ছোটবেলার এলোমেলো স্মৃতি
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে ছোটবেলার এলোমেলো কিছু লেখালেখি শেয়ার করতে চলে এসেছি । এখনকার বাচ্চাদের ছোটবেলার সাথে আমাদের ছোটবেলার অনেক পার্থক্য রয়েছে । আমাদের শৈশবটা আমরা খেলাধুলা করে দৌড়ঝাপের মধ্য দিয়ে সময়টা পার করেছি । বিকেল হলে সবাই মিলে বাইরে বের হয়ে পড়তাম খেলার জন্য । এমনকি আমরা বড় হয়েও কত খেলেছি দাঁড়িয়াবান্দা ব্যাডমিন্টন এগুলো খেলেছি । আর এখনকার বাচ্চারা এসব খেলা সম্বন্ধে জানেই না ।
গোল্লা ছুট ,বউছি, ইচিং বিচিং ,কুতকুত ,সাতপাতা আরো কত ধরনের খেলায আমরা ছোটবেলায় খেলেছি । সেগুলো মনে পড়ল এখনো মনের ভিতর কেমন যেন একটি অনুভূতি কাজ করে । আসলেই ছোটবেলার খেলা গুলো অনেক বেশি আনন্দের ও মজার ছিল । সেদিন আমার ছেলেকে আমাদের ছোট বেলার খেলা নিয়ে গল্প করেছিলাম । ছেলেটা তো সেসব খেলা দেখার জন্য অস্থির তারপর ফোন ঘেটে শৈশব খেলাগুলো বের করে ওর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম । সে তো মহা খুশি সে তো খেলার জন্য অস্থির । আমরা কিভাবে খেলেছি সবকিছু তাকে ডিটেলসে বলতে হয়েছে । আর এখনকার বাচ্চারা তো সারাদিন ফোনে গেমস খেলা ও টিভি দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকে । আগেকার দিনগুলোই আসলেই অনেক ভাল ছিল ।
সবাই মিলে যখন কোথাও যাওয়া হতো নানা বাড়ি কিংবা দাদা বাড়িতে সেই সময়টা আমাদের অনেক আনন্দমুখর ভাবে কেটে যেত । একেবারে সে বিকেল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতেই থাকতো আমাদের খেলা এবং একটার পর একটা কোনটা রেখে কোনটা খেলব সেটাই চলত । আবার সেদিন হঠাৎ করে ফেসবুক ঘাটতে ঘাটতে সুন্দর একটা দৃশ্য চোখে পরল । আমি আর আমার ছেলে দুজনে মিলে সেটা দেখলাম । ঝড় উঠে এসেছে এবং একটা মেয়ে সেই ঝড়ের ভেতরে বালটি নিয়ে বের হয়েছে আম টোকানোর জন্য । টপটপ করে গাছের নিচে আম পড়ে বিছিয়ে যাচ্ছে এবং মেয়েটি মনের আনন্দ আমগুলো একটার পর একটা টুকিয়ে যাচ্ছে । আর এদিক ওদিক থেকে শুধু আম পড়ছে । সেটা দেখে আমার ছোটবেলার এম ঢুকানোর কথা মনে পড়ে গেল । ছোটবেলার ঝড় বৃষ্টি শুরু হলেই তো আমরা বাইরে বের হয়ে পড়তাম । আর এখনকার দিনে ঝড় বৃষ্টি হলে বাইরে বের হওয়া যায় না এখনকার দিনে অতিরিক্ত বাজ পড়ার কারণে মানুষজন একটু বেশিই ভয় পায় ।
ছোটবেলায় একবার অনেক রাতের বেলা ঝড় উঠে এসেছে ।তখন আমাদের বাড়ি বানানোর কাজ চলছিল এবং আমাদের দরজা জানালা বানানোর জন্য কাঠ গুলো রোদে শুকানো ছিল । মাঝরাতে যখন ঝড় উঠে এসেছে তখন আমরা ঘুম থেকে উঠে বাইরে বের হয়ে গিয়েছিলাম ছাদের সেই কাঠ গুলো রোদে দেওয়া ছিল সেগুলো তোলার জন্য । বাইরে বের হয়ে দেখি যে প্রচণ্ড রকম বাতাস হচ্ছে এবং আমাদের বাসার সামনেই বিরাট বড় দুটো আম গাছ ছিল । হঠাৎ দরজা খুলে বাইরে তাকিয়ে দেখি গাছের নিচে একেবারে আম পরে বিছিয়ে আছে । আমি একটার পর একটা আম গুলো তুলে নিচ্ছি তখন পর্যন্ত