চিংড়ির চপ ভাজি রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে ভাজাভুজির রেসিপি শেয়ার করবো। এটা গত শুক্রবার তৈরি করেছিলাম। চিংড়ির চপ তৈরি করেছিলাম। এখন শীতকাল পড়ছে আর ভাজাভুজি খাওয়ার প্রতি সবারই একটা আলাদা আকর্ষণ কাজ করে, আমারও শীতকাল পড়লে বাড়িতে বিভিন্ন ভাজাভুজি করে খেতে ভালো লাগে, তাই এই তারিখ চিংড়ি দিয়েই বাড়িতে তৈরি করে ফেললাম। বাইরে খাওয়ার থেকে এসব বাড়িতে তৈরি করে খাওয়া অনেক ভালো। আমি আগে প্রচুর পরিমানে ভাজাভুজি খেতাম আর খেতেও আমার বেশ ভালো লাগতো, এখন যেহেতু এইসব খাওয়া একটু কমিয়ে দিয়েছি। বাড়িতে যখন বানাই তখনি একটু বেশি পরিমানে খাওয়া হয়। তাছাড়া বাইরে থেকে ভাজাভুজি কিনে খেলে আমার একটু সমস্যাও হয়, কেমন যেন গ্যাস মতো সৃষ্টি হয়। যাইহোক, আমার বাড়িতে চিংড়ি ছিল অনেক তার থেকে ৫০০ গ্রাম এর মতো নিয়ে চপ করে ফেললাম। এতো চিংড়ি এটা ওটা করে খাচ্ছি কিন্তু আমার ফ্রিজের মধ্যে থেকে চিংড়ি মোটে শেষ হতে চাচ্ছে না হা হা। এই চিংড়ির চপের ক্ষেত্রে আমি চাউলের গুঁড়া ব্যবহার করেছিলাম, যদিও এখানে চাউলের গুঁড়া না দিয়ে শুধু বেসন দিয়েও পুরোটা করা যায়। আর চাউলের ক্ষেত্রে যেকোনো চাউল এর গুঁড়া দিয়ে করা যায়, আমি এখানে আতপ চাউল ব্যবহার করেছিলাম আর বাড়িতেই গুঁড়া করে নিয়েছিলাম। এই চপগুলোর একটা সুবিধা আছে যে এইগুলো সন্ধ্যার সময় মুড়ি দিয়েও খাওয়া যায় আবার রাতে ভাত দিয়েও খাওয়া যায়, শুধুও খাওয়া যায়। আমি আবার এইসব একটু শুধুই খেতে ভালোবাসি, তাই শুধুই খেয়েছিলাম। চিংড়ির চপ চিলি সস দিয়ে খেতে দারুন লাগে, সস মিষ্টির থেকে ঝাল ঝাল আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। যাইহোক এখন আমি এই চিংড়ির চপের রেসিপিটার প্রধান উপকরণের দিকে চলে যাবো।


☀প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☀

☻উপকরণ
পরিমাণ☻
চিংড়ি
৫০০ গ্রাম
আতপ চাউল
১০০ গ্রাম
বেসন
১০০ গ্রাম
পেঁয়াজ
২ টি
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
৫ টি
লঙ্কার গুঁড়ো
২ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবণ
৩ চামচ
হলুদ
৩ চামচ


চিংড়ি, আতপ চাউল, পেঁয়াজ, রসুন


কাঁচা লঙ্কা, বেসন, সরিষার তেল, লবণ, হলুদ


❦এখন চপের রেসিপিটা যেভাবে তৈরি করলাম--


ꕥপ্রস্তুত প্রণালী:ꕥ


❖আতপ চাউলগুলো আমি এখানে প্রথমে জলে ১ ঘন্টার মতো ভিজিয়ে রেখে দিয়েছিলাম ( আমি চাউলগুলো ৫০০ গ্রাম এর মতো ভিজিয়ে রেখেছিলাম, কিন্তু গুঁড়া দেওয়ার সময় ১০০ গ্রাম এর মতোই দিয়েছিলাম)। এরপর একটা কুলোয় করে কিছুক্ষন ধরে শুকিয়ে নিয়েছিলাম।

