বৈশাখী মেলার প্রথম দিনে ঘুরে আসা
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বৈশাখী মেলার প্রথম দিনে ঘুরে আসা
প্রতিবছরই আমাদের শহরে পহেলা বৈশাখে এই মেলা শুরু হয় ।শহরের কোট চত্বর প্রাঙ্গণে এবারও যেয়ে দেখলাম যথারীতি মেলাটি শুরু হয়েছে ।ঐদিন প্রথম দিন হওয়ার কারণে মেলায় প্রচুর লোক সমাগম দেখতে পেলাম ।লোকজনের জন্য যেন রাস্তায় হাঁটা যাচ্ছিল না ।আবার পাশে দেখলাম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের স্টেজ সাজানো হয়েছে এবং লোকজন বসে অনুষ্ঠান দেখছিল। সেখানে গান, কবিতা আবৃত্তি বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠান হচ্ছিল। অনেক লোক দেখলাম অনুষ্ঠানটি উপভোগ করছিল। যদিও আমাদের সময় ছিল না খুব একটা যার কারণে অনুষ্ঠান দেখা হয়ে ওঠেনি। আমরা মূলত মেলার স্টল গুলো ঘুরে দেখতে লাগলাম।
আসলে বৈশাখী মেলা মানেই হচ্ছে এই মাটির জিনিস পত্রের দোকান। মেলায় যেন এই দোকানটি না থাকলে সম্পূর্ণ মেলাটি যেন আমার কাছে অসম্পূর্ণ থেকে যায়। প্রথমে মেলার গেট দিয়ে ঢুকতেই এই হাড়ি পাতিলের দোকান গুলো দেখতে পেলাম। যেখানে আমার কাছে মনে হয় মেলার ঐতিহ্য বহন করে এই হাঁড়ি পাতিলের দোকান গুলো ।এই দোকান গুলো দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায় ।কিন্তু এখনকার বাচ্চাদের আর এগুলো কেনার প্রতি আগ্রহ দেখা যায় না। তবে আমার কাছে কিন্তু এই জিনিসগুলো দেখতে ভীষণ ভালো লাগে ।শৈশব স্মৃতিগুলো মনে করিয়ে দেয় বারবার।
বৈশাখী মেলাতে যেয়ে এই গোল্লা আইসক্রিমের দোকান দেখতে পেলাম ।একবার আমি পদ্মার চড়ে যেয়ে এই গোল্লা আইসক্রিম খেয়েছিলাম ।এটি খেতে মোটেই ভালো লাগে না ।মনে হয় যেন মিষ্টি বরফ খাচ্ছি, যার কারণে এবার আর খাইনি। তবে এই আইসক্রিম গুলো দেখতে কিন্তু বেশ ভালো লাগে ।বিভিন্ন কালারের হয়ে থাকে ।যার কারণে অনেক বেশি আকর্ষণীয় দেখা যায় এবং যারা কখনো খায়নি তাদের খাওয়ার প্রতি আগ্রহ জাগে ।যেমনটি আমার জেগে ছিল এর আগের একটি মেলায়।
আর এটি হচ্ছে কটকটির দোকান ।বৈশাখী মেলা হবে আর সেখানে কটকটি থাকবে না, তাই হয় নাকি? শুধু বৈশাখী মেলা নয় যে কোন মেলায় এই দোকানগুলো থাকে এবং সেখানে প্রচুর বিক্রি হয়ে থাকে। সবাই এই জিনিসগুলো মেলায় এসে খেতে চায়। যার কারণে অনেক বেশি লোকজনের ভিড় হয় দোকানগুলো তে।দেখে বেশ ভালো লাগে। এই দোকানগুলোকে মনে হয় যেন মেলার ঐতিহ্য বহনকারী দোকান।
যেহেতু কোর্ট চত্বরে মেলা হচ্ছে সেহেতু কোর্টের অফিসগুলো এরকম লাইটিং করে সাজানো হয়েছে ।এখানে কোর্টের বিভিন্ন কাজকর্ম হয়ে থাকে ।যে কোন বিল্ডিং এভাবে লাইটিং করলে দেখতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। এটিও দেখতে বেশ চমৎকার লাগছিল ।নানান রকমের লাইট জ্বলে দেখে যে কারোর ভালো লাগবে।
বিভিন্ন দোকান ঘোরাঘুরি করার পর দেখতে পেলাম একটি চিকেন ফ্রাই স্টল। যেখানে হরেক রকমের চিকেন ফ্রাই,সাসলিক ছিল। তবে আমি একটি চিকেন ফ্রাই খেয়েছিলাম। যদিও এটি খেতে মন চাইছিল না, কেননা মেয়েকে ছাড়া একা একা খেতে বেশ খারাপ লাগছিল। তারপরেও হাজবেন্ড খেতে বলল এবং বলল অন্য একদিন মেয়েকে নিয়ে আবার আসবো ।তারপর আমি এই দোকান থেকে একটি চিকেন ফ্রাই খেলাম। তবে ফ্রাই টি মোটামুটি ছিল।
আরে এই স্টলে দেখতে পেলাম কাচের বিভিন্ন জিনিসপত্র ।এখানে বেশ সুলভ মূল্যে কাঁচের জিনিসগুলো বিক্রি করছিল ।তাই আমি কিছু জিনিসপত্র কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার হাজবেন্ড বললো মেলার শেষের দিকে নাকি এরা অনেক কম দামে জিনিসগুলো ছেড়ে দেয় ।আজ আর কেনার দরকার নেই । এর পরে আমরা আরেকদিন আসবো সেদিন যা মন চায় কিনে নিও ।আজ এমনিতে সময় বেশ কম আর কিনতে গেলে অনেক সময় লাগবে ।যার কারণে সেদিন আর কেনা হয়ে ওঠেনি। পরবর্তীতে অবশ্য আমি আরো একদিন গিয়েছিলাম মেয়েকে নিয়ে।সেই মুহূর্ত আপনাদের সঙ্গে অন্য আরেকদিন শেয়ার করব ।আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রতি বছর বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের মধ্যেই বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।প্রতি বছরের মতো এবারও আপনাদের শহরের কোট চত্বর প্রাঙ্গণে বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, দেখে বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে। আপনি মেলার মধ্যে বেশ ভালো একটি সময় উপভোগ করেছেন। বৈশাখী মেলার মধ্যে প্রায় সব ধরনের দোকান বসে।
