"বাবার জন্য নতুন ফোন কেনা ও বার্বিকিউ নেশানে সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া"

in আমার বাংলা ব্লগlast year

বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি। কিছুদিন ধরে আপনাদের সাথে তেমন কিছুই শেয়ার করতে পারছি না।যদিও এখন খুব একটা ব্যাস্ত থাকি না কারণ মা বাবা আসছে তো। তাই আমার দিবো কাজই মা করে দেয়। আসলে মা বাবা ছাড়া ছেলে মেয়ের কষ্ট কেউ বোঝে না। সারাদিন মায়ের সাথে গল্প করেই সময় কেটে যায়। মেয়ের বাড়িতে মা বাবা আসলে অনেক ভালো লাগে। আর আমার মনে হয় মেয়েরা হয়তো মায়ের থেকে বাবাকে বেশি ভালোবাসে। আর বাবারা ছেলেদের থেকে মেয়েকে বেশি ভালোবাসে।আসলে আমি তো এটাই সর্বদা দেখি তাই বললাম। যদিও অনেকের কাছেই মনে না হতে পারে। আর মা বাবাকে কিছু দিতে পারলে সত্যি অনেক ভালো লাগে।আমি যখন লেখাপড়া করতাম তখন আমি কিছু টিউশনি পড়াতাম। সেই টিউশনির টাকা দিয়ে আমি মা বাবা কে প্রতিমাসে কিছু না কিছু দিতাম। বাবা বলতো শুধু শুধু টাকা খরচ করো। টাকা গুলো জমিয়ে রাখতে পারো। যদিও আমি জানি মা বাবা সন্তানের কাছে কিছুই চায় না শুধু চায় তারা যেন ভালো থাকে সুস্থ থাকে।

আমি দেখতাম বাবা কখনো দামী জিনিস ব্যবহার করতো না। দামি দামি জিনিস আমাদের দুই ভাইবোনকে দিতো। আমি এগুলো দেখতাম আর ভীষণ খারাপ লাগতো। তবে আমি মেয়ে তো তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কিছু করতে পারতাম না। তবে আমি বিয়ের আগে কিছু করতে না পারলে ও বিয়ের পরে করতে পারি। এটা সবই সম্বভ হয়েছে আপনাদের দাদার জন্য। আমি এমন একটা শ্বশুরবাড়ি পেয়েছি যেখানে আমি পুরোটাই স্বাধীন। আমি যেমন শ্বশুর-শাশুড়ির প্রতি দ্বায়িত্ব পালন করি তেমনি আমার মা বাবা ও ভাইয়ের প্রতি আপনাদের দাদাই দায়িত্ব পালন করে। আমার তাকে বলা লাগে না কিছু সে নিজেই সবকিছু করে।

IMG_20230526_201456.jpg

IMG_20230526_224448.jpg
আর আমি কিছু দিতে চাইলে আজ পর্যন্ত আমার শ্বশুরবাড়ির কেউ কোনদিন কিছু বলেনি। বরং আরো আমাকে বলে তুমি তাদের ও দেখবে। কারণ তারা তোমার বাবা - মা। তুমি যেমন এ বাড়ির বউ তেমনি তাদের মেয়ে। আমি জানি না এটা কয়জন মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে বলে।
যাই হোক কিছুদিন আগে সন্ধ্যায় আপনাদের দাদা বলে রেডি হও বাইরে যেতে হবে। আজ সবাই মিলে বাইরে থেকে খেয়ে আসবো। তাই তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে গাড়িতে উঠছি। আমি তেমন কিছুই জানতে চাই নি যে কোথায় যাবে। পরে দেখলাম মোবাইলের দোকানের সামনে থামলো। আমাকে বলে চলো একটা মোবাইল কেনা যাক। আমি অবাক হয়ে জানতে চাইলাম কার জন্য মোবাইল কিনবে। কারণ তার কয়েকদিন আগে আমাকে একটা মোবাইল ও ল্যাপটপ কিনে দিয়েছে। তখন বলে তোমার বাবা কে কি কিছু দিতে ইচ্ছা করে না তোমার।একথা শুনে আমি পুরোটাই অবাক।

IMG_20230526_202341.jpg

IMG_20230526_200208.jpg

IMG_20230526_200655.jpg

আপনারাই বলুন তো এটা কি অবাক করা কথা না? যাইহোক অনেক খোঁজা খুঁজির পর একটা মোবাইল ফোন পছন্দ হলো। এই প্রথম বার বাবাকে কিছু দিতে পেরে ভীষণ আনন্দ লাগছিলো। যদিও আমার হয়ে ও সেই দিয়েছে। তবুও মনে মনে কেমন যেন একটা ভালো লাগা কাজ করছিলো। যা কাউকে বোঝানো যায় না। বাবাকে যখন ফোনটা দিয়ে দিয়েছিলাম তখন সে কিছু বলল না শুধু দেখলাম তার দুচোখ জলে ভরে গিয়েছিলো। আমি বুঝতে পেরেছিলাম আনন্দে চোখে জল এসে গিয়েছিলো।

