"আমার বাংলা ব্লগের" বিশেষ প্রতিযোগিতা ।। কাগজ দিয়ে বইয়ের বাতি তৈরি

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

'DIY' কথাটির অর্থ হলো 'নিজে করো"। diy বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিভিন্ন জায়গায় এবং এটার কদরও ভালো। diy আসলে বিভিন্ন ধরণের হতে পারে, এটা যে বড়োসড়ো কঠিন কিছু একটা তৈরি করতে হবে তা কিন্তু না, এটি ছোটোখাটো যেকোনো বিষয়ও তৈরি করা যেতে পারে । মূলত বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজকে প্রাধান্য দেওয়া বা সেটির মাধ্যমে নিজের সৃজনশীলতাকে প্রকাশ করা।

আজকে আপনাদের সাথে কি পোস্ট করতে চলেছি সেটি টাইটেল দেখে বুঝতে পেরেছেন নিশ্চই। আজকে একটা diy পোস্ট করতে চলেছি। আমি আজ অব্দি কোনো diy পোস্ট করিনি, শুধু মাত্র এই প্রতিযোগিতার জন্য হলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম করবো না কিছু, কারণ এই diy করতে গেলে আসলে অনেক সময়ের ব্যাপার আর কষ্টসাধ্য। কষ্ট হলেও সময়টা মেইন, এইটা ব্যয় হয় খুব। যার জন্য আমি এইসব তৈরি করার দিকে তেমন যাইনা। এমনি নরমালি কিছু করলে তাও সেটা যেমন তেমন ভাবে করা যায়, কিন্তু একটা প্রতিযোগিতার বিষয়ে কিছু করতে গেলে ভালো কিছু না করলে তেমন ভালো দেখায় না বিষয়টা। আগে ছোটবেলায় diy এর কাজ কত করেছি, এখন শুধু ধারে কাছে কিছু পাইনা বলে আর করা হয় না, যেটা পাওয়া যায় সেটা হলো কাগজ, কিন্তু আমার এই কাগজ দিয়ে তেমন কিছু হয় না। তবে কাঠ বা বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন ধরণের জিনিস তৈরি করতে পারি, যেগুলোই হাতের কাছে নেই, গ্রামের দিকে হলে তাও এইগুলো পাওয়া যায় ফ্রি ফ্রি। কাগজ দিয়ে কোনোকিছু করতে গেলে আমার একবারে হতেই চায় না, কাগজ নষ্ট ছাড়া আর কিছু হয় না হা হা। আমি কাগজ দিয়ে যেটা করার চিন্তা করেছিলাম সেটা হলো "কাগজ দিয়ে বইয়ের বাতি" তৈরি। এইটা তৈরি করতে গিয়েও আমি যে কত কাগজ নষ্ট করেছি তার ঠিক নেই, কারণ এর ভাঁজগুলো আমি করতেই পারছিলাম না। এই ভাঁজগুলো আসলে দেখে সহজ মনে হলেও ঝামেলার আছে, তবে যারা প্রতিনিয়ত কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরণের জিনিস তৈরি করেন তাদের কাছে হয়তো সহজ হতে পারে। কিন্তু আমি অনেকদিন পরে করছি , ফলে আমার কাছে সহজ ছিল না, শুধু ভাঁজ দিতে গিয়েই আমি হিমশিম খেয়েছি। আমি এইটা এক এক দিনে একটা করে করেছি, কারণ আমি জানি এই কাগজ দিয়ে আমার একদিনে করতে গেলে সারাদিন পার হয়ে যাবে, আর কিছুই করা হবে না এটা ছাড়া। যাইহোক, তাও গতকাল এটা শেষ করতে অনেক কাজ বাকি ছিল, হাতের কিছু কাজ আগে করে নিয়ে বাকিটা মাঝ রাতের দিকে শেষ করেছি। যাইহোক, শেষ তো করেছি এখন আসলে কেমন যে হয়েছে নিজেও বুঝতে পারছি না। এখন তৈরি করার প্রসেসগুলোর দিকে চলে যাবো।


