হাই বন্ধুরা!
কেমন আছেন সবাই? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। ভ্রমণ করতে কার না ভালো লাগে। তবে ভ্রমণের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার অভিজ্ঞতা। আবারও সাতক্ষীরা ভ্রমন নিয়ে উপস্থিত হলাম। এই পোষ্টের মাঝে আপনারা জানতে পারবেন আমার সাতক্ষীরা ভ্রমণের বিশেষ কিছু মুহূর্ত।

সাতক্ষীরা শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে কিছুটা পূর্বে হোটেল টাইগার প্লাজা। আমরা পরীক্ষার উদ্দেশ্যে যখন সাতক্ষীরায় উপস্থিত হয়েছিলাম ২২ শে মার্চ ২০২৩, রাত তখন নয়টা বেজে গেছিল। রাত পোহালেই সকাল নয়টার সময় পরীক্ষা। আমরা যেই হোটেলটা বুকিং করেছিলাম তার নাম হোটেল হাসান। আমাদের পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় বা কোন কারণে কেন জানি আমাদের সিট হারিয়ে গেছিল। যেহেতু আমরা ২৫ জন পরীক্ষার্থী মেহেরপুর থেকে গিয়েছিলাম। এদিকে আমাদের এক বড় ভাইয়ের দুইটা গেস্ট বাইরে থেকে পরীক্ষা দিতে আসছে এমন দুইটা সিট লাগবে। তাদের ম্যানেজ করে দেওয়ার জন্য হয়তো আমাদের সিট হারিয়ে গেছিল। তাই উল্টাপাল্টা বলে আমাদের বুঝানোর চিন্তা। যাইহোক সে কথা বাদ রাখি। রাত নয়টার সময় দীর্ঘ পথ জার্নি করে উপস্থিত হয়ে বেশ ক্লান্ত বোধ করছিলাম। এরপর যদি বুকিং করা হোটেলে সিট না পাই কেমনটা লাগে। কোথায় মেহেরপুর আর কোথায় সাতক্ষীরা। তিন বন্ধু রাস্তায় ঘুরতে থাকলাম, কোন হোটেলে রুম খালি আছে সে আশায়। অবশেষে হোটেল হাসান থেকে দেড় দুই কিলো দূরে হোটেল টাইগার প্লাজায় সিট পেলাম। তিন বন্ধু এক রাত বারোশো টাকা। এটা বড় বিষয় ছিল না, মাথা গোজার ঠাই তো পেলাম। এরপরের দিন সকালেই জানতে পারলাম আমাদের সেই সিট খালি হয়েছে সবাই এক হোটেলে থাকতে পারলে ভালো হয়, তাই পরীক্ষা শেষ করে দুপুর টাইমে টাইগার হোটেলে টাকা পরিশোধ করে বের হয়ে পড়লাম হোটেল হাসানের উদ্দেশ্যে।


আমার দুই বন্ধু খুব দ্রুত হাঁটছে এবং কি জানি বলাবলি করছে। আমি ওদের মতো দ্রুত তখন হাঁটতে পারছিলাম না খুব অস্বস্তি বোধ করছিলাম। কারণ রোদ গরমে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করা বেশ ট্রাফ ব্যাপার। তবে তারা হোটেলে থাকতে বলাবলি করেছিল হোটেল হাসানে যাওয়ার মাঝ পথে একটি ভাল মধুর দোকান রয়েছে। সে দোকান থেকে মধু কিনবে। দোকানটা নাকি এই শহরের নামকরা একটি খাঁটি মধুর দোকান। তখনই বুঝতে পারলাম হয়তো এই নিয়ে আলোচনা করতে করতে দ্রুত হাঁটছে।