IMG_20230526_200441.jpg

IMG_20230526_201513.jpg

IMG_20230526_224413.jpg
এরপর ফোন কিনে বাবাকে নিয়ে গেলাম বার্বিকিউ তে খেতে। আসলে বাবা মা ও আমার শশুর শাশুড়ি আসলে তাদেরকে বাইরে ঘুরতে ও রেস্টুরেন্টে খেতে নিয়ে যাই। যদিও তারা যেতে চায় না। বলে বাইরের খাবার খেতে পারিনা। তার থেকে আমরা বাড়ীতে থাকি।আমি জোর করে নিয়ে যাই। আসলে আমি চাই এখন তারা আনন্দে থাকুক।আগ থেকেই আমাদের একটা টেবিল বুক করা ছিলো। টেবিলে বসার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের খাবার চলে এলো। আমরা খাওয়া দাওয়া করে ১১.৩০ টার দিকে বাড়ীতে চলে এলাম। সব কিছু মিলিয়ে সময়টি বেশ ভালোই কেটেছিলো।

IMG_20230526_204119.jpg

IMG_20230526_204143.jpg

IMG_20230526_205209.jpg

IMG_20230526_211046.jpg

IMG_20230526_212455.jpg

IMG_20230526_212450.jpg

IMG_20230526_212457.jpg

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

বৌদি আপনার পোস্ট পড়ে কখন জানি দু চোখের কোণে পানি চলে এসেছে। আসলে বাবাকে অনেক কিছুই দিতে ইচ্ছে করে। কিন্তু পরিস্থিতি মাঝেমাঝে সহায় হয় না। যাইহোক আমাদের দাদা অনেক ভালো মনের একজন মানুষ। তাই তো আপনার মনের কথা বুঝতে পেরেছেন। এরকম স্বামী পাওয়া সত্যি অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আপনি একজন ভালো মনের মানুষ তাইতো একজন ভালো মনের মানুষকেই পেয়েছেন। আপনার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো বৌদি। 😍😍

 last year 

আমাদের দাদা কতটা মহান তা আমরা আগেই বুঝতে পেরেছি। বৌদি আজ আপনার পোস্ট পড়ে দাদা কেমন মানুষ সেটা আমাদের কাছে আরও বেশি পরিষ্কার হয়ে গেল। সত্যি কথা বলতে দাদা আর তার পরিবারের মতো এমন মানুষ যদি প্রতিটা মেয়ের জীবনে হতো তাহলে হয়তো মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি গিয়ে এভাবে নির্যাতিত হতো না। বৌদি এমন মহান মানুষ আপনার জীবনে রয়েছে বলেই আপনার জীবন আলোয় ভরে রয়েছে। আপনার সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। আপনাদের ভালোবাসা এভাবেই সারাজীবন অটুট থাকুক এই দোয়া কামনা করি।

 last year 

বাবাকে ভালোবাসার কথাটি কখনও বলা হয়নি।তবে প্রকাশ করতে পেরেছি অনেকবার।একবার বাবা দিবস উপলক্ষে দুটো পান্জাবী আড়ং থেকে দিয়েছিলাম আর এর পরেই ঈদ ছিল তাই ঈদের জন্য আর একটি কিনেছিলাম। ঐবার একসাথে আড়ং এর তিনটা পাঞ্জাবি আব্বুকে দিয়েছিলাম।আব্বু প্রচন্ড পরিমানে খুশি হয়েছিল।সেই দিনটি আজ আপনার পোস্ট পড়ে মনে পরে গেলো দিদি।পৃথিবীর সকল মা-বাবা ভালো থাকুক।বাবাকে দেয়া মোবাইল ফোনটি চমৎকার হয়েছে।বাবা-মেয়ের সম্পর্ক ভালোবাসাময় হয়ে থাকুক।ধন্যবাদ দিদি অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 last year 

