"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ৩০ | নিরামিষ সবজি সুশি রোল রেসিপি।
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম। আজকে আমি আপনাদের সামনে অনেক সুন্দর একটা রেসিপি নিয়ে এসেছি। অবশ্যই এই রেসিপিটা আমার বাংলা ব্লগের প্রতিযোগিতার জন্য। আসলে প্রতিযোগিতা যখন রেসিপি দেওয়া হয় তখন আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। কারণ আমি সব সময় ইউনিক কিছু তৈরি করতে পছন্দ করি। নতুন কিছু তৈরি করতে অন্য রকমের একটা অনুভূতি হয়। আবার তৈরি করে খেতেও কিন্তু ভীষণ ভালো লাগে। বিশেষ করে এখন যেহেতু শীতকাল বিভিন্ন ধরনের সবজি রয়েছে বাজারে। এজন্য প্রতিযোগিতার বিষয়, সবজি সিলেক্ট করা হয়েছে এটাই ভীষণ ভালো লেগেছে।
শীতের সবজি খেতে ভীষণ ভালো লাগে। যদিও এখন শীতের প্রায় শেষ সময়। কিন্তু তাও বাজারে কিন্তু বেশ কিছু সবজি রয়েছে। প্রতিযোগিতা দেখার সাথে সাথেই আমি একটা রেসিপি ঠিক করে নিয়েছিলাম। আসলে আমি যেকোন রেসিপির ক্ষেত্রে ইউনিক, এমনকি কিভাবে তৈরি করব আর কিভাবে উপস্থাপন করব, এই সব কিছু ভেবে ফেলি। এই সব কিছু ঠিক করতেই প্রায় অনেকটা সময় লেগে যায়। পরবর্তীতে যখন আমি রেসিপিটা তৈরি করতে গেলাম, শেষ পর্যায়ে এসে একেবারে ব্যর্থ হলাম। কোন রেসিপি তৈরি করতে এইরকম এই প্রথমবার মনে হয় ব্যর্থ হলাম। আসলে আমি যেটা তৈরি করতে চেয়েছিলাম শেষে দেখি ওইটা হলো না। আমি প্রায় অনেক সময় দিয়ে রেসিপিটা তৈরি করেছি। যখন রেসিপিটা তৈরি করতে ব্যর্থ হলাম তখন ভীষণ খারাপ লাগলো। মানে রেসিপিটা খেতেও পারলাম না, পোস্ট ও করতে পারলাম না। ততক্ষণে প্রায় অনেকটা সময় চলে গিয়েছে। তখন ভেবেছিলাম আর জয়েন করবো না। কিন্তু প্রতিযোগিতায় জয়েন করতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে।
এইজন্য প্রথমবার ব্যর্থ হওয়ার শর্তেও আমি আবারও ভাবলাম যে কোন মূল্যে আমি আবার প্রতিযোগিতায় জয়েন করব। যেহেতু একটা প্রতিযোগিতায় জয়েন করতে অনেক বেশি সময় লাগে। আমি প্রথম রেসিপিটা তৈরি করতে অনেক বেশি সময় দিয়ে ফেলেছিলাম। এইজন্য শুধুমাত্র আজকের দিনটা বেঁচে ছিল। এইজন্য আমি আবারো আজকে সকাল বেলা নিজেই বাজারে গিয়ে পছন্দমত কয়েকটা সবজি কিনে নিয়ে আসলাম। প্রায় দুপুর হয়ে গিয়েছিল বাজার থেকে আসতে। পরবর্তীতে আমি আবারো আরেকটা রেসিপি তৈরি করার জন্য নেমে পড়লাম। আসলে আমি কিন্তু হাল ছাড়িনি। এইজন্য এই রেসিপিটা বিকেলের মধ্যে তৈরি করে শেষ করলাম। জানিনা রেসিপিটা কি রকম হয়েছে। তাড়াহুড়া করে অনেক কষ্ট করে তৈরি করলাম। পরবর্তীতে রেসিপিটা অনেকটা সময় ধরে ফটোগ্রাফি করেছি। আসলে রেসিপির মধ্যে ফটোগ্রাফি করাটা আমার কাছে অনেক বেশি মূল্যায়ন পায়। যেহেতু আজ রাত পর্যন্ত সময় রয়েছে। এইজন্য অনেক তাড়াহুড়া করে পোস্ট রেডি করেছি। আসলে রেসিপি পোস্ট রেডি করতে অনেক বেশি সময় লাগে। যেহেতু প্রতিযোগিতা, এই জন্য অনেক কিছু দেখেশুনে করতে হয়। শেষ পর্যন্ত এই রেসিপিটা তৈরি করতে সফল হয়েছি। আশা করি আমার দ্বিতীয়বার তৈরি করা রেসিপি টা আপনাদের ভালো লাগবে।
তো চলুন,
এই রেসিপিটি তৈরি করতে আমার কি কি উপকরণ লাগলো এবং আমি পুরো রেসিপি কিভাবে তৈরি করলাম তার বর্ণনা নিচে প্রতিটা ধাপে উপস্থাপন করলাম। আশা করি আমার আজকের রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ :
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
শালগম | ১ টা |
লেটুস পাতা | ১ টা |
সবুজ ক্যাপসিকাম | ১ টা |
টমেটো | ২ টা |
মিনিকেট চাল | ১ কাপ |
রসুন বাটা | ২ টেবিল চামচ |
