"জন্মদিনের আনন্দঘন কিছু মুহূর্ত"
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন।জন্মদিন সবার কাছে স্পেশাল একটি দিন। কমবেশি সবাই কোন না কোন জন্মদিন পালন করে। আগে কখনো আমার জন্মদিন সে ভাবে কেউ পালন করিনি।ছোট থাকতে মা আমার জন্মদিনে পায়েস রান্না করতো। ব্যাস এইটুকু, বড় হতে হতে সেটাও বন্ধ হয়ে গেল। আর এখন তো মনেই থাকে না।কিন্তু কোনদিন খারাপ লাগেনি। তবে ভাবতাম সবার জন্মদিন পালন করা হয় কিন্তু আমার জন্মদিন কেউ পালন করে না। বিয়ের পর থেকে আমার প্রিয় মানুষটি প্রতিবছর বিশাল আয়োজন করে আমার জন্মদিন পালন করে থাকে। আমি যা কিছু আগে পাইনি এখন সবকিছু পাই আমার প্রিয় মানুষটির কাছ থেকে। এ দিক থেকে বলা যায় আমি সত্যি খুব ভাগ্যবতী এমন একটা মানুষকে আমার জীবন সঙ্গী হিসেবে পেয়ে।আমার বিয়ের প্রথম বছর খুব সম্ভব ডিসেম্বরের শেষের দিকে একদিন আমি ড্রয়িং রুমে আমি আর আমার দেবর বসে টিভিতে অনেক পুরনো সিনেমা "সাত পাঁকে বাধা"। হটাৎ সিনেমা দেখতে দেখতে আমার দেবর বলে তোমার জন্মদিন কি মাসে এবং কত তারিখ। আমি কোন কিছু না জিজ্ঞেস করে ওকে তারিখ বলি। এটা শুনে ছিলো আমার প্রিয় মানুষটি। সেই থেকে আমার জন্মদিন পালন করে আসছে। শত ব্যাস্ততার মাঝেও সে আমার জন্মদিনের কথা ভুলে না।
তেমনি আমার বাংলা ব্লগের প্রায় সকল ভাইবোনেরা তারাও আমাকে কোন না কোন জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। সবার এত এত ভালোবাসা পেয়ে সত্যি আমি ধন্য। অনেকে দেখেছি আমাকে সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখে উপহার দিয়েছে। বেশ কিছুদিন আমি একটিভ থাকতে পারছি না। আসলে বর্তমান আমি আমার কাজ নিয়ে একটু বেশি ব্যাস্ত হয়ে পড়েছি। তাই
আসলে সবার পোস্ট পড়ে কমেন্ট করতে পারিনা। তবে
আমি সবকিছু আমার প্রিয় মানুষটির মাধ্যমে জানতে পারি।তারপর ও আপনারা যে আমার জন্মদিনের কথা মনে রেখে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। এটা বা কত জন পেয়ে থাকে।
আর এক জনের কথা বললেই নয়,সে হলো স্বাগতা। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় ও কোন জন্মে আমার বোন ছিলো কি না। প্রতিবছর জন্মদিন আমার দেবর আর আমার প্রিয় মানুষটি পালন করে। এবং সর্ব প্রথম আমাকে উইশ করে আমার প্রিয় মানুষটি। এমনকি আমার জন্মদিনে প্রিয় মানুষটির পায়েস রান্না করে। তবে চেয়ে ছিলাম এবার আমার বার্থডে মায়ের বাড়ীতে পালন করবো কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠলো না। আর আমার দেবর ও স্বাগতা চেয়েছিলো আমার পছন্দের সমুদ্রের কাছে গিয়ে বার্থডে সেলিব্রেট করবে। কিন্তু সে সবই এলোমেলো হয়ে গেল দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য। আমি দেশে ফিরেছি ১৬ তারিখের আগের দিন সে প্ল্যান সব নষ্ট হয়ে গেলো। কিন্তু আমি জানতাম না স্বাগতা আর ব্ল্যাকস আমার জন্য এত বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করে রাখছে। ১৫ তারিখে সন্ধ্যা থেকে আর। স্বাগতার সাথে কথা নেই।