চিংড়ি দিয়ে পুঁইফলের সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি পুঁইশাকের ডিম বা পুঁইফলের রেসিপি তৈরি করেছি। এই পুঁইশাকের ডিম বা পুঁইফল আমার কাছে অত্যাধিক সুস্বাদু লাগে খেতে। আমার মামার বাড়িতে ছাদে পুঁইশাক লাগানো অনেক, আর এখন নতুন ফলও হয়েছে প্রচুর। গতকাল সকালে একটা দরকারে গিয়েছিলাম মামার বাড়িতে তাই পরে ছাদে উঠে এক ব্যাগ ভরে নিয়ে এসেছিলাম। এই পুঁইফলগুলো এখন জালি অবস্থায় খাওয়া ভালো আর টেস্টও লাগে, কিন্তু ফলগুলো যদি পেকে যায় তাহলেও ভালো লাগবে কিন্তু জালি অবস্থায় যে স্বাদটা অনুভব করা যাবে সেইটা পাকা ফলে পাওয়া যাবে না। এই পুঁইফলগুলোকে অনেকে অনেক রকম বলে থাকে,যেমন পুঁইশাকের বিচি, পুঁইশাকের মিতুলী ইত্যাদি এইরকম বিভিন্ন প্রকার নামে প্রচলিত। আর এইগুলো গ্রামবাংলায় বেশি চলে। আমি বরাবরই সেই ছোটবেলা থেকেই একে পুঁইশাকের ডিম বলে ডেকে আসছি। এটাও কিন্তু শুনতে বা বলতেও একটা দারুন ইন্টারেষ্টিং লাগে। তবে এই বাকি নামগুলোর মধ্যে পুঁইফল নামটা সুন্দর। পুঁইফল বিভিন্নভাবে খাওয়া যায় এবং খুবই টেস্টি একটা খাবার। আলু আর চিংড়ি বা যেকোনো ছোট মাছ দিয়ে পুঁইফল রান্না করলে একদম মুখে লেগে থাকার মতো টেস্ট হয়। আমি এই পুঁইফল ভাজি বা অন্যান্য যেভাবেই করিনা কেনো এ খেতে দুর্দান্ত লাগে আমার কাছে। আমিও এই পুঁইফলের রেসিপিটা চিংড়ি দিয়ে করেছিলাম এবং খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। যাইহোক এখন রেসিপিটার মূল পর্বের দিকে চলে যাবো।


☫প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☫

დউপকরণ
পরিমাণდ
চিংড়ি
১৫০ গ্রাম
পুঁইফল
পরিমাণমতো
আলু
৩ টি
পেঁয়াজ
২ টি
কাঁচা লঙ্কা
১৫ টি
পাঁচফোড়ন
পরিমাণমতো
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৩.৫ চামচ
হলুদ গুঁড়ো
৩ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১/২ চামচ


পুঁইফল, আলু, পেঁয়াজ


কাঁচা লঙ্কা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো


❦এখন রেসিপিটা যেভাবে তৈরি করলাম---


☬প্রস্তুত প্রণালী:☬


✦চিংড়িগুলোকে একবার ভালো করে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর পুঁইফলগুলোকে জল দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম।

✦আলুগুলোর খোসা ভালোভাবে ছালিয়ে নিয়ে কেটে ছোট পিচ করে নিয়েছিলাম এবং জল দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর পেঁয়াজ দুটির খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে কুচি করে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম। কাঁচা লঙ্কাগুলোকে সব কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

✦ধুয়ে রাখা চিংড়িগুলোতে ১ চামচ লবন আর ১.৫ চামচ হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর চিংড়ির গায়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

✦একটি প্যানে তেল দিয়ে লবন-হলুদ মাখানো চিংড়িগুলো সব দিয়ে দিয়েছিলাম ভাজার জন্য। ভালো করে ভেজে নেওয়ার পরে তুলে নিয়েছিলাম।

✦চিংড়ি ভাজা হয়ে গেলে পরে খুব কম তেলে আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালোভাবে ভাজা করে নিয়েছিলাম।

✦আলু ভাজার পরে প্যানে আরেকটু তেল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাতে কেটে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালোভাবে কড়া মতো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

✦ভাজার পর্ব হয়ে গেলে অন্য আরেকটি কড়াইতে তেল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাতে গোটা পাঁচফোড়ন দিয়ে দিয়েছিলাম। পাঁচফোড়ন একটু ভাজা টাইপ এর হয়ে এলে তাতে ধুয়ে রাখা পুঁইফলগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

✦পুঁইফল দেওয়ার পরে তাতে ভেজে রাখা আলু দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভেজে রাখা চিংড়িগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