হলুদের গুঁড়া | ২ টেবিল চামচ |
মসলা গুড়া | ১ টেবিল চামচ |
লবন | পরিমাণমতো |
তেল | পরিমাণমতো |
রান্নার বিবরণ :
ধাপ - ১ :
প্রথমে আমি শালগম, ক্যাপসিকাম, লেটুসপাতা, এবং টমেটো সবগুলো সবজি কেটে নিলাম।
ধাপ - ২ :
এরপরে আমি চাল গুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে পানি দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিলাম।
ধাপ - ৩ :
এভাবে আমি প্রায় অনেকক্ষণ পর্যন্ত রান্না করলাম। আসলে এই ভাতটা অনেকটা নরম হবে।
ধাপ - ৪ :
এরপর আমি যতটা পানি দিয়েছি সবটা পানি শুকিয়ে গেলে দেখলাম, ভাত অনেকটা নরম হয়ে এসেছে। তারপরে আমি ভাতটাকে চুলা থেকে নামিয়ে নিলাম।
ধাপ - ৫ :
এরপরে আমি চুলায় একটা ফ্রাইপ্যান বসিয়ে দিলাম। এর মধ্যে লেটুস পাতা এবং শালগমের টুকরোগুলো দিয়ে দিলাম। এরপর কিছুটা পরিমাণে পানি দিয়ে সিদ্ধ করতে দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ৬ :
আমি শালগমটাকে অনেকটা নরম করে সিদ্ধ করে নিলাম।
ধাপ - ৭ :
একটু নরম হয়ে আসলে এর মধ্যে কিছুটা পরিমাণে তেল দিয়ে দিলাম। এরপর এর মধ্যে সামান্য পরিমাণে হলুদের গুড়া এবং মসলা গুড়া দিয়ে দিলাম। তার সাথে কিছুটা পরিমাণে লবণ দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ৮ :
এরপর একটু নেড়েচেড়ে কিছুক্ষণ রেখে এরপর চুলা থেকে নামিয়ে নিলাম।
ধাপ - ৯ :
এরপরে আবারো চুলায় ফ্রাইপ্যান বসিয়ে দিলাম। এরপরের মধ্যে সামান্য পরিমাণে তেল দিয়ে দিলাম। এরপরে এর মধ্যে টমেটোর টুকরোগুলো দিয়ে দিলাম। এরপরে এরমধ্যে সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে দিব।
ধাপ - ১০ :
এরপরে একটু নেড়ে ছেড়ে ভেজে নিব। দেখব এটা অনেকটাই নরম হয়ে যাবে।
ধাপ - ১১ :
কিছুক্ষণ পর চুলা থেকে নামিয়ে নিব।
ধাপ - ১২ :
এরপর এখন ফ্রাই প্যানে একটু তেল দিয়ে দিলাম। এরপর এরমধ্যে ক্যাপসিকাম এর টুকরো গুলো দিয়ে দিলাম। এরপর এর মধ্যে সামান্য পরিমাণে লবণ দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ১৩ :
এরপরে আবারো কিছুক্ষনের নেড়েচেড়ে ভালোভাবে ভেজে নিব।
ধাপ - ১৪ :
ভালোভাবে ভাজা হয়ে গেলে এরপর চুলা থেকে নামিয়ে নিলাম।
ধাপ - ১৫ :
এরপরে আমি একটা প্লাস্টিক নিয়ে নিলাম। প্লাস্টিকের উপরে তৈরি করা নরম ভাত সমানভাবে বিছিয়ে নিলাম।
ধাপ - ১৬ :
এরপর এর উপরে রান্না করা শালগম সমানভাবে ছড়িয়ে বিছিয়ে নিলাম।
ধাপ - ১৭ :
এরপরে এর উপরে ভেঁজে রাখা ক্যাপসিকাম এর টুকরো গুলো ছড়িয়ে দিলাম।
ধাপ - ১৮ :
এরপর এর উপরে ভেজে নেওয়া টমেটো খুব সুন্দর ভাবে ছড়িয়ে নিলাম।
ধাপ - ১৯ :
এরপর এর উপরে একটা লেটুস পাতা দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ২০ :
এরপর প্লাস্টিক টাকে হালকাভাবে একটু একটু করে মুড়িয়ে রোলের মতো তৈরি করে নিলাম। এই কাজটা অনেক সাবধানে করেছি।
শেষ ধাপ :
তারপর আস্তে আস্তে প্লাস্টিক সরিয়ে রোল টাকে একটু একটু করে কেটে নিলাম।এরপর ডেকোরেশন করে পরিবেশন করলাম। আশা করি আমার আজকের রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আবারও দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | রেসিপি |
---|---|
ডিভাইস | Redmi note 9 |
ফটোগ্রাফার | @tasonya |
লোকেশন | ফেনী |
আমার পরিচয়
আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।
🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀 |
---|
https://twitter.com/TASonya5/status/1623352626233630721?t=992l3PRTuupSFnxssqWAPw&s=19
