কচুরমুখী দিয়ে কাতলা মাছের রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি কাতলা মাছের তরকারি রান্না করেছি। কাতলা মাছ অনেকদিন খাওয়া হয় না, আর সাথে কচুরমুখীও খাওয়া হয় না। আজকে দুইটা নতুন খাবার অনেকদিন বাদে খেয়ে বেশ ভালো লাগলো। আজকে সকালে একজন বাড়ির উপরে এসে মাছ মাছ করে হাঁক দিচ্ছে, আর মাছওয়ালেকে ডেকে কি কি মাছ আছে দেখাতে বললাম। মাছ ছিল অনেক রকমের তার কাছে, প্রথমে খানিক্ষন কিছুই নেবো না ভাবলাম, পরে ভাবলাম এর কাছে কাতলা মাছ আছে যখন তখন ভাবলাম অনেকদিন খাইনা মাছটা, আজকে এটাকে খেতে হবে। পরে মাছওয়ালকে বলে বড়ো একটা কাতলা মাছ কিনে নিয়ে নিলাম আর কেটে দিতে বললাম। কচুরমুখী দিয়ে আমি আবার এইসব মাছ বেশি খাই, কারণ স্বাদটা আমার কাছে এই কচুরমুখী দিয়ে দারুন লাগে। আর কচুরমুখী তরকারি হিসেবেও আমার অনেক প্রিয়, সে ভর্তা হোক আর তরকারি হোক। কচুরমুখীর অনেক উপকারিতাও আছে, আমাদের শরীরের ছোটোখাটো সমস্যার ক্ষেত্রে বেশ ভালো কাজ করে। আর তাছাড়া এতে একধরণের ফাইবার থাকে যেগুলো আমাদের হজমের ক্ষেত্রেও ভালো কাজ করে। যাইহোক, এখন এই রেসিপিটার উপকরণ আর প্রস্তুত প্রণালীর দিকে চলে যাবো।


ꕥপ্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:ꕥ

✦উপকরণ
পরিমাণ✦
কাতলা মাছ
১ কিলো
কচুরমুখী
পরিমাণমতো
পেঁয়াজ
২ টি
গোটা জিরা
পরিমাণমতো
শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো
১ চামচ
কাঁচা লঙ্কা
১৩ টি
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৫ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


কাতলা মাছ, কচুরমুখী, পেঁয়াজ


কাঁচা লঙ্কা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


❦এখন রেসিপিটি যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


❆প্রস্তুত প্রণালী:❆


➤কাতলা মাছটিকে প্রথমে ভালো করে আঁশ ছাড়িয়ে নিয়ে কেটে পিচ পিচ করে নিতে হবে, যেটা কেনার সময় কাটিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে আমি জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। এরপর কচুরমুখীগুলোর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤পেঁয়াজ ২ টির খোসা ছাড়িয়ে নেওয়ার পরে কেটে কুচি করে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো সব কেটে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤কেটে পিচ পিচ করে রাখা কাতলা মাছে ২ চামচ লবন আর ২ চামচ হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর হাত দিয়ে গায়ে ভালো করে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

➤কাতলা মাছের পিচগুলো সব ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম। এরপর কচুরমুখীর পিচগুলোও ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤কেটে-ধুয়ে রাখা পেঁয়াজ কুচি ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম। এরপর কড়াইতে সরিষার তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤জিরাটা একটু ভাজা মতো হয়ে আসলে তাতে ভেজে রাখা কচুরমুখীর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে ছোট চামচের ৩ চামচ লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤লবন, হলুদ দেওয়ার পরে নেড়েচেড়ে মিক্স করে নিয়েছিলাম এবং পরে তাতে ১ চামচ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর লঙ্কার গুঁড়োও নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিয়েছিলাম।

➤সব মিক্স করে নেওয়ার পরে তাতে পরিমাণমতো জল ঢেলে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা অনেক্ষন ধরে ফুটিয়ে নিয়ে কচুরমুখীর পিচগুলো ভালো করে সিদ্ধ করে নিয়েছিলাম।

➤সিদ্ধ কচুরমুখীর কিছু পিচ একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম এবং সেটাকে গলিয়ে একদম আঠালো করে নিয়েছিলাম।

➤কচুরমুখী গলানো হয়ে গেলে তরকারিতে ভেজে রাখা কাতলা মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর কিছুক্ষন ফোটার পরে তরকারিতে গলিয়ে রাখা কচুরমুখীর অংশটা দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤কচুরমুখীর গলানো অংশ দেওয়ার পরে তাতে ভেজে রাখা পেঁয়াজ এর অংশটা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারি পুরোপুরি হয়ে আসার জন্য কিছু সময় ফুল আঁচে দিয়ে রেখেছিলাম।

