স্পেশাল চা খেতে গিয়ে একটা খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।


Copyright Free Image Source: Pixabay

আজকে আপনাদের সাথে একটি ঘটনা শেয়ার করবো। ঘটনাটা গতকাল ঘটেছে আর সেটি চা খেতে গিয়ে। আমি সাধারণত বাইরে গেলে তেমন চা খাইনা, যদি বন্ধুরা মিলে মাঝেমধ্যে কোথাও স্পেশাল চা খেতে যাওয়া হয় তখন একটুআদ্দুক ওই মালাই চা বা অন্যান্য এখন বর্তমানে যেসব বিভিন্ন ধরণের চা বেরিয়েছে সেগুলো একটু মুখরোচক হিসেবে খাওয়া হয়। এখন ঘটনাটা হলো গতকাল একটা বিকট গরম পড়েছে আর তারপর বিদ্যুৎ চলে গেছে, ফলে ঘরে আর থাকা যাচ্ছিলো না। এরপর স্টেশন এর দিকে চলে গেলাম, এমনিতেই মাঝেমধ্যে সন্ধ্যার দিকে হাঁটতে চলে যাই ওইদিকে আর ফাঁকা জায়গায় প্রকৃতির ঠান্ডা হাওয়া এই গরমের সময়ে যেন মনটা জুড়িয়ে দেয়। তাই ওইদিকে চলে গিয়েছিলাম, আর এখন ওই জায়গাটা বর্তমানে একটা পার্কে পরিণত হয়েছে আর সেটা কি পার্ক বলবো না, ভেবে নিন কি পার্ক হতে পারে।

আগে ওই স্থানটিতে শুধু খাদ্যসামগ্রী ট্রাকে করে করে বহন করতো, আর এখন সেটি সন্ধ্যার দিকে রোমাঞ্চকর পার্কের মতো পরিবেশ তৈরি হয়ে গেছে, হালকা হিন্টস দিয়ে দিলাম হা হা। তো গতকাল হঠাৎ করে এক বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে গেলো ওখানে, অনেক পুরানো বন্ধু স্কুল লাইফের। বন্ধুটা ভালো, দেখা হলে এখনো কথা বলে, নাহলে আজকাল তো সবাই যেখানে ছেড়ে চলে যায় সেখান থেকে আর পিছনেও ফিরে তাকায় না। যাইহোক এরপর অনেকদিন দেখা বলে সেখানে ঠান্ডা হাওয়ায় বসে বেশ কিছুসময় অনেক কথাবার্তা বললাম। অনেকদিন পরে কথা হচ্ছে, ফলে যেন আর শেষ হয় না। এরপর ভাবলাম ১ কাপ চা খেতে খেতে গল্প করি তাহলে ভালো লাগবে।

চা খেতে আর বেশি একটা দূরে যেতে হয়নি, ওখানেই এখন বর্তমানে বিভিন্ন খাবারের, চা পানের স্টল খুলে দিয়েছে। বেশিদিন হয়নি দোকানটা খুলেছে, মাসখানিক হবে। আগে যদিও আমি এখানে চা খাইনি তাই জানতামও না কেমন হবে। এখন গিয়ে বড়ো মাটির কাপে বললাম চা দিতে যার দাম ২৫ টাকা করে। ২৫ টাকার কথা শুনে ভাবলাম স্পেশাল কোনো কিছু দিয়ে অবশ্যই তৈরি করে দেবে। তাই দোকানের লোকটা বললো একটু দেরি হবে, চা টা একটু স্পেশাল ভাবে তৈরি করে আনছি। বললাম ঠিক আছে, তাহলে বসতে লাগি, সেই যে বসলাম তারপর ১৫ মিনিট হয়ে গেলো চা আসে না, আমি বলি কি এমন চা বানাচ্ছে যে এই বেটা ভগবানই জানে।