হ্যাঁ ভাইয়া মেলায় বেশ ভালো সময় উপভোগ করেছিলাম ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
প্রতিবছর বৈশাখ মাসের প্রথম তারিখ হতে ১৫ তারিখ পর্যন্ত আমাদের উপজেলায় মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। আমার খুব একটা যাওয়া হয় না। তবে আপনি বৈশাখী মেলার প্রথম দিন ঘুরতে গিয়েছিলেন। আপনার তোলা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে আপনি সেখানে অনেক মজা করেছিলেন। আপনার ফটোগ্রাফিতে মাটির তৈজসপত্রের কিছু চিত্র ফুটে উঠেছে এগুলো আমাকে পুরনো দিনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। আর গোল্লা আইসক্রিম যে কত বছর খাইনি সেটা তো অজানা। যাইহোক আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য
আমাদের এখানেও এই মেলার আয়োজন পনেরো দিনব্যাপী হয়ে থাকে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
ডাক্তার দেখাতে গিয়ে ডাক্তার না পেয়ে বৈশাখী মেলায় ঘুরতে গিয়েছেন দুজনে। খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন মেলায়। বিশেষ করে মাটির তৈরি জিনিসগুলোর ফটোগ্রাফি দেখে খুবই ভালো লাগলো। মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো কিন্তু দেখতে ভালই লাগে। অনেকদিন পর গোল্লা আইসক্রিম দেখলাম। ছোটবেলায় অনেক খাওয়া হয়েছে তবে এখন খাওয়া হয় না। ভালো লাগলো আপনাদের সুন্দর মুহূর্ত গুলো দেখে।
হ্যাঁ আপু মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো দেখতে ভালই লাগে। যদিও সময় ছিল না যার কারণে দেখা হয়ে ওঠেনি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আপনি বৈশাখী মেলায় গিয়েছিলেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। আপনি ঠিক বলেছেন বাচ্চাদের রেখে কোথাও যেতে ভালো লাগে না। আর মেলা থেকে কিছু কেনার উপায় নেই। মেলাতে তুলনামূলক দাম অনেক। তবে এটা সত্যি শেষের দিকে তারা দাম একটু কম হলেও ছেড়ে দেয়। যাইহোক আপনি মেলাতে বেশ ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন মেলার জিনিস গুলোর দাম আমার কাছে একটু বেশিই মনে হয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
বাসা থেকে নিচে নামার পর আপনার মনে হয়ে ভালো হয়েছে। তা না হলে তো ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে ঘুরে আসতে হতো। ভাইয়া ভালো করেছে রেডি যেহেতু হয়েছেন তাহলে ঘুরে আসাই ভালো। এই জায়গাটায় বৈশাখী মেলা অনেক আগে থেকেই দেখে আসছি। অনেক বছর হলো যাওয়া হয়না। ভালো লাগলো আপনার ঘুরাঘুরি দেখে।
হ্যাঁ আপু ভাগ্যিস ফোন করেছিলাম ।নইলে তো যেয়ে ফিরে আসতে হতো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।ভালো থাকবেন।
ভালোই করেছেন ডাক্তার নাই আর রেডি হয়ে যেহেতু নেমেছেন সেহেতু ঘুরতে গিয়ে ভালই করেছেন । এটা ঠিক বলেছেন বাচ্চাদেরকে বাসায় একা রেখে নিজেরা একা একা ঘুরতে আমার কাছেও ভালো লাগে না । তারপরও আপনি চলে গেলেন এবং খুব সুন্দর ভাবে ঘোরাফেরা করলেন দেখে ভালো লাগলো। এই বৈশাখী মেলায় কিন্তু আমিও গিয়েছিলাম । এখানে অনেক বছর আগে থেকেই মেলার আয়োজন করে সেই ছোটবেলা থেকে আমরা দেখে আসছি এবারও অনেক দিন পরে দেখে ভালো লাগলো ।
হ্যাঁ আপনিও বৈশাখী মেলায় গিয়েছিলেন আমি শুনেছিলাম। আর আমি বেশ ভালই ঘোরাঘুরি করেছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
এটা ঠিক কথা, বৈশাখী মেলা মানেই হল মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্রের দোকান। তবে তাছাড়াও এখানে কয়েকটা দোকানপাট দেখলাম যেমন কটকটির দোকান, গোল্লা আইসক্রিমের দোকান, এগুলো মোটামুটি সব মেলাতেই কমন থাকে। তবে আপনার হাসবেন্ড একটা কথা ঠিকই বলেছে আপু, কাচের তৈরি এসব জিনিস মেলার একদম শেষের দিকে অনেক কম দামে বিক্রি করে তারা। একদম শেষের দিকে যদি মেলায় ঘুরতে আসেন তাহলে দেখবেন যে, অনেক কম দামে কিনতে পারবেন এই জিনিসগুলো। যাইহোক, ভালো লাগলো আপু আপনার এই পোস্ট টি পড়ে।