আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি অনেক অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম হাড় কিপটি নাটকের ১০৫ পর্বের মধ্য থেকে ৪১ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করার জন্য। আশা করি আমার এই রিভিউ পোস্ট আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে।

বাংলার বিখ্যাত হাড় কিপটে নাটকের ৪১ তম পর্বের শুরুতে আমরা লক্ষ্য করে দেখি, নজর আলী কৃপণের বড় ছেলের প্রেমিকা চুমকি একটি লুঙ্গি দিয়েছিল উপহার। কিন্তু সেই উপহারের লুঙ্গিটা তার মেজ ভাই তার থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। তার মেজ ভাই মনে করেছিল সে তার বাবার টাকা চুরি করে লুঙ্গি কিনে বাড়ি ফিরছে। কিন্তু কিছুতেই শুনতে চাইলো না তার বড় ভাইয়ের মুখের কথা। এজন্য বেশ কষ্ট পেয়েছে, পরবর্তীতে এই কথা সে কাকে বলবে। বিষয়টা তার প্রেমিকাকে জানানো হলো। কিন্তু প্রেমিকা তাকে বেশ সুন্দর সাহসী মন মানসিকতা সৃষ্টি করল বিভিন্নভাবে কথা বলে। কারণ না জেনে না বুঝে তার ছোট ভাই হয়ে কিভাবে হাত থেকে লুঙ্গিটা ছিনিয়ে নিল। নজর আলী কৃপণের বড় ছেলে ফজর তার প্রেমিকার কথায় বেশ সাহস পেল।

নজর আলী কৃপণের স্ত্রী ছোট ছেলের বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে গিয়েছিল জব্বার আলীর বাড়িতে। কিন্তু বিষয়টা সে তার স্বামীর সাথে শেয়ার করে নাই এইজন্য নজর আলী স্ত্রীর প্রতি রেগে রয়েছে। এত করে জানার পর যখন সে সত্যি বিষয়ে উদঘাটন করতে পারলো এতে যেন আরো রাগ ও ক্ষোভ তার স্ত্রীর উপর। কারণ নজর আলী কৃপণ তো কখনো চায় না তার ছেলেদের বিয়ে দিবে। কিন্তু এখন দেখা যায় আগের চেয়ে কমলাবানুর বেশ উন্নতি হয়েছে মুখের কথায়। সে তার স্বামীর মুখে মুখে জবাব দেওয়া শুরু করেছে।

এদিকে শিবানীর মুখ দেখতে এসে পাত্রপক্ষ শিবানীর মুখ দেখায় ৩০০ টাকা দিয়েছিল। সেই টাকাকে কেন্দ্র করে শিবানী এবং তার বাবার মধ্যে একটু মনোদণ্ড সৃষ্টি হয়ে রয়েছে অনেক দিন। শিবানির মামা শিবানীকে ফস দিয়ে রেখেছে এ টাকা তো সেবানির তার বাবাকে দেওয়া যাবে না। মামাদের এ কথা শুনে বড়লোক লেগে রয়েছে শিবানীর কথা তো ঠিক এ টাকা বাবাকে কেন সে দেবে। কিন্তু শিবানীর বাবার সব সময় টাকাটা পাওয়ার জন্য মেয়েকে সুন্দরভাবে বোঝাতে থাকে এমনকি শাসাতে থাকে। আর এভাবেই দিন নেই রাত নেই যে কোন মুহূর্তেই বাপ মেয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি সৃষ্টি হয়।

নজর আলী কৃপণের বড় ছেলে লুঙ্গির বিষয়ে বাবার কাছে নালিশ দিতে এসেছে। কারণ ও বিষয় সম্পূর্ণ খুলে বলল বাবার কাছে। কিন্তু দেখা গেল নজর আলী কৃপণ তার মেজো ছেলের কর্মকাণ্ডের দিকেই সাপোর্ট করছে। নজর আলী কৃপণ চাইলে তার টাকা চেক করে দেখতে পারে কিন্তু সেটাও করল না বরঞ্চ উল্টা বড় ছেলেকেই ধামকাচ্ছে কে এমন আছে তাকে লুঙ্গি উপহার দেবে। সে মনে হয় তার বাবার কাছে মিথ্যা বলছে। আর এভাবেই কৃপণ তার বড় ছেলের কথা আমলে নিল না,বলল পরবর্তীতে দেখা যাবে।