এদিকে ব্ল্যাকস কোথায় যেনো বেরিয়ে গেলো। জার্নি করে আসার কারণে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হটাৎ আমার প্রিয় মানুষটি ডেকে বলে একটু ব্ল্যাকসের ঘরে এসো তাড়াতাড়ি। আমি তড়িঘড়ি করে উঠে ঘরে ঢুকা মাত্রই স্বাগতা ফোনের ওপর থেকে হ্যাপি বার্থডে বলে চেঁচিয়ে উঠলো। সেই সাথে এরা দুই ভাই ও। আর দেখি সামনে একটা কেক, আর পায়েস ও আর গিফট বক্স। ব্ল্যাকস বলে কেকটা এবার কেটে নেও। আমি পায়েস খেলাম কেকটা ও কেটে নিলাম। স্বাগতা বলে কাল পার্টিতে এই শাড়িটা তুমি পড়বে। এটা তোমার জন্য আমার ছোট উপহার।
এ সব কিছু স্বাগতা করছে। ও তো এখন আমার বাড়ীতে আসতে পারিনি তাই ব্ল্যাকস এর হাত দিয়ে পাঠিয়েছে।স্বাগতার মা আন্টির হাতের পায়েস খেলাম আমার জন্মদিনে এটা কি কম পাওয়া আমার জন্য। তবে আরো বেশি ভালো লাগতো যদি তারা সবাই উপস্থিত থাকতো।আশা করি সামনের বার আমি সবাইকে নিয়ে একসাথে কেক কাটবো।
এবার আসা যাক পরের দিন। সকাল থেকে দেখছি সবাই খুব ব্যাস্ত। সবাই যার যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছে। তবে একবার ব্ল্যাকস কে বলছি এত কিছুর করার কোন দরকার নেই।শুধু শুধু সময় ও টাকা খরচ। ও একটু ধমক দিয়ে বলল বেশি কথা না বলে চুপ করে থাক। কি করতে সে আমরা বুঝে নিবো।আমার প্রিয় মানুষটি যা বললো তা আর নাই বললাম।নিশ্চই সেটা আপনারা বুঝতে পারবেন।
আমার নতুন ফ্ল্যাটে আয়োজন করা হয়েছিলো পার্টির। ব্ল্যাকস এর বেশ কিছু বন্ধুরা ছিলো। সবাই খুব মজা করেছিলাম। আবার সন্ধ্যায় কিছু স্নাক জাতীয় খাবার খেয়ে বসে আছি। প্রায় সাড়ে আটটার দিকে স্বাগতা ডেকে নিয়ে গেল একটা অন্ধকার ঘরের ভিতর। সত্যি বলতে অন্ধকার আমি সহ্য করতে পারি না।ভীষণ ভয় লাগে অন্ধকার দেখলে। আমি তো যেতে চাইছিলাম না। ও আমাকে বলে কিছু হবে না তোমাকে কিছু করবো না চলো। এবার লাইট অন করলে রুমের সাজানো দেখে আমি তো অবাক। আমি কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না।আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। শুধু বললাম এ তোমরা কি করছো। এত কিছু কেউ করে। স্বাগতা বলে কথা না বলে চুপ করে বসো। আমি অবোধ বালকের মতো কথা না বলে চুপ করে বসে রইলাম। সবাই মিলে এত ফটোশুট করছিলো যে আমার ভীষণ লজ্জা লাগছিলো। এদিকে টিনটিন বাবুর কি আনন্দ। ও তো আনন্দে চিৎকার করছে হ্যাপি বার্থডে বলে বলে! অবশেষে কেক কাটা হলো।
