ছাত্রীর পরীক্ষা ও ষষ্ঠীর ঘোরাঘুরি-২
ঐশীকে পরীক্ষার হলে ঢুকিয়ে দিয়ে আমরা সবাই মিলে বাইরে অপেক্ষা করতে লাগলাম।এর মাঝে অবশ্য সব গার্জিয়ানদের ডেকে নিয়ে গেল, কারন পরীক্ষার্থীদের জন্য উদ্ভাস এর একটি কোর্স চালু আছে। প্রস্তুতি যাচাই এর জন্য পরীক্ষা নেবে এই কোর্সে। সেটা সম্পর্কে জানাতেই সব গার্জিয়ান দের নিয়ে গেল।তখন বুঝলাম এই ফ্রি পরীক্ষা আসলে বড় ধরনের একটা মার্কেটিং।কারন অধিকাংশ অভিভাবকরাই তাদের সন্তানদের ভর্তি করিয়ে দিল।
পরীক্ষার সময় ছিল একঘন্টা। তাই খুব বেশি অপেক্ষা যে করতে হয়েছে তা বলা যায় না। এর মাঝে অর্থি বলল সে পার্কে যাবে।বগুড়া বেশ বড় একটি পার্ক রয়েছে সাত মাথার বেশ কাছেই। খুব জমজমাট কোন রাইড না থাকলেও পার্কের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেশ নয়নাভিরাম।এছাড়া দোলনা,স্লাইড,সি-স আছে। আগের দিন ওর সাথে এসব গল্প করেছিলাম।ও সেটা মনে রেখেছে আর অপনারা তো জানেনই বাচ্চারা অপেক্ষা করতে পছন্দ করে না।তাই ও বলতে লাগল সে পার্কে যাবে।
তখন কাকিমা ওকে নিয়ে ঘুরে আসতে বলল।পার্ক বেশি দূরে নয়,একটি রিকশা নিয়ে চলে গেলাম পার্কে। অর্থি বেশ খুশি হল পার্ক দেখে। পার্কটি বিনোদন এর জন্য তৈরি করা হলেও পার্কটি সকাল বেলা স্বাস্থ সচেতন মানুষদের দখলে থাকে। কেউ জগিং করছে তো কেউ ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ। প্রথমেই ওকে নিয়ে গেলাম বাচ্চাদের জন্য নির্দিষ্ট জোনে।সেখান দোলনা,স্লাইড সহ আরো কয়েকটি খেলনা রয়েছে। সেখানে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পর পুরো পার্ক টি ঘুরানোর জন্য বের হলাম।
আমি বুঝতেছিলাম ও যেমন পার্ক আশা করেছে পার্কটি তেমন নয়। ফলে একটু হতাশ হলো। তখন ও বলছিল স্যার চলেন যাই।আমিও বেশি জোরাজুরি করলাম না। রিক্সা নিয়ে আবার উদ্ভাস-উন্মেষ এর সামনে চলে আসলাম।কিন্তু গিয়ে দেখি কাকিমা সেখানে নেই। ফোন দিয়ে জানতে পারলাম উনাদের একটি কনফারেন্স এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি সেখানে অর্থি কেও দিয়ে এসে বাইরে অপেক্ষা করলাম।এর ২০মিনিট পর কাকিমা বাইরে এলে জানতে চাইলাম কি বলল ওরা। তখন কাকিমা বলল, "এখানে ভর্তি না হলে স্টুডেন্ট খারাপ রেজাল্ট করবে,তাই ভর্তি করে দেওয়াই একমাত্র উপায় ভাল রেজাল্ট করার। এই এতক্ষণ এটাই বুঝাল"।
এরপর ছাত্রী বের হলে তাকে জিজ্ঞেস করলাম পরীক্ষা কেমন হয়েছে। সে বলল অনেক ভাল হয়েছে।১০০ এর মাঝে ৯৫এর উত্তর করেছে। সবাই শুনে বেশ খুশি হলাম।এরপর চলে আসার পালা।পাশেই একটি মন্দির ছিল, সবাই মিলে আগে সেই মন্দিরে গেলাম।ষষ্ঠী জন্য তেমন ভির ছিল না।সেখানে মা দূর্গা কে দর্শন করে রিক্সা নিয়ে সাতমাথায় আসলাম।সাত মাথা থেকে যাওয়ার পর গোবিন্দগঞ্জ দুই রাস্তায় যাওয়া যায়। কিন্তু একপাশ দিয়ে গেলে আরেকটি পুজা মন্ডপ পাওয়া যায়। সেজন্য সেদিক দিয়েই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।এরপর প্রতিমা দেখে বাসায় ফিরে আসলাম।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
একদিকে ছাত্রীর পরীক্ষা অন্যদিকে পার্কে ঘোরাঘুরি তাহলে খুব সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করলেন। আপনি যেই পার্কে গেলেন আসলে ওই ধরনের পার্কে তেমন রাইড রাখা হয় না। বিশেষ করে সকাল বিকেল হাটাহাটির জন্য ভাল বেশি। তাছাড়া অল্প পরিসরে যে খেলনা গুলো আছে সেগুলোতে ছোট বাচ্চারা দৌড়াদৌড়ি করতে পারে। খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করলেন ভালো লাগলো।