তিন রকম সবজির সাথে হরিনা চিংড়ির মজাদার রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি চিংড়ি মাছের একটা মজার তরকারি রান্না করেছি। হরিনা চিংড়ি খেতে একটা অন্যরকম মজা লাগে। এই চিংড়িগুলোকেও যদি মশলা বেশি দিয়ে তরকারি রান্না করা হয় তাহলে বাগদা চিংড়ির থেকেও কোনো অংশে কম লাগে না। চিংড়ি ছোট, বড়ো সবকিছুই সুস্বাদু লাগে কিন্তু চিংড়ি একটু বড়ো হলে তার মাংসল অংশটা বেশি টেস্টি হয়। আজকের এই চিংড়ি মাছের তরকারিটা আলু, বেগুন আর পটল দিয়ে করেছিলাম। আমি নরমালি আগে চিংড়ি শুধু আলু কিংবা বেগুন দিয়ে করেছি কিন্তু আজকে পটল এড করে দিয়ে দেখলাম কেমন লাগে খেতে। তিন রকম সবজি দিয়ে আসলেই অনেক সুস্বাদু হয়েছিল তরকারিটা। এইসব তরকারির ক্ষেত্রে আসলেই একটু তরকারি ঘটা করে বেশি দিলে বেশ জমজমাট হয়। পটল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও বেশ ভালো। পটল খাওয়া ভালো শরীরের জন্য, এগুলো ছোট-খাটো কিছু সমস্যার ক্ষেত্রে বেশ ভালো নিরাময়কারী হয়ে থাকে। পটল বেশি খেলেও কোনো সমস্যা হয় না কারণ এতে ফাইবার থাকে, ফলে আরো উপকারী হয়ে থাকে। আমি যেমন আগে পটল মোটেও চোখে দেখতে পেতাম না, আর তরকারি রান্না করলেও খেতাম না। পটল আমার কাছে শুধু ভাজাটাই খেতে মাঝেমধ্যে ভালো লাগতো কিন্তু তরকারি দেখলেই যেন মেজাজ গরম হয়ে যেত, আর এখন আমি এই পটল প্রায় খাচ্ছি আর বেশ মজাও পাচ্ছি খেয়ে 😃। যাইহোক এখন রেসিপির প্রধান বিষয়ের দিকে চলে যাবো।

☫প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☫

❣উপকরণ
পরিমাণ❣
হরিনা চিংড়ি
১৫০ গ্রাম
আলু
৩ টি
বেগুন
১ টি
পটল
৩ টি
কাঁচা লঙ্কা
১১ টি
পেঁয়াজ
১ টি
জিরা
পরিমাণমতো
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৪ চামচ
হলুদ
৩.৫ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১/২ চামচ


হরিনা চিংড়ি, আলু, বেগুন, পটল


কাঁচা লঙ্কা, পেঁয়াজ, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


✔এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---
❂প্রস্তুত প্রণালী:❂


❖হরিনা চিংড়িগুলোকে প্রথমে ভালো করে মাথার দিকে এবং পিছন দিক থেকে কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। এরপর বেগুনটি কেটে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

❖আলুগুলোর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে ছোট করে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। এরপর পটল তিনটির খোসা ছালিয়ে নিয়ে হালকা লম্বা মতো রেখে কেটে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

❖পেঁয়াজ এর খোসা ছাড়িয়ে নেওয়ার পরে কেটে নিয়েছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কা সব কেটে নিয়েছিলাম।

❖হরিনা চিংড়িগুলোতে ১ চামচ করে লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর গায়ে ভালো করে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

❖চিংড়িগুলো সব ভালোভাবে ভাজা হয়ে গেলে তুলে নিয়েছিলাম। এরপর বেগুন ভালোভাবে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

❖আলুর পিচগুলো লাল মতো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম এবং পরে পটলের পিচগুলো ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

❖কেটে রাখা পেঁয়াজ ধুয়ে নিয়ে ভালো করে ভেজে নিয়েছিলাম। এরপর কড়াইতে তেল দেওয়ার পরে তাতে পরিমাণমতো জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভেজে নিয়েছিলাম।

