ছেলের স্কুলের কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ছেলের স্কুলের কিছু মুহূর্ত । ছেলেকে গতবছর স্কুলে দিয়েছি এবার কেজিতে উঠেছে । তারপরে ছেলে এখনো ক্লাসে কিছুতেই আমাকে ছাড়া বসতে চায় না খুব বেশি ঝামেলা করছে । ইদানিং একটু আগের থেকে ঠিক হয়েছে মাঝখানে ঠিক হয়ে গিয়েছিল তবে পরীক্ষার পর বেশিদিন গ্যাপ হওয়ার কারণে আবার আগের মত হয়ে গিয়েছে । ক্লাসে আমাকে ছেলেকে নিয়ে বসতে হয় । এদিকে ক্লাসে ছেলেকে নিয়ে যদি বসে থাকি তাহলে টিচাররা বিরক্ত হয়ে এবং নিজের কাছেও খারাপ লাগে । আস্তে আস্তে ক্লাস থেকে বের হয়ে এখন দরজার সামনে একটি চেয়ার নিয়ে বসে থাকছি । কালকে থেকে পরীক্ষা আল্লাহ জানে ছেলেটা পরীক্ষা কেমন ভাবে দিবে ।পরীক্ষার আগে ওদেরকে সব ধরনের প্রিপারেশনে দেওয়া হয়ে থাকে পড়ালেখাটা মোটামুটি কমপ্লিট করে গিয়েছে । যেসব বাচ্চারা ক্লাসে একটু বেশি দুর্বল তাদেরকে আবার এক্সট্রা আধা ঘন্টা সময় বাড়িয়ে ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে ।
আজকে দেখলাম বিভিন্ন ফলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে ।এখনকার বেশিরভাগ স্কুলে কোন খেলার মাঠ থাকে না কারণ বড় বড় বিল্ডিং গুলো স্কুল হিসেবে ভাড়া নেওয়া হয়ে থাকে যার কারণে বাচ্চারা খেলাধুলা থেকে অনেকাংশই বঞ্চিত হয়ে থাকে । ওদের স্কুল হলো দোতালায় পুরা ফ্লোর টাই ওরা নিয়েছে । স্কুলের জন্য এখানে বড় একটা হলরুম রয়েছে যা কিছু হওয়ার এই হল রুমটাতেই হয় । এখানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বাচ্চাদের আরও অনেক ধরনের প্রোগ্রাম এই হল রুমের ভিতরে করা হয়। আগে যদিও বাইরে বড় হল ভাড়া করা হতো কিন্তু সেটা আর একটা ঝামেলা । কারণ বাচ্চাদেরকে স্কুলের বাইরে নেওয়াটা একটা ঝামেলার ব্যাপারে । সেই কারণে স্কুলের ছোট ছোট প্রোগ্রামগুলো স্কুলের ভিতর করার চেষ্টা করে ।
আজকে হলরুম দেখলাম সুন্দরভাবে পরিপাটি করেছে এবং মাঝখানে কিছু ফল রেখেছে প্রত্যেক ক্লাসের বাচ্চাদেরকে নিয়ে সেই ফলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে । সাথে কিছু ফুলও রয়েছে এভাবে করে প্রথমে নার্সারির বাচ্চাদেরকে নিয়ে এক একটা করে ফল ধরে ধরে তাদেরকে চেনানো হচ্ছে । তারপর আবার কেজি শ্রেণির বাচ্চাদেরকে নিয়ে প্রত্যেকটা ফলের সাথে পরিচয় করা হচ্ছে । আবার সাথে দেখলাম কিছু ফুলের সাথেও পরিচয় করিয়ে দিলে । এই জিনিসটা আমার কাছে খুব ভালো লাগে আবার বাচ্চা রাও এতে খুব আনন্দ পায় । কিভাবে করে ফুলের গাছ লাগাতে হয় সেটা হাতে কলমে ওদেরকে শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে । ওদের গান শেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে টিচার প্রতি ক্লাসে সপ্তাহের একটি দিন গান শেখায় । আর্টের ব্যবস্থা তো সব স্কুলেই থাকে এবং সব ধরনের কালচারাল প্রোগ্রাম এর সাথে ওদেরকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় । যাতে বাচ্চারা ছোট থেকে সবকিছু শিখতে পারে ।
শীতের সময় হলো পিঠাপুলির সময় এই সময়ে দেখলাম যে পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছিল । এই বড় হল রুমটার ভেতরে সব রকমের পিঠার আয়োজন রেখেছিল । স্কুলের শিক্ষকরা এই পিঠাগুলো বানিয়ে এনেছিল এবং তারা স্বল্প কিছু প্রাইস ধরে গার্ডিয়ানদের কাছে সে পিঠাগুলো বিক্রি করেছে । সকাল থেকে বিক্রি করার কারণে আমরা দুপুরের দিকে যারা গিয়েছি তারা দেখলাম সব শেষ । আজকালকার মানুষজন নিজের হাতে কিছু বানাতে চায় না রেডিমেড পেলে সেটাই খুব মজা করে খেয়ে থাকে এটাই দেখলাম । তারপর মা দিবসকে কেন্দ্র করেও আয়োজন করা হয়েছিল । প্রতিটা ক্লাসে বাচ্চাদেরকে মা সম্বন্ধে জানানো হচ্ছিল এবং মায়ের ছবি আর্ট করার কথা বলা হয়েছিল । মায়ের সম্বন্ধে কিছু একটা লিখতে বলা হয়েছিল এবং ছুটির পরে মাকে দেওয়ার জন্য একটি করে ফুল ওদেরকে দেওয়া হয়েছিল সাথে কিছু চকলেট ও ছিল । এখানে সব বাচ্চাদেরকে নিয়ে মা সম্বন্ধে অনেক কিছু জানানো হচ্ছে এবং অনেক টিচাররা দেখলাম তাদের ব্যক্তিগত মতামত শেয়ার করছে বাচ্চাদের সাথে । বাচ্চারাও তাদের মাকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর কথাবার্তা বলছে । আসলে এসব অনুষ্ঠানগুলো হলে বাচ্চারা ছোটবেলা থেকে সবকিছু সম্পর্কে জানতে পারে । সবকিছু মিলিয়ে স্কুলটা মোটামুটি আমার কাছে ভালোই লাগে । এখন আল্লাহ আল্লাহ করে ছেলেটা আমার ঠিকমতো সেট হলেই হয় এবং পরীক্ষাটা ঠিকমতো দিতে পারলেই হয় । সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাহ আপনার বাচ্চার স্কুলের কিছু বিষয় জেনে বেশ ভালো লাগলো। এখনকার স্কুলগুলোতে।ভালোই বাচ্চাদেরকে মা দিবস বা অন্যান্য দিবসের গুরুত্ব বোঝানো হয় ।বেশ ভালো লাগে এই ব্যাপার গুলো ।দোয়া করি আপনার ছেলের পরীক্ষা যেন খুব ভালো হয় ।আর সে যেন ধীরে ধীরে একা একা ক্লাসে বসতে পারে সেই শুভকামনা রইল ধন্যবাদ।
ছেলেটা এখন একা একা ক্লাসে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে আমার কষ্টটা কিছুটা দূর হয়েছে ।