হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা ,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। সদা-সর্বদায় সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। যাইহোক আমি আজকে আপনাদের মাঝে একটা বাস্তবিক পোস্ট শেয়ার করবো। আমি নিয়মিত লেখালেখি করতে চেষ্টা করি। যখনই সময় সুযোগ হয়ে ওঠে ঠিক তখনই বই পড়া কিংবা লেখালেখিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে আমি বাস্তবসম্মত লেখা লিখতে চেষ্টা করি । তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে তেমনি বাস্তবসম্মত একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম।
আজকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আজকের বিষয়টি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েই। বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়টি হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। বন্যা কবলিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেলো। ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে ঘরের সব আসবাবপত্র বিনষ্ট হয়ে গেল। এই ক্ষতিটি যেন অপূরণীয় থেকে যাবে। ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা অঞ্চলে ভয়াবহ রূপে বন্যা দেখা দিল। আসুন নিজের বাস্তবসম্মত অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির কথা সবাই অবগত আছেন। বৃহত্তর নোয়াখালীতে বন্যা অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতি করেছে। ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে অনেক মানুষের ঘরবাড়ি পর্যন্ত তলিয়ে নিয়ে গেল। টানা ভারি বৃষ্টি এবং হঠাৎ করে ফানি বেড়ে যাওয়ায় মানুষকে অনেক বেশি আতঙ্কিত করেছে। কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য প্রাণ। প্রাণ হারিয়েছে গবাদি পশু থেকে শুরু করে অসংখ্য বন্যপ্রাণীরাও।
আমার বাড়ি ফেনী জেলাতেই। বাসা ফেনী শহরের মধ্যেই, কিন্তু আমি বন্যার পরিস্থিতি খুবই ভয়ানক ভাবেই পরিদর্শন করেছি। আমার বাসা নিচ তলা হওয়া সবকিছুই বিনষ্ট হয়ে গেল। চারদিন পর্যন্ত পানির নিচে ছিল আমার বাসার জিনিসপত্র। সবকিছু পঁচে বসে গেল সহসায়। অবশিষ্ট কিছুই রইল না। হাজার হাজার মানুষের ক্ষয়ক্ষতির সীমা নেই। অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার লোকসানের সম্মুখে পড়লো। এই ক্ষতি সহজে পূরণ হওয়ার নয়।
বন্যার শুরুতেই বিদ্যুৎ এবং নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা একদমই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পানি যখন বাড়তে শুরু করে তখন আমি বাসার জিনিসপত্র সেভ রাখার জন্য অনেক প্রচেষ্টা চালালাম। সাহায্যের জন্য অনেককে কল করার চেষ্টা করলাম কিন্তু কারো ফোনে কল যায়নি। পরিপূর্ণভাবে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এক ঘণ্টার মধ্যেই বাসার মধ্যেই কোমর পরিমাণ পানি পরিণত হয়। বাসার কোন জিনিসপত্র আমি সংরক্ষণ করতে পারেনি। প্রচেষ্টার কমতি ছিল না। তারপরও একা থাকার কারণে উপরে তোলার সুযোগ ছিল না।
আত্মরক্ষার জন্য আশ্রয় নিলাম এক বন্ধুর বাসায়। ওর বাসার দ্বিতীয় তলা হওয়ার কারণে কিছুটা নিশ্চিন্তে ছিলাম। সম যতই অতিবাহিত হচ্ছিল ততই টেনশন অনেক বেশি কাজ করছিল। কেননা ফানি এত বেশি বেড়ে যাচ্ছিল যে, দ্বিতীয় তলা ছুঁইছুঁই পানি হয়ে গেল। বন্ধুর বাসার জিনিসপত্র গুলো সংরক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবো এই সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা। কারণ যে কোন মুহূর্তেই দ্বিতীয় তলা পানি উঠে যেতে পারে। চারদিকে মানুষের আত্মচিৎকার আকাশ-বাতাস যেন ভারি হয়ে পড়লো। মানুষ ছোটাছুটি করছে একটু আশ্রয় পাওয়ার জন্য। তাহলে বুঝতে পারছেন কেমন পরিস্থিতি পেজ করতে হয়েছিল আমাদেরকে।