এরপর চা আনলো অনেক্ষন পরে, কিন্তু চা দেখে আমার কাছে তেমন স্পেশাল কিছুই মনে হয়নি অর্থাৎ নরমাল চায়ের মতো। এরপর চুমু দিয়ে দেখলাম কি অবস্থা, আর কি বলি এর মতো বাজে যা আমার লাইফে কোনোদিন খাইনি, একদম মুখে তোলার মতো না। মনে মনে এতো রাগ হচ্ছিলো যে ওরে কেলাতে ইচ্ছা হচ্ছিলো। ২৫ টাকার চায়ের এই অবস্থা হলে ১০ টাকা করে যেগুলো বিক্রি করছে সেগুলোর কি অবস্থা হবে ভাবুন তাহলে। লোকটা মাঝে মাঝে তাকাচ্ছে, আমিও মনে মনে ভাবছিলাম যে তাকালে কি হবে, আজকে তোমার খবর আছে লোকগুলো ওখান থেকে যাক। আর খাবারও তৈরি করছে যে তার ঘাম সেই পাত্রে পড়ছে আবার যে হাত দিয়ে ঘাম মুসছে সেই হাত দিয়ে সার্ভ করছে, দেখেই আর কিছু খাওয়ার ১২ টা বেজে গেলো ওই মুহূর্তে।

টাকা দেওয়ার সময় মনে হচ্ছিলো যে ওই লোকটাকে বলি অর্থাৎ যে বানিয়েছে যে ২৫ টাকার চা কখনো দেখেছিলে বা খেয়েছিলে? এই চা যে বানিয়েছো সেটা খাওয়ার যোগ্য কিনা সেটা একবার নিজে মুখে দিয়ে দেখো- তবে এই কথাটা আমি বলেছিলাম। লোকটা আবার কাছে এসে আস্তে আস্তে বলছে, দাদা একটু খারাপ হয়ে গেছে বুঝতে পারছি, মালিককে বলিয়েন না, নাহলে আমার বের করে দেবে। এই কথা শুনে আর কি বলি, চলে আসলাম পরে। আসলে মানুষ ব্যবসার জন্য আজকাল যে কিভাবে ভুলভাল করে টাকা উপার্জন এর পথে নেমেছে সেটাই মাঝে মাঝে মনে হয় এইসব দেখে। সৎ পথে টাকা উপার্জন করে না, যা তা করে টাকা পয়সা লুটছে সব। গতকাল আসলে একটা খারাপ অভিজ্ঞতা হলো এই চা খাওয়া নিয়ে, কারণ এইরকম বাজে চা কোনোদিন খাইনি, আর কোনোদিনই ওই দোকানের দিকে তাকানো যাবে না, তবে এইরকম বাজে কোয়ালিটি নিয়ে বেশিদিন টিকবে না ওদের ব্যবসা । আসলে জীবনে অনেক কিছুর অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে, নাহলে ভালো-মন্দের বিচার করা যায় না। যেমন গতকাল এই বাজে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন না হলে বুঝতেই পারতাম না এদের চায়ের এই অবস্থা।

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

বন্ধুটা ভালো, দেখা হলে এখনো কথা বলে, নাহলে আজকাল তো সবাই যেখানে ছেড়ে চলে যায় সেখান থেকে আর পিছনেও ফিরে তাকায় না।

সত্যি বলতে কি ভাই, যারা ভালো বন্ধু, তারা চেষ্টা করে তাদের বন্ধুত্বকে টিকে রাখার জন্য। যদিও আপনার চা খাওয়ার অভিজ্ঞতা তিক্ত, তবে চা খাওয়ার অভিজ্ঞতা কে কেন্দ্র করে বাস্তবিক যে কথা গুলো বলেছেন, তা শতভাগ সত্য।

শুভেচ্ছা রইল দাদা, আপনার জন্য 🙏

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

হালকা হিন্টস পেয়ে আমরা সব কিছুই বুঝে গেছি দাদা। আসলে পার্কে আজকাল অন্য কিছুই দেখতে পাওয়া যায়😅। তাদের অত্যাচারে তো পরিবার-পরিজন নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়া যায় না 🤭। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা খাবারের দোকান খুলে বসেছে। আর খাবারের মান খুব একটাও ভালো নয়। তবুও দামের দিক থেকে অনেক বেশি। চায়ের দাম ২৫ টাকা শুনে আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো স্পেশাল কিছুই হবে। এরপর তো বুঝতে পারলাম আসলে নামে মাত্র স্পেশাল। আর যেই হাত দিয়ে ঘাম মুছছে সেই হাত দিয়ে খাবার সার্ভ করছে এগুলো শুনে তো বাহিরে খাবার খাওয়ার রুচি একেবারে মরে গেল। যদিও আমি খুব একটা বাইরের খাবার খাই না। তবে মাঝে মাঝে তো সবাই মিলে বাহিরে গেলে খেতেই হয়। ভিন্ন ধরনের একটি অভিজ্ঞতার কথা জেনে ভালো লাগলো দাদা। সেই সাথে অনেকটা সতর্ক হলাম।

