হরিনা চিংড়ি দিয়ে শিমের বিচির সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। এই রেসিপিটা করেছিলাম গতদিন। এই রেসিপিটা হলো শিমের বিচির। শিমের বিচির তরকারি আমার খুবই প্রিয় একটা তরকারি। এই শিমের বিচি দিয়ে নিরামিষ তরকারি রান্না করলেও খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে, তবে আমি এটা চিংড়ি দিয়ে করেছিলাম। তবে আমার ইচ্ছা ছিল বাগদা চিংড়ি দিয়ে রান্না করবো, চিংড়ি সাইজে বড়ো হলে তরকারিতে খেতে একটা অন্যরকম স্বাদ লাগে। বাজারে বাগদা চিংড়ি ভালো একটা পাইনি বলে না কিনে এই বড়ো সাইজের কিছু হরিনা চিংড়ি কিনে নিয়েছিলাম। চিংড়ির যা দাম তা আর বেশি একটা নেওয়ারও মতো না, এই চিংড়ি তাই ৪০ টাকা পার ১০০ গ্রামে, চিংড়ির দাম বেড়েছে বড্ড আজকাল। যাইহোক এইবার আসি এই শিমের বিচির কোথায়, এখন সারা শীতকাল পর্যন্ত এই শিমের বিচি খেতে অনেক ভালো লাগবে, আর শীতকালের পরে অন্যান্য সময়ে পাওয়াও যাবে না। বাজারে শিমের বিচি উঠলে আমি প্রায় নিয়ে আসি, এ ভেজে খেতেও স্বাদ লাগে। তবে কাঁচা বিচির থেকে শুকনো বিচি ভেজে খেতে আরো বেশি ভালো লাগে। বাজারে সব কাঁচা বিচিই উঠেছে এখন, এগুলো এমনি শুকিয়ে খেতেও ভালো লাগবে না, একদম গাছে শুকনো শিমের বিচি সদ্য ভেজে খাওয়া যায় তাহলে ভালো লাগবে। আর শিমের বিচির অনেক উপকারিতাও আছে। শিমের বিচিতে একধরণের ফাইবার থাকে যেটা অনেক প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে আমাদের শরীরে। তাছাড়া এতে থাকে না কোনো কোলেস্টেরল, তাই খেতেও কারো কোনো সমস্যা নেই। অনেক প্রয়োজনীয় ভিটামিনও রয়েছে শিমের বিচিতে। যাইহোক চিংড়ি দিয়ে এই শিমের বিচির তরকারি অনেক স্বাদের হয়েছিল খেতে। এখন রেসিপিটির মূল উপকরণের দিকে চলে যাবো।


☬প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☬

✔উপকরণ
পরিমাণ✔
হরিনা চিংড়ি
২০০ গ্রাম
শিমের বিচি
৫০০ গ্রাম
নতুন আলু
৫ টি
পেঁয়াজ
২ টি
কাঁচা লঙ্কা
৫ টি
শুকনো লঙ্কা
১ টি
গোটা জিরা
পরিমাণমতো
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১.৫ চামচ


হরিনা চিংড়ি, নতুন আলু, পেঁয়াজ


কাঁচা লঙ্কা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


დএখন রেসিপিটি যেভাবে তৈরি করলাম---


✠প্রস্তুত প্রণালী:✠


❖চিংড়িগুলো কেটে নিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে রেখেছিলাম। এরপর শিমের বিচিগুলো অনেক্ষন ধরে জলে ভিজিয়ে রেখেছিলাম এবং পরে জল ফেলে দিয়ে বিচিগুলোর খোসা ফেলে দিয়েছিলাম।

❖নতুন আলুগুলোর খোসা হালকা একটু চেঁছে নিয়ে কেটে পিচ পিচ করে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। এরপর পেঁয়াজ দুটির খোসা ফেলে দিয়ে কেটে রেখেছিলাম। কাঁচা লঙ্কাগুলো কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম।

❖কেটে রাখা হরিনা চিংড়িগুলোতে লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে চিংড়ির গায়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

❖কড়াইতে অল্প তেল দিয়ে তাতে চিংড়িগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে তুলে রেখেছিলাম।

❖চিংড়ি ভাজা হয়ে গেলে কড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে তাতে আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভাজা করে তুলে নিয়েছিলাম।

❖আলু ভাজা হয়ে গেলে কড়াইতে পরিমাণমতো তেল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তেলটা গরম হলে তাতে গোটা জিরা আর শুকনো লঙ্কা দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖জিরা আর শুকনো লঙ্কা ভাজা হয়ে আসলে তাতে শিমের বিচিগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর খানিক্ষন ধরে নেড়েচেড়ে বিচিগুলো একটু ভেজে নিয়েছিলাম।

