গ্রামীণ জনজীবনে একটি শীতকালীন দৃশ্যের চিত্রাঙ্কন ।। অরিজিনাল আর্টওয়ার্ক

in আমার বাংলা ব্লগ8 months ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটি নতুন আর্ট শেয়ার করে নেবো। এই আর্টটি করেছিলাম শীতকালীন দৃশ্যকে সামনে রেখে অর্থাৎ কাল্পনিক ভাবে ভেবে তৈরি করা আর কি। একটি গ্রামীণ জনজীবনে শীতকালে আমরা সাধারণত যেটা দেখতে পাই, সেটা হলো সকালে কুয়াশা মোড়ানো গ্রামের রাস্তায় খেজুর গাছের থেকে রস পাড়ে এবং সেগুলোকে পরে বিক্রি করার জন্য হাড়িতে রাখে বা অনেকে জ্বালিয়ে গুড় বানিয়ে থাকে। আমি এখানে একজনকে হাড়িতে করে রস কাঁধে করে করে বিক্রি করার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমাদের এখানেও একটু দূরে গ্রামের দিকে সকালে যেতে পারলে এইরকম দৃশ্য দেখা যায়, কিন্তু এখন আর সকালে একদমই ওঠা হয় না, বলে এইরকম দৃশ্য অনেক বছর দেখিনা। তবে এই যে দৃশ্যটা আমি অঙ্কনের মাধ্যমে তুলে ধরেছি এটা আগে গ্রামের দিকে প্রায় দেখা যেত অর্থাৎ কাঁধে ঝুলিয়ে এইভাবে বিক্রি করতে বা এইভাবে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জ্বালাতে। এখন তেমন হাতেগোনা দুই একজায়গায় ছাড়া দেখা যায় না। যাইহোক, পুরোনো সেই স্মৃতি থেকে একটি দৃশ্য আঁকার চেষ্টা করেছি। আশা করি আজকের এই অঙ্কনটা আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। এখন অঙ্কনের মূল বিষয়বস্তুর দিকে চলে যাবো।


✠উপকরণ:✠

আর্ট পেপার
বোর্ড
স্কেচ পেন্সিল
মার্কার পেন
কালার পেন্সিল
রাবার

✎এখন অঙ্কনের ধাপগুলো নিচের দিকে তুলে ধরবো---

➤প্রথম ধাপে, একটি লোককে সম্পূর্ণ ভাবে এঁকে নিয়েছিলাম এবং তার পরনে পোশাক আর মাজায় একটি গামছা বাঁধা আছে এমনটা বোঝাতে এঁকে দিয়েছিলাম। এরপর কাঁধে হাড়িতে করে রস ঝুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এমন দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছিলাম।

➤দ্বিতীয় ধাপে, একটি মাটির রাস্তার মতো বোঝাতে তৈরি করে নিয়েছিলাম এবং পরে একটি খেজুর গাছ সম্পূর্ণভাবে এঁকে দিয়ে তাতে একটি হাড়ি ঝুলানো আছে, এমনটা এঁকে দিয়েছিলাম। এরপর খেজুর গাছের চারিপাশ দিয়ে ঝাউ গাছের মতো বোঝাতে এঁকে দিয়েছিলাম আর মাঝখানে ফাঁকা একটি গ্রাউন্ড করে রেখেছিলাম।

➤তৃতীয় ধাপে, মার্কার পেনের কালী দিয়ে সমস্ত অঙ্কনের বিষয়বস্তুকে ফুটিয়ে তুলেছিলাম এবং লোকটার মাথায় কালো ঘন চুল করে দিয়েছিলাম কালির সাহায্যে।

➤চতুর্থ ধাপে, কালার পেন্সিল দিয়ে আকাশের দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছিলাম, এখানে সূর্য উদয়ের পূর্ব মুহূর্তের দৃশ্যটাও দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম।

➤পঞ্চম ধাপে, খেজুর গাছ সহ হাড়িতে কালার করে দিয়েছিলাম। এরপর পাশের ঝাউ গাছ সহ মাঝখানের গ্রাউন্ডটিতে কালার দিয়ে ঘাসের দৃশ্য তুলে ধরেছিলাম।

➤ষষ্ঠ ধাপে, লোকটার কাঁধে ঝুলন্ত বাঁশ, হাড়ি এবং দড়িতে কালার করে দিয়েছিলাম। এরপর রাস্তার কালারটিকে মাটির মতো ফুটিয়ে তুলেছিলাম আর পাশে হালকা করে ঘাস এঁকে দিয়েছিলাম।

