ভূতের গল্পঃ" মেছো ভূতের কান্ড কারখানা" (পর্ব - ১)
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ আবার অনেক দিন পর আপনাদের সাথে একটি ভূতের গল্প শেয়ার করবো। আপনারা জানেন আমি আমি গল্প লেখায় খুব একটা পারদর্শী না। তারপরও মাঝে মাঝে চেষ্টা করি। আমার ভূতের গল্প পড়তে ও লিখতে খুব ভালো লাগে। তবে ভয় লাগে কিন্তু তারপরও ভালো লাগে। ছেলেবেলায় ঠাকুরমার কাছে অনেক গল্প শুনতাম। এখন গল্প দেখলে সেই দিনের কথা খুব মনে পড়ে।মাঝে মধ্যে ঠাকুরমা ভূতের গল্প ও শুনাতো। তাই ভাবলাম আজ একটি ভূতের গল্প লেখা যাক। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
মাছ ধরার নেশা হারুনের। খালে বিলে নদীতে ওর মত মাছ ধরার জুড়ি মেলা ভার। সিপে মাছ ধরতে গিয়েছিল একদিন রাতে। সঙ্গে ছিল তার ভাগ্নে মহাদেব। দুজন না হলে রাতের অন্ধকারে মাছ ধরে মজা পাওয়া যায় না।
হারুনের মত সাহসী ছেলে এই পাড়ায় আর নেই। ওর কোন কিছুতে ভয় নেই । কেবল ভয়ে শুধু তার একটি জিনিসে কেউ যদি পেছন থেকে এসে আঘাত করে। সামনে থেকে ওর সামনে কেউ দাঁড়ালে ও তার মোকাবেলা করার ক্ষমতা রাখে। রাতের অন্ধকারে যখন ঘুমিয়ে থাকে পাড়ার সবাই, তখন হারুনের চোখ জ্বলে ওঠে। এটা ওর এক রকম অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। একদিন সে একটা বট গাছের নীচে বসে মাছ ধরছিলো। তার কিছুদূরে একটা তাল গাছের নীচে বসে তার ভাগ্নে মহাদেব মাছ ধরছিলো।হারুনের চোখ ও মন ছিলো সামনে ছিপের দিকে।আর মাঝে মাঝে চোখ দিচ্ছিলো পায়ের দিকে।তার আবার সাপের ভয় আছে।এ সময় খাল বিল ডুবে গেলে সাপের উপদ্রব্ হয়।
আজ খালে মাছ পড়ছে ভালো। তবে শুধু শোল আর বোয়াল। জলের দিকে তাকালে হারুন বুঝতে পারে। আরশোলা ও ব্যাঙ খেতে ভালোবাসে শোল ও বোয়াল মাছ।তাই টোপ হিসেবে হারুন আরশোলা ও ব্যাঙ কে কাজে লাগায়।
ওদিকে মহাদেব অনেকক্ষণ ধরে একটা বিষয় লক্ষ্য করছিল। প্রথমে ভেবেছিল হাওয়ায় নড়ছে গাছের গাছের ডালপালা।পড়ে মহাদেব নিশ্চিত হলো গাছের ডাল পালা নড়া নয়।কেউ যেন ঠ্যাং ঝুলিয়ে বট গাছের ডালে কে যেনো বসে আছে। মৃদু মৃদু চাঁদনী রাত ছিলো।তাই চাঁদের আলোয় স্পষ্ট দেখতে পেল একটা মেয়ে মানুষ যেন ঠ্যাং ঝুলিয়ে বসে আছে।কে ও? তবে কি ? মদনের জিভ শুকিয়ে গেলো। গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।মহাদেব আরও দেখলো গাছ কেটে ধীরে ধীরে নামছে মেয়েটি। হারুনের ঘাড়ের উপর ঝুঁকে পড়ছে। মাছ ধরলে ছিপে ও ছোঁ মেরে উপরে তুলে নেবে। মহাদেব এটা দেখে ছিপ গুটিয়ে ফেলে। জোরে শব্দ করে না ডেকে ফিসফিস করে বলে, মামা উঠে পড় তাড়াতাড়ি।হারুন এ কথা শুনে ভাবলো নিশ্চই এদিক ওদিক মহাদেব হয়তো কাউকে দেখেছে।হয়তো খাল বিলের মালিক টালিক কাউকে চোখে পড়বে। এমন অনেকদিন হয়েছে। পুকুরের মালিক মাঝ রাতে হঠাৎ উঠে পুকুরের দিকে টর্চ ফেলছে। হারুন গাছের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে নিয়েছে। আবার এমনও হয়েছে কালুর চোখে পড়েছে।কালু হলো এক চোর। চুরি করে বস্তা ভর্তি বাসন পুকুরের জলে ডুবিয়ে রাখতে গিয়ে মুখোমুখি হয়েছে অনেক বার হারুনের। চোর ভেবেছিল ফর্সা হতে বেশি বাকি নেই ।গ্রামের দিকে প্রকৃতির কারণে খুব ভোরে ওঠা মানুষের অভ্যাস। আবার কারো চোখে পড়ে যায় তাই তাই কোন রকম রিস্ক না নিয়ে পুকুরের জলে ডুবিয়ে রাখা নিরাপদ। পরে গভীর রাতে তুলে নিয়ে গেলে হবে। এই সব নানাকথা হারুন ভাবতে লাগলো।
কথা বললে আবার কেউ শুনে ফেলে তাই কোন কথা বলে তাড়াতাড়ি উঠে আসে হারুন আর মহাদেব।নিরাপদ জায়গায় এসে হারুন জিজ্ঞেস করল কই কাউকে তো দেখছি না ! কি ব্যাপার ? ওভাবে তুই ডেকে নিলি কেন ?