বৌদি আপনার লেখাটা পড়ে সত্যিই বেশ ভালো লাগলো । আসলে আপনি বেশ ভাগ্যবতী দাদার মতো হাজবেন্ড এবং এত ভালো শ্বশুরবাড়ি পেয়েছেন । সব মেয়েরই ইচ্ছে করে তার বাবা-মাকে কিছু উপহার দেবার জন্য । আর সেটা যদি তার স্বামী নিজে থেকে বুঝতে পারে তার থেকে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে । বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন আপনারা । বেশ ভালো লাগলো । ধন্যবাদ ।

 last year 

দিদি সত্যি কথাই বলেছেন প্রতিটি ছেলে সন্তান এবং মেয়ে সন্তানের মধ্যে এটা অনেক বড় পার্থক্য। প্রতিটা মেয়ে তার বাবাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে আবার প্রতিটা ছেলে তার মাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। পৃথিবীতে একমাত্র বাবা-মা তার সন্তানকে সব সময় সুখী রাখতে চায়। চায় না কোন স্বার্থ তাদের একটাই বড় চাওয়া থাকে সন্তানের সুখ। আপনি অনেক বড় মনের মানুষ সেজন্য বাবা-মায়ের ইচ্ছাগুলো যথাসাধ্য পূরণ করার চেষ্টা করেন। আমাদের দাদা তিনি কত বড় মনের মানুষ সেটা বলার বাকি রাখি না তার প্রশংসা করলে শেষ হবে না। পরিবারের বাবা-মায়ের জন্য সত্যিই সবার উচিত এই ধরনের দায়িত্ব পালন করা এই সুন্দর মুহূর্ত আমাকে আনন্দিত করল।

 last year 

বাবা শুধু একজন মানুষ নয়, তার হৃদয়ের মাঝে লুকিয়ে থাকে দুনিয়াজুড়ে বিশাল অদ্ভুত মায়া-মমতা ও ভালবাসা।বাবা নামের এই মানুষটি সন্তানের জন্য কতভাবে অবদান রেখে যান তার হিসেব কোনো সন্তান দিতে পারবে না।বাবা সন্তানকে অকাতরে ভালবেসে যান, তার সামর্থ্যানুযায়ী শেষ বিন্দুটুকু তার সন্তানদের জন্য উজাড় করে দিয়ে যান। নিজের জন্য কিছুই রাখেন না।তাই প্রতিটি সন্তানের উচিত বড় হওয়ার পর নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী বাবা কে খুশি রাখা।বৌদি আপনি খুবই সৌভাগ্যবতী যে দাদার মতো একজন মানুষের সান্নিধ্য পেয়েছেন যে মানুষ টা আপনার ভালো মন্দ চাওয়া পাওয়া সবকিছুই বুঝতে পারেন।এটা সবার ভাগ্যে হয়না। আপনি না চাইতেই দাদা বাবার জন্য ফোন কিনে দিয়েছেন এটা খুবই ভালো করেছেন এতে করে দাদার প্রতি আপনার শ্রদ্ধা ও সন্মান যেমন বেড়ে গেলো সেইসাথে বাবাকে ভালো কিছু উপহার দেওয়ার আনন্দ উপভোগ করতে পারলেন।বৌদি আপনার গল্প পড়ে নিজের অজান্তেই চোখে জল চলে আসলো,সত্যিই অনেক ভালোলাগার মতো ছিলো আজকের অনুভূতি গুলো।ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি যাতে আপনার এবং আপনার পরিবারের সবাই এরকমভাবেই সারাজীবন থাকতে পারেন।অনেক অনেক শুভকামনা রইলো বৌদি।🙏🙏♥️♥️

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

আসলে বৌদি আমাদের প্রিয় দাদা অত্যন্ত মহান এবং মহৎ মনের মানুষ। তাই আপনি স্বাধীনভাবে সবকিছু করতে পারেন। যাহোক আপনার বাবাকে আপনি সুন্দর একটি মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছেন এটা জেনে খুবই ভালো লেগেছে আমার। একই সাথে আপনাদের খাওয়া দাওয়ার বিষয়টি আমার কাছে আরো বেশি ভালো লেগেছে। চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

পৃথিবীতে বাবা যে কি, যার নেই সে বুঝে আজ বৌদি আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার চোখের কোনে পানি চলে আসলো। কারন আমার বাবা নেই। যখন সবাই সবার বাবা কে নিয়ে অনেক কথা বলে তখন সেই মুহূর্তে বাবাকে অনেক মিস করি। যাইহোক আমাদের দাদা অনেক ভালো মানুষ আপনাকে অনেক বুঝে আর দাদার মতো মানুষ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার আপনিও একজন ভালো মানুষ যার কারনে এত ভালো মানুষ টি পেয়েছেন। পৃথিবীর সকল বাবা মা ভালো থাকুক। বাবা মেয়ের সম্পর্ক এরকম আনন্দময় থাকুক সারা জীবন। বৌদি আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। দোয়া করি এভাবে সারা জীবন আনন্দ ও ভালোবাসা নিয়ে যেন থাকেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.17
JST 0.031
SBD 3.04