বাংলা মুভি রিভিউ: গুরু দক্ষিনা
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই সুস্থ, স্বাভাবিক আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজকে আমি আপনাদের সাথে একটা পুরানো বাংলা মুভি রিভিউ শেয়ার করে নেবো। এই মুভিটির নাম হলো "গুরু দক্ষিনা"। গুরু দক্ষিনা মুভির কাহিনীটা অনেক সুন্দর। এখানে তাপস পাল আর রঞ্জিত মল্লিক মুভির কাহিনীটাকে তাদের অভিনয়ের মাধ্যমে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছে যা দেখার প্রতি আকর্ষণীয়তা বেড়ে যায় । এই মুভিটা আমি আগে অনেকবার দেখেছি কিন্তু তার পরেও যেনো এইসব মুভি একভাবে দেখতে ইচ্ছা করে। কাহিনীতে বেশ ইন্টারেষ্টিং আছে, কারণ রঞ্জিত মল্লিক যে মুভিতে থাকে সেই মুভির কাহিনীগুলো এইরকমই হয় । যাইহোক এখন আমি মুভির কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে আলোকপাত করে নেবো। আশা করি আজকের এই মুভি রিভিউটা আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
☫কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ তথ্য:☫
✔মূল কাহিনী:
মুভির শুরুতে দেখা যায় হর মাস্টারমশাই আর তার বউমা সকালের দিকে গানের রেওয়াজ করতে লাগে। এখানে সেই সকালে শতাব্দী আর তার বান্ধবী রাস্তা দিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিলো এবং তখন তারাও দাঁড়িয়ে গান শুনতে লাগে। এরই মাঝে তাপস পাল চলে আসে আর তাদের সাথেও গানে গলা মেলায়। এখানে তাপস পালও হর মাস্টারের কাছে গান শিখতো আবার শতাব্দীর বাড়িতে গিয়ে শিখিয়ে আসতো হর মাস্টার। শেখর নামক একজন লোক শতাব্দীদের বাড়িতে বেড়াতে আসে, লোকটা শতাব্দীর বাবার বন্ধুর ছেলে। আর তার সাথেই শতাব্দীর বিয়ে দেবে বলে কথাবার্তা বলতে থাকে কিন্তু ঠিক তখনই রঞ্জিত মল্লিক এসে কিছু মিষ্টি কোথায় কথা শুনিয়ে দিয়ে গেলো শেখর লোকটিকে। রঞ্জিত মল্লিক সম্পর্কে শতাব্দীর বড়ো ভাই, আর শেখরের সাথে বিয়ে নিয়ে তার সম্পূর্ণ দ্বিমত। এরপর রঞ্জিত মল্লিক তাদের কারখানার একজন শ্রমিকের সাথে দেখা করতে যায় কারণ কারখানায় কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ করে কিছু একটা সমস্যা হয়ে যায়। এদিকে হর মাস্টারের নাতির শরীর খারাপ করে ফলে শতাব্দীর বাড়িতে অনেকদিন যেতে পারে না গান শেখানোর জন্য। আর এই কথাটা শতাব্দীর বাবা যখন শেখরের সামনে বলে তখন গেঁয়ো মাস্টার বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্ল করে আর বলে কলকাতার বড়ো বড়ো গানের মাস্টার থাকতে এইসব ছোটোখাটো গেঁয়ো মাস্টার দিয়ে কি হবে। তাই শেখর কলকাতার থেকে গানের মাস্টারকে আসতে বলে। আর এদিকে গ্রামে তারা একটা সঙ্গীতেরও আয়োজন করে যাতে শতাব্দী তার সেরা গানটা গেয়ে একটা সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারে।