❂প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:❂

A4 কাগজ
রঙিন কাগজ
স্কেল
পেন্সিল
রাবার
স্কেচ পেন
জেল পেন
ব্লেড
টেপ
আঠা
LED মিনি বাল্ব

დপ্রস্তুতকরণের ধাপসমূহ নিচে তুলে ধরা হলো----

✦স্টেপ ১:✦

➤প্রথমে একটি A4 সাইজের কাগজ নিয়ে নিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ২:✦

➤১*২ সেমি এর সমান করে আড়াআড়িভাবে পুরো কাগজ জুড়ে দাগ টেনে নিয়েছিলাম। এরপর লম্বালম্বি দুই পাশে আন্দাজ মতো দাগ দিয়ে নিয়েছিলাম এবং খোপগুলোর মধ্যে প্রত্যেক পয়েন্টে কোনাকুনি করে দাগ টেনে দিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ৩:✦

➤প্রথমে যে আড়াআড়ি দাগ দিয়ে নিয়েছিলাম সেই দাগ অনুযায়ী নিঁখুতভাবে এপিট-ওপিট করে ভাঁজ দিয়ে নিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ৪:✦

➤এপিট-ওপিট ভাঁজ করার পরে ভিতরের সেই দাগগুলোর নির্দিষ্ট পয়েন্ট অনুযায়ী এক সাইটে পুরোটা ভাঁজ করে পায়া মতো তৈরি করে নিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ৫:✦

➤একইভাবে পরের সাইটেও সমানভাবে ভাঁজ দিয়ে পায়া মতো তৈরি করে নিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ৬:✦

➤মোটামুটি কাগজ দিয়ে যেটা বানানোর সেটা কমপ্লিট করে ফেলেছিলাম। এইবার কভার পেজটা বানানোর জন্য একটা রঙিন কাগজ নিয়ে একটা নির্দিষ্ট মাপে কেটে নিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ৭:✦

➤কভার পেজটির সাইট দিয়ে স্কেচ পেনের সাহায্যে বর্ডার টেনে নিয়েছিলাম। এরপর দুই কর্নারে ফুলের মতো ডিজাইন তৈরি করে নিয়েছিলাম এবং জেল পেন দিয়ে পাতাগুলোর দিকে এঁকে দিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ৮:✦

➤এই পর্যায়ে পেন্সিল দিয়ে একটি আমার বাংলা ব্লগের অফিশিয়াল লোগো এবং স্টিমিট এর একটি লোগো এঁকে নিয়েছিলাম। এরপর মাজখানে আমার বাংলা ব্লগ লিখে দিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ৯:✦

➤পেন্সিল দিয়ে আমার বাংলা ব্লগ লেখার পরে সেটিতে স্কেচ পেন আর জেল পেন দিয়ে একটু ডিজাইন মতো করে দিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ১০:✦

➤এই পর্যায়ে স্টিমিট এর লোগোটাকে স্কেচ পেন দিয়ে ডিজাইন করে নিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ১১:✦

➤স্টিমিট এর লোগোর পরে আমার বাংলা ব্লগের লোগোটিকে বিভিন্ন স্কেচ পেন আর জেল পেন এর সহযোগে ডিজাইন সম্পন্ন করেছিলাম।

✦স্টেপ ১২:✦

➤কভার পেজ মোটামুটি ভালোভাবে ডিজাইন করে নেওয়ার পরে অন্যপিঠে ব্লেড দিয়ে ভিতরে ছোট করে এক অংশ কেটে নিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ১৩:✦

➤কেটে নেওয়ার পরে সেখান দিয়ে মিনি বাল্ব প্রবেশ করিয়ে কিছুটা টেপ দিয়ে ভিতরে লাগিয়ে দিয়েছিলাম।

✦স্টেপ ১৪:✦

➤কাগজ দিয়ে ভাঁজ করে যে দুটি পায়া মতো তৈরি করেছিলাম সেটির উভয় পাশে আঠা লাগিয়ে কভার পেজের নির্দিষ্ট জায়গায় লাগিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর কভারটি খেলালে বইয়ের মতো দেখতে হয়ে যাবে।

