নীলাক্ষীর সফলতা উদযাপন|পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ8 months ago
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব সুন্দর কিছু উদযাপনের মুহুর্ত।

ছাত্র অবস্থায় আমি বেশ দুষ্ট ছিলাম,পড়াশোনা মোটেই করি নি। ফলে স্যার দের বকাঝকা নিয়মিত রুটিন করে খেতে হত। অনেকেই তো আবার বাড়িতে ফোন দিত। তখন বাড়ি থেকেও বকা খেতে হত। তখন মনে মনে বলতাম, আমার পড়া হোক আর না হোক তাতে স্যারের কি আসে যায়? স্যার তো বেতন পেলেই মিটে গেল।তখন মনে হয় বিধাতা আড়াল থেকে আমার কথা শুনছিল আর মিটমিট করে হাসছিল।

এরপর অনেক শিক্ষাবর্ষ পার হয়ে গেছে।কালের বিবর্তনে আমি টেবিলের ওপাশে থেকে এপাশে চলে এসেছি।এখন স্যারের জায়গায় আমি,আমার জায়গায় আরেকজন। টেবিলের এপাশে এসে বুঝতে পারি স্যারেরা কেন এত বকা দিত? কি স্বার্থ ছিল তার। শিক্ষকতাই সম্ভবত এমন একটি পেশা যেখানে আপনি অন্যের সন্তানের সফলতায় হাসবেন, অন্যের সন্তানের ব্যর্থতায় কষ্ট পাবেন।

যাই হোক,আপনারা অনেকেই জানেন আমি আমাদের কমিউনিটির সম্মানীত সদস্য বৃষ্টি চাকি কাকিমার দুই মেয়েকে টিউশন করাই। ছোট জনের নাম নীলাক্ষী। নীলাক্ষী মূলত আমার গেস্ট স্টুডেন্ট।বেশ কিছুদিন আগে কাকিমা জানালো ওকে আলোহা তে ভর্তি করে দিবে। আমি আলোহার বিষয়ে জানতাম না।কাকিমার থেকে বিস্তারিত শুনে বললাম দিতে পারেন।

এরপর দেখতাম ও অ্যাবাকাস দিয়ে প্রায়ই অংক চর্চা করছে। বিষয়টা অনেক ইন্টারেস্টিং।আমি ওর থেকে কয়েকবার শেখার চেষ্টা করেছি।কিন্তু বিশ্বাস করুন,আমি মাথাতেই ঢুকাতে পারি নি। তাই ক্ষান্ত দিয়েছি। কিছুদিন আগে কাকিমা বলল ওর একটা ফর্ম পূরণে হেল্প করতে। তখন জানতে পারলাম ওদের ন্যাশনাল লেভেল এ কম্পিটিশন হবে। তবে কম্পিটিশন এমন সময়ে যে তখন আবার ঐশীর পরীক্ষা শুরু।

তবে কাকিমার সন্তান স্নেহ ও তাদের প্রতি দায়িত্ববোধ প্রবল,উনি নীলাক্ষী কে কাকাবাবুর সাথে আগের দিন পাঠিয়ে দিয়ে, পরের দিন ঐশীকে পরীক্ষা হলে রেখে ঢাকা যান। পরের দিন আবার নীলাক্ষীকে নিয়ে ছোটাছুটি।নীলাক্ষীর পরীক্ষা কেমন হয় সেটা নিয়ে আমিও খুব চিন্তিত ছিলাম। কেননা ও পর্যাপ্ত সময় পায় নি প্রস্তুতি নেওয়ার। এত স্বল্প প্রস্তুতিতে ওত বড় লেভেলে গেলে ঘাবড়ে যাওয়া স্বাভাবিক।

ওর পরীক্ষা লাইভে দেখাচ্ছিল,সেখানে দেখলাম বাচ্চারা কত দ্রুত সমাধান করছে। তাই চিন্তা আরো বেড়ে গেল। পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা বিকেলে। এই পুরা সময় অনেক চিন্তায় কেটেছে,অবশেষে বিকেলে ঐশী ফোন দিয়ে জানালো নীলাক্ষী বিজয়ী হিসেবে মনোনীত হয়েছে। আমি তো খুশিতে লাফাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিল যেন আমিই বিজয়ী অনেক খুশি হয়েছিলাম সেদিন।

আজকের পর্ব এপর্যন্তই।বাকি অংশ আগামী পর্বে। ধন্যবাদ সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 8 months ago 