হর মাস্টার তার নাতির শরীর ঠিক হওয়ার পরে শতাব্দীদের বাড়িতে যায় গান শেখানোর জন্য কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখে তার পরিবর্তে কলকাতার নতুন মাস্টার রেখেছে আর এইটা শোনার পরে তিনি মনে মনে খুব কষ্ট পায়। তবে কলকাতার যে গানের মাস্টারকে তারা রেখেছিলো সেই মাস্টারই গাঁয়ের এই হর মাস্টারের কাছে গান শিখে আর তারই পরামর্শই সব জায়গায় গান গাওয়ার সুযোগ পায়। আর তারা একে অপরকে দেখে চিনতেও পারে। তবে হর মাস্টার সেখান থেকে কষ্ট আর অপমানিত হয়ে বাড়িতে চলেযায়। গ্রামে যেখানে গানের প্রতিযোগিতা করেছিল সেখানে তাপস পালও অংশগ্রহণ করে আর তার মাস্টারমশাইকে অপমানের বদলা গানের মাধ্যমে নেয়। সেখানে গুরু দক্ষিনা গান গেয়ে সারা জনগণের মন জিতে নেয়, তাই শতাব্দী নিজে মঞ্চে এসে আর গান না গেয়ে পুরস্কার তাপস পালের হাতেই তুলে দেয়। রঞ্জিত মল্লিক সেখানে উপস্থিত থাকে আর সেও তাপস পালের গানটাকে সবসময় সাপোর্ট করে। এরপর সেই পুরস্কারটা নিয়ে তার মায়ের হাতে তুলে দেয় আর তার মাও ভীষণ খুশি হয়। তাপসের একটা চাকরি নিয়ে তার মাস্টারমশাই শতাব্দীর বাবার কাছে গিয়ে বলে কিন্তু গানের দিন সে অপমানিত হয়েছে বলে তাকে কোনো চাকরি দেবে না বলে দিয়েছে। তবে তাদের বাড়িতে শেখর লোকটা তাকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় আর পরেরদিন অফিসে যেতে বলে। এরপর তাপস যখন অফিসে গিয়ে দেখা করে তখন তাকে একপ্রকার অপমানিত করে বেয়ারার চাকরি দিয়ে। তার মা অসুস্থ তাই সে কোনোরকম কিছু না বলে চুপচাপ কাজটা করতে থাকে।
তাপস পাল আবার পরেরদিন অফিসে গেলে তাকে শেখর বলে বাড়ির থেকে জুতো জোড়াটা পালিশ করে নিয়ে আসতে। সে তার চপ্পল জোড়াটা পায়ের থেকে খুলে বাড়িতে গেলে শতাব্দী দেখে বলে ভদ্র লোকের ছেলে হয়ে জুতো জোড়া বইছো!? এরপর তাপস কেন করছে সে বিষয়গুলো তার সামনে তুলে ধরে আর শোনার পরে শতাব্দী বলে তুমি এই চাকরি ছেড়ে দাও আমি তোমার মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা দেবো, কিন্তু তাপস সেই টাকা নিতে চায় না। এরপর রঞ্জিত মল্লিক অফিসে গিয়ে শেখরকে উত্তম মধ্যম কিছু কথা শুনিয়ে দেয় কারণ শ্রমিকের টাকা দেইনি বলে, আর বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাপসের হাতে জুতো জোড়া দেখে আরো রেগে যায়। কে আনতে বলেছে জানতে চাইলে শেখরের নাম বললে রঞ্জিত মল্লিক বলে যায় যে আজকের তারিখ খেয়াল রেখো কারণ ১ বছর বাদে তোমাকে দিয়ে ওর জুতো জোড়া পালিশ করাবো। এরপর শতাব্দী তাপসকে না জানিয়ে কলকাতার থেকে একজন বড়ো ডাক্তারকে তার মায়ের চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেয়। আর এই বিষয়টা তাপস জানতে পেরে যায়, কিন্তু অফিসে শেখরের কানে এই খবর গেলে তাপসের মাইনের থেকে সমস্ত খরচ কেটে নেয়। এরপর সরস্বতী পুজোয় তাদের গ্রামে একটা ফাংশন হয় সেখানে তাপস কে গান গাইতে বলে কিন্তু শেখর তাপস কে বলে দিয়েছে যে সে যেন পর্দার আড়াল থেকে গান গায় আর শেখর তার গানে মুখ মিলাবে এইরকম বিষয় বলে দিয়েছে । এরপর ফাংশনে গান গাইলে শেখরকে দেখে শতাব্দী আর রঞ্জিত মল্লিক একটু অবাক হয়ে যায়। কিন্তু রঞ্জিত মল্লিকের সন্দেহ হয় বিষয়টা তখন সে উঠে গিয়ে বিষয়টা দেখতে দেখতে দেখতে পায় পর্দার পিছনে তাপস গান গাইছে।