❖শিমের বিচি ভাজা হয়ে গেলে তাতে ভেজে রাখা আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তাতে কেটে রাখা পেঁয়াজ ধুয়ে দিয়েছিলাম আর সাথে কাঁচা লঙ্কাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖কাঁচা লঙ্কা দেওয়ার পরে তাতে ভেজে রাখা চিংড়িগুলো দিয়েছিলাম এবং পরে স্বাদ মতো লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖শিমের বিচির সাথে সমস্ত মশলা ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম এবং পরে তাতে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖জল দেওয়ার পরে তরকারিটা খানিক্ষন ফুটিয়ে নিয়েছিলাম এবং আলু আর শিমের বিচি ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিয়েছিলাম। এরপর সেদ্ধ শিমের বিচি একটি পাত্রে কিছুটা তুলে নিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে গলিয়ে সফ্ট করে নিয়েছিলাম।

❖শিমের বিচির গলানো অংশটা তরকারিতে আবার পরে দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা ভালোভাবে হয়ে আসার জন্য দেরি করেছিলাম।

❖তরকারিটা ঘন হয়ে আসলে আর ঝোলটা একটু কমিয়ে নিয়ে জ্বালটা নিভিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাতে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর একটি পাত্রে শিমের বিচির সুস্বাদু তরকারিটা পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

হরিনা চিংড়ি দিয়ে মজাদার শিমের বিচির রেসিপি দেখে অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আসলে হরিনামটা আমার কাছে ভালো লেগেছে, আর এই চিংড়ি মাছ আমার খুবই প্রিয়। বিশেষ করে চিংড়ি মাছ খেতে আমি খুবই পছন্দ করি। ৪০ টাকা দিয়ে ১০০ গ্রাম কিনেছেন। আসলে চিংড়ি মাছের দাম বেড়েছে, বর্তমানে বাজারে সকল কিছুর দাম বেড়েছে।আর শীতের সবজি সিম। সিমের কোন তুলনা হয় না। আমি শিম ভাজি খেতে খুব পছন্দ করি। বিশেষ করে গরম ভাতের সাথে আর আপনি ঠিকই বলেছেন দাদা শিমের বিচি ভাজি করে খেতে খুবই মজা লাগে। আমিও এই সিমের বিচি খেতে খুবই পছন্দ করি। তবে আজকে আপনার রেসিপি পরিবেশন এবং উপস্থাপন খুবই ভালো লেগেছে দাদা। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

দাদা সত্যি বলতে শীমের বিচি আমার হোম ম্যানেজার ভীষণ পছন্দ করে। শীতকালে সহজ প্রাপ্তিতার জন্য আমরাও মাঝে মাঝেই খেয়ে থাকি। বড় আকৃতির থেকে ছোট চিংড়ি মাছ আমাদের বেশি খাওয়া হয়। আমাদের এখানে ছোট আকারের চিংড়ি মাছ একশো গ্রাম প্রায় ১০০-১২০ টাকা দাম, তবুও মাঝে মাঝেই কিনতে হয়। শীমের বিচি দিয়ে এধরনের চিংড়ি মাছ অসাধারণ লাগে খেতে। আপনার তরকারিটা লোভনীয় ছিল।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

 2 years ago 

কয়েকদিন আগে বাজার থেকে শিম কিনে আনা হয়েছিল। শিম গুলোর উপরের চামড়া কেমন জানি কালো কালো ছিল। তাই ভাবলাম শিমের বিচি গুলো বের করে নিয়ে কোন রেসিপি তৈরি করব। বিচিগুলো বের করে রেখেছিলাম। কিন্তু কিছু করা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে নষ্ট হয়ে গেল😔। আজকে শিমের বিচির এই মজার রেসিপি দেখে তো আমার আবারো শিমের বিচি কিনে আনতে ইচ্ছে করছে। শুকনো শিমের বিচি ভাজা খেতে আমার অনেক ভালো লাগে। যেগুলো গাছে শুকিয়ে যায় সেগুলো ভাজা খেতে বেশি ভালো লাগে। আর যেগুলো পরিপক্ক শিমের বিচি হয় সেগুলো এভাবে রান্না করলে খেতে অনেক ভালো লাগে। আবার অনেকের কাছে শুনেছি গাছে শুকানো শিমের বিচি গুঁড়ো করে নাকি ডাল রান্না করা যায়। শিমের বিচির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে পেরে ভালো লাগলো দাদা। আসলে কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। চিংড়ি মাছগুলো দেখে খেতে ইচ্ছে করছে দাদা। তবে বর্তমানে বাজারে চিংড়ি মাছের দাম অনেকটাই বেশি। যাইহোক খুবই মজার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