✦চিংড়ি দেওয়ার পরে তাতে লঙ্কাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপরে তাতে ভেজে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিয়েছিলাম।

✦পেঁয়াজ দেওয়ার পরে তাতে স্বাদ মতো ২.৫ চামচ লবন এবং ১.৫ চামচ হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব উল্টেপাল্টে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

✦মিক্স করার পরে তাতে একটু জল ঢেলে দিয়েছিলাম। এবং ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে আসার জন্য কড়াই একটি পাত্র দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলাম।

✦ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে গেলে ঢাকনাটা তুলে নিয়েছিলাম। এরপর ঝোলটা কমিয়ে আনার জন্য আরো কিছুক্ষন জ্বাল দিয়ে কমিয়ে নিলাম।

✦জ্বাল দিয়ে শেষ পর্যায়ে ঝোলটা একদমই কমিয়ে নিয়েছিলাম এবং একটু রসা রসা রেখে ঘন্ট মতো করে নিয়েছিলাম, সাথে তাতে একটু জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম । এরপর পরিবেশনের জন্য চিংড়ি দিয়ে পুঁইফলের ঘন্টটা একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

পুঁই শাকের ফুল বা পুঁইশাকের ডিম দিয়ে আপনি মজাদার চিংড়ি মাছের রেসিপি তৈরি করেছেন। আসলেই এই পুঁইশাকের ফুলগুলো দিয়ে আমি আগে অনেক খেলাধূলা করেছি। যখন এই ফুলগুলো লাল হয়ে যায় তখন সেগুলো দিয়ে খেতে খুবই ভালো লাগে, কিন্তু কখনই এই শাকের ফুলের রেসিপি তৈরি করিনি।পুঁইশাক খেয়েছি অনেক বার। তাই আপনার চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁইশাকের ফুলের রেসিপিটা ভালোভাবে দেখে শিখে নিলাম এবং পরবর্তীতে তৈরি করবো ইনশাল্লাহ। জানিনা কতটা মজা হবে। তবে আপনার রেসিপি দেখে বোঝাই যাচ্ছে অনেক মজাদার হয়েছিল। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

আপনার নামটাও কিন্তু সুন্দর দাদা পুঁইয়ের ডিম। আমরা এটিকে পুঁইফল বলি। আমি বাবার বাড়িতে গিয়ে ছাদে এই পুঁই ফল লাগানো দেখলাম। কিন্তু ফলগুলো কেন যেন খুব ভালো হয়নি। কেমন পোকা ধরে গিয়েছে। তখন ভাবছিলাম যে অনেক আগে এগুলো খেয়েছি স্বাদ কেমন মনে নেই। আর আপনি আজকেই এই ফলের রেসিপি শেয়ার করলেন। আমার কাছে এই ফলগুলো পাকা অবস্থায় বেশি ভালো লাগে দেখতে। এত সুন্দর লাগে আর ভিতরের রসের কালার এর কথা কি আর বলবো। ছোটবেলা এগুলো দিয়ে অনেক খেলতাম। কচি অবস্থায় খেতে মনে হয় বেশি ভালো লাগে। যদিও মনে নেই স্বাদ। আলু এবং চিংড়ি দিয়ে রান্না করাতে মনে হয় খেতে অনেক মজাদার হয়েছিল। চিংড়ি দিয়ে যে কোন কিছুই রান্না করলে তার স্বাদ দ্বিগুণ হয়ে যায়। সবশেষে রেসিপির কালার বরাবরের মতন লোভনীয় লাগছে।

 2 years ago 

পুঁই ফল আমার খুবই ফেভারিট। এরকম রেসিপি মাঝে মাঝে প্রস্তুত করে খাওয়া হয় কিন্তু চিংড়ি মাছ দিয়ে কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার উপস্থিত করার রেসিপি দেখতে খুবই লোভনীয় দেখা যাচ্ছে। খেতে নিশ্চয়ই খুব মজাদার হবে।

 2 years ago 

পুইশাকের ডিম ভাইয়া দারুন একটি নাম দিয়েছেন। খুবই মজার নাম টি। আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। যদিও আমরা এটিকে পুঁইফল বলে থাকি। কিন্তু আমি এটি কখনো রান্না করিনি ।অনেক আগে একবার খেয়েছিলাম আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগেনি ।কিন্তু আপনি চিংড়ি মাছ ও আলু দিয়ে যেভাবে রান্না করেছেন দেখেই তো লোভ লেগে গেল। ভালো না লেগে উপায় নেই। এখনই আপনার মত করে খেতে ইচ্ছে করছে। সত্যি চমৎকার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি। মামার বাড়ি যেয়ে দারুন জিনিস নিয়ে এসেছেন। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