ফাংশন শেষ হয়ে গেলে বাড়িতে গিয়ে রঞ্জিত মল্লিক শেখরকে বলে যে তোমার সংবর্ধনা সবার সামনে আর জানালাম না, ওটা তুলে রাখলাম একদিন দিয়ে দেবো। এদিকে হর মাস্টারমশাইয়ের নাতির টিউমার হয়েছে আর তার চিকিৎসার জন্য ১৫০০০ টাকা দরকার ( তখনকার সময়ে ১৫০০০ টাকা মানে অনেক ছিল ) কিন্তু তাদের কাছে এতো টাকা নেই বিধায় শতাব্দীর বাবার কাছে যায় টাকা চাইতে কিন্তু রাজি হতে চায় না। অনেক্ষন বলার পরে দিতে রাজি হয় কিন্তু একটা শর্তের উপরে। শর্ত দেয় যে তাপস যদি চিরদিনের জন্য গান ছেড়ে দেয় তাহলে তিনি টাকাটা দিতে পারবেন। মাস্টারমশাই শুনে পারবেনা বলে দেয়, কারণ একজনের বাঁচাতে গিয়ে আরেকজনের স্বপ্ন শেষ করতে চায়নি, তাই সেখান থেকে বাড়ির দিকে চলে যায়। এদিকে তাপসের বাড়িতে রঞ্জিত মল্লিক গিয়ে বলে তোমার নাম লিখে দিয়েছি একটা বড়ো ফাংশনে আর সেখানে কলকাতার নামিদামি শিল্পীরাও গাইবে তাই সবার সামনে নিজেকে মেলে ধরার এটাই সুযোগ। রঞ্জিত মল্লিকের কথা মতো তাপস রাজি হয়। মঞ্চে গিয়ে রঞ্জিত যখন নাম ঘোষণা করে তখন জনগণ ক্ষেপে যায় কারণ কলকাতার শিল্পীদের ছাড়া গ্রামের ছেলের গান শুনবে না। সবাই ইট পাটকেল ছুড়ে মারতে লাগে, তবে রঞ্জিত মল্লিক সবকিছু সামলিয়ে নেয় আর তাপস কে গান গাইতে বলে। গান গাওয়ার সাথে সাথে সবাই চুপ হয়ে যায় আর তার গানের প্রশংসায় সবাই পঞ্চমুখ। শেষে সবাই অটোগ্রাফ নেওয়ার জন্য পাগল করে ফেলে। অবশেষে টিভি, রেডিও তে তার গান গাওয়ার সুযোগ হয়ে যায় আর এই খবর শুনে তাপস ভীষণ খুশি হয়ে যায়।
তাপস পাল বাড়িতে এসে এই কথা মাস্টারমশাইকে শুনায় কিন্তু তার নাতির অসুখ সেটা জানেনা তাপস। তারপর তাপসকে ঘটনাটা খুলে বলে তার মাস্টারমশাই আর অপারেশনের জন্য ১৫০০০ টাকা লাগবে সেটাও বলে। তাপসকে বলে তুমি যদি গান ছেড়ে দাও তাহলে ওরা টাকাটা দেবে আর আমার নাতিটার জীবন বাঁচবে। এরপর তার মাস্টারমশাইয়ের গুরু দক্ষিনা হিসেবে গান ছেড়ে দেয় তাপস। এরপর রঞ্জিত আর শতাব্দী মাস্টারমশাইয়ের বাড়িতে আসে তার জন্মদিনের নিমন্ত্রণ করার জন্য আর গান গাইতে হবে সেটাও বলে যায়। তবে সে গান গাইতে পারবে না সেটা আর বলিনি, কিন্তু শেখর এদিকে বিপদে পড়ে যায়। কারণ শেখরকেও ওইদিন গান গাইতে বলে , শেখর এই ফাঁকে তাপসকে অফিসে ডেকে আনে আর তাকে গান গাওয়ার জন্য বলে মানে পর্দার আড়ালে থেকে। কিন্তু তাপস মানা করে দেয় যে সে গান গাইতে পারবে না। এরপর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে রঞ্জিত মল্লিক সবার সামনে ফাঁস করিয়ে দেয় যে সে গান গাইতে পারে না আর সবার সামনে লজ্জায় পড়ে যায়। এদিকে তাপস আসেনি বলে অনুষ্ঠানটি রঞ্জিত মল্লিক গান গেয়ে শেষ নামালো। এরপর শেখরের বোন শেখরের সাথে প্ল্যান করে একদিন তাপসের বাড়িতে যায় আর চালাকি করে তোষকের নিচে ২০০০০ টাকার বান্ডিল রেখে চলে যায় যাতে চোর সাজাতে পারে। এরপর রঞ্জিত মল্লিক আসে তাপসের কাছে কিছু কাগজপত্রের জন্য কিন্তু না পেয়ে তার মা তোষকের নিচে দেখতে বললে ওই টাকা দেখতে পায় আর তার মায়ের মুখে শেখরের বোনের কথা জানতে পারলে বুঝে ফেলে যে এটা ওদেরই কাজ।
