কচুরমুখীর পাতলা ঝোল রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি কচুরমুখীর তরকারি রান্না করেছি। এই কচুরমুখীর তরকারিটা পারশে মাছ দিয়ে করেছি। আজকে খুব সাধারণ তরকারির মতো রান্না করেছি তরকারিটা। দুপুরে পারশে মাছের সাথে কচুরমুখীর পাতলা ঝোল। আজকে একটু উঠতে দেরি হয়ে গেছে, ফলে খাওয়াটা দুপুরেই চলে গেলো। এখন শীতকাল আসছে আর আমার আলসেমিও শুরু হচ্ছে হা হা। গরমের সময়ে রাত ৫ টার দিকে শুলেও মোটামুটি ৮-৯ টার মধ্যে ঘুম ভেঙে যায় বেশিরভাগ সময়, কিন্তু এই শীতকাল ভাবটা আসলে আমার আর ওঠা হয় না, বেলা ১১ টা কি ১২ টা বাজবেই। যাইহোক সেই আজকে বেলা ১১ টা বেজেই গেলো উঠতে উঠতে আর তারপর সব গুছিয়ে উঠতে উঠতে এই বেলা আড়াইটা বাজলো। কচুরমুখীর তরকারিটা আজকে অনেকদিন বাদে খেলাম, এই সময়ে কচুরমুখীর তরকারীটাও খেতে দারুন স্বাদের লাগে। কচুরমুখীর বিভিন্ন জাত রয়েছে আর বিভিন্ন উপকারীতাও রয়েছে। কচুর জাতগুলোর মধ্যে আমার সব থেকে ভালো লাগে বা আমি খেয়ে থাকি সবসময় হলো মুখী কচু, ওল কচু আর মান কচু। তবে সবথেকে খাওয়া পড়ে এই মুখী কচু যেমন আজকে রান্না করলাম আর একটা মান কচু। ওল কচুটা তেমন কেনা হয় না আর খাওয়াও বেশি হয় না, তবে ওল কচুর স্বাদ আমার দুর্দান্ত লেগেছিলো যতবার খেয়েছি। আমার মামাদের বাড়িতে ওল কচু খায় আবার বেশিরভাগ সময় তাই এই কচুটা যা খাওয়া হয় মামার বাড়িতে গেলে খাওয়া হয়। যাইহোক এখন বেশি আর কথা না বাড়িয়ে মেইন বিষয়ের দিকে চলে যাবো।


☀প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☀

დউপকরণ
পরিমাণდ
পারশে মাছ
৫০০ গ্রাম
কচুরমুখী
২৫০-৩০০ গ্রাম
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
১৩ টি
পাঁচফোড়ন
পরিমাণমতো
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৪ চামচ
হলুদ গুঁড়ো
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


পারশে মাছ, কচুরমুখী, কাঁচা লঙ্কা


রসুন, সরিষার তেল, লবন, হলুদ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো


✦এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


☫প্রস্তুত প্রণালী:☫


❖পারশে মাছগুলোকে ভালো করে কেটে নিতে হবে ( আগে কেটে রাখা ছিল ) এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর আমি কচুরমুখীগুলোর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে লম্বালম্বি একটা করে ফাল দিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম।

❖রসুনটির কোয়াগুলো প্রথমে সব ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে খোসাগুলো ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো সব কেটে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

❖জল দিয়ে ধুয়ে রাখা পারশে মাছের পিচগুলোতে ২ চামচ করে লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর মাছের গায়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

❖লবন-হলুদ দিয়ে মিক্স করা পারশে মাছের পিচগুলো কড়াইতে করে ভালোভাবে ভেজে নিয়েছিলাম। এরপর কচুরমুখীর পিচগুলো সব ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

❖কড়াইতে সরিষার তেল দেওয়ার পরে তাতে পাঁচফোড়ন দিয়ে দিয়েছিলাম। এবং তার সাথে পরের চুলায় এক কেটলি জল গরম করতে বসিয়ে দিয়েছিলাম।

❖পাঁচফোড়নটা একটু ভাজা হয়ে আসলে তাতে রসুনের খোসা ছাড়ানো কোয়াগুলো সব দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর রসুনটাও হালকা ভাজা ভাজা হয়ে আসলে তাতে ভেজে রাখা কচুরমুখীগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖ভাজা কচুরমুখী দেওয়ার পরে তাতে স্বাদ মতো লবন, হলুদ আর কেটে রাখা লঙ্কাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর মশলার সাথে সব উপাদানগুলো নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিয়েছিলাম।

❖মেশানো হয়ে গেলে তাতে গরম করে রাখা জল ঢেলে দিয়েছিলাম। এরপর কচুরমুখী ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে আসার জন্য খানিক্ষন ফুল আঁচে দিয়ে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম।