দাদা আপনি আপনার মামার বাসায় গিয়ে পুঁই শাকের বিচি এনেছেন শুনে ভালো লাগলো। পুঁই শাকের বিচি খাওয়া যায় অনেক বার শুনেছি তবে কখনো রান্না করে খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খেতে অনেক সুস্বাদু হবে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া মজাদার এই রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

এগুলোকে আমাদের এদিকে পুঁইফল বলে থাকে। এটা যেমন খেতে দারুন লাগে তেমনি পুষ্টিকর বটে। আমিও কয়েকদিন আগে খেয়েছি ভীষণ সুস্বাদু এই খাবারটি। মামার বাড়ি থেকে বেশ দামী জিনিস সংগ্রহ করেছেন দাদা।
চিংড়ি মাছ দিয়ে যেভাবে রান্না করেছেন স্বাদের না হয়ে কোথায় যায়।
অনেকেই পুঁইফল খেতে চায় না, তাদের বলবো আপনার মতো এভাবে রান্না করে খেতে পারলে বারবার খেতে চাইবেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা চমৎকার এই পোস্টটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

 2 years ago 

আমাদের এদিকে এটিকে বলা হয় পুইশাকের বিচি কিন্তু জায়গা ভেদে সব কিছুর নাম আলাদা হতে পারে। আপনি একটি চমৎকার নাম দিয়েছে দাদা। এই পুইশাকের বিচির রেসিপি আমি খাইনি তবে আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে সুস্বাদু হবে। এছাড়াও রেসিপিতে চিংড়ি মাছ ব্যবহার করেছেন যা আমার অনেক প্রিয়। একদিন অবশ্যই ট্রাই করে দেখব দাদা।

 2 years ago 

পুঁইশাকের ডিম বা পুঁইফল দিয়ে ছোটবেলায় অনেক খেলতাম। বিশেষ করে পাকা পুঁইফলগুলো গলিয়ে খাতার মধ্যে রং করতাম এবং হাতে লাগাতাম। আবার মাঝে মাঝে সেগুলো খেলনা বাটিতে রান্না করতাম। খেলার অন্যতম উপকরণ ছিল এই পুঁইফল। তবে কোনদিন রান্না করে খাওয়া হয়নি। এই রান্না গুলো খেলনা বাটিতেই সীমাবদ্ধ ছিল। আপনি যেহেতু বলছেন এই পুঁইফল খেতে দারুন লাগে তাই একদিন অবশ্যই খেয়ে দেখতে হবে। আসলে নতুন কিছু খাওয়ার মাঝে আনন্দ আছে। আর আপনার মামা বাড়ি থেকে আপনার পছন্দের পুঁইফল নিয়ে এসেছেন জেনে ভালো লাগলো। হয়তো কাঁচা অবস্থায় এই ফলগুলো খেতে এক রকম লাগবে আর পেকে কালো হয়ে যাওয়ার পর হয়তো খেতে অন্য রকমের লাগবে। চিংড়ি মাছের সাথে যে কোন রেসিপি তৈরি করলে খেতে ভালো লাগে। আলু গুলো ভেজে নেওয়াতে মনে হচ্ছে খেতে আরো বেশি ভালো হয়েছে। আলু এবং চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁইফলের এই দারুন রেসিপি দেখে ভালো লাগলো। একদিন অবশ্যই এই মজার রেসিপি তৈরি করার চেষ্টা করবো দাদা।

 2 years ago 

আমাদের এই দিকে পুঁইশাকের গোটা বলে।আমার মা এগুলাকে নোনা ইলিশ দিয়ে রান্না করে।দাদা মামার বাড়ি থেকে পুঁইয়ের ডিম এনে চিংড়ি দিয়ে রান্না করেছেন।দেখে মনে হচ্ছে খেতে ভালো হয়েছে। প্রতিটি ধাপ খুব ভালো করে দেখিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

দাদা আপনি যখন পুঁইফল বললেন তখন আমি একবার দেখে আসলাম আসলে জিনিষটা কি। পরে দেখলাম পুইশাকের বিচি। আপনি সত্যিই বলেছেন এই ফলটা গ্রামে বেশি দেখা যায়। আধুনিক যুগের মানুষ এই ফলটা তেমন চিনবে না। আপনার মামার বাড়িতে ছাদের মধ্যে এত সুন্দর ফল পেয়ে গেলেন। আপনার পোষ্টটি পড়ে মনে হয়েছে এই ফলটা রান্না করতে পেরে অনেক খুশি হয়েছেন। রেসিপিটা সত্যিই ইউনিক হয়েছে। ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62647.29
ETH 2439.61
USDT 1.00
SBD 2.66