বিষয়টা জানার পরে রঞ্জিত মল্লিক টাকাটা তোষকের নিচে থেকে বের করে আবার চালাকি করে শেখরের রুমে রেখে দেয়। এরপর শেখর যখন পুলিশ ডেকে তাপসের বাড়ি সার্চ করে তখন কিছু পায় না বলে শেখরের রুমেও সার্চ করায়। এরপর টাকা সার্চ করে পেলে রঞ্জিত মল্লিক শেখরকে দিয়ে তাপসের জুতো পালিশ করায় সবার সামনে আর তাকে বাড়ির থেকে বের করে দেয়। এরপর তাপস রাস্তা দিয়ে বাড়িতে একা যাওয়ার সময় শেখর তার দল নিয়ে এসে আক্রমণ করে আর মারধর করতে লাগে। এর মধ্যে রঞ্জিত মল্লিক বাইকে করে চলে আসে আর সবাইকে মেরে গ্রাম থেকে বের করে দেয়। এদিকে মাস্টারমশাই সেই ঘটনার পরের থেকে কাউকে গান শিখাতে যায় না আর কাউকে তার কারণ বলতেও পারছে না। এদিকে আস্তে আস্তে তাপস আর শতাব্দীর মধ্যে একটা ভালোবাসার সম্পর্ক হয়ে যায়। এরপর তাপসের বউদি একদিন বাড়িতে আশা কিছু লোকজনের সামনে গান গাইতে বলে কিন্তু সবার সামনে পারবো না বলে দেয় কিন্তু কেনো এমন বললো সেটা তার বউদি জানে না। সবাই তাকে নানাভাবে অপমান করে গান না গাওয়ার জন্য, আর তার বউদি তাকে বাড়ির থেকে বের করে দেয়। আর তার মাস্টারমশাই সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে হার্ট এটাক করে মারা যায়। এরপর তার বউদি তার ছেলের সাথেও দেখা করতে দেয় না আর বাড়িতেও আসতে মানা করে দিয়েছে। রঞ্জিত মল্লিক বাড়িতে তার বাবার সাথে শতাব্দী আর তাপস পালের বিয়ের কথা বলে কিন্তু তার বাবা রাজি হতে চায় না, তারপর অনেক বুঝানোর পরে রাজি হয়। তবে তাপস পাল যদি গান গেয়ে সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারে তবে মেনে নেবে, এইটা বলার কারণ সে জানে যে তাপস গান গাইবে না। এইজন্য সবাইকে ডেকে আনে কারণ ওইদিন গান গাইতে পারলে সবার সামনে তাদের বিয়ের ঘোষণা করে দেবে। বার বার বলার পরেও গান না গাইলে রঞ্জিত মল্লিক তাকে মারে এবং অবশেষে তার বাবাই সত্যি কথাটা বলে দেয় আর গান গাইতে বলে আর তাদের সম্পর্ক শেষে মেনে নেয়।
✔ব্যক্তিগত মতামত:
আসলে এই মুভি দেখার পরে বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা, এতো সুন্দর কাহিনী অবলম্বনে মুভিটি যে দুটি চোখ মেলে শুধু দেখতে হবে। গুরু দক্ষিনা মুভিটি অসাধারণ মুভি এক কোথায়। একজন গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা আর গুরু দক্ষিনা কিভাবে দিতে হয় সেটা তাপস পালের এই চরিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। আর অন্যদিকে শতাব্দীর বাবা বিত্তশালী হওয়া সত্বেও কে ভালো আর কে খারাপ সেই বিচারটাই করতে পারিনি, এখানে টাকা বা ক্ষমতা থাকলেও অনেক সময় অনেক কিছু হাসিল করা যায় না (অর্থাৎ সম্মান, ভালোবাসা আর ভালো মানুষ)সেটাও এখানে ফুটে উঠেছে।
✔ব্যক্তিগত রেটিং:
০৯/১০
✔মুভির লিঙ্ক:
দাদা আপনি ঠিকই বলেছেন, এই মুভিটা যতবারই দেখি না কেন বারবার দেখতে ইচ্ছে করে।এতে করা অভিনয়ের প্রতিটি মুহূর্ত জীবন্ত ফুটিয়ে তোলা।আমি জন্মের পর থেকেই এই মুভির কদরের কথা এখনো সমানভাবে শুনে আসছি।আর এর গানটি তো শুনলেই চোখে পানি ধরে রাখা যায় না।অসাধারণ একটি মুভি।আপনি দারুণ রিভিউ দিয়েছেন।ধন্যবাদ দাদা,ভালো থাকবেন।
১৯৮৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই জনপ্রিয় বাংলা মুভি "গুরু দক্ষিনা" আজও সকলের কাছে জনপ্রিয়। বর্তমান সময়ে যেই মুভিগুলো মুক্তি পাচ্ছে সেগুলো হয়তো ক্ষণিকের জন্য জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। কিন্তু এত বছর পুরনো মুভি "গুরু দক্ষিনা" আজও সকলের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। আমি যখন অনেক ছোট ছিলাম আমার খুব ভালোভাবে মনে আছে তখন আমি প্রথম এই মুভি দেখেছিলাম। এরপর বারবার এই মুভিটি দেখেছি। আমি কতবার যে এই মুভিটি দেখেছি তা হয়তো বলে শেষ করতে পারবো না। এই মুভিটি আমি যতবার দেখেছি ততবার চোখের জলে ভেসে গেছে। আসলে পুরোনো দিনের অভিনয়শিল্পীদের মাঝে এমন কিছু গুণ রয়েছে যারা দর্শকদের আবেগাপ্লুত করে ফেলত তাদের অভিনযয়ের মাধ্যমে। মুভির কাহিনী চিত্র মানুষকে এতটাই আবেগাপ্লুত করে ফেলত যে দু চোখে পানি চলে আসতো। সেই সময়টাতে "গুরু দক্ষিণা" মুভির যে জনপ্রিয় গানগুলো ছিল সেগুলো সবার কাছেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। সকলের মুখেমুখে সেই গানগুলো প্রচলিত ছিল। এমনকি বর্তমান সময়ে এসেও আজও সেই মুভি সকলের কাছেই জনপ্রিয়তার স্থানটি ধরে রেখেছে। গানগুলো অসাধারণ ছিল। বর্তমানেও সকলের কাছে এই গানগুলো এখনো জনপ্রিয়। আর আমার এই প্রিয় মুভিতে যে গুণী শিল্পীরা অভিনয় করেছেন তারা প্রত্যেকেই আমার অনেক পছন্দের শিল্পী। তাপস পাল আর রঞ্জিত মল্লিক এই অভিনয়শিল্পীরা সবসময় সর্বকালের সেরা অভিনয়শিল্পী। তাদের অভিনয় সব সময় মানুষকে আকৃষ্ট করে। বেশ কিছুদিন থেকে এই মুভিটি দেখা হয়না। দাদা আপনার মুভি রিভিউ দেখে আবারও ইচ্ছে করছে এই মুভিটি দেখার জন্য। এছাড়া আপনি অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন পুরো মুভিটি। দাদা আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
দাদা আমি আপনার এই কথাটির সাথে একদম সহমত পোষণ করছি। গুরুদক্ষিণা এই মুভিটি আমি অনেকবার দেখেছি। সত্যি কথা বলতে এই ধরনের বাংলা মুভি সর্বকালেই সকলের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। আমি যখন প্রথম এই মুভিটি দেখেছি তখন আমার দুচোখে অশ্রু ঝরেছিল। আসলে একজন গুরুর প্রতি অসম্মান, অবজ্ঞা ও গুরুর কষ্টের জীবন আমাকে খুবই ব্যথিত করেছিল। আমি যখন এই মুভিটি দেখেছিলাম তখন আমার মনের অজান্তেই দু চোখ বেয়ে পানি ঝরছিল। যখন একটি মুভির গল্প মানুষকে আকৃষ্ট করে এবং মানুষের হৃদয়ে স্পর্শ করে তখন সেই মুভিটি একটি সার্থক মুভি হয়ে যায়। আর মুভিতে যারা অভিনয় করেছিলেন তারা প্রত্যেকেই অনেক গুণী শিল্পী। আমি এই গুণী শিল্পীদেরকে মন থেকে শ্রদ্ধা করি ও সম্মান করি। এই গুণী শিল্পীরা তাদের এই অভিনয়ের মাধ্যমে জনপ্রিয় বাংলা মুভি আরো বেশি জনপ্রিয় করে তুলেছেন। সময়ের পর সময়, যুগের পর যুগ এই মুভিগুলো সকলের মনে জায়গা করে