 2 years ago 

কয়েক দিন আগে শিমের বিচি এনে লাউ শাক দিয়ে নিরামিষ করেছিলাম দারুন লাগে খেতে।আর দাদা আপনি ঠিক বলেছেন, শিমের বিচিতে অনেক পুষ্টিগুন আছে। দাদা আপনি চিংড়ি মাছ, আলু ভেজে নিয়ে রান্না করলেন, খেতে বেশ মজার হয়েছে বেশ বুঝতে পারছি। আমি বড় মাছ, মুরগি দিয়েও করি খেতে দারুন হয়।আপনার উপস্থাপনা খুব সুন্দর হয়েছে। আপনি ধাপে ধাপে রেসিপিটি তুলে ধরেছেন দেখে ভাল লাগলো। খুবই লোভনীয় রেসিপি আজ শেয়ার করেছেন। আর সাথে পুষ্টি গুনে ভরা একটি রেসিপি।অনেক ধন্যবাদ দাদা রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য। অনেক অভিনন্দন দাদা আপনার জন্য।

 2 years ago 

আসলে দাদা এখন চিংড়ি মাছের সত্যিই অনেক দাম হয়েছে আমাদের এদিকেও । আপনার চিংড়ি দিয়ে সিমের বিচির রেসিপিটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে । তবে সিমের বিচিতে যে এত উপকারিতা রয়েছে সেটি আমার জানা ছিল না । আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম । সিমের বিচি দিয়ে আমার কখনো কোন রেসিপি করা হয়নি । তবে আপনার রেসিপিটি দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে । মনে হচ্ছে খেতে বেশ ভালোই লাগবে । কখনো ট্রাই করে দেখব নিশ্চয়ই । ধন্যবাদ আপনাকে ।

 2 years ago 

এত সুন্দর করে হরিণা চিংড়ি রান্না করলে কার না লোভ লাগে বলেন তো দাদা। আমাকে তো দেখি আগামীকালই বাজার থেকে শিমের বিচি আর হরিণা চিংড়ি আনাতে হবে। আর আপনার মত এত সুন্দর করে রান্না করতে হবে। তানা হলে মজার এই রেসিপিটির স্বাদ একেবারেই ভুলে যাবো। সুন্দর করে গুছিয়ে এত সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

চিংড়ি মাছ দিয়ে সিমের বিচির অসাধাণ রেসিপি তৈরি করেছেন। আসলে চিংড়ি মাছ আমার খুবই প্রিয় আর এই সিমের বিচির মজাদার রেসিপি খেতে খুবি সুস্বাদু লাগে। আসলে সিমের বিচির মজাদার রেসিপি গুলো খেতে খুবই মজা লাগে,আপনার রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

হরিনা চিংড়ি দিয়ে শিমের বিচির রেসিপিটা দুর্দান্ত হয়েছে দাদা। রেসিপির কালারটা খুব সুন্দর হয়েছে, দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে খুব সুস্বাদু হয়েছে। আসলে শিমের বিচির উপকারিতা অনেক, আর শিমের বিচি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। শিমের বিচি কখনো রান্না করে খাওয়া হয়নি,তবে আপনার রেসিপিটা দেখতে খুব লোভনীয় লাগছে। এই রেসিপিটা একদিন বাসায় ট্রাই করবো ইনশাল্লাহ। যাইহোক এত লোভনীয় একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

সিমের বিচি খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। শীতের সময় ছাড়া আবার তেমন একটা পাওয়া যায় না। এজন্য আমি শীতের সময় বেশি করে কিনে ডিপ ফ্রিজে রেখে দেই। সারা বছর এতে খাওয়া যায়। ভেঁজে কখনো খাওয়া হয়নি সবসময় তরকারিতে দিয়েই খেয়েছি। সিমের বিচির ডাল ও খুব মজা লাগে দাদা। শুধু চিংড়ি মাছের না বর্তমানে সবকিছুরই দাম আকাশছোঁয়া। যাইহোক বাগদা চিংড়ি না পেলে কিভাবে হরিনা চিংড়ি দিয়ে যে সুস্বাদু করে রান্না করেছেন দেখেই তো খেতে ইচ্ছা করছে। আজকে তো দেখছি আলুর বদলে সিম গলিয়ে তরকারিতে দিয়েছেন। এর ফলে তরকারিটা খেতে আরো সুস্বাদু হয়েছে বোঝাই যাচ্ছে । বেশ লোভনীয় একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন দাদা। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আমাদের এদিকে তো চিংড়ির কম দাম দেখিইনি কখনো।সবসময় শুনেছি অনেক বেশি দাম।আর এই রান্নাটা শীতকালে আমাদের এদিকেও হয়।ঝাল ঝাল করে রান্না করলে মজা লাগে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59694.50
ETH 2603.45
USDT 1.00
SBD 2.54