❖জিরা ভাজা হয়ে গেলে তাতে ভেজে রাখা আলু দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে পটলের ভেজে রাখা পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖জিরা যাতে বেশি পুড়ে না যায় তাই ভাজা আলু, বেগুন আর পটলের সাথে হালকা উল্টেপাল্টে মিশিয়ে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভেজে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖পেঁয়াজ এর পরে কাঁচা লঙ্কা ধুয়ে দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তাতে ভেজে রাখা হরিনা চিংড়িগুলো সব দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖চিংড়ি দেওয়ার পরে তাতে স্বাদ মতো ৩ চামচ লবন, ২.৫ চামচ হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আবারো পুনরায় বাকি সব উপাদানের সাথে মশলা ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়েছিলাম।

❖মশলা মিক্স করার পরে তাতে পরিমাণমতো জল ঢেলে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা ফুল আঁচে দিয়ে খানিক্ষন ফুটিয়ে নিয়েছিলাম।

❖আলু, পটল সিদ্ধ হয়ে গেলে আর জল কমে গেলে জ্বাল মিডিয়ামে দিয়ে রেখেছিলাম খানিক্ষন এবং তরকারিটা পুরোপুরি হয়ে আসার জন্য দেরি করেছিলাম।

❖তিন রকম সবজি দিয়ে হরিনা চিংড়ির একটা মজাদার তরকারি রান্না হয়ে গেছিলো এবং আঁচ নিভিয়ে দেওয়ার পরে আমি কিছুক্ষন বাদে তরকারির উপরে সুগন্ধ জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

আর এখন আমি এই পটল প্রায় খাচ্ছি আর বেশ মজাও পাচ্ছি খেয়ে 😃।

পটলের রেসিপি প্রতিযোগিতা দেখার পর থেকেই পটলের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়েছে দাদা। সবাই এত মজার মজার পটলের রেসিপি শেয়ার করেছিল যে এরপর থেকে পটল দেখলেই আলাদা রকমের আগ্রহ কাজ করে। আলু ও বেগুন দিয়ে চিংড়ি মাছ রান্না করলে খেতে খুবই ভালো লাগে। তাই আপনি এর সাথে পটল দিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। এভাবে চিংড়ি মাছ রান্না করলে খেতে সত্যি অনেক মজার হয়। ধন্যবাদ আপনাকে দাদা আপনার রন্ধন প্রণালীর নিপুণতা সকলের মাঝে প্রদর্শন করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

আসলে দাদা আপনি ঠিকই বলেছেন চিংড়ি ছোট এবং বড় দুটোই অনেক সুস্বাদু এবং মজাদার লাগে। বিশেষ করে বড় চিংড়ি আরো বেশি মজা লাগে। আপনি খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনি নরমালি আলু এবং বেগুন দিয়ে চিংড়ি মাছের রেসিপি তৈরি করেন। আজকে পেটল নতুন করে যোগ করেছেন। আর পটল দিয়ে চিংড়ি মাছ খেতে খুবই মজা লাগে। আপনি তিন রকম সবজি দিয়ে চিংড়ি মাছের রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খুবি সুস্বাদু। আসলে আপনি খুবই সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করেছেন এবং আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। দেখেছে খেতে খুব ইচ্ছা করছে। আপনার রেসিপি পরিবেশন আমার অনেক ভালো লেগেছে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

হরিনা চিংড়ি দিয়ে মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি দাদা। চিংড়ি মাছের যেকোনো রেসিপি খেতে আমার খুবই ভালো লাগে। চিংড়ি মাছ আমার খুবই প্রিয়। আপনার রেসিপিটি দেখে লোভনীয় লাগছে। তবে আমি পটল সবজিটি আগে তেমন খেতাম না এখন মাঝেমধ্যে একটু খাই। চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করলে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা সুস্বাদু রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য রইল অনেক শুভকামনা।

 2 years ago 

দাদা চিংড়ি অনেক খেয়েছি। তবে আপনি যেভাবে রান্না করেছেন। এভাবে কখনো খাওয়া হয়নি। তিন সবজির সমন্বয়ে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে।আর এই চিংড়ির নাম যে হরিনা চিংড়ি জানা ছিল না। আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পেলাম।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দাদ সুস্বাদু রেসিপি শেয়ার করার জন্য ।