✦স্টেপ ১৫:✦

➤এই পর্যায়ে সব কাজ শেষ হলে তারের মাথাটা জুড়ে দিয়ে প্লাগে বসিয়ে দিয়েছিলাম এবং লাইটটা জ্বালিয়ে দিলে বইয়ের বাতির মতো দেখতে লাগবে। আমি এখানে লাইটটা অন্যভাবে দিতে চেয়েছিলাম অর্থাৎ একটি কালারের বাতি বন্ধ হওয়ার পরে সাথে আরেকটি কালারের বাতি জ্বলবে, এতে দেখতে আরও বেশি ভালো লাগতো আর লাইটিংটা ফুটতো ভালো কাগজের ভিতরে। যাইহোক কাছে এটাই ছিল, তাই এটাই দিয়ে দিয়েছিলাম ।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

আপনি তো দেখছি দাদা ডাই প্রজেক্ট তৈরিতে বেশ দক্ষ। আপনি অনেক সুন্দর দক্ষতা দিয়ে বইয়ের বাতি তৈরি করলেন অনেক কষ্ট হলো দেখে বুঝা যাচ্ছে। এই ধরনের ডাই প্রজেক্ট গুলো তৈরি করতে সময়ের দরকার এবং খুব ধৈর্য সহকারে করতে হয়। তবে তৈরি করার পরেই বেশ সুন্দর লেগেছে আপনার তৈরি করা ডাই প্রজেক্ট বইয়ের বাতি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করার জন্য।

 last year 

ঠিক বলেছেন দাদা এই ধরনের ডাই প্রজেক্ট তৈরি করতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। তবে দাদা আমরা সবাই জানি আপনি ভালো রেসিপি তৈরি করতে পারেন আর সাথে খুবই ইউনিক আর্ট করতে পারেন। কিন্তু এটা জানা ছিল না আপনি এত সুন্দর এবং ইউনিক ডাই প্রজেক্ট তৈরি করতে পারেন। আপনার এই ডাই প্রজেক্ট দেখে সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। প্রতিযোগিতার জন্য আপনি খুবই সুন্দর ও ইউনিক ডাই প্রজেক্ট শেয়ার করেছেন। কাগজ দিয়ে এত সুন্দর বইয়ের বাতিল ঘর তৈরি করা যায় আপনার পোস্ট না দেখলে বুঝা যাবে না।

 last year 

A4 সাইজের সাদা কাগজে প্রথমে দাগ টেনে তারপরে সুন্দরভাবে ভাজ করে নেওয়াটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। একই সাথে খুবই সুন্দর একটি কভার পেজ তৈরি করেছেন আপনি। সব মিলিয়ে কাগজ দিয়ে বইয়ের বাতিঘর তৈরির প্রক্রিয়াটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। খুবই সুন্দর একটি ডাই পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য প্রিয় দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

দাদা আপনার প্রতিভা যতই দেখি ততই মুগ্ধ হয়ে যাই। সত্যি দাদা আপনি প্রতিটি কাজ অনেক নিখুঁতভাবে করেন। লাইটিং এত সুন্দর হয়েছে দেখে সত্যিই ভালো লাগলো। আসলে ছোটবেলায় আমরা অনেক কিছুই করতাম। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথে অনেক কিছুই করা হয়ে ওঠে না। দাদা আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক পরিশ্রম করে সুন্দর একটি ডাই প্রজেক্ট তৈরি করেছেন দেখে সত্যিই ভালো লাগলো। মাঝে মাঝে যদি এরকম প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো তাহলে বেশ ভালো হতো। অনেক অনেক শুভকামনা রইল দাদা।

 last year 

একদম ঠিক বলেছেন দাদা এমনি যেকোনো কাজ করতে তেমন একটা প্রেসার থাকে না তবে কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে গেলে তখন একটু যত্ন সহকারে তৈরি করতে হয়। আপনি আগে অনেক ডাই তৈরি করেছেন তারপরও অনেকদিন পরে যেটা তৈরি করেছেন সেটা কিন্তু অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। আর এটা আপনি সময় নিয়ে তৈরি করেছেন দেখে আরো বেশি সুন্দর হয়েছে । চারপাশে বর্ডার দেওয়া কাগজটি দেখে আমি প্রথম মনে করেছিলাম এটা বুঝি এভাবেই তৈরি করা ছিল ।পরে দেখলাম আপনি নিজে তৈরি করেছেন অনেক সুন্দর হয়েছে কিন্তু কাগজটি তৈরি করা। সবকিছু মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর হয়েছে আপনার ডাই পোস্টটি। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে ।অনেক শুভকামনা রইল দাদা আপনার জন্য।

