পুনর্মিলনী||২০১৬ ব্যাচ
কথায় আছে ছাত্রজীবন মধুর জীবন যদি না থাকত এক্সামিনেশন।কথাটা খুব খাটি। যদিও বর্তমানে কথা টা খাটে না। বর্তমানে ছাত্রজীবনেও শান্তি নাই,অসুস্থ প্রতিযোগীতা সব দিকে৷ তবে আমাদের সময় এতটা ছিল না,তাই আমরা শান্তিতে জীবন কাটাতে পেরেছি। আমার ছাত্রজীবন এখনো চলছে। বর্তমানে ভার্সিটিতে আছি৷ তবে আমার বেস্ট সময়টা কেটেছে হাইস্কুল এ। আমাদের হাইস্কুল এর নাম গোবিন্দগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়।তবে এই নাম সাম্প্রতিক কালে দেওয়া হয়েছে। আমরা যখন স্কুলে পড়তাম তখন স্কুলের নাম ছিল গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়। আমাদের স্কুল খাতা কলমে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১২ সালে। তবে প্রকৃতপক্ষে এটি আরো অনেক আগে প্রতিষ্ঠিত। একটি মজার কথা বলি,আমার বাবা এবং ঠাকুরদাদাও এই স্কুলেরই ছাত্র। এমনকি আমার ছোট বোন বিন্দুও এই স্কুল থেকেই মাধ্যমিকের পড়াশুনা শেষ করেছে। আমাদের স্কুলের বর্তমান বয়স ১১২ বছর। অত্র এলাকার মাঝে গোবিন্দগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় বেশ প্রসিদ্ধ। অনেক দূরে দুরে থেকে ছাত্রছাত্রীরা এখানে আসে পড়তে। তবে স্কুল সরকারি হবার পর অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। আগে তিনটি শাখা থাকত ক,খ, গ।প্রতি শাখায় ছাত্র সংখ্যা ১২০জন করে। আমরা তিন শাখা মিলে ভর্তি হয়েছিলাম ৩০৩জন। এবং মাধ্যমিকে পরীক্ষায় বসলাম ২৭০জন।আমাদের মাধ্যমিকের ব্যাচ হল ২০১৬। অর্থাৎ আমরা ২০১৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছি।অন্যান্য জায়গায় কি হয় জানিনা,তবে আমাদের হাইস্কুলে ব্যাচ টা খুবি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবছর ব্যাচ ভিত্তিক ক্রিকেট ফুটবল লীগ ছাড়া হয়,সেই সাথে বানানো হয় জার্সি। বেশ প্রতিযোগীতা চলতে থাকে সব ব্যাচের মাঝেই। আমাদের খেলার আপডেট তো জানিয়েছিই। ফুটবলে প্রথম ম্যাচেই আর ক্রিকেটে দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে গেছি। তবে এটাই শেষ না।এরপর ছিল আমাদের পুনর্মিলনী। এখন পুনর্মিলনী কি তা তো আপনাদের বলতে হবে না। প্রতিবছর রমজান মাসেই আমাদের পুনর্মিলনী হয়। এবারো প্রতিবারের ন্যায় পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছিল। যেহেতু রোজা মাস। তাই সময় নির্ধারণ করা হয় ইফতারের সময়। বিকাল থেকে ইফতারের আগে পর্যন্ত সবাই গল্পগুজব ও আড্ডা দিয়ে একসাথে ইফতার করা হবে। সেই মত আমরাও চারটার দিকে হাজির হলাম মাঠে। এরপর সবাই মিলে আড্ডা চলল। সারাবছর প্রায় অধিকাংশের সাথেই দেখা হয়না। তাই অনেক গল্প কথা জমা থাকে। সেগুলো শেয়ার করতে করতেই ইফতারের সময় হয়ে গেল।এরপর সবাই মিলে মাঠের মধ্যে গোল হয়ে বসে গেলাম।কয়েকজন পরিবেশন শুরু করে দিল। প্যাকেট এর ব্যবস্থা না করে আমরা রান্না করেছিলাম নিজেরা। পরিবেশন শেষ হবার পর আমাদের মৃত বন্ধুদের আত্মার শান্তি কামনা করা হল,এবং সবার মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করা হল। তারপর অপেক্ষার পালা। একটুক্ষণ অপেক্ষার পর আজান দিলে সবাই মিলে খাওয়াদাওয়া শুরু করলাম সবাই। সেই ফাকে ফাকে একে অন্যের সাথে মজা তো চলছিলই। খাওয়া দাওয়ার পরেও অনেকক্ষণ আড্ডা চলল।তারপর তারাবীর নামাজের সময় হওয়ায় সবাই বাড়ি চলে আসলাম। তবে এই যে সবার সাথে দেখা হল অনেক দিন পর, সবার হাল হকিকত জানা হল, অনেক ভাল লাগল এতে। এই আনন্দের মুহুর্ত গুলো জীবনে খুবই দরকার। আর এই মুহুর্ত গুলো উপভোগ করা দরকার৷ জীবনে যখন পেইন আসে তখন এই মুহুর্তগুলোই মনকে শক্ত রাখে।
|
---|
টুইটার লিংক
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আরে বাহ! এ তো তাহলে তোমাদের বংশ পরম্পরাময় স্কুল!!বেশ দারুণ বিষয়! আর পুরাতন বন্ধুরা এমন উৎসব মুখর পরিবেশে একত্রিত হলে দারুণ মজা হবে, এতো জানা কথাই। ভালো লাগলো যে তোমাদের পুণর্মিলনী তে তোমরা নিজেরাই রান্না করেছো। সব মিলিয়ে দারুণ একটা সময় কাটিয়েছো মানতেই হবে।
আমরাও তো ২০১৬ এর ব্যাচ গতকাল ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলাম। সবাই মিলে দারুন সময় উপভোগ করেছি । বাহ ভালো লাগলো আপনিও ২০১৬ সালের ব্যাচ। বন্ধুদের সাথে দারুন সময় উপভোগ করেছেন । আমাদের সাথে সেই মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
বাহ আপনিও তো আমার ব্যাচে। ভাল লাগল জেনে।
ছাত্র জীবনে পরীক্ষা না থাকলে আসলেই বেশ মজার ব্যাপার হতো ভাই। হা হা হা... 🤭🤭তবে আপনারা ক্রিকেট এবং ফুটবল ম্যাচে হারলে কি হবে, সমস্ত বন্ধুদের সাথে যে আপনার আবার পুনর্মিলন হয়েছে, এটাই তো সব থেকে আনন্দের বিষয়। তাছাড়া আপনারা বন্ধুরা মিলে সবাই একসাথে বসে ইফতার করেছেন, সেটা দেখেও অনেক বেশি ভালো লাগছে।