জেনারেল রাইটিং :- এক দুঃখী প্রবাসীর জীবনী।
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমার আলোচনার বিষয়টি হলো এক দুঃখী প্রবাসীর জীবনী। আশা করি আজকের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনাটি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
বাংলাদেশ অল্প আয়ের দেশ। এদেশে মাথাপিছু আয় কম। দেশে কর্মসংস্থানের অভাব আছে। অনেক শিক্ষিত বেকার ছেলেরা বসে আছে ঘুরে বেড়ায় কাজ পায় না। এভাবে যখন চলতে থাকে তারা একটা সময় পরিবারের প্রতি তারা বোঝা হয়ে পড়ে। দিশেহারা হয়ে পড়ে তাদের জীবন। কি করবে সেটা বুঝে পাইনা। তাই জীবনের অন্তিম মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিতে হয় প্রবাস জীবন। ইচ্ছা না থাকলেও অনেক সময় সন্তান বাবা মা স্ত্রী রেখে যেতে হয়। আর এমন এখন সব সময় চলছেই। অর্থাৎ এখন প্রায় মানুষে এখন বিদেশী মুখী। তারা যায় কি জন্য সন্তান স্ত্রী বাবা মার মুখে এক মুঠো ভাত দেওয়ার জন্য। তাদেরকে সুখে রাখার জন্য। কিন্তু তারা একটা পর্যায়ে জীবনের কঠিন মুহূর্ত পার করতে থাকে। বিশেষ করে বাবা-মা সন্তান যেমন তেমন স্ত্রীর জন্য তাদের জীবনের নীল নকশা এঁকে যায়। স্বামী তার পরিবারের চাহিদার জন্য বাইরে কঠোর পরিশ্রম করে আর এদিকে স্ত্রী নিজের চাহিদার জন্য নিজের সংসার ছেড়ে দেয়। ঠিক এমন একটা ঘটনা আমার জানা রয়েছে সেই বাস্তব ঘটনাটা আপনাদের মাঝে আজকে তুলে ধরবো।
সংসারে অভাব অনটন কোন কিছুতেই দিন যায় না। তাই সিদ্ধান্ত নেয় বাইরে যাবার। অনেক কষ্ট করে অনেক গুলো টাকা গুছিত করে। এই টাকাগুলো ঘোষিত করতে গিয়ে তার অনেক কিছু জিনিস বিক্রি করতে হয়। আবার কিছু টাকা ধার দেনায় পড়ে যায়। এত কষ্ট করে বিদেশে যাওয়ার পরেও আবার ফের আর এক সমস্যায় পড়ে। বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য যেসব দালাল থাকে তাদের খপ্পরে পড়ে নিজের জীবনটাকে বিসর্জন দিতে হয়। তারা ঠিক রকম কাগজ পাতি করে দেয় না আর এর জন্য তাকে পালিয়ে বেড়াতে হয়। পালিয়ে বেড়ায় আর মাঝেমধ্যে সে কাজ করে। এভাবে চলতে থাকে তার প্রবাস জীবন। প্রবাস জীবনের এক বছর পূর্ণ না হতেই সে কঠিন একটা রোগে ভোগে। পরিবারের সেভাবে টাকা দিতে পারেনা। সবকিছু মিলে তার জীবনটা হয়ে ওঠে অনেকটা বিষাদ ময়। এরপরে সেখানে সে চিকিৎসা নেয় এবং কিছুটা ভালো হয় আবারও সে লুকোচুরি ভাবে কাজ করে। স্বাভাবিকভাবে যে কয় টাকা বেতন পাওয়ার দরকার সেই পরিমাণ টাকা সে পায় না। এদিকে পরিবারের মানুষগুলো তাকে চাপ দেয় অমুকে অত টাকা ইনকাম করে কিন্তু তুমি কি কর? এভাবে তাদের সংসারের মধ্যে একটা সৃষ্টি হয়।
পরিবারের এক সন্তান এক মেয়ে আছে। মেয়েটার দিন দিন বড় হয়ে যাচ্ছে তারও বিয়ে-শাদী দিয়ে যেতে হবে। এই সমস্ত চিন্তাভাবনা সবই রয়েছে সেই প্রবাসীর। এভাবে বছর দুই তিন কেটে যায়। পরিবার থেকে তার স্ত্রী সম্পর্কে অনেকগুলো কথা বলে প্রথমের দিকে সে কোন কিছুতেই বিশ্বাস করতে চায় না। হঠাৎ করে একদিন তার স্ত্রী অন্য লোকের হাত ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এবার যখন পরিবার থেকে তাকে জানানো হয়, এই কথা শোনার পরে সে অনেকটা নির্জিব হয়ে যায়। নিজের স্ত্রী চলে গেছে সে তো আছেই এরপরও এর আগে বাবা-মা ভাই বোন অনেকেই তার সম্পর্কে অবগত করেছেন কিন্তু সে কখনো বিশ্বাস করে নাই। এই কথা ভাবতে গিয়ে তার মনে যেন এক অজানা কিছু দোল দেয়। প্রবাস জীবনে থেকে এতেও বড় ধাক্কার কি হতে পারে। এর কিছু মাস যাওয়ার পরে সে সিদ্ধান্ত নেয় বাড়িতে আসার। যদিও প্রবাস জীবনে গিয়ে সে যেসব টাকাগুলো ইনকাম করছিল সবকিছুই তার সেই স্ত্রী নিয়ে গেছে। নিজের রাখার মতো আর কোনো বস্তিত টাকা-পয়সা তার কাছে নাই। এমনকি বাড়িতে আসবে সেই বিমান টিকিট কাটার মত টাকাটাও তার নাই। তারপরও কষ্ট করে আরো কিছু মাস থেকে যায়। এদিকে সে অনেক বড় একটা রোগে আক্রান্ত হয়। এই অবস্থা তো তার আছেই সব মিলিয়ে জীবনটা যেন তার বিষন্ন হয়ে উঠেছে।
কিছু মাস যাওয়ার পরে আবারো ঘটে আর একটা ঘটনা তার বাড়ির একটা চাচির দ্বারা তার বড় মেয়েটার বিয়ে হয়ে যায়। তার মেয়েটা কেমন জায়গায় বিয়ে হলো সে সম্পর্ক সে জানতে পারল না। এরপরে সে অনেক কষ্ট করে কিছু টাকা জমায় এবং বাড়িতে ফিরে আসে। তার স্ত্রী তো অনেক আগেই চলে গেছে মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেছে তার কিছু মাস না যেতে মেয়েটা আবারও ডিভোর্স হয়ে যায়। সবকিছু মিলে জীবনটা কোন জায়গায় পৌঁছে গেছে একজন প্রবাসী জীবন সেটা বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই এখন। এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা প্রবাসে গিয়ে তাদের জীবনটা এমন হয়ে যায়। তারা কষ্ট করে নিজে পরিবার সন্তান স্ত্রীদের সুখে রাখার জন্য তারা বাহিরে যায়। আর তাদের সে রক্ত শোষণ করে এরা রং তামাশা করে বেড়ায়। তাদের এই কষ্টের মূল্য কখনোই তারা পায় না। তাই বলা যেতেই পারে প্রবাস জীবন কখনোই সুখের নয়।
আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ডিভাইস | poco M2 |
---|---|
লোকেশন | মেহেরপুর |
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.