প্রথমেই বৃষ্টিচাকী আপুর মেয়েকে এত বড় একটা সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানাই। তার সাথে সাথে শিক্ষক হিসেবে আপনাকেও অভিনন্দন জানাই। নিঃসন্দেহে এটা অনেক বড় একটা সাফল্য ছিল। আমি তার উত্তম ভবিষ্যৎ কামনা করছি। শিক্ষক নিয়ে আপনি যে কথাগুলো উপস্থাপন করেছেন তার সাথে আমি সহমত পোষণ করছি।
সত্যি বলতে শিক্ষকদের উপর এরকম রাগ অভিমান এক সময়ে আমারও হতো, হয়তো তখন আমাদের অবস্থান থেকে আমরা ঠিক ছিলাম কিন্তু সত্যিই শিক্ষকরা ঠিক তাদের অবস্থান থেকে ঠিক ছিলেন।
যাইহোক তার এই অসাধারণ সাফল্য আপনারা কিভাবে উদযাপন করলেন তা আশা করছি পরবর্তী পর্বে দেখতে পাবো। অনেক ধন্যবাদ ভাই অসাধারণ একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া। ছাত্র শিক্ষক এর এমন মনোভাব থেকেই যাবে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago (edited)

নীলাক্ষী বিজয়ী হয়েছে অভিনন্দন বিষয়টি জেনে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। সত্যি বলতে আপনার লেখা অনুভূতি গুলো পরেও আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো। নীলাক্ষী জন্য অনেক দোয়া ও শুভ কামনা রইল ❣️

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

ভাইয়া ঐশী বিজয়ী হয়নি, নীলাক্ষী বিজয়ী হয়েছে।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

ওকে ভাইয়া ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

আমিও সত্যি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে নীলাক্ষীএত অল্প সময়ে বিজয়ী হতে পারবে। তবে ওকে বিদায় দেওয়ার সময় কেন যেন মনটার মধ্যে বলে উঠছিল বারবার যে ও পারবে। ওর এই বিষয়টা সত্যি আমাদের জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া বলে আমি মনে করি। এত অল্প সময়ে যে ও পুরোটা মেকআপ করতে পারবে আমি বুঝতে পারিনি
সেদিনের সেই বিজয়ী হওয়ার কথা শুনে আমার গায়ের লোম যেন দাঁড়িয়ে যাচ্ছিল সত্যি মনে হচ্ছিল যেন আমার সন্তান কোথাও বিজয়ী হয়েছে।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন।ওর উপর বিশ্বাস ছিল,কিন্তু তারপরেও বিষয়টা বেশ অভাবনীয়। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

সনয়ের পরিবর্তনে মানুষ অনেক কিছুই নিজে নিজেই জেনে যায়। ছোটবেলায় শিক্ষকদের নিয়ে যে ভাবনাগুলো কাজ করতো, এখন নিজে শিক্ষক হয়ে সেগুলো নিজেই অনুধাবন করতে পারছো। আর নীলাক্ষী তো ভীষণ গুণী মেয়ে! দরকারি বিষয়গুলোতে বেশ সিরিয়াসও বটে! তবুও, মাত্র ৩ মাসের সময়েই এমন দেশব্যাপী একটি প্রতিযোগিতায়, যেখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ! এমন প্রতিযোগিতায় বিজয় লাভ করা চাট্টীখানি কথা তো না! আমরা সকলেই ওর এই এচিভমেন্ট এ গর্বিত! ওর জন্য শুভকামনা নিরন্তর! 😍😍

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

আমিও সেদিন লাইভ প্রোগ্রামটির কিছু অংশ দেখেছিলাম। তবে বৃষ্টি চাকী বৌদি যেভাবে দুটো মেয়ের জন্য কষ্ট করে যাচেছ তার ফলে ভালো কিছু আসবে এটাই কিন্তু স্বাভাবিক। আর নিলাক্ষীর সফলতায় আমরাও গর্বিত। আগামী সময় গুলো আরও ভালো কাটুক এমন আশাই করি। ধন্যবাদ সুন্দর করে নিজের অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 8 months ago 

গতকাল বৃষ্টি চাকি দিদির পোস্ট পড়ে এই সম্পর্কে জানতে পেরেছিলাম। তবে একটা কথা মানতেই হয়, শিক্ষক হিসেবে আপনি নিজেও কিন্তু সফল। আপনার স্টুডেন্ট যেহেতু এত ভালো একটা সফলতা পেয়েছে। আসলে ভাই সময়ের সাথে সাথে আমাদের চিন্তা চেতনারও বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে। তখন আমরা বুঝতে পারি যে, একটা সময় আমরা কত ভুল করেছি বা কোনটা করা আমাদের উচিত হয়নি।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76553.02
ETH 3040.86
USDT 1.00
SBD 2.64