ওয়েব সিরিজ রিভিউ: জাতিস্মর- দ্যা প্রডিগল রিটার্ন ( পর্ব ১ )

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে ওয়েব সিরিজ 'জাতিস্মর' এর প্রথম পর্ব রিভিউ দেব। এই পর্বের নাম হলো "দ্যা প্রডিগল রিটার্ন"। তাহলে প্রথম পর্বে দেখা যাক কি হয়।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
জাতিস্মর
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
দ্যা প্রডিগল রিটার্ন
পরিচালকের নাম
সানি ঘোষ রায়
অভিনয়
মধুমিতা সরকার, রোহান ভট্টাচার্য, কৌশিক চক্রবর্তী, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, অনন্যা সেনগুপ্ত, মনোজ ওঝা ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২১ এপ্রিল ২০২৩ ( ইন্ডিয়া )
সময়
২৩ মিনিট ( প্রথম পর্ব )
মূল ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


✠মূল কাহিনী:✠


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

প্রথমত দেখা যায় রাতের অন্ধকারে একটা লোক একটা মেয়েকে একটা পুরোনো মন্দির বা বাড়ির সামনে মাটিতে পুঁতে দিচ্ছে। যদিও এখন সেখানে আর কেউ থাকে না, বহু বছরের পুরানো বাড়ি আর সেখানেও কেউ যাওয়া আসা করে না। এরপর অরণি ওরফে রোহান আর তার পুরো পরিবার তাদের গ্রামের হাভেলিতে আসে এবং তারা মূলত আসে তাদের ফ্যাক্টরির একটা কাজে, তাছাড়া ওই গ্রামে কেউ আসে না, কারণ সেখানে নাকি সমস্যা রয়েছে আর সবসময় বিপদ ঘটতে থাকে। তবে ওইদিন আবার পূর্ণিমার রাত আর সাথে ছিল বুনো মায়ের জন্মদিন অর্থাৎ আমরা যেটাকে বলি বন-দেবীর পুজো, সেটাকে ওখানকার গ্রামবাসীরা বুনো মায়ের পুজো বলে বছরের পর বছর মান্য করে আসছে। তবে এখানে গ্রামের লোকজন কিছুটা অন্ধবিশ্বাসিতে এখনো ডুবে আছে, যেমন তাদের ধারণা অনুযায়ী প্রতিবছর গ্রামের ভাঙ্গাগড়া একটা জঙ্গলের ভিতরে বুনো মায়ের মন্দির আছে আর সেখানে পুজো দিয়ে মাকে সন্তুষ্ট করতে পারলে এতদিন ধরে গ্রামে যারা যারা অপঘাতে মারা গেছে তাদের মধ্যে সবাই আবার ফিরে আসবে আর এতেই গ্রামবাসীর মঙ্গল হবে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

আর এর জন্য বছরের পর বছর যে নিয়ম হয়ে আসছে সেই অনুযায়ী মন্দিরে পুরোহিত মশাই পুজো দিয়ে আবার তালা দিয়ে দেয় আর সামনের বছরের আগে খোলাও হবে না এবং এই মন্দিরের ধারে কাছেও কখনো আশা যাবে না, নাহলে সবার মৃত্যু হবে এই কথা পুরোহিত মশাই গ্রামবাসীদের বলে দেয়। অরণি সেখানে আসতে চাইলেও তাকে আসতে দেয় না ওই ভয়ে। যাইহোক এদিকে আবার রূপকথা ওরফে মধুমিতা তার অফিস থেকে আর্কিটেক্সার এর প্রজেক্ট করতে ওই একই গ্রামের পথে রওনা দেয়। পথে আসতে আসতে গ্রামের রাস্তা প্রথমে গুলিয়ে ফেলে, যেহেতু সে একা এসেছে আর এইটা তার প্রথম আসা এই গ্রামে । এরপর একটা দোকান থেকে তার ড্রাইভার শর্টকার্ট রাস্তা ধরে তাকে নিয়ে আসতে চাইলো, কিন্তু সেই রাস্তায় যেতে রুকথার হঠাৎ কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেলো, অর্থাৎ তার চোখের সামনে এমন কিছু কিছু মানুষের ছবি কল্পনায় ভেসে উঠছে যেটা তাকে একপ্রকার অস্বস্তিকরের মধ্যে ফেলছে। রূপকথা ড্রাইভারকে অন্য একটা মোড় নিতে বলে যেটার রাস্তা গিয়ে শেষ হয় অরণিদের বাড়ির সামনে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