আমার ধারনা ঠিক হলো। তারা বারবার পিছু তাকাচ্ছে এবং আমাকে ইশারা করে তাদের অনুসরণ করতে বুঝাচ্ছে। আমি একটু বেশি পিছু হয়ে যাচ্ছিলাম এজন্য মাঝেমধ্যে ফটো ধারণ করছি। যাইহোক দোকানের মধ্যে উপস্থিত হলো। দেখলাম মধুসহ বিভিন্ন প্রকার বাদামের মিশ্রণে যেই মিক্সড ড্রাইট ফ্রুট পাওয়া যায় সেগুলা দেখাদেখি করছে। এখানে সুন্দরবনের খাঁটি মধু পাওয়া যায় তাই এর দাম একটু বেশি। আর খাঁটি মধু শরীরের জন্য বেশ উপকার সেটা আমরা সকলেই জানি।



এরপর দেখলাম আমার বন্ধু দুজন দামাদামি করে মধু আর এর মিক্স ফ্রুট কিনলো। আমার কাছে তখন বেশ ৪-৫ হাজার টাকা ছিল তবে আমি একটা বিষয়ে বেশি সজাগ থাকার চেষ্টা করি। এসেছি পরীক্ষা দিতে, একটি পরীক্ষা এখনো বাকি রয়েছে। এদিকে রাতে হোটেলে থাকতে হবে, খাবারের বিষয়, গাড়ি ভাড়ার বিষয় সবকিছু চিন্তা করে দেখলাম আজকে না কিনে আগামীকাল নিলে সমস্যা কি? টাকাটা হাতে থাকলেই তো ভালো। বন্ধুরা আমাকে বোঝালো এইদিকে তো আর আসা হবে না। যেহেতু আমরা চলে যাচ্ছি সাতক্ষীরা সদর হসপিটালের নিকটে। তখন আমি বললাম এত জরুরী মনে করছি না এসব কেনার। তারপর বন্ধুরা দুইজন কেনাকাটা করল। তাদের হিসাব পাক্কা। বাড়ি পৌঁছাতে কোন সমস্যা হবে না সব খরচ বাদ রেখে।



এরপর আমরা গাড়িতে চড়ে কাঙ্খিত হোটেলে আসলাম। জানতে পারলাম আমাদের সিট খালি হয়নি। বেশ হয়রানি হয়ে এসেছি। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলাম। আবারও আমাদের আলাদা হোটেল খুঁজে নিতে বলা হলো। নিকটে দুইটা হোটেলে গিয়েছি কিন্তু বলল একটি রুমের মধ্যে তিনজন মানুষ এলাও না। এরপর আরেকটি হোটেলে একটা রুম পেলাম, সিঙ্গেল রুমে তিনজনকে থাকতে হবে। খরচ ১২০০ টাকা। যেখানে একজন থাকায় বড় কষ্টকর। আবার থাকতে হবে ফ্লোরে। কথাগুলো শুনে আমার শরীর এতটাই জ্বলতে থাকলো। বন্ধুরা টাকা খরচ করে ফেলেছে হিসাব করে দেখছে তাদের গায়ে বেধে যাবে বাড়ি পৌঁছাতে। ভাগ্যেস আমি টাকা খরচ করিনি। তখন আমার কাছে ডলার ছিল না, স্টিম ছিল না। আমি টাকা খরচ করলে তখন কি হতো উপরওয়ালা জানে। বাড়িতে বলা লাগতো টাকা দিতে হবে। হয়তো এর জন্য বড় কথা শুনতে হতো। এরপর দুই বন্ধুকে বললাম তোমরা দুজন আমাকে গোপন করে খুব সুন্দর আলোচনা করেছো। তার ফলস্বরূপ এই অবস্থা। যেখানে ছিলাম রাজার হালে ছিলাম, বেশ শান্তিতেও ছিলাম। দ্রুত জায়গা মত চলো নায় সেখানেও সিট হারাতে হবে। তবে আর কি করার আবারও চলে এলাম হোটেল টাইগার প্লাজায়। আমাদের সেই গত রাতের রুমটা ঠিকই পেয়ে গেলাম।


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

ব্লগার | sumon09 |
ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | satkhira |
ক্যামেরা | 50mp |
দেশ | বাংলাদেশ |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকবেন সবাই। সকলের জন্য শুভকামনা রইল,আল্লাহ হাফেজ। |