মহাদেব তখন ঘটনাটা খুলে বলল হারুনকে।
হারুন বিশ্বাস করতে চাইলো না। উল্টে বলল, দিলি তো মেজাজটা মাটি করে। আজকে ভালো মাছ পরছিল।
মহাদেব বলল, মামা তুমি বিশ্বাস কর আমি নিজের চোখে দেখেছি।
হারুন বলল, এই কথা তো আগে বলবি। সঙ্গে ছিল পাঁচ ব্যাটারির টর্চ লাইট। একবার মুখে মেরে দেখতাম কেমন দেখতে ! ফর্সা না কালো ভূত! সত্যি ভূত না মিথ্যা ভূত!
মহাদেব বললো, মেছো ভূত হবে হয়তো।
হারুন বললো, তুই কি করে বুঝলি রে। আগে কোনদিন দেখেছিস কি ?
মহাদেব বলল, আমি চাঁদের আলোয় দেখলাম একটা মেয়ে ভূত।যে ভাবে তোমার মাথার উপর ঝুঁকে ছিলো তাই বলেছি।
হারুন বলল, কি জানি বাবা।আজ পর্যন্ত আমার চোখে তো কোন ভূত পেত্নী পড়েনি! যেদিন সামনা সামনি পড়বে সেদিন বিশ্বাস করবো।
এর পরেরদিন একলা গেলো মাছ ধরতে । আজ মহাদেবকে নিলো না। পাছে ভূতের ভয় পেয়ে মাছ ধরার ব্যাঘাত ঘটায় সে। মহাদেবের আবার ভূতের ভয় খুব।
আজ এই পর্যন্তই। কাল আবার নতুন পর্ব নিয়ে আসবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। আশা করি আজকের ভূতের গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। গল্পে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আজ ব্যাটা হারুনের রক্ষে নেই! একা একা গেছে মাছ ধরতে। তবে ভূত যে আছে হারুনের বিশ্বাস করার দরকার ছিল। আসলে বাস্তবে সামনে না পরলে অনেকেই বিশ্বাস করতে চাই না। মহাদেবের কথায় আমার মনে হয় হারুনের কর্ণপাত করার দরকার ছিল। যাক, পরের পর্বে দেখি হারুনের কি অবস্থা করে ভূতে
হারুন অনেক সাহসী। ভুতের কথা শোনার পরও একা একাই মাছ ধরতে চলে গেছে আবার। আসলে যারা মাছ ধরতে যায় তারা হয়তো অনেকটা কম ভয় পায়। মহাদেব ভয়ে আর মাছ ধরার দিকে পা বাড়াবে বলে মনে হচ্ছে না। বৌদি আপনার লিখা ভূতের গল্পটি সত্যিই দারুণ ছিল। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
ছোটবেলায় ঠাকুরমার মুখে গল্প শুনতে বেশ লাগতো।তাছাড়া বৃষ্টির দিনে ভুতের গল্প হলে তো কথাই নেই।আমার খুবই ভালো লাগে ভুতের গল্প পড়তে।গল্পটি বেশ লাগছিল বৌদি।আজ হারুন একা যাবে ,দেখি পরের পর্বে মেয়ে ভুতের সঙ্গে কি হয়।দারুণ লিখেছেন, ধন্যবাদ আপনাকে।
ছোটবেলায় দাদির মুখে ভূতের অনেক গল্প শুনেছি। আর ভূতের গল্পগুলো শুনতে এবং পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে। মনে হচ্ছে হারুন মাছ ধরতে গিয়ে ভূতের বিষয় সে কোন ভয় পায় না। তবে তার সাপের ভয় আছে। এদিকে মহাদেব ভূতের খুবই ভয় পায়। আর ভুতের কথা বলে হারুনের মেজাজটাই খারাপ করে দিয়েছে মহাদেব। যাহোক ভুতের অতি চমৎকার একটি গল্প শেয়ার করার জন্য বৌদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার ভূতের গল্প পড়ে আমার কাছে ভয় লেগে গেল। ছোট কালে দাদি এবং নানুর কাছে ভূতের গল্প শুনতাম। তবে হারুন এবং তার ভাগিনা মহাদেব যেভাবে রাতের অন্ধকারে মাছ ধরে সত্যি তাদের অনেক সাহস আছে। তবে আমি কখনো ভূত দেখিনি। ভূতের কথা শুনে হারুন যখন বিশ্বাস করল না। তারপরে সেই একলা গিয়েছে মাছ ধরতেছে। আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো। এবং ছোটকালে ভূতের গল্প শুনতাম তা মনে পড়ে গেল আমার।
আজ এই পর্যন্তই। কাল আবার নতুন পর্ব নিয়ে আসবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। আশা করি আজকের ভূতের গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। গল্পে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
Hii bro plese help kardo plese yar India🇮🇳 se hu meai
Jay hind jay bharat