কোটা পদ্ধতির সংস্কার চাই।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা ,

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। সদা-সর্বদায় সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। যাইহোক আমি আজকে আপনাদের মাঝে একটা বাস্তবিক পোস্ট শেয়ার করবো। আমি নিয়মিত লেখালেখি করতে চেষ্টা করি। যখনই সময় সুযোগ হয়ে ওঠে ঠিক তখনই বই পড়া কিংবা লেখালেখিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে আমি বাস্তবসম্মত লেখা লিখতে চেষ্টা করি । তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে তেমনি বাস্তবসম্মত একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম।

Photo_1721152442212.png

এডিট snapseed
আজকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আজকের বিষয়টি খুবই বাস্তবসম্মত একটি বিষয়। বাংলাদেশ জুড়ে বর্তমানে একটাই টপিক সেটি হচ্ছে কোটা আন্দোলন। কোটা আন্দোলনকে ঘিরে বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে বাংলাদেশের মিডিয়া গুলোতে। বাংলাদেশের মেজর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কার দাবিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন চলতেছে। এ আন্দোলনের মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষগুলোর বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করছে। কেউ কোটা আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে আবার কেউ কোটা আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। কিন্তু এর স্বপক্ষে যুক্তিটা কি? বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমাধানের পথ সুন্দরভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

কিছুদিন আগে প্রশ্ন ফাঁসকে কেন্দ্র করে সমস্যা পড়তে হয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষা বোর্ডকে। সেখান থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে এখন শুরু হয়েছে বাংলাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে অনেক লজিক রয়েছে। আমরা দেখেছি মেধা যাচাই না করে কোটা ভিত্তিক অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় কোটা ভোগি বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের। এখানে সঠিকভাবে মেধার যাচাই করা হয় না। যার কারণে সুবিধা বঞ্চিত হয় অসংখ্য শিক্ষার্থী। যাদের ভালো জ্ঞান রয়েছে তারাও কোটার জন্য চাকরি পায় না।

বাংলাদেশে অসংখ্য কোটা রয়েছে, কোটার যেন শেষ নেই। মুক্তিযোদ্ধা কোটা, নারীর কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা ইত্যাদি। তবে বাংলাদেশে কোটার শেষ নেই। এসব কোটার জতাকলে আবদ্ধ হয়ে ভালো স্টুডেন্টের কোন ভ্যালু থাকে না রাষ্ট্রের মধ্যে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ভালো ভালো পদে কোটার অধিকাংশ মানুষকেই নিয়োগ দেওয়া হয়। মেধার যাচাই-বাছাই না করে এই কোটার কারণে সুবিধা বঞ্চিত হয় হাজারো শিক্ষার্থী। বর্তমানে রাজ পথে বিক্ষোভ চলতেছে কোটা সংস্কারের দাবিতে। রাজপথ অবরোধ করা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো কোন সমাধান পাচ্ছিনা।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়। কোটা সংস্কারের দাবিতে তারা কথা বলার রাইট রয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কিংবা ক্ষমতাসীন দলের কেউ তাদের উপর আক্রমণ করার রাইট নেই। সুন্দর একটা আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টি সমাধান করার জন্য চেষ্টা করবে। কিন্তু তা না করে এখানে সংঘর্ষ তৈরি হলো। কিছু স্টুডেন্ট ইতিমধ্যে মারা গেল। একটা মায়ের বুক খালি করা সেটার কোন যৌক্তিকতা রয়েছে। আমরা চাই সরকার সুন্দর একটা সমাধানের মধ্যে আসুক এবং কোটাবিরোধী আন্দোলনটার অবসান ঘটুক। এবার আসা যাক কোটা গুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা।

মুক্তিযোদ্ধা কোটা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং নাতিরা সুবিধা নিচ্ছে। তবে একদম সুবিধা বঞ্চিত করুক সেটা আমরা চাই না। ন্যূনতম মেধার যাচাইটা ইম্পরট্যান্ট। সবই যদি তারা লুপে নেই তাহলে মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্য কি হবে। ভালো ভালো মেধাবী স্টুডেন্টরা অবহেলিত অবস্থায় বেকারত্বের গ্লানি টানতেছে। পরিবারের হাল ধরতে পারছে না কোনভাবেই। কোটার কাছে জিম্মি হয়ে আছে এই শ্রেণীর মানুষগুলো। তাদের দুঃখ কষ্ট বোঝার মত কেউ নেই। কোটা না হয়ে যদি মেধার ভিত্তিতে সঠিকভাবে চাকরির সুযোগ থাকতো তাহলে দেশ আরো অনেক আগেই উন্নতির শিখরে পৌঁছাতো।

নারীদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য তাদের জন্য রয়েছে আলাদা কোটা। তারা যেন সমাজে অবহেলিত না থাকে এবং কারো উপর নির্ভরশীল না হতে হয় সেজন্য রয়েছে তাদের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা। তবে নারীদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হোক সেটা নিয়েও আমার কোন প্রতিবাদ নাই তবে তার মধ্যেও লিমিটেশন আনা উচিত। আমরা দেখি বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে পুরুষের চেয়ে নারীরা কম নাম্বার পেলেও তাদেরকে এলাও করা হয় এটি সত্যি দুঃখজনক। আমরা চাই নারী পুরুষ বৈষম্য নয় মানুষ হিসেবে সবার পরিচয়। সবাই নিজ নিজ যোগ্যতার ভিত্তিতে এগিয়ে যাক সে কামনাই করি।

প্রতিবন্ধী কোটা, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করে রেখেছে। এটির পক্ষে আমি শতভাগ রয়েছি। প্রতিবন্ধীদের দিকে মানবতার হাত সব সময় বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। প্রতিবন্ধী কোটাটার পক্ষে আমি নিজেও রয়েছে। তবে সবকিছুর জন্য সুন্দর একটা সমাধান দেওয়া উচিত বলে মনে করছি। প্রতিবন্ধীদের সুবিধা দিতে গিয়ে আবার আমরা মেধাবীদের অসম্মান যেন না করি।বিভিন্ন ব্যাংক ব্যালেন্সে প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদাভাবে কোটা রাখা হয়। এটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের কোন ক্ষোভ নেই। শিক্ষার্থীদের যাওয়া হচ্ছে কোটা সংস্কার করা। কোটা একদমই বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে কোন শিক্ষার্থী নেই।

আমি মনে করি সরকারের উচিত বর্তমানে বিক্ষোভটি বন্ধের জন্য আলোচনা বৈঠক করা। কোটাবিরোধী আন্দোলনের যারা নীতি নির্ধারক রয়েছে এবং এমপি মন্ত্রীরা সহ বসে যদি একটা সমাধানের পথ খুঁজে বের করা যায় তাহলে আর কেউ আহত হতে হবে না। বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে না কাউকে মরতে হবে না। আমি মনে করি একটি শান্তি চুক্তিতে আশা এবং বিষয়টি প্রক্রিয়াদিন থাকা উচিত। শিক্ষার্থীরা অসংখ্য জ্ঞান রাখেন বোঝার মত। আমি মনে করি তাদেরকে সুন্দরভাবে বললে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। হাঙ্গা হাঙ্গামা করে পরিস্থিতি ঘোলাটে হবে কখনোই নিয়ন্ত্রণে আসবে না। বিষয়গুলো চিন্তা করতে গেলে অনেক বেশি কষ্ট লাগে।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

1000106788.jpg

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

এটা সত্যি বলেছেন ভাই যারা মেধাবী তারাই কোটার জন্যই চাকরি পাচ্ছে না বর্তমানে। অবশ্যই বাংলায় সরকারের উচিত কোটা সংস্করণ করা। আর তাই আমিও আপনার সাথে সহমত। অনেক সুন্দর একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট আমাদের সাথে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 last month 

কোটা পদ্ধতির সংস্কার অবশ্যই করা দরকার। কারণ কোটার কারণে মেধাবী স্টুডেন্টরা যোগ্য স্থানে পৌঁছাতে পারছে না। এতে করে তারা হতাশ হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সাধারণ জনগণেরা দরকারী কাজে যেকোনো সরকারি অফিসে গিয়ে, বিভিন্ন ঝামেলার শিকার হয়ে থাকে, শুধুমাত্র অযোগ্য লোকেরা সেসব গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো দখল করে রেখেছে বলে। পক্ষান্তরে সেসব গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে যদি মেধাবী এবং যোগ্য লোকজন বসতো,তাহলে জনগণ বিভিন্নভাবে উপকৃত হতো। যাইহোক সত্যের জয় হবেই। কারণ শিক্ষার্থীরা এই ব্যাপারে মোটেই আপোষ করবে না। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59452.12
ETH 2603.11
USDT 1.00
SBD 2.39