নিয়েছে। কিছু কিছু শিল্পী রয়েছেন যারা তাদের অভিনয়ের দক্ষতায় ও সুন্দর কাহিনী অবলম্বনে এমন কিছু মুভি তৈরি করেন যেগুলো যুগের পর যুগ মানুষের মুখে মুখে রয়ে যায়। তবে যাই হোক না কেন আপনি অনেক সুন্দর ভাবে গুরুদক্ষিণা মুভি রিভিউ আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ভাইয়া এই মুভিটা আমি মনে হয় মিনিমাম ৫ দেখেছি। এই ওইটা দেখলে বোঝা যায় যে গুরুজনের কিভাবে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হয়। এবং কি গুরুর মানেটা কি, আবার এটা থেকে বোঝা যায় অর্থ-বিত্তশালী লোক সবসময় খারাপ চিন্তা নিয়ে থাকে। একসময় ঠিক তাদের কুকর্ম ধরা পড়ে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে মুভিটা দেখে চোখের পানি আটকানো যায় না। আপনি পুরো মুভিটা খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। এত সুন্দর একটি মুভি রিভিউ আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।
রঞ্জিত মল্লিক আমার অনেক প্রিয় একজন অভিনেতা। এই সিনেমাটা আমি দেখেছি। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। রঞ্জিত মল্লিকের অভিনয় সব সময় মন ছুঁয়ে যায়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি সিনেমার রিভিউ শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা আপনার জন্য।
দাদা তোমার কথার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত, এই সিনেমা একবার দেখা শুরু করলে শুধু দেখতেই ইচ্ছে করে। অনেকবার দেখেছি সিনেমাটা কিন্তু তারপরও ভালো লাগার কমতি এত টুকুও নেই। খুব সুন্দর একটা রিভিউ দিয়েছো। তবে একটা কথা না বললেই নয় আগের দিনের এই সিনেমাগুলো যতই দেখি কিন্তু কখনো পুরান হয় নি, অথচ বর্তমান কালের সিনেমা দেখে সেই অনুভূতিটা কেন যেন পাই না।
গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান এসব তো আজকাল তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।এই মুভিগুলো থেকে আসলেই অনেক কিছু শেখার আছে।দারুণ ভাবে গুছিয়ে লিখেন ভাইয়া আপনি।
এই মুভিটি আমার এখনো দেখা হয়নি। তবে আপনার লেখাটি পড়ে বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে। এটি দেখার আগ্রহ বেড়ে গেছে। আর আসল কথা হলো আরপনি ব্যাক্তিগত রেটিং ৯ দিয়েছেন। তাই মনে হচ্ছে আসলেই অসাধারণ মুভিটি।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর একটি রিভিউ শেয়ার করার জন্য ও আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
দাদা আসলে আজকে খুবই সুন্দর একটি মুভি আপনি রিভিউ করেছেন। আপনার রিভিউ এর মধ্যে মুভিটির পুরো ঘটনা আলোচনা করেছেন। মুভিটি আমার খুবই ভালো লেগেছে। এই মুভিটি আমি তিন চারবার দেখেছি এবং মুভিটি যতবার দেখি ততবারই দেখতে ইচ্ছা করে। আসলেই পুরনো দিন মুভি পরিবার নিয়ে দেখতে খুবই ভালো লাগে। কত সুন্দর কাহিনী খুবই ভালো লাগে। দেখা শুরু করলে আর শেষ না করা পর্যন্ত উঠতে ইচ্ছা করে না। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মুভি আমাদের মাঝে রিভিউ করার জন্য।