 2 years ago 

দাদা আমি এখনো পটল চোখে দেখতে পারিনা। শুধু পটলের ভর্তা আমার কাছে ভালো লাগে। তাছাড়া অন্য কিছুই ভালো লাগেনা। সব ধরনের চিংড়ি মাছ আবার আমার খুবই পছন্দের। ছোট ,বড়, বাগদা, গলদা সব। ছোট গুলো বিভিন্ন ভাঁজির মধ্যে দিয়ে খেতে ভালো লাগে। আর বড় গুলো ভুনা। পটল এবং আলু দিয়ে চিংড়ি মাছ রান্না করলে বেশ ভালোই লাগে। আপনি তো বেগুনও দিয়েছেন এর ফলে খেতে আরো বেশি সুস্বাদু হয়েছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। যত বেশি সবজি দিয়ে মাছ রান্না করে তত বেশি সুস্বাদু হয় আমার মনে হয়। আপনার রান্নার যে বিষয়টি আমার কাছে সবথেকে ভালো লাগে সে বিষয়টি আজকে নেই। তা হলো আলু চটকে ঝোলের সঙ্গে এড করা। তারপরও আজকে অন্যরকম মজা হয়েছে মনে হচ্ছে।

 2 years ago 

দাদা আমার কাছে তো হরিনা চিংড়ি গুলো ভাঝি করে খেতে পারলে ভাল লাগতো। যায় হোক আপনি তিন রকমের সবজি দিয়ে খুব ভালই তরকারিটা রান্না করেছেন। আর দাদা আপনি তো এখন শুধু পটলের উপকারিতা সেয়ার করেলেন পরে চিংড়ি মাছের উপকারিতাও একবার সেয়ার করিয়েন। ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

দাদা চিংড়ি গুলোকে হরিনা চিংড়ি বলা হয় কেন আমি জানিনা। চিংড়ি মাছ কিন্তু আমার ভীষণ পছন্দ ।চিংড়ি মাছ পেঁয়াজ বেশি দিয়ে ভাজি করে খেতে যেমন মজা তেমনি যে কোন সবজির সাথে খুব সহজেই তাল মিলিয়ে মজা করে ফেলে চিংড়ি মাছ ।চিংড়ি মাছ এলার্জির কারণে খুব বেশি খেতে পারি না তবে রান্না করলে লোভ সামলাতে পারি না তাই খেয়ে ফেলি। পটল আলু ও বেগুনের সমন্বয়ে দারুণভাবে রেসিপিটি তৈরি করেছেন বিশেষ করে আমার কাছে ভালো লেগেছে আলুগুলো ভাজা ভাজা করে নেওয়ার কারণে। এভাবে নিশ্চয়ই খেতে অনেক মজা লাগে দাদার রেসিপি গুলো কিন্তু অন্যরকম হয়।

 2 years ago 

আগে টোটালি পটল খেতাম না।কিন্তু পটলের রেসিপি বানাতে গিয়ে পটল খাওয়া শুরু সেই এখনো চলছে।রেসিপির আইটেম কম্বিনেশন অনেক ভাল তাই অনেক সুস্বাদু হবে বুঝতে পারছি।

 2 years ago (edited)

আহা কি সুন্দর স্বাস্থ্যকর অথচ সুস্বাদু দেখতে।যে সব বাচ্চারা এবং আমার মত বড়রা সব্জি খেতে চায় না, তারা চিংড়ির লোভেই সব্জিগুলো খেয়ে নেবে।

 2 years ago 

আলু, বেগুন আর পটল দিয়ে হরিনা চিংড়ির সুস্বাদু একটি তরকারি রান্না করেছেন 😋
পটল আমিও আগে তেমন খেতে পারতাম, তবে এখন আমিও খেতে পছন্দ করি। পটলের যেকোন তরকারি বেশ স্বাদ করে খাই।

হরিনা চিংড়ির তরকারি আগেও তৈরি করেছেন দেখেছি, আজকের তরকারিটাও দারুন হয়েছে। এটা সুস্বাদু তরকারি মানতেই হবে। আপনার চমৎকার ধাপগুলো অনুসরণ করলে যেকেউ খুব সহজেই রান্নাটি করতে পারবে।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59401.87
ETH 2615.39
USDT 1.00
SBD 2.40