আর সেখানে রূপকথা নেমে গেটের সামনে যেতেই যেন পুরানো স্মৃতিবিজড়িত কিছু বিষয় তার ব্রেইনটাকে জাকড়ে ধরে আর সেখানেই মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এরপর অরণীদের বাড়ির কাজের মহিলা গিয়ে খবর দিলে তারা সবাই নিচে আসে আর সবাই রূপকথাকে না চিনলেও অরণি তাকে চিনতে পারে, কারণ সে তার বন্ধু। যাইহোক, এরপর রূপকথাকে ভিতরে নিয়ে গেলো এবং কিছুক্ষন পরে ডাক্তার আসে আর পুনরায় সজ্ঞানে ফিরে আসে । এরপর ডাক্তার সব চেকাপ করে মেডিসিন দিয়ে দেয়। এরপর কিভাবে কি হলো সেটা সবাই জানতে চাইলেও সে কিছুই বলতে পারে না, কারণ সে আসলে এই রাস্তা জানেই না যে এটা নারায়ণপুরে এসে থেমেছে। আর যেহেতু সে যাচ্ছিলো কুসুমপুরের মন্দিরের ছবি তুলতে ফলে কাকতালীয়ভাবে এখানেই চলে এসেছে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

যাইহোক, এরপর অরণীর দুই বোন তাদের পিছনে লাগে, আদৌ তাদের সম্পর্ক কি সেটা জানতো না, কিন্তু বাড়ি মাথায় তোলে তাদের বিয়ে হবে এই নিয়ে। এমনিতেই তাদের দুইজনের মধ্যে আগে থেকে একটা সম্পর্ক ছিল কিন্তু সেটা বাড়িতে কেউ জানায়নি। এরপর রাতে সবার সাথে খেতে আসে এবং খাওয়ার সময় সে পরেরদিন সকালে ছবি তুলে কলকাতায় চলে যেতে চায় কিন্তু অরণীর বাবা তাকে কোথাও না গিয়ে এখানেই থাকতে বলে যতদিন না কাজ পুরোপুরি শেষ হচ্ছে। এতে করে বাড়ির সবাই খুশি হলেও অরণীর মা তেমন একটা খুশি হয়নি, বিষয়টাকে খারাপভাবেই নেয়। যাইহোক, এরপর খাওয়ার সময় তার চোখ হঠাৎ দেওয়ালের দিকে পড়ে এবং সেখানে কিছু প্রাণীর আর্ট করা ছিল আর সেইটা দেখে আবারো তার মাথায় পুরোনো স্মৃতি ঘুরতে থাকে আর একা একা মনে মনে কথা বলতে থাকে। এই বিষয়গুলো বাড়িতে সবাই দেখে একটু বিস্মিত হয় যে মাথায় কোনো সমস্যা আছে কিনা, এমন করছে কেন সেটাও সবার কাছে অপরিষ্কার।