আমাদের বাসার পাশে একটি বিল্ডিংয়ে প্রায় ৩০০ মানুষের আশ্রয়স্থল তৈরি হলো। বিশুদ্ধ পানির খুব বেশি সংকট দেখা দিল। রাস্তায় মাথার উপরে পানি ছিল। আমরা কিছু ব্যক্তি দায়িত্ব নিয়ে বিশুদ্ধ পানির যোগান দিলাম, সাথে শুকনা খাবার। আমরা সবাইকে খুব বেশি টেক কেয়ার করেছিলাম। অসুস্থ যারা ছিল তাদের জন্য এবং যাতায়াতের জন্য রাস্তা নৌকা এবং স্পিড বোর্ডের দায়িত্ব নিলাম। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে কারো সাথে কোনোভাবেই যোগাযোগ রক্ষা করতে পারলাম না। অনলাইন এবং হটলাইন কোনটারই সংযোগ ছিল না।
এদিক থেকে বাড়িতে পর্যন্ত যোগাযোগ করতে পারিনি। টানা চার দিন পরিবারের সাথে সংযোগ সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন ছিল। বাসার সবাই কান্নাকাটি শুরু করলো আমার জন্য। কারণ এ বন্যার মধ্যে অসংখ্য মানুষের প্রাণ গেলো। পানি যখন কমলো তখন আমি বাড়িতে গিয়ে সবার সাথে যোগাযোগ করলাম দেখা করলাম। এলাকার মধ্যে এত ফানি ছিল যে নৌকা ছাড়া যাতায়াতি অসম্ভব ছিল। আমাকে দেখামাত্রই পরিবারের সবাই কান্না ভেঙ্গে পড়ল। আমার নিজেরই অজান্তে চোখে পানি চলে আসলো। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আমার অনেক বন্ধু আমাকে মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইমুতে অসংখ্য ট্রাই করেছে যোগাযোগ করার। অনেক বন্ধু কান্না স্বরে ভয়েস দিল যা শুনে পরবর্তীতে নিজেরই কান্না চলে আসলো। জীবনের বাস্তব একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
https://x.com/titaherul/status/1830642391893565871?t=5U-PQpDONAHRlFq5vQlStw&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সত্যি এই বন্যাটা অনেকের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে। আপনি যেহেতু সরাসরি দেখেছেন অবস্থা টা আপনার চেয়ে ভালো আর কেউ বলতে পারবে না। ব্যাপার টা সত্যি খুবই দুঃখজনক। এতো মানুষের জীবন এতো সম্পদ নষ্ট পাশাপাশি এই দশদিন পুরো কারেন্ট ইন্টারনেট ছাড়া থাকা মোটেও সহজ কথা না। যাইহোক বিপদ টা যখন কেটে গেছে আশাকরি এখন আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, সান্তনামূলক মন্তব্য করার জন্য।
বন্যার কারণে নোয়াখালী ফেনী এবং কুমিল্লাতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই বন্যা অনেক মানুষের জীবন কেড়ে নিলো। আপনার মত হাজারো মানুষ নিজের জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে পারল না। অল্প কিছুক্ষণের ঘরের মধ্যে অনেক পানি জমে গেল অনেকের বাড়িতে। তবে ভাগ্য ভালো আপনি আপনার বন্ধুর বাসায় আশ্রয় নিলেন। বন্যার কথা মনে হলে এখনো ভয় লাগে। এখনো অনেক জায়গাতে পানি আছে বন্যার। ভালো থাকবেন ভাই।
বন্যার কারণে অনেক জায়গাতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে আলহামদুলিল্লাহ এইবার বন্যাতে আমাদের এদিকে তেমন কোন ক্ষতি হয় নাই। তবে এটি ঠিক নোয়াখালী ফেনী এবং কুমিল্লাতে বন্যার কারণে অনেক মানুষ কষ্ট করেছেন। ওই সময় অনেক মানুষের বাড়ি ঘর এর মধ্যে পানি জমে গেল। বেশিরভাগ মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আর ওই সময় নেটওয়ার্ক আমাদের এদিকে ও তেমন ছিল না।
স্টিমের বাংলা কমিউনিটির জনয়নের জন্য, আপনার ভোট @bangla.witness (https://steemit.com/@bangla.witness) এবং @rme-কে (https://steemit.com/@rme) প্রক্সিতে না গিয়ে!