➤সপ্তম ধাপে, লোকটার মুখমন্ডল এবং বডি কালার করে দিয়েছিলাম এবং সাথে তার পোশাকেও একবারে কালার করে অঙ্কনটির সমাপ্তি ঘটিয়েছিলাম।


আর্ট বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 8 months ago 

আপনার করা অঙ্কনগুলো প্রতি নিয়তই আমায় মুগ্ধ করে। এত সুন্দর করে কিভাবে যে আপনি অঙ্কন করেন শুধুমাত্র তাকিয়ে থাকি। আজকে এত সুন্দর একটি অঙ্কন শেয়ার করেছেন যা দেখে একদম মুগ্ধ হয়ে গেলাম। বিশেষত শীতকালীন এই দৃশ্যগুলো আগে দেখতাম। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমরাও তেমন একটা দেখি না। কারণ এখন খেজুরের রস আর এখান থেকে নেয়া হয় না। যাইহোক এত সুন্দর চিত্রাংকন আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 8 months ago 

আপনার হাতে জাদু আছে দাদা। হাতে জাদু না থাকলে এমন চিত্র অঙ্কন করা সম্ভব না। আপনি আমাদের মাঝে শীতকালীন গ্রামীণ জনজীবনের দৃশ্যের চিত্রাঙ্কন করে শেয়ার করলেন। আমাদের গ্রামের দিকে এমন চিত্র দেখা যায় না। তবে আমাদের দেশের উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের দিকে এমন চিত্র চোখে পড়ে। আমি একবার আমার এক ফ্রেন্ডের সাথে যশোর বেড়াতে গেছিলাম। সেখানে সকাল বেলা বাগেরহাটে যাওয়ার পথে এমন চিত্র দেখেছিলাম। অনেক মানুষ তাদের নিজের খেজুর গাছ থেকে খেজুর রসের হাঁড়ি কাঁধে ঝুলিয়ে এইভাবে বিক্রিয় করতে নিয়ে যায়। আবার গাছ থেকে খুলে হাড়ি পরিবর্তন করে বাড়িতেও নিয়ে যায়। আমরা দুই বন্ধু কিনে খেয়েছিলাম। আর অনেক দুষ্ট ছেলে পেলে সেই রসের হাঁড়ি চুরি করেও নিয়ে যায়। অথবা ফুটো করে রস খেয়ে ফেলে। আপনি যদিও কাল্পনিক ভাবে চিত্রটি অঙ্কন করেছে তবে এটা বাস্তবের সাথে শত ভাগ মিল আছে। ধন্যবাদ দাদা।

 8 months ago 

গ্রামীণ জন জীবনে শীতকালের প্রাকৃতিক একটি দৃশ্য অংকন আপনি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার অংকনটি দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। আসলেই দাদা আপনার হাতে মনে হয় জাদু আছে তা না হলে এত সুন্দর ভাবে আপনি কিভাবে অঙ্কন গুলো করেন। এক কথায় আপনার অংকনটি দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। আপনার প্রতিটি অংকনের কালার কম্বিনেশন যেমন সুন্দর তেমনি প্রত্যেকটি অঙ্কন।আপনার অংকনটি আমি বেশ কয়েকবার দেখেছি । আমার অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি অংকন আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 8 months ago 

চমৎকার আর্ট করেন আপনি। আপনার আর্ট গুলো আমার কাছে বরাবরই খুবই ভালো লাগে। আপনার আর্টের মাধ্যমে শীতকালীন চমৎকার দৃশ্য ফুটে উঠেছে। আর্টের কালার কম্বিনেশন খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি আর্ট আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 8 months ago 

আর্ট খুব সুন্দর হয়েছে।শীতকালের গ্রামের জীবনের একটি অংশ খুবই ভাবে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনকে এতো সুন্দর একটি চিত্র কর্ম আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

 8 months ago 

শীতের সময় কুয়াশা মোড়ানো শীতের সকাল এবং গ্রাম্য পরিবেশে মেঠো রাস্তার দুপাশে খেজুরের গাছ । সকালে গাছীরা খেজুরের রস গাছ থেকে পেরে বিক্রির জন্য নিয়ে যায়। এই দৃশ্যটি অনেকবার উপভোগ করেছি। এই বছরে এখন পর্যন্ত এ দৃশ্যটি উপভোগ করা হয়নি। আপনার মত সকালের ঘুম থেকে উঠা হয় না বলে উপভোগ করা হয় না । সেটাই আপনি চিত্র অংকন এর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।খুবই ভালো লাগলো মাঝে মাঝে দারুণ কিছু চিত্র অংকন করে আমাদেরকে মুগ্ধ করেন।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