নজর আলী কৃপণতার স্ত্রীর প্রতি বেশ রেগে রয়েছে এজন্য রাতে ভাত খায়নি। তার স্ত্রীর তাকে খোশান্তি করেছিল ভাত খাওয়ার জন্য কিন্তু কিছুতেই লাইনে আসেন নাই। সারারাত না খাওয়া পেট জলে রয়েছে। সকালে উঠেই স্ত্রীর প্রতি চড়াও হয়ে রয়েছে। কিন্তু কোন কিছুতেই তার স্ত্রী যেন কর্ণপাত করছে না। তার স্ত্রী যখন রান্নাবান্না করার জন্য রেডি হচ্ছেন উনিও তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করার চেষ্টা করছেন বিভিন্ন বিষয় তুলে। পরবর্তীতে তার স্ত্রী বেশ কয়েকটা জবাব দেওয়াই নজর আলী কৃপন রেগে থেমে রইল। সে আজকে ভাত রান্না বন্ধ করতে বলায় স্ত্রী যেন বলল তার কথা কে কান দিচ্ছে। নজর আলী কৃপণ যতই বলুক তার কথার কোন মূল্য নেই এখন বউয়ের কাছে।

এদিকে হারাধন দত্ত কথায় কথায় তার কুটুমদের বদ করতে চাই। চুমকি এসেছিল হারাধন তত্ত্বের বাড়িতে শিবানীকে একটু সাজাবে বলে। ঠিক ওই মুহূর্তে তারা লক্ষ্য করল হারাধন দত্তের ছোট কুটুম তাকে কোলে করে তুলে নিয়ে আসতে ঘরে আটকে রাখবে বলে। বিষয়টা চুমকি আর শিবানী দেখল। এরপর বেশ কথা কাটাকাটি হল, বুঝতে পারল শিবানীর সেই টাকার জন্যই এত কিছু চলছে। এদিকে যখন তখন হারাধন দত্তকে পাগল সাব্যস্ত করা হচ্ছে এতে হারাধন দত্ত আরো ক্ষেপে উঠছে। কিন্তু হারাধন দত্তের কিছুই করার নেই এই মুহূর্তে যে কোন সময় দুই কুটুম তাকে ঘরে বন্দী করে দিতে পারে। আর দিনে দিনে যেন শিবানী আগের মতো তার বাবার প্রতি ভক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, মুখ দেখার সেই টাকাটা নিজের করে রাখার লোভে। আর এভাবেই দুই কৃপণের বাড়িতে কাহিনী চলছে অবিরত।

হাড় কিপটে নাটকের প্রত্যেকটা পর্বে যেন নতুন নতুন ভাবে দুই কৃপণের বাড়িতে যন্ত্রণা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে দুই কৃপণের সমস্যা বেশি। তাদের ছেলেরা তাদের অনুকূলে নেই। নজর আলী কৃপণের বাড়িতে সমস্যা স্ত্রী দিন দিন তার কথার অবাধ্য হয়ে চলছে। হারাধন দত্তের বাড়িতে সমস্যা শিবানীর মুখ দেখার টাকাটা কেন শিবানী তার বাবাকে দিচ্ছেনা। সে ভালো করে বুঝতে পারছে শিবানী তার মামাদের কথাই বেশ মেতে উঠেছে এবং বাবাকে অবহেলা করছে। আর এই সমস্ত সমস্যাগুলো দুই কৃপণকে দিন দিন যেন আরও বিচলিত করছে। এদিকে শিবানীর দুই মামা চেয়ে রয়েছে গোল্লার দিকে। গোল্লা নতুন কি আইডিয়া দেয় সে মোতাবেক কাজ করবে। তাই বলতে গেলে কৃপণ দুইজন তাদের অভিনয়ের দিক থেকে বেশ দারুণ অভিনয় করে চলেছে। যেন এ নাটকের মধ্যমণি দুই কৃপণ। কারণ তাদেরকে রাগানো গোল্লা ভূপেন এদের কাজ। আর এখানে নাটকের মেন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। তাই সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি বলতে পারি অসাধারণ অভিনয় করে থাকেন দুই কৃপণ।