➤কিছুক্ষন বাদে আমার কাতলা মাছের তরকারিটা পুরোপুরি হয়ে গেছিলো এবং আমি চুলা অফ করে কিছুক্ষন রেখে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারির উপর দিয়ে জিরা গুঁড়ো চামচখানিক ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। কাতলা মাছের তরকারিটা পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

কাতলা মাছ অনেকদিন খাওয়া হয় না, আর সাথে কচুরমুখীও খাওয়া হয় না।

কাতলা মাছ অনেকদিন থেকে খাওয়া হয় না। কচুরমুখীর সাথে যে কোন মাছ রান্না করলে খেতে ভালো লাগে। যেহেতু এই মাছ আপনার বাড়ির পাশেই নিয়ে এসেছিল তাই মনে হচ্ছে খুব সহজেই কিনতে পেরেছেন। কচুরমুখী খেতে খুবই ভালো লাগে। কচুরমুখী ভর্তা আমার খুবই প্রিয়। গরম ভাতের সাথে ভর্তা খেতে দারুন লাগে। মাছ দিয়ে কচুরমুখীর আঠালো তরকারি রান্না করলে খেতে দারুন লাগে। কচুরমুখী শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তবে কচুরমুখীতে এক ধরনের ফাইবার থেকে এবং হজমে সহায়তা করে এই বিষয়টি আমার জানা ছিল না দাদা। আপনার এই রেসিপি খুবই ভালো লেগেছে দাদা। কাতলা মাছের সাথে যেকোন সবজি রান্না করলেই খেতে ভালো লাগে। আপনার রন্ধন প্রণালী সকলের মাঝে তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

 2 years ago 

কচুরমুখী আর কাতলা মাছের সুস্বাদু একটি রান্নার রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছেন দাদা। তবে সত্যি বলতে কচুরমুখী আমারও বেশ কিছু দিন থেকে খাওয়া হয়না, দেখি আজ কালের মধ্যে এনে রান্না করতে হবে। আর মাছের মধ্যে কাতলা মাছের স্বাদের জুড়ি মেলা ভার। কাতলা মাছ একটু বড় হলেই ভীষণ ভালো লাগে খেতে।

কচুরমুখীর তরকারি যতটা সম্ভব মাখা মাখা ঝোল হলে খেতে ভালো লাগে। আপনার তরকারিটা বেশ মাখা মাখা ঝোলের মনে হয়েছে। সবমিলিয়ে আপনি তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন, তাহলে নিঃসন্দেহে সুস্বাদু হয়েছে খেতে 😋

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য।

 2 years ago 

কচুরমুখি ভর্তা করলে আমার বেশি ভালো লাগে। আমি নিজেও অনেকদিন কাতলা মাছ খাই না। কাতলা মাছের মাথা আমার খুব পছন্দের। কাতলা মাছের রেসিপি টা খুব সুন্দর তৈরি করেছেন দাদা। বিশেষ করে আপনার পরিবেশনা এবং উপস্থাপনা টা দারুণ ছিল।।

 2 years ago 

কচুরমুখী দিয়ে কাতলা মাছের রেসিপিটি আপনি খুবই সুন্দরভাবে প্রদর্শন করেছেন এবং এটি তৈরি করেছেন। কাতলা মাছ খুবই স্বাদের মাছ এবং এটির সাথে যখন কচুরমুখী দিয়ে আপনি রান্না করেছেন, তখন এটি দেখতে অনেকটা সুন্দর হয়েছে এবং সুস্বাদু হয়েছে।

 2 years ago 

কাতলা মাছ একটু ঐতিহ্যবাহী মাছ। কাতলা মাছ আমারও প্রিয় দাদা। আমাদের বাসায় একটা পুকুর ছিল। আমরা সেটিতে বাড়িতে খাবার জন্য শুধু কাতলা আর ওই চাষ করতাম। যাইহোক আপনার করা কচুরমুখী দিয়ে কাতলা মাছের রেসিপিটি খুবই অসাধারণ হয়েছে। ধাপগুলো খুবই সুন্দরভাবে করেছেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল

 2 years ago 

ভাইয়া কচুর মুখী দিয়ে আপনার কাতলা মাছের রেসিপিটি সত্যি ভীষণ ভালো হয়েছে। কচুর মুখী দিয়ে যে কোন তরকারি রান্না করলে আমার কাছেও খেতে ভীষণ ভালো লাগে। আমিও কিছুদিন আগে কচুর মুখী দিয়ে কাতলা মাছ খেয়েছিলাম। তবে আপনার রান্নায় আমার সবথেকে বেশি ভালো লাগে আপনি মাছগুলো ও পেঁয়াজ আগে খুব সুন্দর করে ভেজে নেন । তাছাড়া আলু গুলো ও ভেজে নেন যার কারণে খাবার সুস্বাদু হয়ে থাকে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

পরে ভাবলাম এর কাছে রুই মাছ আছে

দাদা এখানে কি রুই মাছই হবে না কাতলা মাছ হবে?
কচুর মুখী দিয়ে যেকোনো তরকারি রান্না করলে খেতে খুবই ভালো লাগে । তরকারিটা কেমন একটু আঠালো হয়, কিন্তু মজাদার হয়। তাছাড়া আপনি তো কচুর মুখি আবার চটকে সেগুলোর ঝোলের সঙ্গে মিশিয়েছেন ঝোলটি মনে হচ্ছে যে খুবই সুস্বাদু হয়েছে । আমার তো নিজেরই খেতে ইচ্ছা করছে। তাছাড়া অনেকদিন পর কোন মাছ বা সবজি খেলে সেই খাবার খেতে আরো বেশি সুস্বাদু লাগে। তারপর দুটি খাবারই অনেকদিন পর একসঙ্গে খাচ্ছেন। খেতে নিশ্চয়ই অনেক ভালো লেগেছিল। দেখতে তো বেশ লোভনীয় লাগছে। ধাপগুলোও সুন্দরভাবে দেখিয়েছেন। ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

দাদা এখানে কি রুই মাছই হবে না কাতলা মাছ হবে?

ওহো, ধরিয়ে দিয়েছেন ভালো হলো। লেখার সময় মিস্টেক হয়ে গেছে।

কচুরমুখী চটকে দিলে বেশ মজা হয় তরকারিতে। কচুরমুখী এইজন্য উভয়দিকে টেস্ট লাগে, এক যেমন ভর্তা, অন্যদিকে ঝোলের তরকারি।

 2 years ago 

দাদা আপনি খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। কচুরমুখী দিয়ে কাতল মাছের রেসিপি আমার খুবই প্রিয়। আসলে অনেকদিন হলো আমি কাতলা মাছ খাওয়া হয়নি।তবে আপনার মত আমাদের বাড়িতে মাছ এভাবে পাওয়া যায় না।যাই হোক এটি আপনাদের জন্য খুবই ভালো। যে বাড়ির উপরে মাছ নিয়ে আসে। তারা মাছ মাছ করে চিৎকার করতে ছিলো। আপনি গিয়ে অনেক রকমের মাছ দেখলেন। সেখানে থেকে কাতল মাছ কিনলেন। আসলে আমাদের গ্রামে এরকম মাছ পাওয়া যায় না। এটি খুবই সুবিধাজনক। যাইহোক আপনি খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করে আমাদের সাথে শেয়ার করলেন দেখে সুস্বাদু মনে হচ্ছে।

 2 years ago 

নদীর কাতলা মাছ খেতে আমার কাছে অনেক সুস্বাদু লাগে। তাছাড়া কচুর মুখী দিয়ে যেকোনো ধরনের মাছ রান্না করলে গরম গরম খেতে অনেক সুস্বাদু হয় ।শীতের মৌসুমে যেটা খুবই ফেভারিট। দাদা আপনি দারুন একটি রেসিপি আমাদের মাঝে উপহার দিলেন ।তাছাড়া কচুর মুখীর অনেক উপকারিতা আছে যেটা অনেকেই জানেনা অনেক ভালো লাগলো আপনার রেসিপি তৈরি।

 2 years ago 

দাদা মনে হয় কোন ফেরিওয়ালাকে ফিরিয়ে দেন না😜😜।যাই হোক আমার কাছেও কচুর মুখী খুব ভালো লাগে,তবে বেশি ভালো লাগে ইলিশ মাছ দিয়ে।এটা অন্যরকম স্বাদ আমার মনে হয়।কাতলামাছ দিয়ে কচুর মুখীর রেসিপি বেশ সুস্বাদু হয়েছে।কচুর মুখী এমনি আঠালো, তবে কিছু কিছু কচুর মুখী গলানোতে আরো আঠালো হয়েছে। সব মিলিয়ে ভালো ছিলো।ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60752.38
ETH 2453.49
USDT 1.00
SBD 2.63