❖চাউলগুলো শুকনো মতো হলে মিক্সারে করে ভালো করে গুঁড়ো করে নিয়েছিলাম।

❖চাউল গুঁড়া করার পরে পেঁয়াজ এর খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে কেটে নিয়েছিলাম এবং সাথে রসুনের খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে কোয়াগুলো আলাদা করে নিয়েছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো গোল গোল করে কেটে নিয়ে সব একসাথে মিক্সারে দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালো করে পেস্ট তৈরি করে নিয়েছিলাম।

❖ধুয়ে রাখা চিংড়িগুলো অল্প অল্প করে মিক্সারে দিয়ে সব পেস্ট মতো করে নিয়েছিলাম , তবে একদম পুরোপুরি পেস্ট না, চিংড়ি হালকা আস্ত আস্ত মতোও রেখেছিলাম।

❖এইবার যে ৫০০ গ্রাম চাউল গুঁড়া করেছিলাম সেখান থেকে ১০০ গ্রাম চাউলের গুঁড়া একটি বাটিতে ঢেলে আলাদা করে নিয়েছিলাম। এরপর চিংড়ির যে পেস্ট তৈরি করেছিলাম তাতে পেঁয়াজ, রসুন এবং কাঁচা লঙ্কার তৈরি করে রাখা পেস্ট দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖পেস্ট দেওয়ার পরে তাতে চাউলের গুঁড়া দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তাতে বেসন দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖চাউলের গুঁড়া আর বেসন দেওয়ার পরে তাতে স্বাদ মতো লবন, হলুদ আর লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে পরিমাণমতো সরিষার তেল দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖চিংড়িতে সবধরণের উপাদান আর মশলা দেওয়ার পরে হাত দিয়ে সব ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম। এরপর একটি প্যানে খুবই সামান্য সরিষার তেল চারিকানায় মাখিয়ে চুলায় দিয়ে দিয়েছিলাম ( এই পদ্ধতিটা অপশনাল, না দিলেও হয়, আমি সহজভাবে করার জন্য করেছিলাম এই পদ্ধতিটা )।

❖যে প্যানে হালকা করে তেল মাখিয়ে নিয়েছিলাম সেখানে চিংড়ির পিঠার মতো শেপ হাত দিয়ে তৈরি করে দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর অন্য কড়াইতে ভাজার জন্য তেল দিয়ে দিয়েছিলাম। তেলটা গরম হলে আর এদিকে পিঠার এক সাইড একটু শক্ত মতো হয়ে আসলে তুলে নিয়ে তেলে ছেড়ে দিয়েছিলাম। এইভাবে সবগুলো পিঠা ভালোভাবে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

দাদা আজকে আপনি খুবই মজাদার চিংড়ি চপ রেসিপি তৈরি করেছেন।এই রেসিপি আসলে আমার প্রিয়।চিংড়ির চপ আমার খুবই প্রিয় রেসিপি।আমি মাঝেমধ্যে বাইরে থেকে চপ রেসিপি কিনে খাই। আসলে ভাজাপুরি আমার খুবই প্রিয় এবং এই ভাজা পরি বেশি পরিমাণে খাওয়ার কারণে একবার গ্যাস এর সমস্যা হয় যার কারণে হসপিটালে ভর্তি হয়েছিলাম।তারপর থেকে একটু কম খাই। আপনি ওকে একটু কম খাওয়া শুরু করেছেন। তবে বাড়িতে তৈরি করলে আর রক্ষা নেই। খেতেই থাকেন।চিংড়ি মাছ আপনার ফ্রিজ থেকে যেন শেষই হচ্ছে না। আসলে ফ্রিজয়ে আপনি অনেক বেশি কিনে রেখেছিলেন বলে এখনো শেষ হয়নি। তবে আজকে আপনি চপ রেসিপি তৈরি করেন এই চিংড়ির চপ রেসিপি দেখে অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আপনার রেসিপির পরিবেশেন অনেক সুন্দর হয়েছে দাদা। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাথে মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

এতো চিংড়ি এটা ওটা করে খাচ্ছি কিন্তু আমার ফ্রিজের মধ্যে থেকে চিংড়ি মোটে শেষ হতে চাচ্ছে না হা হা।