 last year 

হালকা হিন্টস পেয়ে আমরা সব কিছুই বুঝে গেছি দাদা। আসলে পার্কে আজকাল অন্য কিছুই দেখতে পাওয়া যায়😅। তাদের অত্যাচারে তো পরিবার-পরিজন নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়া যায় না 🤭।

সব বুঝে গেলে ভালো🤭, এটা ঠিক আসলে আজকাল পার্কে একা একা যেতে হয়, নাহলে বিপদে পড়তে হয় নিজেদের লোকজনের সামনে 😀.

 last year 

কি আর বলব ভাই!!
কি সব নিত্য নতুন চা বেরিয়েছে ইদানিং। আমার আবার এসব ভংচং চা ভালো লাগেনা। চায়ের মধ্যে আমি শুধু রং চা ই খাই। এর আগে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে স্পেশাল চা খেতে গিয়েছিলাম। শুধুমাত্র অনেকগুলো টাকা দিয়ে কিনেছি বলে খাওয়াটা শেষ করেছিলাম। তাছাড়া মনে হয়েছিল ছুড়ে মারি বেটার মুখে। যতসব ফালতু চা বানাচ্ছে নতুন নতুন নাম দিয়ে। আপনার সাথেও দেখছি একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে । তবে এই অভিজ্ঞতাগুলো কিন্তু এক দিক থেকে ভালোই। পরবর্তীতে আর এসব ভুল হবে না কখনো।

 last year 

রং চা কিন্তু অনেক ভালো, উপকার আছে। আমি এখন ডায়েট এর জন্য মাঝেমধ্যে বাড়িতে গ্রিন চা টা খাই, কিন্তু তেতোর জন্য সবসময় ভালো লাগে না। চা ভাই সব একই কিন্তু ফ্লেভার চেঞ্জ করে করে চালানো ওই আর কি। আজকাল ব্যবসার একটা মুখ্য পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই চা। রাস্তায় বেরোলেই অন্য দোকান না পাওয়া যাক, চায়ের দোকান লাইন দিয়ে পড়বে। কিন্তু আমাদের বাঙালি পেট আর মুখের স্বাদ তো, এইসব দেখলেই খেতে ইচ্ছা করে কিছু করার নেই আর হা হা।

 last year 

এসব পার্কে আপনার চা মজা না লাগার ই কথা।😁আমিও একটু হিন্টস দিলাম আরকি,হাহাহাহা।

 last year 

😃😃

 last year 

দাদা আপনি তো দেখছি চা খেতে গিয়ে বেশ ভালোই খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। আমি তো ভেবেছিলাম যেহেতু স্টেশনের পাশে থেকে খাবেন তাই একটু বেশি স্পেশাল হবে চা টি। কিন্তু এরকম অবস্থা চা এর এটা জেনে খুবই খারাপ লেগেছে আমার কাছে। বন্ধুর সাথে বসে এভাবে স্পেশাল চা খেতে খেতে আড্ডা দেওয়ার মুহূর্তটা অন্যরকম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চায়ের এরকম অবস্থা এটা দেখে আপনার মাথা ই গরম হয়ে গিয়েছিল। যদিও আপনি লোকটিকে কিছুই বলতে পারছিলেন না। শেষে লোকটা আপনাকে বলেছিল চা টা কিছুটা খারাপ হয়ে গিয়েছে এটা যেন তার মালিককে না বলেন। না হলে তার আবার চাকরি থাকবে না। যাই হোক চা খেতে গিয়েও যদি একটু শান্তি না পাওয়া যায় তাহলে আর কি করার। আপনি যদি এই দোকানটি থেকে চা না যেতেন তাহলে বুঝতেও পারতেন না এই দোকানটির এরকম অবস্থা। এরকম খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল আপনাকে। আশা করছি পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে খাবেন। সম্পূর্ণ পোস্টটা পড়ে এমনিতে ভালো লাগলো দাদা।