অনেক পরিশ্রম করেছেন আপু আপনি রেসিপিটি তৈরি করতে তবে দেখতে অনেক লোভনীয় দেখাচ্ছে। আমি জানতাম প্রতিযোগিতার নাম যখন প্রকাশ করা হয়েছে তখন এমন ইউনিট ইউনিক রেসিপি দেখতে পারবো সেটা আগেই বুঝতে পেরেছি।শীতকালীন সবজি দিয়ে বেশ সুন্দর একটি ইউনিক রেসিপি করেছেন।আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলেই অনেক পরিশ্রম করেছি আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রথমেই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনি অনেক সময় নিয়ে শীতকালীন সবজি দিয়ে ইউনিক রেসিপি তৈরি করেছেন। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনেক নতুন নতুন রেসিপি শিখতে পারবো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
চেষ্টা করেছি ইউনিক রেসিপি তৈরি করার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
বাহ্ অনেক সুন্দর রেসিপি করেছেন তো আপু। দেখে তো খেতে মনে চাচ্ছে। মনে হচ্ছে অনেক সময় নিয়ে আপনি রিসিপিটি করেছেন। শীতের সবজি দিয়ে এত সুন্দর ও চমৎকার রেসিপি তৈরি করা যায় তা জানা ছিল না। তবে আপনার পোস্টেরে প্রতিটি ধাপ ছিল গুছালো। শুভ কামনা রইল।
অনেক সময় নিয়ে করেছি আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
নিরামিষ সবজি সুশি রোল রেসিপি টি অসাধারণ হয়েছে আপু। আমি আপনার শেয়ার করা রেসিপিটি খুব মন দিয়ে পড়েছি কারণ আমি এটি বাড়িতে অবশ্যই তৈরি করব। রেসিপির পাশাপাশি আপনার উপস্থাপনাও ছিল দৃষ্টি কেড়ে নেয়ার মত। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপু।
আপনি বাড়িতে তৈরি করবেন এটা শুনেই ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
এত সুন্দর রেসিপি, শুধু শিখে রাখলে তো হবে না তৈরি করে বাড়িতেও খেতে হবে।
আমি মাছের সুশি অনেক খেয়েছি। খুব ভাল লাগে তা বলব না। তবে টেস্টের জন্য কয়েকবার খেয়েছি। আপ আপনার সবজি দিয়ে সুশি বানানো আমার কাছে নতুন এবং ইউনিক একটি রেসিপি। মাথায়ই আসেনি যে সবজি দিয়ে সুশি করা যায়। আপনি যে সবজিগুলো ব্যবহার করেছেন আমার খুব পছন্দের। সুশি তৈরির প্রণালী আমার খুব ভাল লেগেছে। রোল করে কেটে নেয়ার বিষয়টাও চমৎকার লেগেছে। ধন্যবাদ আপু।
চেষ্টা করেছি ভাইয়া। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে প্রথম রেসিপিটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সময় অনেক বেশি কষ্ট লেগেছিল। কারণ ওই রেসিপিটাতে অনেক বেশি সময় দিয়েছিলে। তবে তুমি হাল ছাড়োনি এটা দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। পরবর্তীতে আবার ও নতুন একটা রেসিপি তৈরি করেছ এমনকি এটাতে সফল হয়েছ দেখে ভালো লাগলো। আসলে আমি মনে করি একবার হেরে গেলেও বসে থাকা উচিত নয়। ভীষণ ভালো লেগেছে এবারের রেসিপিটা।
সত্যি প্রথমে অনেক মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যি বলছি আপু একদম প্রফেশনাল মানের রেসিপি তৈরি করেছেন আপনি। বিশেষ করে ফাইনাল প্রেজেন্টেশন মানে ডেকোরেশনটা চমৎকার হয়েছে। আজকের রেসিপিটা দিয়ে আপনি অনায়াসে ইউটউবে ব্লগ করতে পারবেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে ডেকোরেশন করার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
মনে হচ্ছে আপনি একজন প্রফেশনাল রাধুনী। সবকিছু এমন নিখুঁতভাবে করেছেন যেটা সত্যি প্রশংসনীয়।নিরামিষ সবজি সুশি রোল রেসিপি টা আজকে প্রথম দেখলাম তাই এটা আমার কাছে একদম ইউনিক মনে হয়েছে। আশা করি প্রতিযোগিতায় আপনি ভাল অবস্থানে যেতে পারবেন।
নিখুঁতভাবে করার চেষ্টা করেছি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।