সবাই এক এক করে আমাকে কেক খাইয়ে দিলো।আমি ও খাইয়ে দিলাম। ব্ল্যাকস আর স্বাগতা বলে তুমি দেরি করে ফেরার জন্য বাইরে যেতে পারিনি। তাই আমাদের এই ছোট আয়োজন শুধু মাত্র তোমার জন্য। আমি বললাম, এটা যদি হয় তবে বড় কি। আমি অনেক খুশি হয়েছি। তোমরা যে এতটা করেছো আমার জন্য। এটা আমার অনেক বড় পাওয়া।আমি জানতাম আমার বার্থডে কথা হয়তো শুধু তোমাদের দাদার মনে থাকে। এই পর্যন্ত শুধু ও পালন করে আসছে সবকিছু। সত্যি বলতে এরকম শ্বশুর বাড়ি ও স্বামী, দেবর, স্বাগতার মতো মিষ্টি একটা বোন, ভাসুর, জা ও শ্বশুর শাশুড়ি পাওয়া যে কোনো মেয়ের ভাগ্যের ব্যাপার। আমার শ্বশুর শাশুড়ি আসতে পারিনি তাই আমাকে ফোন করে উইশ করছে।
আর গিফট গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে না পারায় আমি দুঃখিত। আপনারা দেখছেন আমি কখনো গিফট এর ছবি শেয়ার করি না। আসলে আমার কাছে গিফট কোন ফ্যাক্ট না। আমি গিফট এর থেকে আমার কাছে ভালোবাসাটা বড়। কেউ যদি আমাকে ভালোবেসে একটা ১০ টাকার গোলাপ দেয় ও চকলেট দেয় এতেই আমি অনেক খুশি। কমিউনিটির অনেক ভাই বোন আমাকে ভালোবেসে অনেক কিছু দিয়েছে। এরা সবাই যে আমার দিনটার কথা মনে রেখেছে এটাই আমার কাছে অনেক। তাই আপনারা শুধু আশির্বাদ করেন আমি সারাজীবন যেনো এই ভাবে আমার প্রিয় মানুষটির হাতে হাত রেখে পাশে থেকে বাকি জীবনটা পার করে দিতে পারি।
বৌদি আপনার পোস্ট না পেয়ে সত্যিই মাঝেমধ্যে ভাবি যে হয়তো ব্যস্ততার জন্যেই পারেন না।তবে অনুরোধ করবো আগের মতো আবার পোস্ট করবেন আর কমেন্ট করবেন মাঝেমধ্যে। কারণ আপনার কমেন্টটা খুব মিস করি আমি।
আর এতো সুন্দর আয়োজন দেখে সত্যিই খুব বেশি ভালো লাগলো।ভালোবাসা থাকলে মানুষের জীবনে আসলে আর কি ই বা লাগে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সেই আনন্দই যথার্থ আনন্দ, যা দুঃখকে অতিক্রম করে আমাদের কাছে আসে। বৌদি আপনার বিয়ের আগে শুধু পায়েস খেয়ে জন্মদিন পালিত হতো কিন্তু বিয়ের পর দাদা আপনার জন্মদিন খুবই ধুমধামের সহিত পালন করে আসছেন,এটাই অনেক আনন্দের বিষয় যা হয়তো আপনি কখনোই কল্পনা করেন নি।স্বাগতা দিদি ও ছোট দাদা আপনার জন্মদিন টি খুবই সুন্দর করে পালন করেছেন এরকম ভালোবাসার মতো দুজন মানুষ যদি পাশে থাকে তাহলে বছরের প্রতিটি দিনই জন্মদিনের মতো আনন্দের হয়ে থাকে। সুন্দর এই ভুবনে সুন্দরতম জীবন হোক আপনার। পূরণ, হোক প্রতিটি স্বপ্ন, প্রতিটি আশা আপনার।বেঁচে থাকেন হাজার বছর -শুভ জন্মদিন বৌদি।❤️❤️❤️❤️🎂
এটা সত্যি যে আপনি অনেক ভাগ্যবতি এমন ভালো মনের একটা দাদা পেয়েছেন ৷ সেই সাথে একটা দেবর ৷ ছোট দাদা আর স্বাগতা দিদি মিলে তো দারুন আয়োজন করেছে৷
সত্যি বলতে এমন সুন্দর একটি পরিবার দেখে মুগ্ধ ৷ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি এমন পরিবারের সবার ভালোবাসা গুলো যেন চির অটুট থাকে ৷