❖কচুরমুখীগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে আসলে তরকারির থেকে কিছু পিচ তুলে নিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে চেপে গলিয়ে নিয়েছিলাম।

❖কচুরমুখী গলানো হয়ে গেলে তরকারিতে ভেজে রাখা পারশে মাছগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এর অল্প কিছুক্ষন পরে তরকারিতে গলানো কচুরমুখীর অংশটা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা পুরোপুরি হয়ে আসার জন্য কিছু সময় দেরি করেছিলাম।

❖যেহেতু তরকারিটা পাতলা ঝোল ঝোল রাখবো তাই তরকারিটা একটু ঘন মতো হয়ে আসলে আর বেশিক্ষন দেরি না করে চুলা নিভিয়ে দিয়েছিলাম এবং জিরা গুড়োটা ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

শীতকাল আসলেই লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুমাতে অন্যরকম মজা লাগে। এজন্য লেপের নিচ থেকে তো উঠতে ইচ্ছা করেনা। যদিও এখনো লেপ গায়ে দেওয়ার মতো ঠান্ডা পড়েনি তারপর আলসেমি শুরু হয়ে গিয়েছে। কচুর বিভিন্ন টাইপের মধ্যে আমি সব সময় কচুর মুখি টাই খেয়ে থাকি। অন্যান্য কচু খুবই কম খাওয়া হয়েছে। একবার কিংবা দুইবার। কিন্তু এর মধ্যে মান কচুটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল। দাদা দেখছি কচুর মুখিও ভেজে রান্না করেছেন। দাদা কোন সবজি বা মাছ ভেজে ছাড়া রান্না করেন না । এই বিষয়টা আমার কাছে খুব ভালো লাগে। যে কোন খাবার ভেজে রান্না করলে স্বাদ আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। খুব লোভনীয় রেসিপি হয়েছে দাদা । ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

প্রিয় দাদা আসলে এ শীতকালে শুধু আপনি নন আমার মনে হয় বেশির ভাগ ছেলে গুলো এমন ৷ অনেক অলসতা লাগে বিশেষ করে সকালে লেপ কাথা ছেড়ে উঠতে একদম ইচ্ছে করে না ৷

যা হোক আপনার করা কচুরমুখী পারশে মাছ দিয়ে বেশ চমৎকার করে রেসেপি করেছেন ৷ তবে আমার মনে হয় আপনাদের ওই দিকে পারশে মাছ কে আমাদের এই দিকে বাটা মাছ বলে ৷ খুব ভালো লাগলো দাদা ৷

 2 years ago 

কচুর মুখির সাথে মাছের তরকারি আমারও খুব ফেভারেট তবে এখন একটু ঠান্ডা পড়তেছে এজন্য কচুর মুখী তেমন একটা খাওয়া হয় না।। তবে কচুর মুখি দিয়ে যে কোনভাবে যেকোনো ধরনের রেসিপি প্রস্তুত করলে খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।।

আপনার প্রস্তুত করার রেসিপিটি যেমন লোভনীয় দেখাচ্ছে খেতে নিশ্চয়ই তেমন মজাদার হবে কেননা যে কোন মাছ ভাজি করে রান্না করলে সেই মাছ খেতে এমনিতেই অনেক ভালো লাগে।।

 2 years ago 

দাদা আজকে আপনি ঘুম থেকে দেরি করে উঠেছেন আর আমি ঘুম থেকে বেশ সকালে উঠেছি। তবে শীত যেহেতু পড়তে শুরু করেছে তাই ঘুমের পরিমাণ আমাদের একটু বেশি হচ্ছে। আর গরমের সময় তো লোডশেডিং এর অত্যাচারে তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে যায়। আর পারশে মাছ আমাদের অঞ্চলে পাওয়া যায় বলে মনে হচ্ছে না। এই মাছ কখনো খাইনি। কচু দিয়ে মাছ রান্না করলে খেতে বেশ ভালো লাগে। ওল কচু মাছ দিয়ে রান্না করলে খেতে যেমন ভালো লাগে তেমনি কচুর মুখী ও মাছ দিয়ে রান্না করলেও খেতে ভালো লাগে। দাদা আপনার তৈরি করা পরশে মাছের এই রেসিপি দারুন ছিল। মনে হচ্ছে খেতে ভালই লাগবে।