✠ব্যক্তিগত মতামত:✠

এই জাতিস্বর এর কাহিনীটা আসলে রূপকথার কল্পকাহিনী বা তার জীবনের কিছু সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি যেটা মনে হলো। এখানে মূলত তার কল্পনায় যে বিষয়গুলো ভাসছে সেগুলোতে দেখা যাচ্ছে তার ছোটবেলার অনেক স্মৃতি তার সামনে চলে আসছে এবং তার মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে যে আগে কোনো এক সময় এই বাড়িতে সময় কাটিয়েছে অর্থাৎ এই বাড়ির অনেক কিছুর সাথে তার পরিচয় যেন আগের থেকেই আছে। আর তার ছোটবেলার সেই দৃশ্যে এই বাড়িতে থাকাকালীন যে লোকটা কাজ করতো সে এখনো এই বাড়িতে অরণীদের সময়েও কাজ করছে। ফলে সে এই বিষয়টা লক্ষ্য করেছে যে তার এই ধরণের সমস্যার কারণ কি আর সম্ভবত সে চিনতেও পেরেছে তাকে কারণ ওই ছবিগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে ছোটবেলায় যা যা বলতো এখনো মনে মনে সেই কথাগুলো বলছিলো আর এটা থেকেই ওই লোকটা বুঝে ফেলে যে কে হতে পারে।


✠ব্যক্তিগত রেটিং:✠
৭.৪/১০


✠ট্রেইলার লিঙ্ক:✠


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

দাদা এই গল্পের কাহিনীটা পড়ে আমার কাছে সত্যি সত্যি রূপকথার কল্পকাহিনী মনে হচ্ছে। এখানে তার কল্পনায় যে বিষয়গুলো ভাসছে সেগুলোতে দেখা যাচ্ছে তার ছোটবেলার অনেক স্মৃতির সাথে মিলে যাচ্ছে। তার ছোটবেলার সেই দৃশ্যে এই বাড়িতে থাকাকালীন যে লোকটা কাজ করতো সে এখনো এই বাড়িতে অরণীদের সময়েও কাজ করছে। এখনো এই গল্পে তেমন কোন রহস্য পেলাম না। দেখা যাক পরের পর্বে কি আসে।

 last year 

'জাতিস্মর' এর প্রথম পর্ব রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো দাদা। মধুমিতা সরকার আমার খুবই পছন্দের একজন অভিনয়শিল্পী। এর আগেও উনার অভিনয় দেখেছি। যদিও এই ওয়েব সিরিজটি দেখা হয়নি। তবে মনে হচ্ছে বেশ ইন্টারেস্টিং। রূপকথার জীবনের বিভিন্ন গল্পের উপরে এই ওয়েব সিরিজটি নির্মিত হয়েছে। ছোটবেলার বিভিন্ন স্মৃতি তার মনে পড়ে যাচ্ছে। এই স্মৃতিগুলোর সাথে তার শৈশব জড়িয়ে আছে। সবকিছুই তার কাছে চেনা চেনা লাগছে। মনে হচ্ছে এর পেছনে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। এরকম রহস্য ঘেরা ওয়েব সিরিজ গুলো দেখতে যেমন ভালো লাগে তেমনি রিভিউ পড়তেও ভালো লাগে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

 last year 

প্রিয় দাদা খুবই সুন্দর একটি ওয়েব সিরিজের রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।ওয়েব সিরিজ রিভিউ: জাতিস্মর- দ্যা প্রডিগল রিটার্ন প্রথম পর্বের রিভিউটি পরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। অত্যন্ত কাহিনী যুক্ত একটি ওয়েব সিরিজের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

দাদা আজকে আপনার কাছ থেকে মধুমিতার অভিনীত ওয়েব সিরিজ পেয়ে ভীষণ ভালো লাগলো। কারণ ওর অভিনয় আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে আমি সিরিয়াল দেখেছি অনেকগুলা। তবে আজকের সিরিজটি রূপকথার কাহিনী নিয়ে তৈরি করা হয়েছে দেখছি। বিশেষ করে একটা মেয়েকে মাটিতে পুঁথে দিয়েছে এটা খুবই ভয় লেগেছিল। আর রূপকথা প্রথমবার গ্রামে যেতে যেতে ওর অনেকগুলো কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। এমনকি মনে হচ্ছিল এই বাড়ীর সাথে ওর পুরনো কোন কিছু জড়িয়ে আছে। আসলে এই রিভিউটা পড়ে মনে হচ্ছে এখানে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। যেটা পরবর্তী পর্বে একটু একটু পরে জানতে পারবো। পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

