আজ আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আমার সাথে ঘটে যাওয়া ছোট্ট একটি দুর্ঘটনা শেয়ার করতে চলে এসেছি । ছোটখাটো দুর্ঘটনা মানুষের জীবনে কখন যে ঘটে যায় তার কোন ঠিক নেই । অনেক সময় শুনেছি অনেকের সাথে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে । এবার আমি নিজেই সেই ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলাম ।আল্লাহর অশেষ রহমতে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছি খুব একটা ক্ষতি হয়নি । বেশ কিছুদিন আগে আমরা ফরিদপুরে গিয়েছিলাম । সেখানে গিয়ে অনেক ঘোরাফেরা করেছি । বিশেষ করে ফরিদপুরে আমরা বেশিরভাগ সময়ই রিকশায় করে এখান থেকে ওখানে যাওয়া আসা করি । আর রিকশায় ঘুরতে আমার কাছে সবসময়ই অনেক বেশি ভালো লাগে যার কারণে অটো থাকা সত্ত্বেও আমি সবসময় রিক্সায় ওঠার চেষ্টা করি ।

ফরিদপুরে আমার বাবার বাসা আর আমার শশুর বাড়ি পাশাপাশি এলাকায় । এজন্য ফরিদপুর গেলে দুই জায়গাতে আমাকে বেড়াতে হয় । যদিও শশুর শাশুড়ি নেই দেবর তার ফ্যামিলি নিয়ে থাকে । তারপরও সেখানে গিয়ে তাদের সাথে একটু সময় থাকতে হয় । আমি যদিও সেখানে গিয়ে রাতে থাকি না দিনের বেলা গিয়ে ছেলেকে সঙ্গে করে নিয়ে বেশ খানিকটা সময় ওদের সাথে কাটিয়ে আসি । আর ওখানে গেলে তো দাওয়াত থাকেই । সেদিন আমাদের ওই বাসায় যাওয়ার কথা ছিল । দুপুর বেলায় খাওয়ার কথা ছিল তাই আমরা যথারীতি দুপুরবেলায় বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম । আমার ছেলে ও সাথে বোনের ছেলেকেউ নিয়ে গিয়েছিলাম । যাতে বাচ্চারা ওখানে গিয়ে আরো দুটো বাচ্চা রয়েছে ওদের সাথে খেলাধুলা করতে পারে । কিন্তু সেই বাসায় সেদিন একটা অনুষ্ঠান থাকার কারণে বাচ্চারা ওখানে গিয়ে তেমন একটা মজা পাচ্ছিল না ।কারণ অনুষ্ঠানে বড়দের উপস্থিতি ছিল যার কারণে ওরা খেলার তেমন একটা সুযোগ পাইনি ।

ওখানে গিয়ে ছেলেটা অনেক বেশি বিরক্ত করছিল এবং কিছুতেই ওখানে থাকতে চাচ্ছিল না । আর অনেক বেশি লোকজন থাকার কারণে আমারও মনে হচ্ছিল ওরা বরঞ্চ আমাদের বাসায় গিয়ে নিরিবিলি থাকতে পারবে । এজন্য ভাইকে ফোন দিলাম এসে ওদেরকে নিয়ে যেতে এবং আমি আরো কিছু সময় থেকে তারপর আসবো । এরপর ওরা চলে গেল । অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলে আমি নিচে নেমে বাসার জন্য কিছু নাস্তা পানি কিনে নিলাম এবং সাথে আরো টুকিটাকি অনেক কিছু কেনার ছিল সেগুলো কিনে নিয়েছি । আমার যেতে যেতে রাত হয়ে গিয়েছিল এবং একটা রিকশায় করে উঠে বসলাম ।

আমার দুই হাতে আটকা ছিল তারপরও রিকশায় যখন বসেছি সব কিছু ঠিকঠাক করে নিয়েই বসে ছিলাম । কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরে হঠাৎ করে আমার গলায় কেমন যেন একটা টান লাগছিল । আমি হুট করে হাতের জিনিস ফেলে দিয়ে ওড়নাটা শক্ত করে গলা থেকে টেনে ধরলাম । সেই মুহূর্তে টের পেলাম যে রিক্সার চাকার ভিতরে আমার ওড়নাটা প্রায় অর্ধেকের বেশি অংশ পেঁচিয়ে গিয়েছে । তখন আমি কোন রকমে গলার সাইডটা ফাঁকা রেখে রিকশাওয়ালাকে বললাম তাড়াতাড়ি রিক্সা থামান আমার ওড়না রিকশা চাকার ভিতরে গিয়েছে । ভাগ্য ভালো যে রিক্সাওয়ালা সাথে সাথেই রিক্সাটা থামিয়ে ফেলেছিল । যার কারনে ওড়না আর পেঁচাতে পারেনি এবং আমি পড়তে গিয়েও অল্পের জন্য টের পেয়ে রক্ষা পেয়েছি । রিক্সাওয়ালা রিকশা থেকে নেমে চাকাটা পেছনের দিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তারপর ওড়নাটা ছাড়িয়ে দিয়েছে । সেদিন মনে হয় আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে । কারণ এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে রিক্সায় পেঁচিয়ে মানুষজনের মৃত্যু হয়েছে এবং রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হয়েছে । ভাগ্যিস টের পেয়ে হাত দিয়ে ধরে ফেলেছিলাম এবং রিক্সাওয়ালা থামিয়ে দিয়েছিল । এজন্য আমাদের সবারই উচিত রিকশাতে উঠলে জামা কাপড় এবং ওড়না ঠিকঠাক আছে কিনা সেটা খেয়াল রাখা । একটু অসাবধানতার কারণে এ ধরনের বড় বিপদ হতে পারে ।