দাদা আপনার আর্টগুলো সবসময়ই দারুণ হয়। আজকেও তার ব্যতিক্রম নয়। শীতের সকালে গ্রামে এই দৃশ্যটা প্রায়ই দেখা যায়। খেজুরের রস আমার ভীষণ পছন্দ। আগে প্রায়ই খাওয়া হতো খেজুরের রস, কিন্তু এখন একেবারেই খাওয়া হয় না। কারণ আমাদের দিকে এখন খেজুরের রস পাওয়া যায় না তেমন। যাইহোক সম্পূর্ণ আর্টটি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে খুবই নিখুঁতভাবে করেছেন দাদা। কালার কম্বিনেশনটা ও এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে জাস্ট অসাধারণ হয়েছে এই আর্টটি। যাইহোক এতো চমৎকার একটি আর্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

জ্বি দাদা, গ্রামের দিকে এরকম দৃশ্য শীতের সময় দেখা যায়। ভোর বেলায় খেজুর গাছ থেকে খেজুরের রস পেড়ে নিয়ে যায় এবং হাঁড়ির মধ্যে এভাবে বেঁধে বিক্রি করে। খেজুরের রস খেতে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনার এত সুন্দর আর্ট দেখে আমার তো খেজুরের রস খেতে ইচ্ছে করতেছে অনেক বেশি। শীতের সময় আমি ভোরবেলায় উঠে মাঝে মাঝে খেজুরের রস খাওয়ার জন্য বের হই। তবে এই বছর এখনো পর্যন্ত যাওয়া হয়নি কোথাও। কিন্তু গত বছর গিয়েছিলাম। গ্রামীণ জনজীবনে একটি শীতকালীন দৃশ্যের এত সুন্দর আর্ট দেখে, সত্যি আমি অনেক বেশি মুগ্ধ হয়েছি। একেবারে বাস্তবিক মনে হচ্ছে এই দৃশ্যটা। আপনি অনেক নিখুঁতভাবে পুরোটা অঙ্কন করেছেন এবং কালার কম্বিনেশন ও দারুন ভাবে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সম্পূর্ণটা কিন্তু অসম্ভব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে দাদা। দাদা আপনার আর্টগুলো আমি যত দেখি, আমার কাছে ততই খুব ভালো লাগে। তেমনি এই আর্ট টি ও খুব ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর করে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

 8 months ago 

দাদা, আপনার আর্টগুলো সত্যি অনেক বেশি প্রশংসার দাবিদার। আপনার এই ধরনের আর্টগুলো যে দেখবে, সে অনেক বেশি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকবে। আপনি বাস্তবিক বিষয়গুলো আর্টের মাধ্যমে সুন্দরভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। আপনার আর্ট গুলো আমি অনেক বেশি পছন্দ করি। আর এই জন্যই তো প্রতি সপ্তাহে অপেক্ষায় থাকি, আপনি কখন এরকম সুন্দর আর্ট গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। অন্যদিনের মতো আজকেও নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে, অসম্ভব সুন্দর এবং মনোমুগ্ধকর আর্ট করেছেন দাদা। শীতের সময় এই দৃশ্যটা দেখা যায়, আর এই দৃশ্যটা দেখতে আমি খুব পছন্দ করি। শীতের সময় অনেক ভোরবেলায় কুয়াশার মধ্যে খেজুর গাছে ওঠে মানুষ খেজুরের রস সংগ্রহ করে। আমার নতুন করে কলসি গুলো বেঁধে দিয়ে আসে। তাজা তাজা খেজুরের রস খেলে অনেক বেশি ভালো লাগে। তৃপ্তি মিটিয়ে খাওয়া যায়। অনেকদিন হয়েছে এরকম তাজা খেজুরের রস খাই না। প্রথমে দৃশ্যটা সুন্দর করে অঙ্কন করে নিয়ে, তারপরে ভিন্ন ভিন্ন কালার করেছেন। সম্পূর্ণটা সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। যা আপনার আর্ট দেখেই বুঝতে পারছি দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.12
JST 0.026
BTC 55030.03
ETH 2337.21
USDT 1.00
SBD 2.32