 last year 

দাদা জাতিস্মর ওয়েব সিরিজের ট্রেলার ভিডিও দেখেছিলাম কিন্তু আসলে ওয়েব সিরিজটি দেখা হয়নি। তবে মধুমিতার অভিনীত সবকিছুই আমি দেখার চেষ্টা করি। তাই জন্য ভালই হয়েছে আপনার কাছ থেকে রিভিউ টা পড়ে সবকিছু জানতে পারবো। এখানে তো দেখছি মধুমিতা মনে রূপকথার ছোটবেলার অনেক কিছুই মনে পড়ে যাচ্ছিল। বিশেষ করে যখন একা একা গ্রামে যাচ্ছিল তখনই। আসলে রূপকথা প্রথমবার গ্রামে গেলেও সেখানকার অনেক কিছুই তার অনেক বেশি পরিচিত মনে হচ্ছিল। বিশেষ করে অনেক কিছু চিনতে পারলে ও পুরোপুরি কোন কিছুই মনে পড়ছে না। আর ওই বাড়িতে যতক্ষণ সময় কাটাচ্ছিল সবকিছু পরিচিত মনে হচ্ছিল। যখন সে নিজের মতো করে ভিড় ভিড় করছিল সবাই দেখছি বিষয়টা খেয়াল করলো। এর মাঝে নিশ্চয়ই কোন না কোন রহস্য লুকিয়ে আছে। পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

 last year 

দাদা "জাতিস্মর" ওয়েব সিরিজ রিভিউতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনার রিভিউ পোস্ট গুলো পড়তে ভীষণ ভালো লাগে। কারণ এটা পড়লেই মনে হয় যেন সত্যিকারের সিরিজটাও দেখে ফেলেছি। তবে আজকের কাহিনীটা দেখছি রূপকথার কাহিনীর মতো। আমার মধুমিতার চরিত্রের নাম ও রুপকথা। এখানে তো দেখছি রূপকথার সাথে কিছু ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে গ্রামের একটা পুরনো বাড়িতে এসে ওর স্মৃতিতে পুরনো কিছু মনে করছিল। কিন্তু বিষয়টা তো ক্লিয়ার ভাবে বোঝা যাচ্ছে না। এমনকি রূপকথার ব্রেইনে পুরনো স্মৃতিগুলো ঘুরতে ঘুরতে একেবারে অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। তারপর কেউ থাকে না চিনলেও দেখছি ওর অরনী চিনতে পেরেছে। পরবর্তীতে সেখানে যতগুলো ঘটনা ঘটছিল সেগুলো ওরা কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছে। পরবর্তীতে কি হবে তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

 last year (edited)

দাদা এই ওয়েব সিরিজটা যদিও আমার এখনো দেখা হয়নি, তবে রিভিউ টা পড়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। জাতিস্মর ওয়েব সিরিজটির রিভিউ খুবই সুন্দর ভাবে পড়লাম এবং অনেক কিছুই জানতে পারলাম এর থেকে। গ্রামের পুরনো একটা বাড়িতে আসার ফলে মধুমিতা অর্থাৎ রূপকথার অনেক কিছুই মনে পড়ে যাচ্ছিল। যদিও পুরোপুরি ভাবে সেই সব কিছু মনে করতে পারছিল না, কিন্তু তার কাছে মনে হয়েছে এখানে তার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। রূপকথা ওরফে মধুমিতা যখন তার অফিস থেকে আর্কিটেক্সার এর প্রজেক্ট করতে ওই গ্রামটিতে আসছিল। আসার সময় অনেক স্মৃতি মনে পড়ছিল তার। এই ধরনের ওয়েব সিরিজ গুলো যদিও দেখা হয় না, তবে আপনার রিভিউর মাধ্যমে দেখে খুব ভালো লাগে। খুবই ভালো লাগলো সম্পূর্ণ ওয়েব সিরিজের রিভিউ। পরবর্তী পর্বে কি হবে তা জানার জন্যই অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবেন দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 88194.12
ETH 3339.93
USDT 1.00
SBD 3.00