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
যে গরম পড়তেছে ভাই, সত্য কথা বলতে বেশি হয়রানির শিকার। আপনারা মেহেরপুর থেকে গিয়েছিলেন ২৫ জন শিক্ষার্থী বেশ সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন।
হ্যাঁ ভাই বন্ধুরা পাশে থাকলে ভালো লাগার মুহূর্ত থাকে
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য সাতক্ষীরা ভ্রমণ । আসলে ভাইজান গরমের মুহূর্তে কোথাও ভ্রমণ করে ভালো লাগেনা। যে কারণে যদি ভ্রমণ করেছেন তার পরেও এই গরমে অনেক হয়রানি শিকার হতে হয়েছে। আর সেখান থেকে ফটোগ্রাফির সাথে খুব সুন্দর উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাই ঠিক বলেছেন
আপনার বন্ধু মধু আর এর মিক্স ফ্রুট কিনলো আপনার কাছে ৪-৫ হাজার টাকা থাকার কারণে আপনি কিনলেন না ঠিকই ভাইয়া এরকম সচেতন থাকাই ভালো ।কোথাও গেলে টাকা ফুরিয়ে ফেললে তখন চলতে অনেক সমস্যা হয়ে যায় ।ধন্যবাদ ভাইয়া সাতক্ষীরার কিছু ভ্রমণের মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ এজন্যই তো আমি আর কিনছিলাম না
আপনি তো দেখি পরীক্ষা দিতে এসে বড় এক বিপদের সম্মুখীন হলেন। আসলে এত দূর থেকে অন্য একটা জায়গায় পরীক্ষা দিতে এসে যদি বুকিং করার হোটেলের সিট আপনি না পান তাহলে এতে তো একদিক থেকে মাথা গরম হবে। যাইহোক আপনি খোঁজাখুঁজি করে অন্য একটা হোটেলে সিট পেয়েছেন জেনে খুব খুশি হলাম। আর এই গরমের সময় মনের মতো জায়গায় থাকতে না পারলে খারাপ লাগে। যাইহোক আমার মনে হয় আপনার এই পরীক্ষাটি অনেক ভালো হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার এই পরীক্ষা দেওয়ার পুরো বিষয়টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া রেজাল্ট ভালো হয়েছে
দিন যত যাচ্ছে তাপমাত্রা তথায় বৃদ্ধি পাচ্ছে এ প্রচন্ড গরমে মানুষের জীবন দুঃসহ হয়ে পড়ছে। আপনি সাতক্ষীরা ভ্রমণ করতে গিয়েছিলেন। সাতক্ষীরা ভ্রমণের সময় সাতক্ষীরার বেশকিছু স্থান এর ফটোগ্রাফি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনি সবসময় সজাগ থাকেন এই বিষয়টা জেনে খুবই ভালো লাগলো বলা যায় না বিপদ কখন কোন দিক থেকে আসে। আর কখন কোন জিনিসটা কাজে লেগে যায়।
হ্যাঁ এজন্য তো আমি বাজে খরচ করি নাই
আগেই ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনি অনেক বুদ্ধিমানের কাজ করেছেন।
সাতক্ষীরা ভ্রমন করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ তবে সেখানে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন শুনে খুব খারাপ লাগলো৷ আসলে এই গরমের মধ্যে যদি কোন হোটেলে সিট পাওয়া না যায় তখন মাথা এমনিতে অনেক গরম হয়ে যায়৷ আপনাদের বুকিং করা হোটেলে আপনারা জায়গা পাননি৷ পরবর্তীতে আপনারা অন্য একটি হোটেলে সিট পেয়েছেন৷ আসলে এরকম ঘটনা ঘটলে নিজের মাথা কোনভাবেই ঠিক থাকে না এবং এরকম ঘটনা নিজের মন মানসিকতাকেও অনেকটাই পরিবর্তন করে ফেলে৷
হ্যাঁ ভাই বেশ হয়রানের শিকার হয়েছিলাম তবে