 last year 

এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন দাদা জীবনে খারাপ অভিজ্ঞতারও প্রয়োজন আছে যার কারণে কোনটা ভালো কোনটা খারাপ তা যাচাই বাছাই করা যায় এবং পরবর্তীতে আর এই ভুলটা হয় না। এটা কিন্তু সত্যি আপনি এই বাজে চা টি না খেলে বুঝতেই পারতেন না এই চায়ের কোয়ালিটিটা এতটাই খারাপ ছিল। আপনি অনেক বড় খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন যার কারণে আপনি আর ওই দোকানটির দিকেও তাকাবেন না বলেছেন। ২৫ টাকা দামের চায়ের যদি এরকম অবস্থা হয় আমি তো ভাবছি পাঁচ টাকা দশ টাকা দামের বিক্রি করা চা গুলোর অবস্থা কিরকম আপনার মতই চিন্তা ভাবনা হলো দাদা। লোকটা বলেছিল স্পেশাল চা নিয়ে আসতেছে আপনার জন্য তাই একটু বেশি খারাপ হয়ে গেল। আপনার চা খাওয়ার খারাপ অভিজ্ঞতার গল্পটা আমাদের সবার মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন দেখে ভালো লেগেছে আমার কাছে। আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটা খুবই সুন্দর ভাবেই লিখেছেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।

 last year 

এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন দাদা জীবনে খারাপ অভিজ্ঞতারও প্রয়োজন আছে যার কারণে কোনটা ভালো কোনটা খারাপ তা যাচাই বাছাই করা যায় এবং পরবর্তীতে আর এই ভুলটা হয় না।

আসলেই অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে এখন সব জায়গায়। আসল-নকল বুঝতে গেলে এইগুলোর সম্মুখীন হতেই হবে, নাহলে ভালো কিছু পরে আসা করা যাবে না।

 last year 

ঠান্ডা হাওয়াতে বসে বন্ধুর সাথে গল্প করতে করতে চা খেতে ইচ্ছে হলো, আর সেই ইচ্ছে নিয়ে চা খেতে গিয়ে এরকম তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো জেনে খারাপ লাগলো। আসলে যে যেই কাজই করি না কেন সেই কাজগুলো যতটুক সম্ভব ঠিক করে করাই উচিত। কারণ আপনার কাছে ২৫ টাকার চা খেতেই বাজে লেগেছে তাহলে 10 টাকার চা গুলোর কি অবস্থা ভাবা যায়। আপনার মত আমার কাছেও এটা মনে হয় ওরা যদি এরকম বাজে চা বানাতে থাকে তাহলে বেশিদিন টিকতে পারবেন। আর হ্যাঁ ঠিক বলেছেন জীবনে অনেক রকম অভিজ্ঞতারই প্রয়োজন আছে তাহলে ভালো খারাপ বোঝা যায়। ধন্যবাদ।

 last year 

পার্কে গেলেন আবার ২৫ টাকা আমি চাও খেলেন। দাদা পার্কে ভালো চা পাবেন কোথায় ? সেখানে এত এত জোড়া জোড়া মানুষ যায় যে তাদের জন্য তো ভালো কোয়ালিটি পূর্ণ চা বানানোর সম্ভব নয়। তার মধ্যে তো এখন বের হয়েছে কত রকমের চা। মালাইচা , মাইট্টাচা, তেঁতুলের চা, আরো কত কি। হুদাই এতগুলো টাকা ফেললেন। আমার তো মনে সবচেয়ে ভালো তো ৫ টাকা দামের চা খেলেই। কে জানে আবার ৫ টাকা দামের চায়ের সাধ কি রকম হতো। থাক দাদা ওই দোকানে যাওয়ার দরকার নাই ।

 last year 

দাদা, বাংলাদেশ ও ঠিক একই অবস্থায় এরকম। ছোটখাটো পার্ক ঢাকা অলিগলিতেও হয়েছে। আপনি চা খেতে গিয়ে যে এমন অবস্থা হবে তা আগে ভাবেনি। তবে ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তের ৫ টাকা দামের চা গুলো অনেক মজা হয়। কিছুই স্পেশাল চা এর নামে এতো বাজে চা হবে কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা জেনে শুনে এ রকম অপকর্ম করে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 76338.99
ETH 2965.83
USDT 1.00
SBD 2.62