 2 years ago 

দাদা আপনাদের ওখানে পারশে মাছ আর আমাদের এখানে টাটকেনি মাছ। তবে নাম যাইহোক মাছটা কিন্তু অনেক মজার। আর কচুর মুখি দিয়ে এভাবে পারশে মাছের পাতলা ঝোল দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। কচুর মুখি গুলো ভেজে নেওয়াতে স্বাদ আরো দ্বিগুণ বেড়ে যায়। কচুর মুখি গুলো গলিয়ে নেওয়াতে ঝোলটা একটু ঘন হয় আর স্বাদটা একটু বেশি হয়।ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 
আসলে শীতকালে সকালে ঘুম থেকে উঠার অলসতার ভাব অনেকেরই আছে।যেন বিছানা ছেড়ে উঠতে সবচেয়ে কষ্ট লাগে।যাইহোক,কচুরমুখী দিয়ে পারশে মাছের পাতলা ঝোলের রেসিপি দেখতে অসাধারণ লাগছে এবং খেতে নিশ্চয়ই খুব সুস্বাদু হয়েছিল।দাদার সম্ভবত কচুরমুখী অনেক পছন্দ। কারন বেশির ভাগ রেসিপিতে দাদা কচুরমুখী ব্যবহার করেন।আসলে মাছ এভাবে ভেজে রান্না করলে খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে।অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা,এত সুস্বাদু ও মজাদার ভাবে কচুরমুখী দিয়ে পারশে মাছের রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
 2 years ago 

দাদা আপনার করা কচুরমুখীর পাতলা ঝোল রেসিপি দেখে মনে হলো, আমি একটি ইউনিক রেসিপি দেখছি। আসলে আমাদের এদিকে কচুর মুখি এভাবে ঝোল করে রান্না করা হয় না। কোন দিন কখনো কাউকে দেখি নাই। বিশেষ করে আমাদের বাসায়ও না। তবে আপনি আপনার রেসিপির প্রতিটি ধাপ বরাবরের মত খুবই চমৎকার করে তুলে ধরেছেন। এবং রেসিপির কালার টিও হয়েছে বেশ লোভনীয়।। ও আকর্ষণীয়। যার জন্য আপনার কাছে খেতে প্রায় দুর্দান্ত স্বাদের হয়েছিল। অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি ইউনিক রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।♥♥

 2 years ago 

দাদা শীতকাল এলে সবার একটু আলসেমি চেপে ধরে। তবুও যাই বলুন শীতকালে সবজি খেয়ে ভীষণ ভালো লাগে। বলতে গেলে শীতকালে খাওয়া এবং ঘুম দুটোই দারুন হয়।

কচুরমুখী আমার দারুন লাগে খেতে, কিছুটা পিচ্ছিল স্বাদের বলে খেতে আমার বেশ ভালো লাগে। আর পারশে মাছ আমার রেসিপিতে বেশ কয়েকবার দেখেছি, ভালোই লাগে মাছটি।

তরকারিটি কিন্তু লা জবাব দেখাচ্ছে আর খেতে ভীষণ সুস্বাদু হয়েছে বোঝাই যাচ্ছে।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

 2 years ago 

দাদা আপনি যেটাকে বলছেন পরশে মাছ সেটাকে আমরা বলি টাটকিনি মাছ. আপনার কচুরছাড়া ও মাছের ঝোল রেসিপিটি দেখে মনে হচ্ছে অত্যন্ত ঝাল এবং বেশ মজা হবে মনে হচ্ছে। দেখি আমিও একদিন বাড়িতে ট্রাই করবো।

 2 years ago 

দাদা আপনার শীতকাল আসলেই এমন হয় আর আমার তো সব কালেই এমন হয়😆। সকাল ১১টা আর ১২টা নেই ঘুম থেকে উঠতেই ইচ্ছে করেনা কিন্তু না উঠে তো উপায় নেই। নিজের রান্না নিজেকেই করতে হবে। যাই হোক আপনি কচুর মুখী দিয়ে দারুন রেসিপি তৈরি করেন তা আগেও দেখেছি। কিন্তু এবার একটু ভিন্ন রেসিপির গন্ধ পাচ্ছি। পারশে মাছের নাম মনে হয় আমি কখনো শুনিনি তারজন্য রেসিপি ইউনিক লেগেছে। এর চেয়ে বেশি অবাক হলাম আপনি কাঁচা লঙ্কা দিয়ে রেসিপি তৈরি করেছেন তা দেখে। গুঁড়া মরিচের থেকে কাঁচা লঙ্কা খাওয়া আমাদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ কাঁচা মরিচে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। দাদা কাঁচা লঙ্কা দেওয়াতে মনে হচ্ছে এর স্বাদ দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে। কাঁচা লঙ্কার রেসিপি কখনো খাওয়া হয়নি একবার চেষ্টা করে দেখবো। সবমিলিয়ে আপনার এই রেসিপি অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.034
BTC 64333.84
ETH 2760.35
USDT 1.00
SBD 2.65