গল্প: মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে আসা (২য় পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ9 days ago

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।



20240811_181434.jpg


আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে আমার সত্য ঘটনা নিয়ে লেখা গল্পের বাকি অংশ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । গত পর্বে আপনাদের সাথে একটি সত্য ঘটনা লিখতে শুরু করেছিলাম সেই ঘটনার কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম । একসাথে যদি ঘটনাটা তুলে ধরি তখন অনেক বেশি বড় হয়ে যায় তখন আর পড়ার প্রতি আগ্রহ থাকে না এজন্য কিছু কিছু করে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করছি । গত পর্বে শেয়ার করেছিলাম আমার দেবরের ছেলেটা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়েছে এবং তাকে হসপিটালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে ডাক্তাররা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখে যে তার মেজর কোন প্রবলেম হয়েছে এখানে তারা কিছু করতে পারবে না এবং তারা ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেয় । ঢাকা নিয়ে যাওয়ার সব ধরনের ব্যবস্থা চলছিল তারপর থেকে শুরু করছি ।


তারা ঢাকা শিশু হাসপাতাল সাজেস্ট করে । সেটা শুনে সবাই অনেক বেশি আপসেট হয়ে যায় এবং সবাই কান্নাকাটি শুরু করে দেয় । যদিও সবাই আগে থেকেই আপসেট ছিল কিন্তু ডাক্তারদের নিরুপায় হওয়া দেখে আরও বেশি আপসেট হয়ে পড়ে সবাই । দ্রুত ঢাকা নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে থাকে । এদিকে আমরাও এখান থেকে সবকিছু শুনছি কিন্তু কিছু তো করতে পারছি না ঢাকায় আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করছি । সব কিছু প্রসেসিং হয়ে রেডি হয়ে আসতে আসতে ওদের রওনা দিতে দিতে প্রায় সন্ধ্যা পার হয়ে যায় । এদিকে ওর ৮৫ বছরের বয়স্ক দাদাকে বাসায় একা রাখে আসতে হয় । তাকে কারো কাছে রাখবে সেটা নিয়ে একটা টেনশন লেগে যায় । তখন ওর নানীকে খবর দিয়ে ওর দাদার কাছে রেখে আসা হয় । দুই বুড়া বুড়ি বসে বসে শুধু মাত্র টেনশন করা ছাড়া তাদের আর কোন কাজই ছিল না । দাদা কিছুই বুঝতে পারেনা তারপরও মাঝে মাঝে শুধু ছেলেটার কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকে । কারণ সারাটা দিন সে তার ওই দুই নাতিকে নিয়ে সময়টা পার করে ।একজন অসুস্থ হয়ে গিয়েছে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না ।


ওরা ওই শিশু হাসপাতালের এম্বুলেন্সে আসার ব্যবস্থা করে এবং সাথে ঐ নার্স ভাবিটাও আসে যাতে রাস্তায় কোন সমস্যা হলে তিনি দেখতে পারেন । আসতে আসতে অনেক বেশি সময় লেগে যায় বিশেষ করে আগে ঢাকায় আসতে আমাদের অনেক সময় লেগে যেতো । ফেরি পার হয়ে আসতে হতো সেই সময়টার ঘটনা । যার কারণে সন্ধ্যায় রওনা দিয়ে আসতে আসতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল । পথে বার বার ছেলেটা কেমন যেন অস্থির হয়ে পড়ছিল কিন্তু কিছুই করার ছিল না । এরকম করে আসতে আসতে রাত প্রায় দুইটা আড়াইটা বেজে যায় । আমরাও বাসায় থেকে অপেক্ষা করতে থাকি । তখন মাত্র আমি নতুন বিয়ে হয়ে ওদের ফ্যামিলিতে এসেছি । এখানে ওর ফুফু ছিল আমার হাজব্যান্ড ছিল ওরা যাচ্ছিল এবং আমাকে বলছিল যে তুমি বাসায় থাকো । কিন্তু আমি একা বাসায় থাকতে রাজি হয়নি কারণ কারো অসুস্থ হলে বাসায় বসে থাকার থেকে সাথে থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা আমার জন্য সহজ । কারণ বাসায় একা একা থাকলে আমি টেনশনে আরো বেশি অস্থির হয়ে যাই । যার কারণে আমিও ওদের সাথে হসপিটালে গিয়ে রাতে অপেক্ষা করতে থাকি ।


ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগে থেকে কোন ব্যবস্থা আমরা করতে পারিনি কারণ রোগী নিয়ে যাওয়ার পরে ব্যবস্থাটা করতে হবে । এরপর ওরা ওখানে এসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত তিনটা বেজে যায় । সাথে সাথে ভিতর নিয়ে একটা কেবিন বুক করা হয় এবং ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয় । কিন্তু এখানে নেয়ার পর সরকারি হাসপাতাল যার কারণে কোন ডাক্তাররা এসে সেরকমভাবে দেখে না । সারাটা রাত ছেলেটাকে ওভাবেই ফেলে রাখে আস্তে আস্তে বাচ্চার অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে । ওই নার্স মহিলাটা বারবার পরীক্ষা করতে থাকে এবং দেখতে থাকে যে ছেলেটার শরীর থেকে রক্ত বের হয়ে যাচ্ছে ।এবং আমরা দেখলাম ও যখন ইউরিন গেলো তখন একেবারে টকটকে লাল কালারের ইউরিন আসলো । বোঝাই গেল যে ওটা ইউরিন না ওটা রক্ত যেটা ইউরিন এর মাধ্যমে বের হয়ে যাচ্ছে । সারাটা রাত আমরা জেগে ওর পাশেই কাটালাম কিন্তু রাতে কোন ডাক্তার ছিল না যার কারণে প্রাথমিকভাবে কেউ দেখলো না । সকাল হতে সবার মাথাটা একেবারে খারাপ হয়ে গেল ডাক্তারদের ওই আচরণ দেখে । আমরা সবাই সেখানে বসে সিদ্ধান্ত নিলাম যে এই হসপিটালে আমরা আর রাখবো না । কারণ এখানে আমাদের রোগী তারা প্রায় মেরে ফেলেছে অথচএখন পর্যন্ত তারা একবারও এসে দেখল না ।

২য় পর্ব

চলবে.......

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ডিভাইস| samsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png *** VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

 9 days ago 

গল্পটা যতই করছি ততই খুব খারাপ লাগছে। এই গল্পের প্রথম পর্বটা আমার পড়া হয়েছিল। আর আজকে দ্বিতীয় পর্ব পড়ে তো আমি আরো বেশি অস্থির হয়ে যাচ্ছি। কারণ ওই বাচ্চাটার পরে কি হলো এগুলো না জানা পর্যন্ত কিছুই ভালো লাগছে না। আপনি কেন যে একটা একটু একটু করে শেয়ার করছেন। আমি তো ধৈর্য হারিয়ে ফেলছি। তবে আশা করছি ছেলেটা ভালোভাবে সুস্থ হবে। আশা করছি আপনি অনেক তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে এই গল্পের তৃতীয় পর্ব শেয়ার করে নেবেন। অপেক্ষায় থাকলাম সেই পর্যন্ত।

 9 days ago 

অপেক্ষায় থাকেন আপু পরবর্তী পর্বে শেষ করে দেবো ।ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য ।

 6 days ago 

আপনার গল্পটি পড়ে সত্যিই ভীষণ খারাপ লাগছে। হঠাৎ করে কোন বাচ্চা এরকম অসুস্থ হয়ে গেলে বাবা-মায়ের টেনশনের শেষ থাকে না। যাইহোক বাচ্চাটিকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে জেনে যদিও ভালো লেগেছিল ।কিন্তু ট্রিটমেন্টের অবস্থা এতটা খারাপ জেনে সত্যি ভীষণ খারাপ লাগলো ।যাইহোক পরবর্তীতে কি হয় জানার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।

 5 days ago 

আপনার এই গল্পটি পড়ে খুবই খারাপ লাগছে৷ আসলে বাচ্চাদের অসুস্থতা সবসময়ই সকলের মনের মধ্যে একটি চিন্তা নিয়ে আসে এবং তাদের অসুস্থতার কারণে সকলেই অনেক ধরনের চিন্তায় পড়ে যান৷ যাইহোক বাচ্চাকে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে শুনে ভালো লাগছে৷ পরবর্তীতে কি হয় তা জানার অপেক্ষায় রইলাম৷

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64261.31
ETH 2787.80
USDT 1.00
SBD 2.66