বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প মুহুরী প্রজেক্ট, ফেনী ভ্রমণ।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামু আলাইকুম

সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আজকে আপনাদের সামনে একটা নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আশা করছি ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।

1000004370.jpg

https://w3w.co/cartwheel.muted.waffles

বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প মুহুরী প্রজেক্ট পরিদর্শনে গেলাম। ফেনী জেলার সবচেয়ে আলোচিত এবং সুন্দর জায়গার মধ্যে এই মুহুরী প্রজেক্ট অন্যতম। এই মুহুরী প্রজেক্ট বর্তমানে সারা বাংলাদেশের মধ্যে আলোচিত একটি পিকনিক স্পট এবং বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। প্রতিনিয়তই হাজার হাজার পর্যটক আসে এই মুহুরী প্রজেক্ট পরিদর্শন করার জন্য। মুহুরী সেচ প্রকল্পকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই প্রকল্পটি ২০০৪ সালে প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভ্রমন পিপাসু মানুষেরা এ জায়গাটি পরিদর্শন করার জন্য আসে। আজকে বাংলাদেশে অনেক জনপ্রিয় একটা পিকনিক স্পট হিসেবে পরিচিত ফেনী মুহুরী প্রজেক্ট।

1000004343.jpg

1000004358.jpg

আমরা একদিন আগে পরিকল্পনা করেছি ফেনী মুহুরী প্রজেক্ট ভ্রমণে যাবো। সেই ধারাবাহিকতা পরের দিনই কার্যকর করে ফেললাম। মুহুরী প্রজেক্টের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলাম। আমরা দাগনভূঞা জিরো পয়েন্টে একসাথ হলাম। আমার সাথে ছিলেন নিবলু ভাই, রকি ভাই, বাহাদুর ভাই। সবাই একসাথ হয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে রওনা দিলাম মুহুরী প্রজেক্টের উদ্দেশ্যে। দাগনভূঞা থেকে মুহুরী প্রজেক্টের দূরত্ব হবে প্রায় ৪০ কিলোমিটার। এই ৪০ কিলোমিটার পথ আমরা মোটরসাইকেলে পাড়ি দিব। সকাল ৯ টা বের হলাম। যেতে যেতে পথের মধ্যে অনেক মজা করলাম। মাঝপথে নাস্তা বিরতি দিলাম। নাস্তা করে আবারো রওনা হলাম ঐতিহাসিক মূহুরী প্রজেক্টের দিকে। প্রচুর রোদ, ঘামে পুরো শরীর ভিজে গেল। অবশেষে আমরা মুহুরী প্রজেক্ট পৌঁছালাম। সেখানে পৌঁছেই সর্বপ্রথম আমরা মহিষের দুধের দধি খেলাম। সত্যিই দধি গুলো খুবই মজাদার সুস্বাদু ছিল। দধি আমাদের চারজনের কাছেই ভীষণ ভালো লাগলো। এর আগে এত মজাদার দধি খাইনাই। দধি খেয়ে কিছুটা রিলাক্স অনুভব করে, সুইচ গেটের দিকে রওনা হলাম। সেখান থেকে দাঁড়িয়ে চারদিকের সৌন্দর্য অনুভব করলাম। নদীর সৌন্দর্য সত্যি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

1000004337.jpg

1000004346.jpg

মুহুরী নদীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য মাছের হ্যাচারি। সে মাছের হ্যাচারি যেগুলোতে মাছের পোনা চাষ করা হয়। সেখান থেকে মাছের পোনা সারা বাংলাদেশেই ডেলিভারি দেওয়া হয়। মুহুরী প্রজেক্ট যদি আপনি না আসেন তাহলে অবশ্যই এসে ঘুরে যাবেন। আপনি এখানে আসলে অসম্ভব কিছু সুন্দর দৃশ্য অনুভব করতে পারবেন। আমরা ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে গেলাম মুহুরী প্রজেক্টের নতুন ব্রিজের কাছে। নতুন ব্রিজটি দেখতে অনেক বেশি আকর্ষণীয়। আমরা যখনই নতুন ব্রিজের সামনে গেলাম তখন হঠাৎ করে জোরে বাতাস বইতে লাগলো। এত জোরে বাতাস বইল যে আমরা যেন দাঁড়াতে পারছি না। গুটি গুটি বৃষ্টি নামলো, আমরা আশ্রয়ের জন্য একটি ছোট্ট দোকানে বসলাম। সেখানে আমরা দেখতে পেলাম আমের বাগান, সে বাগান থেকে আম নিয়ে আমরা কাঁচা আম খেলাম। কাঁচা আম এতই মিষ্টি যে যেন পাকা আমকেও হার মানাবে। আম খাওয়া শেষ করে আমরা যে দোকানে বসলাম, সে দোকানে একটি অসাধারন খাওয়ার দেখলাম। । দুধ, চিড়া, কলা, দধি আরো অনেকগুলো ফলের সমন্বয়ে এক অসাধারণ রেসিপি। সত্যিই অনেক ভালো লাগলো খেতে। আমরা সেখানে অনেকক্ষণ ধরে হাঁটাচলা এবং বিভিন্ন জায়গা আড্ডা দিলাম। সন্ধ্যার সময় আমরা আবার পুনরায় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ফিরে আসলাম নিজ গন্তব্যে।

1000004355.jpg

1000004349.jpg

1000004340.jpg

1000004367.jpg

1000004364.jpg

আশা করছি আজকের এই ব্লগটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আপনাদের ভালোলাগা মন্দলাগা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি, ফি-আমানিল্লাহি ওয়া রাসূলিহিল কারীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

1000106788.jpg

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

অচেনা স্থান ভ্রমণ অজানা জিনিস দেখার মধ্য দিয়ে যেমন ধারনা অর্জন করা যায় ঠিক তেমনি অন্যদের মাঝে শেয়ার করার মধ্য দিয়ে জানার সুযোগ করে দেওয়া যায়। ঠিক তেমনি ছিল আপনার আজকের এই পোস্ট। অনেক অনেক ভালো লাগলো আপনার এই পোস্ট দেখার মধ্য দিয়ে। বেশ দারুন একটি স্থান ভ্রমণ করে দেখিয়েছেন।

 last month 

ধন্যবাদ আমার ব্লগটি পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্য উপস্থাপন করার জন্য। সঠিক বলেছেন আপনি, আমরা অচেনা জায়গাগুলো কোন না কোন আর্টিকেল পড়ে ভালো ধারণা নিয়ে এরপরে গিয়ে থাকে। আমি চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে বিষয়গুলো উপস্থাপন করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 60972.21
ETH 3388.11
USDT 1.00
SBD 2.55