বৃষ্টি শুরু হয়নি শুধু বাতাসই হচ্ছে । আর টপটপ করে আমগুলো পড়ছে । সেই সময় গুলো আসলেই অনেক মনোমুগ্ধকর ছিল । সেই সময়টা অনেক ভালো ছিল । হঠাৎ করে ফেসবুকে এরকম একটা ভিডিও দেখে সত্যিই সে ছোটবেলার ঘটনাটা মনে পড়ে গেল এবং কেন জানিনা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম । আসলে ছোটবেলার দিনগুলি অনেক মজার ছিল । সব ভাই-বোনরা মিলে সুন্দর সময় পার করতাম । সেদিনগুলোর কথা মনে পড়লে এখনো বুকের ভিতরটা কেমন যেন মোচড় দিয়ে ওঠে । সেই দিনগুলো যদি আবার ফিরে পেতাম । যতদিন চলে যাচ্ছে ততই মনে হচ্ছে আমরা পুরনো দিনগুলোকে অনেক বেশি পিছনে ফেলে আসছি আর আমরাও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ডিভাইস| samsung Galaxy s8 plus
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সত্যি কথা বলতে কি আপু আমি একদিন হিসাব করে দেখেছি সারা বছর জুড়ে প্রায় 100 এরও বেশি ধরনের খেলা খেলেছি আমরা কিন্তু এখন সে সমস্ত খেলা গুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের পাড়াগা থেকে। আরমানা বাড়ি যাওয়ার মজাই আলাদা ছিল আমাদের মাঝে। যেন অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করতো মনের মধ্যে এই সময় গুলো। তবে বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে তেমন আনন্দ আর সে আনন্দ করার জায়গাটায় হারিয়ে গেছে। যাই হোক স্মৃতিচারণ মূলক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যেন আমিও আমার সেই ছোটবেলা খুঁজে পেলাম আপনার এই গল্প পড়ে।
একদম তাই আমরা তো গ্রামে গেলে শুধুই খেলাধুলার মধ্যেই থাকতাম । শহরে তো এরকম খেলাধুলার সুযোগ পেতাম না তবে গ্রামে গেলে সুযোগ পেলে সব ধরনের খেলায় খেলেছি ।আর এখনকার বাচ্চারা তো কোন খেলায় জানেনা ।
একসময় আমি যখন ছোট ছিলাম একটু বাতাস হলেই একটা ব্যাগ নিয়ে আম বাগানে গিয়ে আম কুড়ানোর অপেক্ষায় থাকতাম। তবে হ্যাঁ এখনকার ছেলে মেয়েরা একটু ঝড়-বৃষ্টি দেখলেই জানালা দরজা বন্ধ করে রুমে বসে থাকে কিন্তু আমাদের সময়টা তো অন্যরকম ছিল যাইহোক আপনার ছোটবেলার গল্পটা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আম কুঁড়ানোর কাজটা মনে হয় কমবেশি সবাই করেছে ।আসলে সেই দিনগুলো অনেক মজার ছিল ।
ঠিক বলেছেন আপু আমাদের শৈশবের খেলাধুলা আর এখনকার বাচ্চাদের খেলাধুলার মধ্যে আকাশ পাতাল ফারাক। তখন আমরা মাঠে-ঘাটে খেলে বেরিয়েছি। আপনার ছোটবেলার গল্প গুলো পড়ে সেই সময়টা চোখের সামনে ভেসে উঠল। আমি কুড়ানোর মজার স্মৃতিগুলো মনে হলো এক নজরে ছোটবেলায় গিয়ে চোখ বুলিয়ে আসলাম। ধন্যবাদ আপু ছোটবেলার স্মৃতি গুলো মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।
হঠাৎ করেই সেদিন ঝড় দেখে এগুলো মনে পড়ে গেল ।বাচ্চাদের খেলাধুলা দেখলে তো সেগুলোর কথা মনে পড়ে তাই সুন্দরভাবে তুলে ধরলাম । ঠিকই বলেছেন এখনকার খেলার সাথে আগেকার দিনের খেলাধুলার আকাশ-পাতাল ডিফারেন্স ।