রিতা নামের একটি মেয়ের গল্প। (পর্ব:২)
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আবার একটি গল্প পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে গল্প লিখতে আমার কাছে সবসময় ভালো লাগে । এজন্য আমি সবসময় খেয়াল রাখি কিভাবে গল্পটাকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে সবার সামনে পরিবেশন করা যায় । আর নিজের মত করে যদি বানিয়ে বানিয়ে গল্প লিখা হয় তাহলে সেই গল্পগুলো একঘেয়েমি হয়ে যায় এবং একই রকম গল্প বারবার মাথার ভিতরে ঘুরপাক খেতে থাকে । এজন্য আশেপাশে কিছু ঘটনা যদি আপনারা গল্প আকারে তুলে ধরার চেষ্টা করেন তাহলে সেটা থেকে সুন্দর একটি গল্প তুলে ধরা যায় । সেরকমই একটি গল্প আমি গতপর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম ।আজকের সেই গল্পের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । গত পর্বে শেষ করেছিলাম রীতা নামের একটি মেয়ের কাহিনী এবং সে খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে সংসারটা করছিল এবং সেই সংসারে তার চারটি মেয়েও জন্মগ্রহণ করেছিল । কিছুদিন যেতে না যেতেই তার স্বামী খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে তারপর থেকে শুরু করছি ।
এরপর রিতার হাসবেন্ডকে গ্রাম থেকে শহরে এনে ভালোভাবে ডাক্তার দেখানো হয় এবং রিতার হাসবেন্ডের কঠিন একটা অসুখ ধরা পড়ে । দেখতে দেখতে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই রিতার হাজবেন্ড অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাকে বেশ কিছুদিন হসপিটালে ভর্তি থাকতে হয় । হসপিটালে বেশ কিছুদিন ভর্তি থাকার পরে ডাক্তাররা তাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলে এবং তাকে অল্প কিছুদিন সময় দিয়ে দেয় । বলে দেয় আমাদের আর কিছুই করার নেই যতদিন থাকবে তাকে বাড়িতেই নিয়ে রাখুন । তখন তারা অন্যভাবে আরো অনেক চিকিৎসাই করে কিন্তু সে শেষ পর্যন্ত তাকে আর ভালো করতে পারে না । বাড়িতে নেওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যে রিতার হাজবেন্ড মারা যায় । রিতার হাজবেন্ড মারা যাওয়ার সাথে সাথে রিতা অনেক ভেঙ্গে পড়ে যে সে চারটা মেয়েকে নিয়ে এখন কি করবে ।
কিছুদিন যেতে না যেতেই তার শাশুড়ির চেহারাও চেঞ্জ হয়ে যায় । রিতার শাশুড়ি রিতাকে তার চার মেয়েসহ বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং সম্পত্তির একটা কানা করিও তাকে দিবে না বলে সাব সাব জানিয়ে দেয় । যেহেতু তার মেয়েগুলো ছোট দুইটা মাত্র মেয়ে কেবল স্কুলে ভর্তি হয়েছে এবং আর ছোট দুইটা তো একেবারেই ছোট । রিতার শাশুড়ির হাতে পায়ে ধরে গ্রামের লোকজন অনেক বোঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু কিছুতেই তার শাশুড়ি বুঝতে চায় না । শাশুড়ি বলে যে আমার ছেলে যেহেতু নেই সেহেতু রিতা ও তার মেয়েদেরকে আমি আমার বাড়িতে রাখবো না । একটা ছেলে সন্তানওতো দিতে পারে নাই মেয়েদেরকে আমার বাড়িতে রেখে কোন লাভ নেই । আমার সম্পত্তির একটা কানা করি আমি ওদেরকে দিব না এই বলে তারা তাকে একেবারে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে যেতে বাধ্য করে ।
ননদ আর শাশুড়ি মিলে এই পরিকল্পনা করে এবং রিতাকে একটা সময় বাড়ি থেকে তার মেয়েদেরকে নিয়ে বের হয়ে যেতে হয় । রিতা তখন কি করবে সে তার মেয়েদেরকে নিয়ে তার বাপের বাড়িতে ফিরে আসে । এদিকে সংসারে তার সৎ মা এবং একটিমাত্র সৎ ভাই রয়েছে । রিতার বাবাতো অনেক আগেই মারা গিয়েছে আর ভাইটাও ছোট এবং ছোট থাকতে থাকতে ভাইটাও বিদেশে চলে গিয়েছে । কারণ সংসার চালাতে হবে ।এর ভেতরের রিতা তার চারটি মেয়ে নিয়ে ওই ফ্যামিলিতে এসে ওঠে । আগের আরো দুটো মেয়ে অবিবাহিত রয়ে গিয়েছে কি আর করা যেহেতু এটাই রিতার বাবার বাড়ি এখানে তো ওকে থাকতে হবে । কষ্ট যতই হোক তারপরও তো এখানেই থাকতে হবে । বাড়ির সব কাজকর্ম করে রিতা বেশ ভালোই ছিল বাবার বাড়ি । তার সৎ মা আবার অতটা খারাপ ছিল না । কিছুদিন পর রিতার জীবন অন্যদিকে মোড় নেই । জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী পর্বের জন্য ।
চলবে ...........