দাদা আপনার চিংড়ির খনি থেকে আমাদেরকে যদি কিছু চিংড়ি পার্সেল করে পাঠিয়ে দিতেন তাহলে বেশ ভালো হতো। আমরা সবাই চিংড়ির ব্যবসা করে বড়লোক হয়ে যেতাম। আপনার ফ্রিজ থেকে চিংড়ি মাছ শেষই হতে চায় না। আর আমার ফ্রিজ পুরাই ফাঁকা। কবে যে এরকম চিংড়ি মাছের খনি পাবো ভাবতে ভাবতেই দিন কেটে যায়। তবে যাই বলুন না কেন দাদা শীতকালে বিভিন্ন রকমের মুখরোচক খাবার গুলো খেতে বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে তেলেভাজা খাবার গুলো খেতে বেশি ভালো লাগে। চালের গুঁড়া দিয়ে এবং বেসন দিয়ে তৈরি করা চিংড়ির চপ ভাজি রেসিপি দারুন হয়েছে। আমি মাঝে মাঝে চালের গুঁড়া দিয়ে বিভিন্ন রকমের চপ তৈরি করার চেষ্টা করি। শুধু বেসন দিলেও চপ তৈরি করা যায়। তবে চালের গুঁড়া দিলে বেশি মচমচে হয়। আর খেতেও ভালো লাগে। এত মজার রেসিপি তৈরি করেছেন অথচ আমাদেরকে দাওয়াত দিলেন না ব্যাপারটি কেমন জানি দেখাচ্ছে। পেটে সমস্যা হলে আমাদের দোষ নেই দাদা। 🤪🤪

 2 years ago 

দাদা আপনি ঠিকই বলেছেন শীতকালে এলে ভাজাভুজি বেশি খাওয়া হয়। চিংড়ির চপ ভাজি রেসিপি দেখে তো খেতে ইচ্ছা করছে। অনেক সুন্দর করে শুরু হতে শেষ পর্যন্ত সাজিয়ে উপস্থাপনা করেছেন। দেখে অনেক ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে দাদা চমৎকার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন দাদা শীতকাল এলে সকাল বিকাল গরম গরম এরকম ভাজি ভাজি খাবার খেতে খুবই মজাদার লাগে।। আমার তো এ জাতীয় খাবার খুবই ফেভারিট যদিও বাড়িতে এভাবে কখনো প্রস্তুত করে খাওয়া হয়নি।। তবে আমাদের এদিকে রাস্তার মোড়ে মোড়ে শীতকাল এলেই বিকেল থেকে শুরু হয়ে যায় ভাজীভুজি খাবারের আয়োজন।। তবে এ কথা ঠিক যে বাহিরের থেকে বাড়িতে প্রস্তুত করে খাওয়া অনেক স্বাস্থ্যসম্মত।। আপনার প্রস্তুত করা দেখেই জিভে জল চলে আসলো খেতে নিশ্চয়ই খুব মজা হয়েছিল।।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপনি শীতকাল আসলে তেলে ভাজা পুড়া রেসিপিগুলো খেতে খুবই ভালো লাগে। আর বাহিরে কেনা খাবার থেকে ঘরের তৈরি করা খাবার মজাটাই অন্যরকম। ঘরের তৈরি খাবার গুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই স্বাস্থ্যসম্মত। চিংড়ি মাছের যেকোনো রেসিপি খেতে আমার খুবই ভালো লাগে। চিংড়ি মাছের চপ খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর চিংড়ি মাছের চপ গুলো গরম গরম ভাতের সাথে এবং এমনিতেও খেতে ভালো লাগে। আপনার রেসিপিটি দেখে খেতে ইচ্ছে করছে। আমার খুবই প্রিয় এবং পছন্দের রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

কথা হচ্ছে,চিংড়ি আছে মানে আমি আছি।সেটা চিংড়ি দিয়ে তরকারি হোক বা চপ।চিংড়ি সবকিছুতেই হিট।
এসব জিনিস তো দেখলেই খেতে ইচ্ছা করে দাদা।কিন্তু মুখে তো আসেনা।
খুব সুন্দরভাবে রেসিপিটি উপস্থাপন করেছেন।শুভ কামনা রইলো 😊

 2 years ago 

শীতকাল মানেই নানা ভাজাভুজি খাওয়ার সমাহার।আর আমার তো ভাজাভুজি খেতে দারুণ লাগে।ঠিক বলেছেন দাদা ,বাইরের থেকে বাড়ি তৈরি করা খাবার অনেক উপকারী আবার সুস্বাদু ও।বাইরের তেল অনেক বাসী থাকে এইকারনে খেলে গ্যাস হয়ে যায় ।আপনার চিংড়ির চপ বেশ লোভনীয় ও টুকটুকে লাল হয়েছে।চালের গুঁড়া ব্যবহার করাতে এটা একটু শক্ত টাইপের হয়েছে।ভাতের সঙ্গে ও মুড়ির সঙ্গে দারুণ জমবে এটি।তবে আমার মা আগে বেসন বা চালের গুঁড়া ছাড়াই চিংড়ির চপ তৈরি করতেন।অবশ্য সেইসব চিংড়ি পুকুরের হওয়ায় দারুণ আঠা থাকতো।যেটি কেনা চিংড়িতে নেই,ঝাল ঝাল খেতেই বেশি মজা।ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

একদম ঠিক দাদা শীতকাল আসলে বিকেলবেলায় ভাজাভুজি খেতে ইচ্ছা করে । আর বাইরের দোকানের ভাজাভুজির কোন গ্যারান্টি নাই। কতদিনকার পুরনো তেল দিয়ে ভাজে তার কোন ঠিক নেই। এজন্যই অনেকেরই সমস্যা হয় খাওয়ার পরে। আমি আবার আলসেমি করে বাসায় না বানিয়ে বাইরে থেকেই কিনে বেশি খাই। চিংড়ি মাছ বুঝে গিয়েছে যে চিংড়ি ছাড়া আপনার একদিনও চলবে না সেজন্যই শেষ হচ্ছে না। আমারও এরকম চপগুলো ভাতের সঙ্গে থেকে এমনি খেতেই বেশি ভালো লাগে। আর সঙ্গে এরকম ঝাল ঝাল হলে তো কথাই নেই। একদম আপনার সঙ্গে মিলে গিয়েছে আমার টেস্ট। চপগুলো শুধু বেসন দিয়ে বানালে একটু নরম নরম হয়। কিন্তু যদি একটু চালের গুড়া মেশানো যায় তাহলে একটু ক্রিসপি হয়। যত সুন্দর করে সব ব্লেন্ড করে মাখিয়ে নিয়েছেন খেতে যে অসম্ভব মজাদার হয়েছিল বোঝাই যাচ্ছে। আজকে কিন্তু একদমই লোভ সামলাতে পারছি না দাদা।

 2 years ago 

এইভাবে চালবাটার সাথে চিংড়ি বেটে মিশিয়ে ভাজলে সমান ভাবে ডিস্ট্রিবিউট হয় চিংড়িটা, আর বড়াটাও খেতে ভালো লাগে। কেউ কেউ যে আলুর চপের পুরটার মধ্যে চিংড়ি বসিয়ে তা বেসনে ডুবিয়ে ভাজে সেটা আমার অতটা ভালো লাগে না। বরং এই রেসিপিটা বেশ ভালো লাগলো।

 2 years ago 

চিংড়ি এর খনি আছে তো,তাই এত কিছু বানানোর পরও শেষ হচ্ছে না😂।তবে শীতকালে ভাজাপুড়া আমারও খুব ভালো লাগে,তবে শীতকালে বেশি গ্যাস হয় আমার মনে হয়।যাই হোক এত গ্যাসের ছড়াছড়ি তারপর ও আমাদের এখানে গ্যাসের খুব সমস্যা।এভাবে আতপ চালের গুড়া দিয়ে কখন চিংড়ির চপ খাওয়া হয় নি।ইশ দাদা খালি চিংড়ি র লোভ দেখায়।এত মজার মজার জিনিস একা খেলে গ্যাস হবে না তো কি হবে😂।প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর করে দেখিয়েছেন। ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60752.38
ETH 2453.49
USDT 1.00
SBD 2.63