বৌদি আপনি স্বাগতা দিদি সত্যি আগের জন্মে বোন ছিলেন ৷ তোমাদের চেহারা সত্যি অনেক মিল ৷ যা হোক সর্বোপরি বৌদি তোমার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ৷
এরকম সারপ্রাইজ পেতে তো সবারই অনেক ভালো লাগে।বৌদি আপনি নিশ্চয় অনেক খুশি এতো সারপ্রাইজ পেয়ে একদিকে দাদা,অন্যদিকে সাগতা দিদি এবং ব্ল্যাকস দাদা।সবাই আপনাকে অনেক ভালোবাসে।আর আপনার জন্মদিন দাদা কখনও ভুলেন না।আর ভুলবেই বা কেন দাদার তো একজনই প্রিয় মানুষ🥰।বেশ আনন্দ করেছেন আপনারা জন্মদিনের পার্টিতে।খুবই ভালো লেগেছে ব্লগটি ।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
বৌদি উপর ওয়ালা আপনাদের এই সম্পর্কের বাঁধন গুলো আরো মজবুত করুন এই দোয়া করছি। আশাকরি বিয়ের আগের কিছু কষ্টের অনুভূতি দাদা আর কাছের কিছু মানুষের ভালোবাসায় ভুলে যাবেন। এভাবেই যুগ যুগ ভালোবাসায় সিক্ত হোন এই কামনা করছি। আবারো জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিদায় নিলাম।
আপন মানুষের কাছ থেকে কোন কিছু হঠাৎ করে যদি পাওয়া যায় সেই পাওয়াটা আসলে তার অনুভূতি থাকে অন্যরকম। স্বাগতা দিদি আগের দিন রাত্রে সুন্দর করে একটি কেক সাজিয়ে রেখে আপনাকে সারপ্রাইজ দিয়েছে। মেয়েরা তখনই ভাগ্যবান হয় যখন একটা ভালো স্বামী এবং স্বামী বাড়িতে নিজের মায়ের মত মা বাবা ভাই বোন অনেকজন থাকে। আর এমন একটা পরিবারে গেলে বোঝাই যায় না যে সে শ্বশুরবাড়িতে না মায়ের বাড়িতে। যাহোক বৌদি আপনার জন্মদিনের শুভেচ্ছা রইল।
অনেক সুন্দর কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন দিদি ৷ আসলে এভাবে কেউ সারপ্রাইজ দিলে ভালোই লাগে ৷ স্বাগতা দিদি আর ব্ল্যাকস দাদার এমন সারপ্রাইজে আপনি যে ভীষণ খুশি হয়েছেন তা বোঝাই যাচ্ছে ৷ সবাই মিলে আপনার জন্মদিনে অনেক সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো ৷ আপনাদের জন্য ভালোবাসা এবং অনেক অনেক শুভ কামনা রইল দিদি ৷ ভালো থাকবেন
বৌদি বিয়ের আগে যতগুলো জন্মদিন আপনার পালন করা হয়নি তার সবগুলোই মনে হয় এভাবে সারপ্রাইজের মাধ্যমে একবারে পূরণ হয়ে যাচ্ছে। স্বাগতা দিয আগের দিন রাতে বেশ সুন্দর একটি কেক দিয়ে চমৎকার সারপ্রাইজ দিয়েছে আপনাকে। তাছাড়া পরের দিনের ডেকোরেশন আসলে চমৎকার হয়েছে এবং বৌদি আপনাকেও দেখতে খুব মিষ্টি লাগছে। আসলেই আপনি ভাগ্যবান যে এত সুন্দর শশুরর বাড়ির লোকজন এবং প্রিয় মানুষ পেয়েছেন। কজনের ভাগ্যে এমন জোটে। দোয়া করি আপনাদের এই ভালোবাসা এমনই অটুট থাকুক।
দিদি আপনি আপনার জন্মদিনের দিনটি খুব বেশি উপভোগ করেছেন আশাকরি।আমরাও করেছি। প্রিয় মানুষদেরকে নিয়ে অনেক আনন্দে থাকেন এটাই কামনা করি। সবাই সারপ্রাইজ দিলে বেশ ভালোই লাগে। আশাকরি ভাল থাকবেন, ভাল রাখবেন সবাইকে। ধন্যবাদ দিদি।