, দ্বিতীয় পর্ব পড়ে অনেক কিছুই বুঝে ছিলাম এবং তৃতীয় পর্ব পড়ে আরো অনেক কিছু বুঝলাম। রূপকথার বিভিন্ন রকম ব্যবহারে সবাই অনেক বেশি অবাক হচ্ছে এবং আতঙ্কে পড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে সনাতন মানে তাদের বাড়ির গার্ড অনেক বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিল রূপকথার এসব ব্যবহার দেখে। আর যখন রেনুকা মানে সনাতনের বোন এর কথা শুনতে পায়, তখন একটু বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আমি তো এখন ভাবছি পরবর্তী পর্বে কি হবে তা। দাদা পরবর্তী পর্ব খুব তাড়াতাড়ি দেখতে চাই।
প্রিয় দাদা, জাতিস্মর ওয়েব সিরিজ রিভিউ এর তৃতীয় পর্বটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে দাদা এ ধরনের ওয়েব সিরিজ গুলো আমাদের দেখা একান্তই দরকার। কিন্তু সময়ের অভাবে আমি এ ধরনের ওয়েব সিরিজ গুলো দেখতে পারি না। জাতিস্মর ওয়েব সিরিজ রিভিউয়ের ইতি পর্বে রূপকথার ভূমিকা গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। যাহোক দাদা, এই ওয়েব সিরিজের পরবর্তী পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
দাদা জাতিস্মর ওয়েব সিরিজটির তিন নাম্বার পর্ব পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। এখানে তো দেখতে পাচ্ছি না রূপকথার কথাগুলো শুনে সবাই একেবারে অবাক হয়ে যাচ্ছিল। কারণ এইসব বিষয়গুলো ছোট মেয়েটা ছাড়া আর তো কেউ জানতো না।
'জাতিস্মর' ওয়েব সিরিজের এবারের পর্বটি পড়ে সত্যি ভালো লাগলো দাদা। অনেক নতুন নতুন তথ্য সামনে চলে এলো। আসলে ভিন্ন ধরনের একটি গল্প ছিল। রূপকথা সবাইকে সত্যিই তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। তার বাচ্চা সুলভ আচরণ সবাইকে অবাক করেছিল। আসলে সবাই ভাবছে যেই মেয়েটি এই পরিবারে এর আগে কখনো আসেনি সেই মেয়েটি কি করে এত কিছু জানল। তবে এই পরিবারের সাথে মেয়েটির সাথে কোন না কোন যোগসূত্র আছে এটা সবাই কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছে। বিশেষ করে যখন সে পুরনো সবকিছু বলে যাচ্ছিল তখন তো সবাই একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছিল। রূপকথা যখন গুনগুন করে গান করছিল আর খেলার গুড়িয়া খুঁজছিলো তখন সবার মনের সন্দেহ আরো বেশি প্রবল হয়। সেই সাথে সবাই অবাক হয়ে যায়। যেহেতু সেই সময়টাতেই ওই ছোট্ট মেয়েটিকে খুন করা হয়েছিল তাই তো খুনিরা অনেকটা ভয় পেয়ে যায় এবং অবাক হয়ে যায়। সেই সময় যেহেতু রূপকথা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে তাই তো আরো নতুন তথ্য সামনে আসতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। নতুন পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।