 last year 

দাদা আপনার হাতের কাজ দেখি যত, ততই মুগ্ধ হয়ে যাই।আপনি কত যত্ন করে সময় নিয়ে কাগজ দিয়ে বই এর বাতি করলেন।আমি শুধু ধাপগুলো দেখছিলাম।কি দারুন বইয়ের বাতি বানালেন।প্রশংসা না করে আসলে পারা যায় না।আপনার হাতের এই ডাই পোস্টের কাজ আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ দাদা শেয়ার করার জন্য।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 last year 

দাদা আপনার তৈরি এত সুন্দর কাগজ দিয়ে বইয়ের বাতি দেখে আমি তো একেবারে মুগ্ধ। যেহেতু আপনি অনেকদিন পরে কিছু তৈরি করছেন, তাই অনেক বেশি সময় লেগেছিল বুঝতেই পারছি। আসলে এরকম ভাঁজ গুলো দেওয়া সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। যারা প্রতিনিয়ত এই ধরনের কাজগুলো করে তাদের পক্ষে এটা সম্ভব হয়। অনেক কাগজ নষ্ট করা হলেও আপনি কিন্তু শেষ পর্যন্ত খুবই সুন্দর করে কাজটা সম্পূর্ণ করলেন। আসলেই এরকম কাজ গুলোর মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা এবং সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটে। আপনি অনেক যত্ন সহকারে শেষে কাজটা সম্পূর্ণ করেছেন দাদা, এটা কিন্তু বুঝতে পারছি। সত্যি দাদা আপনার প্রশংসা না করে আর পারা যায় না। একেবারে চোখ ধাঁধানো ছিল আপনার তৈরি ডাই প্রজেক্ট।

 last year 

আরে বাহ্ দাদা, আপনি তো দেখছি খুবই চমৎকার একটা ডাই প্রজেক্ট তৈরি করেছেন, এই প্রতিযোগিতাটি উপলক্ষে। কাগজ দিয়ে বইয়ের বাতি তৈরি করেছেন, এটি কিন্তু খুবই সুন্দর লাগতেছে দেখতে। আসলে এই ধরনের কাজগুলো করা অনেক কষ্টের। যারা এরকম কাজে পারদর্শী তাদের জন্য খুব সহজ এই কাজ। কাগজ দিয়ে এই ভাঁজগুলো তৈরি করতে আপনি অনেক কাগজ নষ্ট করেছিলেন। আসলে মাঝে মাঝেই এরকম কাগজ নষ্ট হয়, আর আপনি যেহেতু তেমন পারদর্শী না তাই শেষ পর্যন্ত কিন্তু খুবই সুন্দর একটা ডাই তৈরি করেছেন। ভিতরে বিভিন্ন কালারের বাতিগুলো দেওয়ার কারণে খুবই সুন্দর লাগতেছে। অন্ধকারে নিশ্চয়ই সরাসরি দেখতে খুব ভালো লাগছিল। সব মিলিয়ে আপনার আজকের পোস্ট কিন্তু খুবই দারুণ ছিল দাদা।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year (edited)

ভাইয়া আপনার তৈরি বইয়ের বাতিঘর দেখে জাস্ট অবাক হলাম । যদিও প্রতিযোগিতার কারণে এবার প্রথম ডাই প্রজেক্ট নিয়ে হাজির হয়েছেন। কাগজ নষ্ট হলেও কিন্তু খুবই চমৎকার কাগজের বাতিঘর তৈরি করেছেন। তবে আমার বাংলা ব্লগের লোগো টা কিন্তু দারুন হয়েছিল। অনেক শুভকামনা আপনার জন্য♥♥

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.17
JST 0.032
BTC 63626.54
ETH 2727.44
USDT 1.00
SBD 2.56