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ডিভাইস| samsung Galaxy s8 plus
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness
OR SET @rme as your proxy
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
রিতার জীবনের সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে এমনটা বাস্তবেও মাঝে মাঝে লক্ষ্য করা যায়। স্বামী মারা যাওয়ার পরে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে আসে তবে তার সৎ মা তুলনামূলক ভালো ছিল বলে বাবার বাড়িতে এসে টিকতে পেড়েছে। যাই হোক শেষ পর্যায়ে রিতার জীবনের মোড় কোন দিকে ঘুরেছিল সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম।
ঘটনা প্রথমের দিক ভালই মর্মান্তিক ছিল শেষে যেয়ে যদি কিছু একটা উপায় হয় জানতে হলে সাথেই থাকতে হবে।
স্বামী মারা যাওয়ার পর রিতার জীবনটা দেখছি একেবারেই ছন্নছাড়া হয়ে গেছে। তবে ননদ আর শাশুড়ি মিলে পরিকল্পনা করে রিতাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার ব্যাপারটা আমার কাছে মোটেই ভালো লাগলো না। রিতা যে ছেলে সন্তান জন্ম দিতে পারিনি, তার জন্য তার কি ভুল আছে, সেটাই তো বুঝলাম না। চারটে মেয়ে সন্তান নিয়ে সে তো আবার তার সৎ মায়ের বাড়ি উঠে পড়ল, এখন দেখা যাক পরবর্তী পর্বে এই নিয়ে আর কি জানা যায়।
ঠিকই বলেছেন এখনো সম্পত্তির জন্য মানুষ রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন করতে এক মিনিটও ভাবে না ।
আমাদের সমাজটাই এরকম হয়ে গেছে আপু, সম্পত্তির কাছে রক্তের সম্পর্ক হেরে যাচ্ছে।
আপু রিতার গল্পের প্রথম পর্ব টাও আমি কিন্তু পড়েছিলাম। তবে এই গল্পটা পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। একে তো রিতার চারটি মেয়ে রয়েছে। অন্যদিকে তার হাজবেন্ড অসুস্থ হয়ে মারা গেল। এই বিষয়টা সত্যিই অনেক খারাপ লাগলো। কিন্তু রিতার শাশুড়ির এটা করা একদমই উচিত হয়নি। রিতাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে একদম ঠিক করেনি। শেষ মেষ দেখছি বাবার বাড়িতে গিয়ে উঠলো। এখানেও তো দেখছি আবার সৎ মা। তার জীবনের নতুন মোড় কি? সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম।
আসলে অনেক শাশুড়ি এমন আছে যে ছেলে মারা যাওয়ার পর ছেলের বউ এবং বাচ্চাদেরকে সহ্য করতে পারে না। তাদেরকে বাড়িতে জায়গা দিতে চায় না। রিতার ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটি হয়েছে। রিতা অল্প বয়সে স্বামী হারিয়ে চারটি মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়িতেই বা কয়দিন থাকবে। যাই হোক ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে।